আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন শক্তিশালী বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখে ছিলেন। যেখানে বিচার প্রার্থী জনগণ শুধু ন্যায় বিচার পাবেন। বঙ্গবন্ধু শুধু এই স্বপ্নই দেখেননি বাংলাদেশকে তিনি স্বাধীন করার পর একটি আইনি কাঠামো তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসকদের যাতাকলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আর প্রস্ফুটিত হতে পারেনি।
আজ রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংসদ ভবনের অফিস কক্ষ থেকে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৮ তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী মলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচার বিভাগের সমস্যা দূরকরণে বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যার মধ্যে অন্যতম পদক্ষেপ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রিসির প্রথম পর্যায়ে ২ হাজার ২শ ৬০ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৪১টি জেলায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্মন প্রকল্প। ইতোমধ্যে এর নির্মান কাজ শেষে হয়েছে। এবং আরও ৩৮টি জেলায় নির্মিত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উদ্বোধন করা হবে। পিরোজপুরে ৫৬ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ৮তলা ভবন উদ্বোধন করা হলো।
মন্ত্রী আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতকি অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সুদক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বেও কারনে পদ্মা সেতু কর্ণফুলী টানেল, মেট্রো রেল, হজরত শাহ জালাল বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, এলিভেটেড এক্সেপ্রেস ওয়ে, রূপপূর পারমানবিক প্রকল্পসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় পিরোজপুরে আরও উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের উন্নয়নের গতি, প্রকৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে দেখা যায় তিনি অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাতে তিনি সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে সংসদ ভবনের অফিস কক্ষ থেকে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৮তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন। অপর দিকে পিরোজপুর প্রান্তে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুর হক উদ্বোধন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সম্মেলন কক্ষে স্থাপিত (অস্থায়ী) উদ্বোধনী ফলক উন্মেচন করেন পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মহারাজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রকল্পের প্রধান সম্মনায়ক (যুগ্ম সচিব) বিকাশ কুমার সাহা ও জেলা জজ মোহাম্মদ মোক্তাগীর আলম।
৫৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ভবনের কাজ বাস্তবায়ন করেছে গণপূর্ত বিভাগ। ৮ তলা এই ভবনে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে এজলাস কক্ষ সংকটের সমাধানের পাশাপাশি বিচারকার্যে গতি বাড়বে বলে মনে করেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।
বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য এখানে রয়েছে ২২টি এজলাস, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৫০০ কেবি সাবস্টেশন, অত্যাধুনিক ৩টি লিফট, অত্যাধুনিক লাইব্রেরি, কনফারেন্স রুম, ব্রেষ্ট ফিডিং কর্নার, নামাজের কক্ষ এবং বিচারকদের খাস কামরা। এছাড়াও এখানে রয়েছে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক হাজতখানাসহ প্রয়োজনীয় অফিস কক্ষ, অপেক্ষমাণ কক্ষ এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা।
আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মহারাজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রকল্পের প্রধান সম্মনায়ক (যুগ্ম সচিব) বিকাশ কুমার সাহা ও জেলা জজ মোহাম্মদ মোক্তাগীর আলম জেলা প্রশাসক জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সাদারণ সম্পাদক এম ডি আউয়াল।
উপস্থিত ছিলেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস প্রমূখ।