আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

বরগুনায় এমপির বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে বৃদ্ধের আমরণ অনশন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১০ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১০ মার্চ ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

অলিউল্লাহ্ ইমরান, বরগুনা:

বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ এনে জমি দখলমুক্ত করার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন এক বৃদ্ধ। বৃহষ্পতিবার (১০ মার্চ) সকাল ১০ টায় বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে তিনি জায়নামাজ বিছিয়ে অনশনে বসেন। ওই বৃদ্ধে নাম বেলায়েত হোসেন। তিনি পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের পূর্ব লেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা। 

বেলায়েত হোসেনের অভিযোগ, কাকচিড়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সামনে কাকচিড়া-লেমুয়া সড়কের দক্ষিণ পাশে তার পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছেন বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন।

কাজ শুরুর পর তিনি এমপি রিমনের সাথে যোগাযোগ করলেও কোনো ফল হয়নি। পরে পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্ত কোনো সমাধান হয়নি।

নিরুপায় হয়ে আজ তিনি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও দখলমুক্ত করার দাবিতে অনশনে বসেছে। বেলায়েত হোসেন বলেন, 'আমি এখানে মইরা যাবো, সরকার না বলা পর্যন্ত উঠব না। আমি আমার জমি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।

বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে বৃদ্ধার কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে যাচাই করা হবে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।


আরও খবর



রেলের টিকিট কালোবাজারি: সহজ ডটকমের দুই কর্মীসহ গ্রেফতার ৯

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম হোতা সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালী ও সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাসসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)।

এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে কালোবাজারির আলামত এবং অবৈধভাবে সংগ্রহ ও মজুত করা বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট।

র‍্যাব জানায়, ২০০৩ সালে কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেন মিজান। পরে CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি সহজকে দেওয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে। মিজান দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

অন্যদিকে নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট কর্মী হিসেবে সিএনএস বিডিতে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান। ২০২০ সালে সহজের সঙ্গে চুক্তি হলে তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান।

র‍্যাব আরও জানায়, সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতেন। মিজান ও নিউটন দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।

গ্রেফতাররা হলেন মো. মিজান ঢালী (৪৮), মো. সোহেল ঢালী (৩০), মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৬), মো. সবুর হাওলাদার (৪০) ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)।

এসময় জব্দ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল পরিমাণ টিকিট, ৮টি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রয়ের নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেন।

শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সহজ ডটকমের পিয়ন কে এই মিজান ঢালী

তিনি বলেন, দেশব্যপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজানের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় সকল ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল। মিজান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

২০০৩ সালে সে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ডেফোডিলের কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বুকিং এ CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি Sohoz.com-কে দেয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, দীর্ঘদিন টিকিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকায় সারাদেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের অফিসে এবং বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে মিজানের পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।

এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই সে বিভিন্ন স্টেশনে থাকা সহজ ডটকমের সদস্য, টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য কালোবাজির চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টিকিট বিক্রি করতো।

তিনি বলেন, সহজ ডটকমের কমলাপুর রেলস্টেশন সার্ভার রুমের সার্ভার অপারেটর গ্রেফতার নিউটন বিশ্বাস, স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ গ্রেফতার সবুর হাওলাদারসহ এবং পলাতক আব্দুল মোত্তালিব, আশিকুর রহমানসহ আরও কয়েকজন টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিশেষ করে ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতার মিজান ও সোহেল বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ সময়ের তুলনায় অধিক সংখ্যক টিকিট সংগ্রহ করতো। গ্রেফতার মিজান ও সোহেল প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের কর্মচারী ও টিকিট কাউন্টারম্যানদের মাধ্যমে প্রায় ২-৩ হাজার রেলওয়ের টিকিট কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রি করতো। তারা আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের চাইতেও বেশি সংখ্যক টিকিট সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা করছিল।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে ৫০ ভাগ Sohoz.com ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারম্যানরা পেতো এবং বাকি ৫০ ভাগ সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী সহযোগীদের মাঝে ভাগাভাগি হতো।

এই অর্থ কখনো তারা নগদ হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিতো আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতো। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০/২৫ হাজার টাকা উপার্জন করতো। এভাবেই পরষ্পরের যোগসাজশে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।

গ্রেফতার সোহেলকে গ্রেফতার মিজান তার আত্মীয় হিসেবে সুপারিশ করে প্রথমে CNS.bd তে চাকরি পাইয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে Sohoz.com এ চুক্তিবদ্ধ হলে কমলাপুর শাখায় অফিস সহকারী হিসেবে তারও চাকরি বহাল থাকে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, পরবর্তীতে গ্রেফতার সোহেল ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করে। গ্রেফতার সোহেল অফিস সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় প্ল্যাটফর্মের টিকিট বুকিং কাউন্টারে বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত আনাগোনা থাকতো। একপর্যায়ে সোহেল কাউন্টারে টিকিট বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা কাউন্টারম্যানদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং কাউন্টারম্যানদের যোগসাজশে বিভিন্ন কারসাজি করে বিপুল পরিমাণ টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজির মাধ্যমে অধিক মূল্যে বিক্রি করতো।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যসহ গ্রেফতার সুমন, শাহজালাল, জাহাঙ্গীর, জয়নাল, ও রাসেল সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা দিতো। পরবর্তীতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেফতার মিজান ঢালী অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রির জন্য তাদের কাছে সরবরাহ করতো।

তিনি বলেন, গ্রেফতার সুমন রেলওয়ের সঙ্গে এক সময়ের চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান CNS.bd তে চাকরি করতো। পরবর্তীতে Sohoz.com এর সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর সে চাকরি বাদ দিয়ে গ্রেফতার মিজান ও সোহেলের মাধ্যমে ঢালী সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়ে অবৈধভাবে সংগ্রহকৃত ট্রেনের টিকিটগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি শুরু করে।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, গ্রেফতার শাহজালাল একজন পাঠাও চালক, গ্রেফতার জাহাঙ্গীর কমলাপুরে অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলের ক্লিনার, গ্রেফতার রাসেল একই আবাসিক হোটেলের বয় এবং গ্রেফতার জয়নাল অপর একটি আবাসিক হোটেলের বয়। তারা তাদের এসকল কর্মস্থলে কাজের পাশাপাশি সবসময় অবৈধ উপায়ে টিকিটপ্রত্যাশী যাত্রী জোগাড় করে কালোবাজারির মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টিকিটগুলো নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি করতো।

হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনের টিকিটপ্রত্যাশীদের কাছে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে টিকিটগুলো প্রেরণ করতো।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট হিসেবে CNS.bd-তে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে ২০২০ সালে Sohoz.com এ চুক্তিবদ্ধ হলেও তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়। সে সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতো বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতো। গ্রেফতার সবুর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের Sohoz.com এর স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ হিসেবে চাকরি করতো। গ্রেফতার সবুর সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজানের সঙ্গে ট্রেনের টিকিট কালোবাজির সঙ্গে জড়িত।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সহজ ডটকম টিকিট কালোবাজারির দায় এড়াতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল।

আসন্ন ঈদুল ফিতরে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে কি কি পদক্ষেপ নেবে র‍্যাব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আর কিছুদিন পরেই টিকিট অনলাইনে ছাড়বে। টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে এনএসআই ও র‍্যাবের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।


আরও খবর



প্রথম ১০ রোজায় যেসব দোয়া পড়বেন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

দোয়াও একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। দোয়া ইবাদতের মূল। দোয়া ছাড়া ইবাদত অস্পূর্ণ থাকে। যেকোনো সময় যেকোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসূল (সা). আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন।

হযরত সালমান ফারসি রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সা. শাবান মাসের শেষ দিন আমাদের মাঝে খতিব হিসেবে দাঁড়ালেন, বললেন (মাহে রমজান) এমন একটি মাস যার প্রথম ভাগ রহমাত, মধ্যবর্তী ভাগ মাগফেরাত বা ক্ষমা আর শেষ ভাগে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। অর্থাৎ রমজান মাসের ৩০ দিনের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাতের। (সহিহ ইবনে খুজাইমা ১৮৮৭)

হাদিস বিশারদগণ এই রহমত শব্দের ব্যাখ্যা করে বলেছেন, মূলত রমজানের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা মুমিন বান্দাদের মাঝে রহমত ও দয়া বণ্টন করতে থাকেন। আসুন জেনে নিই প্রথম ১০ রমজানে যে দশটি দোয়া পড়বেন:

প্রথম রোজার দোয়া

الیوم الاوّل : اَللّـهُمَّ اجْعَلْ صِیامی فیهِ صِیامَ الصّائِمینَ، وَقِیامی فیهِ قیامَ الْقائِمینَ، وَنَبِّهْنی فیهِ عَنْ نَوْمَةِ الْغافِلینَ، وَهَبْ لى جُرْمی فیهِ یا اِلـهَ الْعالَمینَ، وَاعْفُ عَنّی یا عافِیاً عَنْ الْمجْرِمینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; আমার আজকের রোজাকে প্রকৃত রোজাদারদের রোজা হিসেবে গ্রহণ কর। আমার নামাজকে কবুল কর প্রকৃত নামাজীদের নামাজ হিসেবে। আমাকে জাগিয়ে তোলো গাফিলতির ঘুম থেকে। হে জগত সমূহের প্রতিপালক; এদিনে আমার সব গুনাহ মাফ করে দাও। ক্ষমা করে দাও আমার যাবতীয় অপরাধ। হে অপরাধীদের অপরাধ ক্ষমাকারী।

দ্বিতীয় রোজার দোয়া

الیوم الثّانی : اَللّـهُمَّ قَرِّبْنی فیهِ اِلى مَرْضاتِکَ، وَجَنِّبْنی فیهِ مِنْ سَخَطِکَ وَنَقِماتِکَ، وَوَفِّقْنی فیهِ لِقِرآءَةِ ایـاتِکَ بِرَحْمَتِکَ یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; তোমার রহমতের উসিলায় আজ আমাকে তোমার সন্তুষ্টির কাছাকাছি নিয়ে যাও। দূরে সরিয়ে দাও তোমার ক্রোধ আর গজব থেকে । আমাকে তৌফিক দাও তোমার পবিত্র কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করার । হে দয়াবানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়াময়।

তৃতীয় রোজার দোয়া

الیوم الثّالث : اَللّـهُمَّ ارْزُقْنی فیهِ الذِّهْنَ وَالتَّنْبیهَ، وَباعِدْنی فیهِ مِنَ السَّفاهَةِ وَالَّتمْویهِ، وَاجْعَلْ لى نَصیباً مِنْ کُلِّ خَیْر تُنْزِلُ فیهِ، بِجُودِکَ یا اَجْوَدَ الاْجْوَدینَ.

অর্থ: হে আল্লাহ; আজকের দিনে আমাকে সচেতনতা ও বিচক্ষণতা দান কর। আমাকে দূরে রাখ অজ্ঞতা, নির্বুদ্ধিতা ও ভ্রান্ত কাজ-কর্ম থেকে। এ দিনে যত ধরণের কল্যাণ দান করবে তার প্রত্যেকটি থেকে তোমার দয়ার উসিলায় আমাকে উপকৃত কর। হে দানশীলদের মধ্যে সর্বোত্তম দানশীল।

চতুর্থ রোজার দোয়া

الیوم الرّابع : اَللّـهُمَّ قَوِّنی فیهِ عَلى اِقامَةِ اَمْرِکَ، وَاَذِقْنی فیهِ حَلاوَةَ ذِکْرِکَ، وَاَوْزِعْنی فیهِ لاِداءِ شُکْرِکَ بِکَرَمِکَ، وَاحْفَظْنی فیهِ بِحِفْظِکَ وَسَتْرِکَ، یا اَبْصَرَ النّاظِرینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; এ দিনে আমাকে তোমার নির্দেশ পালনের শক্তি দাও। তোমার জিকিরের মাধুর্য আমাকে আস্বাদন করাও। তোমার অপার করুণার মাধ্যমে আমাকে তোমার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য প্রস্তুত কর । হে দৃষ্টিমানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দৃষ্টিমান। আমাকে এ দিনে তোমারই আশ্রয় ও হেফাজতে রক্ষা কর।

পঞ্চম রোজার দোয়া

الیوم الخامس : اَللّـهُمَّ اجْعَلْنی فیهِ مِنْ الْمُسْتَغْفِرینَ، وَاجْعَلْنی فیهِ مِنْ عِبادِکَ الصّالِحینَ اْلقانِتینَ، وَاجْعَلنی فیهِ مِنْ اَوْلِیائِکَ الْمُقَرَّبینَ، بِرَأْفَتِکَ یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; এই দিনে আমাকে ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর। আমাকে শামিল কর তোমার সৎ ও অনুগত বান্দাদের কাতারে । হে আল্লাহ ! মেহেরবানী করে আমাকে তোমার নৈকট্যলাভকারী বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কর। হে দয়াবানদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়াবান ।

ষষ্ঠ রোজার দোয়া

الیوم السّادس : اَللّـهُمَّ لا تَخْذُلْنی فیهِ لِتَعَرُّضِ مَعْصِیَتِکَ، وَلاتَضْرِبْنی بِسِیاطِ نَقِمَتِکَ، وَزَحْزِحْنی فیهِ مِنْ مُوجِباتِ سَخَطِکَ، بِمَنِّکَ وَاَیادیکَ یا مُنْتَهى رَغْبَةِ الرّاغِبینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; তোমার নির্দেশ অমান্য করার কারণে এ দিনে আমায় লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করোনা। তোমার ক্রোধের চাবুক দিয়ে আমাকে শাস্তি দিও না। সৃষ্টির প্রতি তোমার অসীম অনুগ্রহ আর নিয়ামতের শপথ করে বলছি তোমার ক্রোধ সৃষ্টিকারী কাজ থেকে আমাকে দূরে রাখো। হে আবেদনকারীদের আবেদন কবুলের চূড়ান্ত উৎস।

সপ্তম রোজার দোয়া

الیوم السّابع : اَللّـهُمَّ اَعِنّی فِیهِ عَلى صِیامِهِ وَقِیامِهِ، وَجَنِّبْنی فیهِ مِنْ هَفَواتِهِ وَآثامِهِ، وَارْزُقْنی فیهِ ذِکْرَکَ بِدَوامِهِ، بِتَوْفیقِکَ یا هادِیَ الْمُضِلّینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; এ দিনে আমাকে রোজা পালন ও নামাজ কায়েমে সাহায্য কর। আমাকে অন্যায় কাজ ও সব গুনাহ থেকে রক্ষা করো। তোমার তৌফিক ও শক্তিতে সবসময় আমাকে তোমার স্মরণে থাকার সুযোগ দাও। হে পথ হারাদের পথ প্রদর্শনকারী।

অষ্টম রোজার দোয়া

الیوم الثّامن : اَللّـهُمَّ ارْزُقْنی فیهِ رَحْمَةَ الاَْیْتامِ، وَاِطْعامَ اَلطَّعامِ، وَاِفْشاءَ السَّلامِ، وَصُحْبَةَ الْکِرامِ، بِطَولِکَ یا مَلْجَاَ الاْمِلینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; তোমার উদারতার উসিলায় এ দিনে আমাকে এতিমদের প্রতি দয়া করার, ক্ষুধার্তদের খাদ্য দান করার, শান্তি প্রতিষ্ঠা করার ও সৎ ব্যক্তিদের সাহায্য লাভ করার তৌফিক দাও। হে আকাঙ্খাকারীদের আশ্রয়স্থল।

নবম রোজার দোয়া

الیوم التّاسع : اَللّـهُمَّ اجْعَلْ لی فیهِ نَصیباً مِنْ رَحْمَتِکَ الْواسِعَةِ، وَاهْدِنی فیهِ لِبَراهینِکَ السّاطِعَةِ، وَخُذْ بِناصِیَتی اِلى مَرْضاتِکَ الْجامِعَةِ، بِمَحَبَّتِکَ یا اَمَلَ الْمُشْتاقینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; এদিনে আমাকে তোমার রহমতের অধিকারী কর। আমাকে পরিচালিত কর তোমার উজ্জ্বল প্রমাণের দিকে। হে আগ্রহীদের লক্ষ্যস্থল। তোমার ভালোবাসা ও মহব্বতের উসিলায় আমাকে তোমার পূর্ণাঙ্গ সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যাও।

দশম রোজার দোয়া

الیوم العاشر : اَللّـهُمَّ اجْعَلْنی فیهِ مِنَ الْمُتَوَکِّلینَ عَلَیْکَ، وَاجْعَلْنی فیهِ مِنَ الْفائِزینَ لَدَیْکَ، وَاجْعَلْنی فیهِ مِنَ الْمُقَرَّبینَ اِلَیْکَ، بِاِحْسانِکَ یا غایَةَ الطّالِبینَ .

অর্থ: হে আল্লাহ; তোমার প্রতি যারা ভরসা করেছে আমাকে সেই ভরসাকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর। তোমার অনুগ্রহের মাধ্যমে আমাকে শামিল করো সফলকামদের মধ্যে এবং আমাকে তোমার নৈকট্য লাভকারী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও হে অনুসন্ধানকারীদের শেষ গন্তব্য।


আরও খবর
ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




রাশিয়ার তেল শোধনাগারে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

রাশিয়ার তেল শোধনাগারগুলোতে দফায় দফায় ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটি রাশিয়ার জ্বালানি খাতে ইউক্রেনের চালানো সবচেয়ে গুরুতর আক্রমণ। বুধবারের (১৩ মার্চ) এ হামলায় তেল কোম্পানি রোজনেফতের বৃহত্তম শোধনাগারে আগুন ধরে যায়। এতে তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় তেলের মূল্য দুই শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে বিঘ্নিত করার চেষ্টায় এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করেছেন। ১৫ থেকে ১৭ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগের দিন মঙ্গলবার নিজনি নভগোরোদে রাশিয়ার বহুজাতিক তেল কোম্পানি লুকোয়েলের একটি তেল শোধনাগারে হামলা চালায় ইউক্রেনীয় ড্রোন। এতে তেল শোধনাগারটির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ড্রোনগুলো বুধবার রোস্তভ ও রাইয়াজান অঞ্চলের তেল শোধনাগারগুলোতে হামলা চালিয়েছে। মস্কো থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বের রাইয়াজানে এক ড্রোনের হামলায় রোজনেফতের বৃহত্তম শোধনাগারে আগুন ধরে যায়। এটি রাশিয়ার সপ্তম বৃহত্তম তেল শোধনাগার।

রাইয়াজান অঞ্চলের গভর্নর পাভের মালকভ জানিয়েছেন, আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে হামলায় কয়েক জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত দুই রুশ নাগরিক জানিয়েছেন, হামলার পর তেল শোধনাগারটি তাদের দুটি তেল শোধন ইউনিট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রোজনেফতের তরফ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

রোস্তভ অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি গোলুবেভ জানান, সেখানে কোনো হতাহতের ঘটেনি, কিন্তু হামলার পর নভোশাখটিনস্ক শোধনাগার উত্পাদন স্থগিত করতে বাধ্য হয়। পরে শোধনাগারটিতে উত্পাদন ফের শুরু হয় বলে জানা গেছে।

কিয়েভের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের এসবিইউ গোয়েন্দা সংস্থা ড্রোন হামলাগুলো পরিচালনা করেছে। বুধবার প্রকাশিত মন্তব্যে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ১৫-১৭ মার্চের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় কিয়েভ এসব হামলা চালাচ্ছে।

এদিকে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেটেরি অর্পো বলেছেন, পশ্চিমাদের সঙ্গে দীর্ঘ সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। ইউরোপের প্রতিরক্ষায় আরো ব্যয় এবং সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে বুধবার তিনি একথা বলেন।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অর্পো বলেন, রাশিয়া স্পষ্টতই পশ্চিমাদের সঙ্গে দীর্ঘ সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউরোপের জন্য একটি স্থায়ী ও অপরিহার্য সামরিক হুমকি হয়ে উঠছে দেশটি। আমরা সংঘবদ্ধ হতে না পারলে আগামী বছরগুলো বিপদসঙ্কুল হবে এবং হামলার হুমকি ঘনিয়ে আসবে।’

রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অর্পো ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশকে প্রতিরক্ষা খাতে খরচ বাড়ানোর আহ্বান জানান এবং বলেন, ইইউকে নিজেদের প্রতিরক্ষার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাশিয়া অপরাজেয় কোনো দেশ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে বুধবারই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি মন্তব্য প্রকাশ পেয়েছে। তাতে তিনি বলেছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের অন্তর্ভুক্তি অনর্থক একটি পদক্ষেপ’। ফিনল্যান্ড এ জোটে যোগ দেওয়ার পর রাশিয়া ফিনিশ সীমান্তে সেনা এবং ধ্বংসাত্মক সব ব্যবস্থা মোতায়েন করবে।

পশ্চিমাদেরকে হুমকি দিয়ে এদিন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, কারিগরিভাবে পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনে সেনা পাঠায় তাহলে মস্কো এ পদক্ষেপকে চলমান সংঘাতে বড় ধরনের উসকানি হিসেবে গণ্য করবে।


আরও খবর



ঢাকায় পৌঁছেছেন সুইডিশ রাজকন্যা

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

চারদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত হিসেবে এই সফরে এসেছেন তিনি।

সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল সোয়া ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানানো হয়। সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী জোহান ফরসেল, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মদির রাজকন্যা ভিক্টোরিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে এসেছেন।

সুইডিশ রাজকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, তরুণ শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী নেতা এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ দারিদ্র্য নিরসনে অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল উন্নয়নের ইতিবাচক প্রভাব দেখতে মাঠ পর্যায়ে যাবেন।

সরকার ও ইউএনডিপির উদ্যোগে বাস্তবায়িত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য নারী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন উদ্যোগ সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন ভিক্টোরিয়া। সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার তিনি খুলনার কয়রা উপজেলায় যাবেন। এ সফরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সহায়তার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। তিনি কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পও পরিদর্শন করবেন।

প্রসঙ্গত, সুইডিশ রাজকন্যাকে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।


আরও খবর



দুই দশক পর র‍্যাবের খাঁচায় কক্সবাজারের ‘আজরাইল’

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

দীর্ঘ দুই দশক পলাতক থাকার পর কক্সবাজারের মহেশখালীর আলোচিত সিরিয়ার কিলার মো. লোকমান ওরফে আজরাইলকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। র‍্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া দ্বীপের একটি গোপন আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

আজরাইল মহেশখালীর আলোচিত জিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং নবনিয়োগ শাখার (রিক্রুটমেন্ট উইং) প্রধান হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ৪ হত্যা মামলা ও ৪ হত্যাচেষ্টাসহ কমপক্ষে ১০ মামলার রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে খুন, ডাকাতি, অপহরণ, ঘের দখল-পালটা দখলের অন্ধকার জগতে লোকমান ওরফে আজরাইল এক সুপরিচিত নাম। সশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপরতা ও লক্ষ্যবস্তুর প্রতি নৃশংসতার ভয়াবহতায় ধীরে ধীরে মহেশখালীর মূর্তিমান আতঙ্কের নামান্তর হয়ে উঠলেও নানান কৌশলে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০০৬ সাল থেকে অপরাধ জগতে সদর্প পদচারণার পর অবশেষে গ্রেফতার হলেন লোকমান। তাকে মহেশখালী থানার দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহেশখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে মর্মে র‍্যাব সূত্রে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৮ ডিসেম্বর লোকমান ও তার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার জেলার প্রথম শহিদ শরীফ চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে এবং কালামারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চেয়ারম্যান ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওসমান গনিকে কুপিয়ে ও গলায় গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। এছাড়া ২০১১ সালের ২১ মে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জলদস্যু দমনে সহায়তা করার সন্দেহে কুরআনের হাফেজ আব্দুল গফুরকে কুপিয়ে হত্যা করার পর তার দ্বিখণ্ডিত মস্তক হতে হাত দিয়ে মগজ বের করে নেন তারা।

লোকমান ও তার সহযোগিদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই মেলেনি মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান গনিরও৷ নিজেদের আধিপত্য নিশ্চিত করতে ২০১২ সালের ২৯ মার্চ কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। একই বছরের ১১ জুন কুপিয়ে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মৎস্যজীবী বেলাল হোসেনকে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, লোকমান উপজেলার সক্রিয় প্রধান ডাকাত গ্রুপ জিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। একজন ক্রমিক খুনি (সিরিয়াল কিলার) হিসেবে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভাড়াটে খুনি হিসেবেও তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ঘের দখলকারী হিসেবে তার এবং তার দলের পরিচিতি স্থানীয়ভাবে সর্বজনবিদিত।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকা র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, দীর্ঘদিন নিবিড় অনুসরণের পর আমরা আসামি লোকমানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। কক্সবাজারে সক্রিয় বিভিন্ন নামে বাহিনীগুলোর সশস্ত্র ক্যাডারদের আইনের আওতায় আনতে র‍্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।

নিউজ ট্যাগ: কক্সবাজার

আরও খবর