বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার
বর্তমান মজুত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ অনুযায়ী প্রায় ২০ বিলিয়ন
মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। এ রিজার্ভ দিয়ে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী যে কোনো অর্থনীতির জন্য স্বস্তিদায়ক। মঙ্গলবার (২১
নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, গত বছরের
প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি কাটিয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ প্রায়
১ বিলিয়ন ডলারের মত উদ্বৃত্ত হয়েছে। তবে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টের আগের স্বস্তিদায়ক
উদ্বৃত্ত অবস্থা থেকে ঘাটতি পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণে সার্বিক বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে
এখনো কিছুটা ঘাটতি রয়েছে।
বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে শিগগির একটা
স্বস্তিদায়ক অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। বাংলাদেশের বৈদেশিক
মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণসহ মুদ্রা বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা আনতে আরও সহায়ক হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের
সময়োপযোগী ও কার্যকর নীতি গ্রহণের ফলে বর্তমানে বিদ্যমান মুদ্রা বিনিময় হার প্রকৃত
কার্যকর বিনিময় হার সূচকের সঙ্গে অনেকটাই সঙ্গতিপূর্ণ রয়েছে। এক্ষেত্রে, আগামীতে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি তাদের নীতি সুদহার আর না বাড়ায় কিংবা হ্রাস করে
তাহলে আমাদের বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা আনতে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং এর প্রত্যাশাকে ধরে রাখার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
একই সঙ্গে সরকার অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় সংকোচন করেছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির
অভিঘাত নিরসনে সামাজিক নিরাপত্তা জালের আওতা ও ব্যাপ্তি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক
এবং বাংলাদেশ সরকারের সংকোচনমূলক যুগপৎ নীতি পদক্ষেপ এবং উৎপাদন ও বিনিয়োগ সহায়ক নীতির
ফলে মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির আশু উন্নতি হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী জানুয়ারি
মাসের মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ শতাংশে এবং জুন শেষ নাগাদ
৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কেন্দ্রীয়
ব্যাংক মনে করে, আগামী সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন হওয়ার পর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির
দ্রুত উন্নতি হবে এবং অর্থবছরের শেষ নাগাদ দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সাম্প্রতিক সামষ্টিক
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে বাংলাদেশ ব্যাংক
এবং সরকার উভয়েই আর্থিক ও রাজস্ব খাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক
পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে শিগগির দেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে
দেশের অর্থনীতির বৈদেশিক খাতে স্থিতিশীলতা এবং মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিতে একটা স্বস্তিদায়ক
অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করা যায়।
দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক ভূ-অর্থনৈতিক
প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে আগামীতে
বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বলে আশা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।