কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন কবলিত চিলমারী ইউনিয়ন রক্ষায় বাম্বু বান্ডেলিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি উদ্যোগে নদের পশ্চিম তীরে বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কাজের উদ্বোধন করেন চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক মো: রোকুনুজ জামান শাহীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান আজাদ (জামান), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা বেগম চৌধুরী, থানা হাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুর রাজ্জাক মিলন, উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক আবু হোসাইন সিদ্দিক রানা প্রমুখ।
জানা গেছে, অবহেলিত চিলমারী ইউনিয়নের পশ্চিম তীরে বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে ২টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি জুনিয়র হাইস্কুল ও মসজিদ-মাদ্রাসাসহ কয়েক হাজার বসতবাড়ি এবং শত শত একর ফসলী জমি। দীর্ঘ ২৫ বছর এই ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী অষ্টমীরচর ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার পরিবার একসঙ্গে বসবাস করে আসছে। কিন্তু গত বছরের বন্যায় চিলমারী ইউনিয়নের পশ্চিম তীরের প্রায় ১ হাজার একর আবাদি জমি ১২৫ টি পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। বসতভিটা এবং আবাদি জমি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারগুলো।
দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙন হলেও ভাঙন রোধে কোন কাজ না হওয়ায় এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর নিকট সহযোগিতা চান। এলাকাবাসীর শ্রম এবং অর্থ দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ভাঙন রোধে কাজ হওয়ায় খুশি নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসী।
চিলমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো: নূর বক্ত বলেন, নদী ভাঙ্গনে কারণে আমরা একেবারে নি:স্ব। সরকারিভাবে নদী ভাঙ্গন রোধে কোন কাজ না হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিজ উদ্যোগে নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করায় আমরা খুশি। এখন আমরা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাবো।
রংপুর কারমাইকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী রোকেয়া ইসলাম বলেন, বাম্বু বান্ডেলিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ বাঁধ তৈরী করা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাম্বু বান্ডেলিং প্রযুক্তি ব্যাপক ভাবে সফল হবে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বল্পব্যায়ে নদী ভাঙ্গণ রোধে সফল হবে।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারণে আমার ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। এখনও ৪টি ওয়ার্ড নদী ভাঙ্গনের ঝুকির মধ্যে আছে। বাঁধ নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে আমার ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৭/৮ হাজার পরিবারসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। আমার জন্মস্থান এটা, আমি চেষ্টা করব চরাঞ্চলের মানুষের সবধরনের সমস্যা সমাধানে তাদের পাশে থাকতে।