চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় পাঁচ কিলোমিটার রামচন্দ্রপুর খাল খননের কাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ অনিয়ম নিয়ে খননকারী ঠিকাদারী ও স্থানীয় এলাকাবাসী মুখোমুখী অবস্থানে রয়েছেন। যে কোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ নকসা বর্হিভূতভাবে ঠিকাদার খাল খননের নামে এক পাড়ের কৃষি জমি ও বসত ভিটা ধ্বংস করছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার চাটখিল-সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ ও সেনবাগ উপজেলার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় চারটি উপজেলায় ২৮৪ কিলোমিটার খাল পুনঃ খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২ কোটি টাকা। ওই প্রকল্পের আওতায় চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পাল্লা এলাকার নোয়াপাড়া-বদলকোট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘের রামচন্দ্রপুর খালটির খনন কাজ গত সপ্তাহে শুরু হয়েছে। এই খাল খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় নাথপাড়া গ্রামবাসী।
স্থানীয় নাথপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও চাটখিল বাজারের ব্যবসায়ী জাবেদ হোসেন রুবেল অভিযোগ করে বলেন, খাল খননের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে সরকারী টাকা হরিলুটের মহোৎসব চলছে। তিনি বলেন খালের তলদেশ খনন না করে শুধু খালের দক্ষিন পাশের পাড় শেভ করে মাটি ফসলী জমির উপর রাখছে। খাল খনন না করে প্রশস্ততা বাড়ানো হচ্ছে। এর ফলে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
এই গ্রামের কালুমিয়া (৭০) অভিযোগ করে বলেন গত দুই বছরের মধ্যে এ খালটি দুইবার খনন করা হচ্ছে। বিনা প্রয়োজনে খাল খননের নামে বার বার একটি মহল সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এছাড়াও চাটখিল পৌরসভার ১১নং পুল থেকে উত্তর দিকে ফতেরপুর মহল্লার খালটি খননেও ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে খালটির কোথাও কোথাও খনন না করেই কাজ সম্পন্ন করেছে। খাল খননের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরিন ট্রেডার্সের ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা অনুযায়ী আমরা খাল খননের কাজ করতেছি। এখানে আমাদের কোন স্বার্থ নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন জেলার চারটি উপজেলায় জলাবদ্ধতা দূরীকরন প্রকল্পের আওতায় চাটখিল এ খাল খনন কর্মসূচি চলছে। তলদেশ খনন না করে পাড়ের মাটি কাটা সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন ফাইল দেখে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে। স্থানীয় এলাকাবাসীর ক্ষতি করে খাল খনন কার্যক্রম যাতে চলমান না থাকে সে ব্যাপারে তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলবেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সালের সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান স্থানীয় এলাকাবাসীর ফসলি জমির, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও সড়কের ক্ষতি হয় এমনকাজ যাতে না হয় সে বিষয়টি তিনি বিবেচনায় রাখবেন। স্থানীয় লোকজন যদি খাল খনন না চান তাহলে খনন কাজ হবে না। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।