মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল
করিম এমপি বলেন, ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলেও, বঙ্গবন্ধু সমকালীন ইতিহাস
না, মহাকালের মহামানব হিসেবে আবির্ভুত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু একজন ব্যক্তি নয়। বঙ্গবন্ধু
একটি বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শ, বঙ্গবন্ধু পথ চলার
প্রেরণা। বঙ্গবন্ধু একটি সংগ্রাম-ইতিহাস-ঐতিহ্যের সংমিশ্রিত পথ চলার পাথেও। কাজেই
ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু না থাকলেও আদর্শিক বঙ্গবন্ধু বাংলা, বাঙালী জাতির, বাংলাদেশ এবং
সারা বিশ্বের যেখানে যত বাঙালী আছে তাদের কাছে শ্রদ্ধার একটি আসন হয়ে থাকবেন। এ জন্য
আমি প্রায়ই বলার চেষ্টা করি বঙ্গবন্ধুকে ব্যক্তি সত্ত্বা ভাবার কারণ নেই। তিনি আমাদের
দর্শন । তিনি আমাদের একটি আদর্শ। যে আদর্শ কখনও বিলীন হয় না। আদর্শকে গুলি হত্যা করা
যায় না। আদর্শকে ইতিহাস থেকে সরিয়ে রাখলেই ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। মন্ত্রী
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের
সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে যুক্ত থেকে এসব
কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, রেডিও টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুকে
প্রচার করতে দেয়া হয়নি ২৬ বছর। তাতে বঙ্গবন্ধুর কিছু হয় না। আজ নতুন প্রজন্ম জানতে
পেরেছে বঙ্গবন্ধু কে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কোন অবস্থানের মানুষ ছিলেন। বিশ্ব পরিমন্ডল আজকে
বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে বিশ্বের খ্যাতিনামা কৃতি ব্যক্তিরা রাষ্ট্রপ্রধানরা, সরকারপ্রধানরা
এসেছেন। বাণী পাঠিয়েছেন। সকলের কাছেই একই উচ্চারণ বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়।
তিনি ছিলেন সারা বিশ্বের নেতা। এই বিশ্বনেতা যা কিছু রেখে গেছেন, তাঁকে ঘিরেই কিন্তু
আজ বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। এক হচ্ছে তাঁর আদর্শ দ্বিতীয় হচ্ছে তার সুযোগ্য রক্তের উত্তোসূরী
শেখ হসিনা। শেখ হাসিনা বাঙলী জাতির জন্য পরম করুনাময়ের নেয়ামত হিসেবে এসেছেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাঙালী জাতীয় ইতিহাসে
গৌরবময় শ্রেষ্ঠতম দুই সন্তানকে যদি বলতে হয় একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দ্বিতীয়ত বঙ্গবন্ধু
কন্যা শেখ হাসিনা। আরও অনেকে আছে। কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিনের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে
মুক্ত করে আজকের উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক অসম্প্রদায়িক ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর
হাত ধরে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন। সে কারণেই যখনই ৭ মার্চ আসে
তখনই আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাঁকে স্মরণ করি। তাঁর ভাষণের প্রতিটি শব্দ কত প্রয়োজনীয়
ছিলো। তিনি তাঁর ভাষণে বঞ্চনার ইতিহাস যেমন তুলে ধরেছেন, নির্যাতনের কথা বলেছেন, জনগণের
ম্যান্ডেট পাওয়ার পর অধিকার দেওয়া হচ্ছে না সে কথা তুলে ধরেছেন। কিভাবে নির্বিচারে
মানুষ হত্যা করেছে সেটা বলেছেন। যে প্রেক্ষাপটে নিরস্ত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব লক্ষ
লক্ষ মানুষকে সামনে রেখে যে অকুতোভয় হিসেবে নির্দেশনা দিয়েছিলেন এটা আমি মনে করি এক
মহামানব ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব ছিলো না। জীবন যার উৎসর্গিত ছিলো বাঙালী জাতির জন্য।
স্বপ্ন যার ছিলো বাঙালীকে মুক্তি অন্বেষণে। আমাদের জীবন সংগ্রাম আমাদের শ্রদ্ধা অনন্তকাল
থাকবে।
এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় শহরের বঙ্গবন্ধু
চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মধ্য থেকে দিবসটির কর্মসূচি
শুরু হয়। এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমানসহ
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া
পুষ্পস্তবক করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সরকারি বেসরকারি
প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষক বৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার
মোহাম্মদ সাঈদুর রহামন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস, সাবেক
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতম নারায়ন রায় চৌধুরী, যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু,
মুক্তিযোদ্ধা এম এ রাব্বানী ফিরোজ, সদর উপজেলা রেজাউল করিম মন্টু সিকাদার, প্রেসক্লাবের
সভাপতি শফিউল হক মিঠু, পুজা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু প্রমূখ।