আগৈলঝাড়া (বরিশাল ) প্রতিনিধি:
বরিশালের উত্তর জনপদে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদের সাথে জমির আইলে কুমড়ার চাষ হচ্ছে বেশ কয়েক বছর থেকে। যুগের পর যুগ অনাবাদি পরিত্যাক্ত জমির আইল এখন আর ফেলানো জায়গা নয়।
গত ১০ বছর যাবত জেলার আগৈলঝাড়া, গৌরনদী ও উজিরপুর উপজেলার প্রত্যান্ত জনপদের বিলাঞ্চলে জমির আইলে কুমড়ার চাষ করে অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হয়েছে। এর মধ্যে অনেক চাষী দশ হাজার থেকে একলক্ষ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। গৌরনদী উপজেলার মইচতারকান্দি, দোনারকান্দি, বার্থী, চাঁদশী। আগৈলঝাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর, বাটরা, বারপাইকা, আস্কর,বগধা, জলিরপার, ফেনাবারি, রাজিহার, কোদালধোয়া, রামশীল। উজিরপুর উপজেলার কুড়লীয়া, পটিবাড়ী, সাতলা, শীবপুর, বিষারকান্দি, জল্লা, মুনশিতালুকসহ প্রত্যান্ত বিলাঞ্চলের জমির আইলে কুমড়ার চাষ হচ্ছে।
বাহাদুরপুর গ্রামের অনিতা ভদ্র বিগত ১০ বছর যাবৎ কুমড়ার চাষ করছেন। গত বছর কুমাড় চাষে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, বারতী আয়ের এই টাকা দিয়ে তার ছেলে মেয়ের পাড়ালেখার ব্যায়ভার পূরণ করছেন। এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় আরো বেশি বিক্রি হবে বলেও জানান তিনি।
এ গ্রামের দিপক জয়ধর, বিরেন ভদ্র, সাধন মৃধা, সম্পা রানী, মৃনাল পান্ডে, রমনি বকুলা, পরিমল মন্ডল, অনিল বাড়ৈ সহ অনেক চাষীই লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। উজিরপুর উপজেলার কুড়লীয়া গ্রামের হরষিত বাড়ৈ, রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাতলা গ্রামের ক্ষীতিশ বাইন, পরিমল মন্ডল, সিরাজুল হক, পটিবাড়ী গ্রামের মাখন রায়, মোঃ রবিউলসহ অনেক চাষি সাবলম্বী হয়েছেন কুমরার চাষ করে। গৌরনদী উপজেলার দোনারকন্দি গ্রামের নিতাই হালদার, জন রায়, ঊষা রানীর বারতি আয়ের উৎস জমির আইলে কুমড়ার চাষ। প্রত্যোক চাষি বছরের এই সময় জমির আইলে পরিত্যাক্ত জায়গায় কুমড়ার চাষ করে ১০ থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করেছেন। চলতি বছর উৎপাদন বেশি হলেও বাজারমূল্য কম।
সরেজমিন গতকাল শুক্রবার উপজেলার বাহাদুরপুর হাটে গিয়ে দেখা যায় প্রতিমন হাইব্রীড জাতের মিষ্টি কুমড়া ৮ শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি কুমড়া ৩-৮ কেজি ওজনের। এ অঞ্চলের উৎপাদিত কুমড়া এলাকার চাহিদা পূরন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা । চাষিরা জানান আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর ফলন ভালো হয়েছে। তারা বলেন সরকারি সহায়তা পেলে তারা উতপাদন আরো বাড়াতে পারবেন।
এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন আগামীতে কুমড়া চাষে কৃষকদের প্রণোদনাসহ সকল ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।