আজঃ রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন জিয়া

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০১ আগস্ট ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফাহাদ মশিউর রহমান

Image

আগস্ট আমাদের শোকের মাস। ১৫ আগস্ট এক অভ্যুত্থানে আমরা হারিয়েছি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এটা অভূতপূর্ব, অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিয়োগান্ত। আমরা আগে ছিলাম পাকিস্তানি। এখন বাংলাদেশি। আমাদের পাকিস্তানবিরোধী রাজনৈতিক মনস্তত্ত্বে আছে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও দ্রোহ। পাকিস্তানে নিয়মিত বিরতিতে জারি হয় কোটালের রাজ। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশেও এ রকম দেখেছি তিনবার। ১৯৭৫, ১৯৮২ ও ২০০৭ সালে। এই সব কটির মধ্যে ব্যতিক্রম হলো ১৯৭৫। অন্য সব অভ্যুত্থান ছিল রক্তপাতহীন। ১৯৭৫ ছিল রক্তাক্ত। কেন এমন হলো?

১৫ আগস্ট নিয়ে অনেক কাটাছেঁড়া হচ্ছে। আরও হবে। ৫২ বছর হয়ে গেল। অনেক কিছুই জানা গেল না। বলা হয়ে থাকে, এটা শুধু কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার কাজ নয়, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্রটি আজও উন্মোচন করা গেল না।

                   এটা এখন প্রমাণিত সত্য যে, সে সময়ের সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। খুনিদের সঙ্গে সহযোগিতার পুরস্কার হিসেবে ১৫ আগস্টের ৯ দিন পরই জিয়াকে সেনাপ্রধান করা হয়। এর পর জেনারেল জিয়া রাষ্ট্রপতিসহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন এই জিয়াউর রহমান।

১৫ আগস্ট নিয়ে হাতের কাছে আছে দুটি বই, লরেন্স লিফশুলৎজের দ্য আনফিনিশড রেভল্যুশন আর অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের দ্য লিগ্যাসি অব ব্লাড। দুটো বইকে অভ্রান্ত ধরে নিয়ে মন্তব্য করতে থাকলে তো আর অনুসন্ধানের দরকার পড়ে না। ১৫ আগস্ট ও তার পরপর আমরা দেখেছি কয়েকজন মেজর-ক্যাপ্টেন বঙ্গভবনে বসে ছড়ি ঘোরাত। তাদের নেতা ছিলেন রশিদ আর ফারুক। মসনদে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ। তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হন জেনারেল (অব.) এম এ জি ওসমানী। তার নিচেই ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান। এটা অনুমিতই ছিল যে মেজর জেনারেল সফিউল্লাহকে সরিয়ে নতুন একজনকে সেনাপ্রধান করা হবে। এটি করতে ৯ দিন লেগে গেল। সেনাপ্রধান হিসেবে মোশতাক, ওসমানী, রশিদ ও ফারুকের প্রথম পছন্দ ছিলেন খালেদ মোশাররফ। ওসমানী জিয়াউর রহমানকে খুব অপছন্দ করতেন। কিন্তু অভ্যুত্থানকারীদের বেশির ভাগের পছন্দ হিসেবে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করা হয়।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ভোরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ঘাতক মেজর ডালিম ভোর ৬টার দিকে বেতার ঘোষণায় জানায়, শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে এবং খোন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। সকাল প্রায় ৮টায় খোন্দকার মোশতাক বেতারে প্রদত্ত ভাষণে বলেন- তার উপর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের লাশ ধানমন্ডির বাড়িতে পড়ে থাকা অবস্থাতেই হত্যাকাণ্ডের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার সদস্য কয়েকজন বাদে প্রায় সবাই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী মোশতাক মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে যোগদান করে। রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাত্র ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধান এবং বিডিআর, পুলিশ, রক্ষী বাহিনী প্রধানরা পৃথকভাবে বেতারে খুনি সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।

হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহকর্মী ও মন্ত্রীদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই ঘাতক সরকারের মন্ত্রী হন। সেনাবাহিনী প্রধান কে এম সফিউল্লাহ ও উপপ্রধান জিয়াউর রহমান দুজনকেই বঙ্গবন্ধু স্বল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি প্রমোশন দিয়ে মেজর থেকে মেজর জেনারেল বানিয়ে সেনাপ্রধান ও উপপ্রধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে অদ্যাবধি কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া না গেলেও হত্যাকাণ্ডের পর কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হননি। অবশ্য তিনি গত সাড়ে চার দশকে বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করেছেন- তার পদস্থ সহকর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিলেন আবার কেউবা প্রতিরোধের ব্যাপারে তাকে সহযোগিতা করেনি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যার ১০ দিনের মাথায় সফিউল্লাহকে সরিয়েও দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় স্বাধীনতাবিরোধী চক্র খুবই উল্লসিত হয়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রবীণ জননেতা মওলানা ভাসানী সর্বাগ্রে ঘাতক মোশতাক সরকারকে সমর্থন দেন। তথাকথিত রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরিত তারবার্তায় নতুন সরকারের প্রতি অভিনন্দন ও তার পূর্ণ সমর্থনের কথা জানান। মওলানা এই পরিবর্তনকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে দেশ হতে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অবিচার দূর করার আহ্বান জানান। (ইত্তেফাক, ১৭.৮.১৯৭৫)

যেই রক্ষীবাহিনীর জন্যে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতি সেনাবাহিনীর অনেকের ক্ষোভ ছিল, সেই রক্ষীবাহিনী বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একটি গুলিও ছোড়েনি। এখানে উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট সকালে সশস্ত্র ডালিমচক্র সেনাপ্রধানকে বেতার ভবনে নিয়ে যেতে এলে সেনাপ্রধান প্রতিরোধের আশায় ৪৬ ব্রিগেডে যান। সেখানে গিয়ে দেখলেন, জনৈক ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পদতলে পিষ্ট করছে আর জোয়ানরা সরকার পতনে উল্লাস করছে।

হয়তো কেউ বলবেন, বঙ্গবন্ধুর লাশ বত্রিশ নম্বরে- রাস্তায় সশস্ত্র আর্মি, ট্যাঙ্ক নিয়ে ঘাতকের মহড়া, এর মধ্যে কীভাবে প্রতিরোধের ডাক দেয়া সম্ভব। তবে এটাও ঠিক রাজধানী ছাড়া সারা বাংলাদেশে কিন্তু আর্মি বা ট্যাঙ্কের মহড়া ছিল না। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আর্মির হত্যাকারী ওই ক্ষুদ্র অংশ ভয়ে ভয়ে ছিল। ওরা ঊর্ধ্বতনদের বলছিল- আমরা দেশের স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আপনারা পরিস্থিতি সামলান। উপ-প্রধান জিয়াউর রহমানসহ পাকিস্তান প্রত্যাগত প্রায় সকল সেনা কর্মকর্তা ঘাতক চক্রের প্রতি সমর্থন, আর সিজিএস খালেদ মোশাররফসহ আরও অনেকের যা হবার হয়ে গেছে এই মনোভাব- সর্বোপরি রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রী পদে বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীরাই শপথ নেয়ায় জনগণ যেমন বিভ্রান্ত হয়, তেমনি খুনি চক্রও সময় পেয়ে যায়।

যে কারণে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হয়নি তা হচ্ছে: ১. বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাকে হত্যা করা হয়েছে- এ কথা প্রথমে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেনি; ২. আবার হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতায় বড় বড় নেতাসহ কেউ কেউ হতভম্ব ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন; ৩. হত্যাকাণ্ডের পর পর বঙ্গবন্ধুর সহকর্মীরাই খুনি সরকারের রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়। তাছাড়া সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীপ্রধান, রক্ষীবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান, পুলিশ বাহিনীসহ সকল প্রধানদের খুনি সরকারের প্রতি আনুগত্য ও সমর্থনের ঘোষণা বেতার-টিভিতে প্রচারিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও জনগণ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্যাঙ্ক মোতায়েন, কারফিউ জারি ও সঙ্গীন উঁচিয়ে সেনা টহলে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যেসব নেতারা খুনিদের সমর্থন করেননি তাদেরকে গৃহবন্দি করা হয়। এসব কারণেই খুনিচক্র তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়নি।

মোশতাক-ফারুক-রশীদ-ডালিম চক্র বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যা করেই ক্ষান্ত থাকেনি, ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতিও তারা অবমাননা করেছে। বঙ্গবন্ধুর মরদেহ ১৫ আগস্ট সারা দিন, ১৫ আগস্ট দিবাগত রাত শেষে ১৬ আগস্ট বিকেলে গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যাওয়া হয়। আর্মির যে কজন বঙ্গবন্ধুর মরদেহ টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যায় তারা দাফন-কাফন অর্থাৎ ইসলামি নিয়ম-কানুন পালন না করেই লাশ কবরস্থ করতে চেষ্টা চালায়। কিন্তু স্থানীয় মৌলবির চাপের মুখে কফিন খুলে বঙ্গবন্ধুর মুখ দেখানো হয় এবং খুব দ্রুত ১০/১৫ জনের উপস্থিতিতে জানাজা দিয়ে লাশ দাফন করা হয়। আর্মির উদ্যত আচরণের কারণে স্থানীয় লোকজন বঙ্গবন্ধুর লাশ দেখাতো দূরের কথা- তারা আশেপাশের গ্রাম ছেড়ে দূরে চলে যায়। বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্যদের লাশ বনানী গোরস্তানে ১৫ আগস্ট দিবাগত শেষ রাতে জানাজা-গোসল ছাড়াই কবরস্থ করা হয়।

আরেকটি আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো বঙ্গবন্ধুর আর্মি, পুলিশ, বিডিআর, প্রায় তিনশ জন সংসদ সদস্য, সহকর্মী যারা সেদিন রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী হলেন- তাদের অন্তত একজনও শেষবারের মতো বঙ্গবন্ধুর মুখ দেখার সাহস করেননি। অথচ এই বঙ্গবন্ধুর কারণেই বাংলাদেশ হলো- ক্যাপ্টেনরা জেনারেল হলো- অনেক অখ্যাত লোক খ্যাত হলো, মন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি হলো।

হত্যা-ষড়যন্ত্রে জড়িত জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ, তাহের, মঞ্জুরসহ আরও অনেকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। মাহবুব আলম চাষী- দেশের বাইরে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। প্রায় দুই যুগ চোরের মতো গৃহবন্দি এবং দুর্নীতির দায়ে কয়েক বছর জেল খেটে ১৯৯৬-এর মার্চে বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের মৃত্যু হয়েছে। ৩৫ বছর পরে হলেও ২০১০-এর ২৮ জানুয়ারি রাতে বঙ্গবন্ধুর ৫ ঘাতকের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

এতসব কিছুর পরেও যতদিন মানুষের হৃদয়ে স্পন্দন থাকবে, বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে- হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ততদিন শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হবে।


আরও খবর



সারাহ ইসলামের কিডনি নেওয়া সেই শামীমাও মারা গেলেন

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

গত বছরের জানুয়ারি মাসে সারাহ ইসলামের মরণোত্তর অঙ্গদানের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট (ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন) করা হয়। এই কার্যক্রমটি সফল প্রতিস্থাপন দাবি করা হলেও কিডনি নেওয়া দুজনেই কেউই আর বেঁচে রইলো না।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন কিডনি নেওয়া দ্বিতীয় রোগী শামীমা আক্তার (৩৪)। ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রথমজন ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।

শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিল শামীমা। সম্প্রতি শামীমার ভাই জানায়, ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে শামীমা। পরে তিন সপ্তাহ আবারও বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও কেন শুকিয়ে যাচ্ছিল সেটি ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। চার দিন আগে আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে।

মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে এই সার্জন বলেন, তার সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়েছিল। সে অনুযায়ী ডায়ালাইসিসও শুরু করেছিলাম আমরা। কিন্তু উন্নতি হয়নি। বাইরের হাসপাতালেও একদিন নেওয়া হয়েছিল, অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় আবারও আমাদের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই আজ রাত ৯টার দিকে মারা যান তিনি।

কিডনি প্রতিস্থাপনের সময় নেতৃত্ব দেওয়া এই চিকিৎসক আরও বলেন, হেপাটাইটিস সি পজিটিভ হলে ব্লাড কাজ করে না। এজন্য বিশেষ করে রক্ত লাগে, সেটিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর রেসপন্স করেনি। বাড়িতে থাকার সময়ে অবস্থা খারাপ হলেও সময় মতো আমাদের জানানো হয়নি। অনেকটা অবহেলা ছিল। খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তাহলে হয়তো এই অবস্থা দেখতে হতো না।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে মারা যান সারাহ ইসলামের আরেক কিডনিগ্রহীতা হাসিনা আক্তার। কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিশিষ্ট কিডনি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হারুন আর রশিদ সে সময় জানিয়েছিলেন, হাসিনা আক্তারের শরীরে যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, তা ছিল দুর্বল। তাতে দুটি টিউমার ছিল। প্রতিস্থাপনের আগে টিউমার দুটি ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তবুও প্রতিস্থাপনের পর থেকে হাসিনা বারবার সংক্রমণে ভুগছিলেন। পরে কিডনি ফাউন্ডেশনে মারা যান তিনি।


আরও খবর



মেহেরপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আব্দুল আলিম, মেহেরপুর

Image

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মহাজনপুর গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন।

দুই প্রার্থীর একজন হলেন- মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা।

রফিকুল ইসলাম তোতার দাবি, শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমাম হোসেন মিলুর কিছু সমর্থক মহাজনপুর বাজারে তাদের একটি অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় তার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তার ৫ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ইসলাম শেখের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অন্যরা হলেন- রাজন আলী (২৬), শাহাজাহন আলী (২৫), আব্দুস সাত্তার (৫৫) আনারুল ইসলাম (৫০)। তাদের মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে আমাম হোসেন মিলুর দাবি, তার সমর্থকরা একটি অফিস উদ্বোধনের জন্য রফিকুল ইসলাম তোতার অফিসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তোতার কর্মী-সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তার ৮ কর্মী-সমর্থক রাসেল শেখ (২৩), শাহেদ আলী (২৫), শাহাবুদ্দীন (৫০), উজ্জ্বল (৩২), রমজান আলী (২১), মেহেরাব হোসেন (২২), সৌরভ মেম্বার (৪৭) ও হাবিবুর রহমান (২২) আহত হয়। তাদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার দত্ত বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী আমাম হোসেন মিলু ও রফিকুল ইসলাম তোতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষের লোকজন লাঠি-শোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তবে অফিস ভাঙচুরের বিষয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী একে অপরকে দোষারোপ করছেন। ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। ফুটেজ দেখে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি।


আরও খবর



কী করবেন গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

তীব্র গরমে পুড়ছে দেশ। এই সময়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা আছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। ভরদুপুরে গরমে বাইরে কোথাও যাওয়ার পথেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা হরহামেশাই হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই এই ভ্যাপসা গরমে একেবারে অচেতন হয়ে যান।  প্রচণ্ড রোদ আর গরমে হিটস্ট্রোক হতে পারে যে কোনো বয়সের মানুষের।

যদি মনে হয় কেউ  হিটস্ট্রোক হয়েছে তাহলে সবার আগে অসুস্থ ব্যক্তিকে একটু শীতল জায়গায় নিন, গাছের নিচে বা কোনো দোকানের ভেতরে ফ্যানের বাতাসের নিচে। সম্ভব হলে ঠান্ডা পানিতে বা বরফে ভেজা কাপড় দিয়ে বারবার গা মুছে দিন বা শরীরে পানি স্প্রে করুন এবং শিগগির হাসপাতালে স্থানান্তর করুন।

সারাদিন নানা কাজে রোদের মধ্যেই ঘুরেছেন। গরমে অসুস্থতা আচমকা আপনার পেটে ও পা দুটোয় যেন টান লাগল বা কেউ খামচে ধরল। এ সমস্যার নাম হিট ক্র্যাম্প। শরীরে পানি ও লবণের অভাবে এমনটা ঘটে। এমন অবস্থায় দ্রুত গরম ও রোদ থেকে সরে যান। তুলনামূলক ঠান্ডা জায়গায় বসে পড়ুন। প্রচুর পানি ও লবণসমৃদ্ধ তরল (যেমন: ডাবের পানি, লেবু-লবণের শরবত) পান করুন। পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। খুব ধীরে মাংসপেশি নাড়াচাড়া এবং পায়ের হালকা ব্যায়াম করুন।

সারা দিন রোদে গরমে ঘুরে দেখলেন ত্বক লালচে হয়ে গেছে বা পুড়ে গেছে। র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। এটাকে বলা হয় হিট র‍্যাশ। এ সমস্যা সমাধানের জন্য ত্বকে ঠান্ডা বরফ বা ভেজা কাপড় লাগান।

তীব্র গরমে যে কেউ এমন আকস্মিকভাবে যে কেউ অসুস্থ হতে পারে তাই সাবধান থাকতে হবে। গরমে বাড়ির বাইরে গেলে সঙ্গে রাখুন পানি, ছাতা এবং সানগ্লাস। সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল পান করবেন। বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। গরমে ঘরে ফিরেই ঠান্ডা পানি খাবেন না কিংবা গোসল করা থেকে বিরত থাকুন। আগে শরীরটা বাতাসে জুড়িয়ে নিন। প্রচণ্ড গরমে ঘরের ভেতরের বদ্ধ পরিবেশে হাঁসফাঁস লাগলে ছাদে যান কিংবা বারান্দায় গিয়ে বসুন।


আরও খবর



সৌদি সুন্দরী রুমি আল-কাহতানির পাঁচ অজানা তথ্য

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

প্রথমবারের মতো বিশ্বসুন্দরী (মিস ইউনিভার্স) প্রতিযোগিতায় সৌদি আরবের হয়ে অংশ নিতে যাচ্ছেন সৌদি মডেল রুমি আলকাহতানি। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে মেক্সিকোতে প্রতিযোগিতার এ আসর অনুষ্ঠিত হবে। ইনস্টাগ্রামে আল-কাহতানি লিখেছেন, মিস ইউনিভার্স ২০২৪-এ অংশ নিতে পেরে আমি সম্মানিত। এটি সৌদি আরবের প্রথম অংশগ্রহণ।

নাম সামনে আসার পর ইতঅমধ্যে রুমির ইনস্টাগ্রামে উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করেছেন নেটিজেনরা। কে এই সুন্দরী, কী তার পরিচয় তা জানতেই চলছে স্ক্রলিং। রুমি আলকাহতানির ইনস্টাগ্রাম থেকে পাওয়া গেছে পাঁচটি তথ্য।

একাধিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিজয়ী : রুমি আল-কাহতানি জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদির রাজধানী রিয়াদে। নিজ ইনস্টাগ্রামে তার চোখ ধাঁধানো সব ছবি দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের একাধিক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মুকুট জিতেছেন রুমি। মিস আরব ওয়ার্ল্ড পিস, মিস ওমান, মিস মিডল ইস্টসহ আরও বেশ কিছু ইভেন্টে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। প্রতিটি প্রতিযোগিতায় তার অভিজাত লুক মুগ্ধ করেছে সবাইকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় : ইনস্টাগ্রামে রুমির রয়েছে লাখ লাখ অনুসারী। আর এক্সে (পূর্বের টুইটারে) রয়েছে দুই হাজারের বেশি অনুসারী। স্ন্যাপচ্যাটেও বেশ সক্রিয় থাকতে দেখা যায় এই সৌদি সুন্দরীকে।

ভালোবাসেন ঘুরে বেড়াতে : আরব আমিরাত, মিশর, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করে সুন্দরী প্রতিযোগিতার মুকুট জয় করছেন তিনি। জানা গেছে, ভ্রমণ প্রীতি রয়েছে রুমি আল-কাহতানির। সম্প্রতি তার পোস্ট করা একটি ছবিতে দেখা গেছে, দুবাইয়ের একটি রুপটপ পুলে অবকাশ যাপন করছেন এই সুন্দরী।

ডিজাইনার জুয়েলারি সংগ্রহ করতে ভালোবাসেন : রুমি ইনস্টাগ্রামে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতার ছবিই আপলোড করেন না। একটু ঘাঁটতেই দেখা যায়, সৌদি এই সুন্দরী নিখুঁত ও ডিজাইনার গয়না পরতে বেশ ভালোবাসেন। কার্তিয়ারের ব্রেসলেট থেকে শুরু করে বুলগেরির গয়না, সবই খুঁজে খুঁজে নিজের গয়নার বাক্সে রাখেন তিনি।

দিন শেষে পরিবারই তার সব : পারিবারিক বন্ধন যে রুমির কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সেটাও বুঝা যায় তার নিউজফিড দেখে। দুই বোন রাজান ও জেদাইয়ের সঙ্গে প্রায়ই ছবি পোস্ট করেন তিনি।


আরও খবর



ইরাকি জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরাকি জনপ্রিয় টিকটক তারকা ওম ফাহাদকে গত রাতে বাগদাদের পূর্বাঞ্চলীয় জাইউনা জেলায় নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। টিকটকে তার হাজার হাজার অনুসারি রয়েছে। খবর আল জাজিরা

নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার রাতে কালো পোশাক ও হেলমেট পরা একদল লোক মোটরবাইকে করে এসে কিছুটা পথ হেটে একটি কালো রংয়ের এসইউভি গাড়িতে গুলি চালায়। ওই গাড়িতেই টিকটক তারকা ওম ফাহাদ বসে ছিলেন।

ইরাকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাকে হত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওম ফাহাদের প্রকৃত নাম গুফরান সায়াদি, টিকটকে তার অর্ধ মিলিয়ন অনুসারি রয়েছে। পপ মিউজিকের সঙ্গে নেচে ভিডিও তৈরি করে সেগুলো টিকটিকে শেয়ার করতেন তিনি। তার তৈরি ভিডিওতে শালীনতা নষ্ট করে এমন বক্তব্য এবং জনসাধারণের নৈতিকতা ভঙ্গের দায়ে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। যদিও তার ভিডিওগুরো ১০ লাখের অধিক ভিউ হয়েছে।

ওই সময়ে পাঁচ কনটেন্ট ক্রিয়েটরকেও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়। ওম ফাহাদের ওই ধরনের অশালীন ভিডিও তৈরি ইরাকি সমাজ এবং পারিবারিক সংস্কৃতিতে কতটা প্রভাব পড়ে তা জানার জন্য ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একটি কদন্ত কমিটি গঠন করে।

ওম ফাহাদের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জারকে হত্যার মতো ঘটনা এটাই প্রথম নয়, দেশটিতে অনলাইনে মুক্তমত প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাপক কঠোরতা রয়েছে। এটি দিন দিন বাড়ছে। এর আগেও ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী টিকটক তারকাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ২০২৮ সালে ২২ বছর বয়সী মডেল ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জার তারা ফারেজকেও বন্দুকধারীরা হত্যা করে।

ইরাকে অনার কিলিং (সম্মান রক্ষার্থে হত্যা) এর মতোও ঘটনা রয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে ২২ বছর বয়সী ইউটিউবার তিবা আল আলীকে তার বাবা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।


আরও খবর