১৫ রমজানের পর থেকেই বরিশালে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নগরীর চকবাজার মার্কেট থেকে শুরু করে সবকটি মার্কেট ও বিপণিবিতানে এখন মানুষের স্রোত বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর চকবাজার, হাজী মোহাম্মাদ মহাসিন মার্কেট, সিটি মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
নগরীতে গড়ে ওঠা শপিংমল ছাড়াও চকবাজার মার্কেট, বিভিন্ন পোশাকের শো-রুম ও ফ্যাশন হাউসগুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের চাপ। নগরীর চকবাজার মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকান মালিক ও শ্রমিকরা। নগরীর সদরে রোড এলাকার টপটেন ও ইজি, সেইলর, ইনফিনিটি, ভারগো, প্লাস পয়েন্ট ফ্যাশন হাউজ, নতুনবাজারসংলগ্ন বিশ্বরংসহ উন্নতমানের ব্রান্ডের দোকানগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে চোখে পড়ার মতো।
পোশাকের দোকানের পাশাপাশি ভিড় বেড়েছে জুতার দোকানগুলোতেও। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, এ বছর সব ধরনের পোশাক ও জুতা অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন দোকানীরা।
ঈদ বাজারে অধিকাংশ ক্রেতাই হচ্ছেন নারী ও শিশু। পোশাক বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে সারারা, গারারা ও নাইরা নামে তিনটি পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে সুতি পোশাকের চাহিদাও রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য পোশাকও গত বছরের তুলনায় বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নামিদামির থেকে ফুটপাতের দোকান ও হকার্স মার্কেটগুলোয় ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি থাকছে।
প্রতিবারই ঈদের বাজারে মেয়েদের পোশাকের তালিকা বৃদ্ধি পায় এবারও যোগ হয়েছে নানান নামের পোশাক সামগ্রী। তবে এবার মেয়েদের সেরা পছন্দের তালিকায় রয়েছে ভারতীয় পোশাক সারারা, গারারা ও নায়রা।
কানিজ ফাতিমা মাহী নামে এক নারী ক্রেতা বলেন, প্রতিনিয়ত শহরে ফ্যাশন সামগ্রীর দোকান বাড়ছে। ব্রান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া যারা নতুন দোকান দিয়েছেন, তারা সবাই ভালো পোশাক সরবরাহ করেছে। তবে তুলনামূলকভাবে দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করছি। কারণ অনলাইনেও নামিদামি ও বিশ্বস্ত অনেক প্রতিষ্ঠান পণ্য বিক্রি করছে।
অপরদিকে নির্ধারিত ও সর্বাধুনিক ডিজাইনের কাপড় কিনতে বরিশাল থেকে অনেক তরুণ-তরুণী ঢাকামুখী হচ্ছেন। বরিশালের থেকে দাম কম ও কালেকশন বেশি থাকায় ঢাকামুখী হচ্ছেন তারা।
এদিকে বরিশালে কসমেটিকস ও কাপড়ের নির্ধারিত মূল্যের থেকে দ্বিগুণ দামে বিক্রির অভিযোগে গত কয়েকদিন যাবত টানা অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আর প্রতিদিনই কোনো না কোনো নামিদামি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করছেন তারা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র জানান, প্রতিটি পণ্যে যেখানে যৌক্তিক একটা লাভ করা যায়, সেখানে বরিশালে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ লাভ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। এছাড়া অনেকে অনৈতিকভাবে আলাদা করে সংযুক্ত করেছে ভ্যাট। এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে চকবাজার, সদররোড, কাঠপর্টি এলাকার নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও সিটি করপোরেশনের সামনের ফুটপাতের দোকান, হাজী মো. মহসিন হকার্স মার্কেট ও সিটি মার্কেটে ক্রেতা সমাগত দিনে দিনে বাড়ছে। আর বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।