ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:
দেশি-বিদেশি প্রায় চার হাজার ৫০০ শ্রমিকের নিরলস শ্রম ও ঘামে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। এরইমধ্যে সেতুর ৬২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নির্মিত হচ্ছে এ রেলওয়ে সেতু। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ সেতুর দৈর্ঘ্য চার দশমিক ৮০ কিলোমিটার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের আগস্টে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ শেষ হওয়ার কথা। তবে তিন থেকে চার মাস অতিরিক্ত মেয়াদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। সেতুটি হবে সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকে। দুই পাশে নির্মাণ করা হবে শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট। এছাড়া সাত দশমিক ৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার সংযোগ রেললাইন। এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানের দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন>> নারায়ণগঞ্জে শিশু জুঁই হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্রকৌশলীর জানান, সেতুটি নির্মাণে বাংলাদেশসহ জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া এবং ফিলিপাইনের কর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন। ১০৩ জন বিদেশি প্রকৌশলীসহ দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৭০০ জনের বেশি প্রকৌশলী কাজ করছেন।
দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও নির্মাণ শ্রমিকরা সেফটি ফাস্টের আওতায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। তাদের মধ্যে কেউ বালু দিয়ে জিও ব্যাগ ভর্তি করছেন, কেউ সেতুর নির্মাণ সামগ্রী উঠানো-নামানোর কাজ করছেন ক্রেন দিয়ে, কেউ রেললাইনে পাথর ফেলে সমান করছেন আবার কেউ স্পিড বোট দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের স্থলভাগ থেকে আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
প্রকৌশলীরা জানান, এ সেতু নির্মিত হলে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন চলাচল ও পণ্য পরিবহন সহজ হবে। এর ওপর দিয়ে চলবে ৮৮টি ট্রেন। সাধারণ ছাড়াও দ্রুত গতির (হাইস্পিড) ট্রেন চলাচলে সক্ষম করে নির্মাণ করা হচ্ছে সেতুটি। সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের পর এক বছর) ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করবে ট্রেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প পরিচালক ফাত্তাহ আল মো. মাসুদুর রহমান জানান, এ রেলওয়ে সেতুর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের পূর্ব অংশের সংযোগ রেললাইন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। এছাড়া পশ্চিম অংশেও দ্রুত গতিতে সংযোগ রেললাইনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। শত বছর পরও এ সেতুর তেমন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। এরইমধ্যে সেতুর কাজ ৬২ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাকি কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।