আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

ব্রাজিলিয়ান চার কিংবদন্তির যে ছবি ভাইরাল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৯ নভেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৯ নভেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বছরজুড়ে ক্লাব ফুটবল নিয়ে ব্যস্ততা থাকে ফুটবলারদের। খুব কম সময়ই একসঙ্গে নিজেদের পান তাঁরা। এক ছাদের নিচে কাটানোর জন্য বিশ্বকাপই তাই ভরসা। যাঁরা মাঠে খেলেন সময়টা তাঁরা তো রাঙিয়ে রাখতে চানই। যাঁরা খেলাটাকে বিদায় বলেছেন, তাঁরাও যেন নিজেদের খুঁজে পান এই বিশ্বকাপেই। গতকাল যেমনটা দেখা গেছে ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড ম্যাচে।

মাঠে উত্তরসূরিরা লড়ছেন, আর গ্যালারিতে দেখা মিলছে একেকজন ব্রাজিল কিংবদন্তির। ম্যাচের বিভিন্ন মুহূর্তে টিভি পর্দায় বারবার ভেসে ওঠে তাঁদের ছবি। পরে সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেন কাকা। কাকার সেই ছবিতে সঙ্গী হয়েছেন, কাফু, রবার্তো কার্লোস, রোনালদো নাজারিওর মতো কিংবদন্তিরা। ছবির ক্যাপশনে কাকা লেখেন, ইটস ফ্রম ব্রাজিল।

ব্রাজিল ফুটবলের সোনায় মোড়ানো ছবিগুলোই যেন ফুটে ওঠে সেই ছবিতে। যে ভার এখন বয়ে নিয়ে চলেছেন নেইমার-কাসেমিরোরা। উত্তরসূরিরা হতাশ করেননি মাঠে আসা কিংবদন্তিদের। সুইজারল্যান্ডকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে গতরাতে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে সেলেসাওরা। এক ম্যাচ হাতে রেখেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে কোচ তিতের দল। শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ ক্যামেরুন।

নিউজ ট্যাগ: ব্রাজিল

আরও খবর



৪১৯ যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল হজের প্রথম ফ্লাইট

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

৪১৯ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে হজের প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) সকাল ৭টা ২০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৩০১ ফ্লাইটটি সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করেন। এর আগে, গতকাল বুধবার রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবারের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ হতে পারে। তবে ভিসা কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। এই কাজ শেষ করতে দ্বিতীয় দফায় আগামী ১১ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৬ হাজার ৫২৭ জন হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৫০ শতাংশ হজযাত্রী পরিবহন করবে, যার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৮৯৯ জন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস প্রি-হজে মোট ১১৬টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে জেদ্দায় ৮২টি, চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দায় ১৭টি, সিলেট থেকে জেদ্দায় ৫টি, ঢাকা থেকে মদিনায় ৯টি, চট্টগ্রাম থেকে মদিনায় ২টি এবং সিলেট থেকে মদিনায় একটি।

এ ছাড়া হজ শেষে পোস্ট হজে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস মোট ১২৫টি ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এর মধ্যে জেদ্দা থেকে ঢাকাতে ৭৩টি, জেদ্দা থেকে চট্টগ্রামে ১৫টি, জেদ্দা থেকে সিলেটে ২টি, এছাড়া মদিনা থেকে ঢাকা ২২টি, মদিনা থেকে চট্টগ্রামে ৯টি এবং মদিনা থেকে সিলেটে ৪টি।


আরও খবর



ঢাকায় পৌঁছেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। মঙ্গলবার (১৪ মে) বেলা ১১টার পর কলম্বো থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম।

এদিকে ডোনাল্ড লু’র সফরের কথা ঘোষণা হতেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়- কী বার্তা নিয়ে আসছেন তিনি।

জানা গেছে, ভারত, শ্রীলঙ্কা সফরের পর বাংলাদেশ সফরে আসলেন ডোনাল্ড লু। তার এ সফরের মধ্য দিয়ে দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হবে বলে প্রত্যাশা ওয়াশিংটনের। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র যে মুক্ত, অবাধ ও সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দেখতে চায়, ডোনাল্ড লু’র সফরে সেটাই গুরুত্ব পাবে। ঢাকা সফরে দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ক ছাড়াও জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা নিয়ে আলোচনা করবেন ডোনাল্ড লু।

সফরসূচি অনুসারে, ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও অন্য দুই মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া লু’র নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা রয়েছে।

ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ ব্যক্তি জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। প্রধানমন্ত্রী চতুর্থবার নির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে সম্পর্ক এগিয়ে যাওয়ার বা নতুন উচ্চতায় নেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। মার্কিন প্রশাসন থেকে যারাই বাংলাদেশে সফর করুক না কেন, আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করব একসঙ্গে। সেখানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে, আমাদের নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আছে। এছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি ঢাকা-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করেছে। সেগুলো (র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি) যাতে সহজ করা হয় বা উঠে যায় সেগুলো নিয়ে মার্কিন প্রশাসনে এর আগে হোয়াইট হাউস এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টে এসব আলোচনা করেছি। সেই প্রসঙ্গগুলো স্বাভাবিকভাবে আসতেই পারে। আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে উভয় দেশ কাজ করছি।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর চারবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু। গত বছরের জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। বাংলাদেশের গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ডোনাল্ড লু’র বক্তব্য-বিবৃতি দেশের রাজনৈতিক মহলে তার বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ তৈরি করে।


আরও খবর



মেসির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামির জয়

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসির জোড়া গোলে নাশভিলের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে ইন্টার মায়ামি। মেসির জোড়া গোলে ৩-১ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে দলটি।

রবিবার ভোরে এমএলএসের ম্যাচে মাঠে নামে ইন্টার মায়ামি ও নাশভিল। মায়ামির ৩-১ গোলে জয়ের এই ম্যাচে মেসি ছাড়া দলের পক্ষে অন্য গোলটি করেন সার্জিও বুসকেটস।

আটবারের ব্যালন ডিঅর বিজয়ী মেসি এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা জুড়ে ৯টি খেলায় নয়টি গোল করেছেন।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে মায়ামিকে। দলটির ডিফেন্ডার ফ্রাঞ্চো নেগ্রির আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় নাশভিল। অবশ্য মেসির জাদুতে সমতায় ফিরতে বেশি সময় নেয়নি মায়ামি। খেলার ১১ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের দুর্দান্ত এক গোলের মাধ্যমে আর্জেন্টাইন তারকা ব্যবধান সমান করেন।

প্রথমার্ধেই মায়ামি লিড গোলের দেখা পেয়ে যায়। ৩৯ মিনিটে মেসির কর্নার কিক থেকে হেডের মাধ্যমে গোলটি করেন বুসকেটস। এরপরে লিড নিয়েই এগিয়ে যায় মেসি বাহিনী। ৮১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন এলএমটেন। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইন্টার মায়ামি।


আরও খবর



তামান্না ভাটিয়াকে সাইবার সেলে তলব

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির আলোচিত অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া এখন বলিউডেরও পরিচিত মুখ। বেশ দাপুটের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। ক্যারিয়ারে দুর্দান্ত সময় পার করছেন। তবে সম্প্রতি বিপাকে পড়েছেন এ তারকা। তাকে তলব করেছে ভারতের মহারাষ্ট্র সাইবার সেল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সাইবার সেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহাদেব অনলাইন গেমিং এবং বেটিং অ্যাপ্লিকেশনের একটি সহায়ক অ্যাপে আইপিএল ম্যাচ দেখতে কথিত প্রচারের জন্য তলব করা হয়েছে তামান্নাকে। দক্ষিণী এই নায়িকাকে আগামী ২৯ এপ্রিল মহারাষ্ট্র সাইবার সেলে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এর আগে গত বছরও কিছু আইপিএল ম্যাচ অ্যাপে অবৈধভাবে স্ট্রিম করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে একটি অভিযোগও রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই মামলায় সাক্ষী হিসেবে তার বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য ডাকা হয়েছে।

এ মামলায় ইতোমধ্যে মহারাষ্ট্র সাইবার সেল গায়ক বাদশা, অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ও জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের ম্যানেজারদের বক্তব্য নিয়েছে। আর মহাদেব অ্যাপটি অবৈধ অর্থ লেনদেন এবং বাজি ধরার জন্য বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার মনিটরিংয়ে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, তামান্না ভাটিয়া বাহুবলী এবং নেটফ্লিক্স অ্যান্থলজি লাস্ট স্টোরিজ-২ এর জন্য দর্শকমহলে বহুল পরিচিত।


আরও খবর



ডিজির অনুপস্থিতিতে এডিজি সাত দিনে হাতিয়ে নিলেন সাড়ে ৭ কোটি টাকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অসুস্থতার কারণে গত বছরের ২২ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)। সেই ৯ দিন অধিদপ্তরের শীর্ষপদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পালন করেন সাত দিন। আর এটুকু সময়েই আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে গেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বকালে এক দিনেই ছাড় করেন মাল্টিপল পাসপোর্টের ৫০০ ফাইল। নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা প্রতিটি ফাইল অনুমোদনের জন্য নিয়েছেন দেড় লাখ টাকা করে। সব মিলিয়ে এই কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) সরাসরি কর্মকর্তা সেলিনা বানু পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা এডিজির দায়িত্বে রয়েছেন। প্রশাসন বিভাগের এডিজির পদটি শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই বিভাগের এডিজির দায়িত্বও পালন করছেন। পুরো অধিদপ্তরে তার ওপরে শুধু প্রেষণে আসা মহাপরিচালক রয়েছেন। অধিদপ্তরে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হওয়ায় তার কথাতেই চলে সবকিছু। অনিয়ম-দুর্নীতিতে এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের নির্দেশনাও অমান্য করে নিজের মতো ডিআইপির কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পেয়েই দীর্ঘদিন আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের ফাইলগুলো ছাড় করাতে তোড়জোড় শুরু করেন। অধিদপ্তরে তার সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফাইলগুলো অনুমোদন দিয়ে পাসপোর্ট প্রিন্ট করতে পাঠানো হয়। প্রতি পাসপোর্ট থেকে দেড় লাখ টাকা করে নিয়ে তা সিন্ডিকেটে ভাগবাটোয়ারা হয়। কথিত আছে, ওই সময়ে পাসপোর্ট ভবনের তলায় তলায় কোরবানি ঈদ’ চলেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত হলেও বিষয়টি রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন।

এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্টকে মাল্টিপল পাসপোর্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়। অনেকেই বিদ্যমান পাসপোর্টের তথ্য গোপন রেখে নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করেন। তবে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয় মেশিনে মেলানোর সময় তা আটকে যায়। আবার অনেকে প্রকাশ্যেই তথ্য পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন। তখন কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের অন্তত ১২ হাজার আবেদন তদন্তের জন্য জমা পড়ে আছে। এসব আবেদন যাচাই করে পুলিশের বিশেষ শাখার তদন্ত প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে আবেদনকারীর বিপরীতে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে সে ধরনের নির্দেশনাও রয়েছে; কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এডিজি সেলিনা বানু অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিপত্র জারি করে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের আবেদনের বিষয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এরপর নিজের ক্ষমতাবলে টাকার বিনিময়ে পছন্দমতো ফাইল ছাড় করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের হাজার হাজার ফাইলের মধ্যে ৫০০ ফাইল অনুমোদন দেওয়া নিয়ে খোদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেলিনা বানু প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। অধিদপ্তরের সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই তার রোষানলে পড়তে হয়। পরে টার্গেট করে কর্মকর্তাদের বদলি বা ন্যূনতম কারণেও বিভাগীয় মামলা ও বদলির মতো হয়রানিতে পড়তে হয়।

অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। বদলিজনিত চাকরি হলেও তিনি ঢাকার বাইরে খুব বেশি দায়িত্ব পালন করেননি। এ সুযোগে তিনি একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি পাসপোর্ট অফিসে তার নিজস্ব বলয়ের কর্মকর্তা বা কর্মচারী রয়েছেন। বিদেশি মিশনগুলোর কয়েকটিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরেও কর্মী রয়েছে। সেলিনা বানু অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় সবাই তাকে অতি সমীহ’ করে চলেন। বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিস থেকে তার অনুগতরা মাল্টিপল আবেদনগুলো বাছাই করে দিয়েছেন। সেগুলোই মূলত তিনি প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে ছাড় করিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ওই সূত্রটি জানায়, প্রতিটি মাল্টিপল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সেলিনা বানু ও অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট নিয়েছে দেড় লাখ টাকা করে। তবে দালাল চক্র ও অন্যান্য জেলা অফিসে তার অনুগত কর্মীরা আবেদনকারীদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা করে নেন। বছরজুড়েই সেলিনা বানু টাকার বিনিময়ে এ ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকেন। তবে ডিজির অনুপস্থিতিতে একসঙ্গে ৫০০ আবেদন অনুমোদন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাল্টিপল আবেদনের সবকিছু ঠিক থাকলেও একজন আবেদনকারী টাকা না দেওয়ায় পাসপোর্ট পাননি। এরপর ওই আবেদনকারী দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

সূত্র জানায়, শুধু মাল্টিপল পাসপোর্টই নয়, সেলিনা বানু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নো ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর) সিল দেওয়ার জন্যও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ কাজের জন্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাদিরা আক্তারকে ভিসা শাখার দায়িত্বে রেখেছেন। এই কর্মকর্তা সেলিনা বানুর অনুগত হওয়ায় তাকে পার্সোনালাইজেশন সেন্টার থেকে ভিসা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংযুক্ত করে রেখেছেন। প্রতিটি পাসপোর্টের এনভিআর দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা করে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো বিদেশি পাসপোর্টধারী দেশে এসে নো ভিসা রিকোয়ার্ডের আবেদন করলে তার আর বাংলাদেশে আসতে কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না।

ওই সূত্রটি জানায়, এই সিন্ডিকেট অবৈধভাবে দেশে বসবাসকারী বিদেশিদেরও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে ভিসা এক্সটেনশন বা মেয়াদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে আফ্রিকার নাগরিকরা টাকার বিনিময়ে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেশে মাদক কারবারসহ না অনিয়ম করছে।

মাল্টিপল পাসপোর্ট ইস্যু করে সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে এডিজি সেলিনা বানুর দপ্তরে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়; কিন্তু তিনি সময় দেননি। পরে তাকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে অভিযোগের বিষয়ে টেলিফোনে তার বক্তব্য চাওয়া হয়। তবে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে অভিযোগ থাকলেও আমি তো বক্তব্য দিতে পারব না, আমি তো পত্রিকায় বক্তব্য দিতে পারি না।’

বেনামি চিঠিতে গুরুতর তথ্য সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে:

এদিকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ তুলেছেন, সেলিনা বানুর অপকর্ম নিয়ে কথা বললেই তাদের ওপর খড়্গ নেমে আসে। এ জন্য মুখ না খুলে আতঙ্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দেশের প্রায় সব পাসপোর্ট অফিসে বেনামি চিঠি দিয়ে এই কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য থেকে নিস্তার চেয়েছেন। এসব চিঠিতে সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ৩০ বছর ধরে চাকরি করলেও তিনি ৬৪ জেলার কোথাও বদলি হননি। একবার অনিয়মের কারণে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও বেশি দিন থাকতে হয়নি। তার স্বামী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এ কে এম মাসুদুল হক রিজভী জামায়াতের পদধারী। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কামারুজ্জামান তাদের স্বজন। শুধু তাই নয়, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন এই দম্পতি।

চিঠিতে বলা হয়, এডিজি সেলিনা বানুর বাড়ি জামালপুরে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরে রেলে নাশকতার ঘটনায় তার স্বজনরাও জড়িত।

ওই চিঠির সূত্র ধরে সেলিনা বানুর গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পরিবারের কেউ সরকার সমর্থক নয়। তার স্বামী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরিচিত কয়েক শিক্ষক এবং সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক মাসুদুর রহমান কখনো স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলয়ে ছিলেন না। তবে প্রকাশ্যে তাকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা যায় না।

সেলিনা বানু আতঙ্কে পুরো পাসপোর্ট অধিদপ্তর:

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই বছরে এডিজি সেলিনা বানু আইফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে কর্মকর্তাদের কয়েকটি প্রাইজ পোস্টিং দেন। তার আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে না পারলে দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোতে বদলি হতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দেওয়া হয় কম গুরুত্বপূর্ণ পদ। কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তার ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়েছে ময়মনসিংহসহ ওই এলাকার বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন সময়েই কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিতে হয়। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার অনুগত করতে সামান্য ভুলেও বিভাগীয় মামলা, নানা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করার ভয় দেখানোসহ নানাভাবে হুমকি দেন। উড়ো চিঠিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অনিয়ম থেকে রক্ষা পেতে আবেদন জানিয়েছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সেলিনা বানুর নানা অনিয়ম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে। তবে কেউ গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। সবাই নাম প্রকাশ না করে তার অপকর্ম তুলে ধরেন।

সরকার সমর্থক না হয়েও সেলিনা বানু এত প্রভাবশালী কীভাবে? সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা সব সময়েই কৌশলে চলেন। যখন যে মহাপরিচালক দায়িত্বে আসেন, তিনি কৌশলে তার লোক হয়ে যান। নিজেকে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে প্রচার চালায় তার অধিনস্তরা। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগেও কিছু কর্মকর্তাকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তিনি পুরো অধিদপ্তরই নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা অনিয়ম করে চলেছেন।


আরও খবর