রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আজকাল রাজনীতিতে ক্ষমতা আর অর্থ-বিত্তের দাপট অনেক ক্ষেত্রে নিয়ামক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখে। ছাত্ররাজনীতিতেও এ অশুভ ছায়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। দখলবাজি আর চাঁদাবাজির কারণে ছাত্ররাজনীতিকে এখন আর মানুষ আগের মতো সম্মানের চোখে দেখে না।’
গতকাল শনিবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তনে আচার্যর ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে শিক্ষিত হতে হবে। তোমাদের মধ্যে কেউ রাজনীতিবিদ হবে, কেউ ব্যবসায়ী, শিল্পপতি বা আমলা হবে। মনে রাখবে, সবার সমন্বিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় একটি দেশ উন্নতি-অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়।’
দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ই নিজস্ব আইনের দ্বারা পরিচালিত হয়। কিন্তু ইদানীং বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। একটি বিশেষ শ্রেণি ক্ষমতা ধরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রদের ব্যবহার করতে কুণ্ঠাবোধ করে না।’
তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দলীয় লেজুড়বৃত্তির ঊর্ধ্বে উঠে রাজনীতি করার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘ইদানীং পত্রপত্রিকা খুললে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজির নেতিবাচক খবর দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উপাচার্য ও শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকে। কিছু ব্যক্তির অপকর্ম ও অদক্ষতা গোটা শিক্ষকসমাজের মর্যাদাকে ম্লান করছে।’
এবার সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে তিনটি ক্যাটাগরিতে ১৬ জন শিক্ষার্থীর হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন রাষ্ট্রপতি।
এবারের সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন মোট ১৫ হাজার ২১৯ শিক্ষার্থী। এতে নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী রয়েছেন ১১ হাজার ৪৪৪ জন, উইকেন্ড প্রগ্রামের তিন হাজার ৪৬১ জন, এমফিল ডিগ্রির ৩৪ জন এবং পিএইচডি সম্পন্নকারী ২৮০ জন।
সমাবর্তনে অন্যদের মধ্যে উপাচার্য মো. নূরুল আলম, প্রো-উপাচার্য শেখ মো. মনজুরুল হক, ট্রেজারার রাশেদা আখতার, রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ এবং সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনরা উপস্থিত ছিলেন।