রাবি প্রতিনিধি:
যে দেশে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও গোষ্ঠীর সমান অধিকার থাকে না, সেটা আধুনিক রাষ্ট্র হতে পারেনা। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন এ দেশে কোন ধরনের ধর্ম-বর্ণের বৈষম্য রাখেননি। বরং বাঙালি জাতিকে অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তিনি ছিলেন আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মানের কারিগর।
সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের(রাবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধু ও আধুনিক রাজনীতি’শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিশিষ্ট লেখক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক স্বদেশ রায়।
রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে স্বদেশ রায় বলেন, এই উপমহাদেশে ইংরেজদের দ্বারা যখন মানুষ পদদলিত হচ্ছিল, তখন রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য গড়ে উঠে কংগ্রেস। তবে সেটাও যখন ধর্মের দ্বারা বৈষম্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন গড়ে উঠলো মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সেখানেও ধর্মীয় বৈষম্য যখন চরমে, তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঘটল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
তিনি আরো বলেন, হত্যার আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে নিজ বাসভবন ছেড়ে বঙ্গভবনে অবস্থানের অনুরোধ করেছিলেন। তখন বঙ্গবন্ধু হেসে বলেছিলেন কোন বাঙালি আমাকে হত্যা করতে পারেনা। কিন্তু তাঁর সেই অগাধ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছিল কতিপয় বাঙালি বিশ্বাসঘাতক। সেদিন ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তাঁর সেই বিশ্বাস ও সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নও।
এসময় রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও শেখ মুজিবুর রহমান এই দু’টি শব্দ একটি আরেকটির পরিপূরক। বঙ্গবন্ধু সতত-সমুজ্বল, সর্বত্র বিরাজমান। ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের মহিমা ও দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মে প্রতিফলিত করাই হোক আজকের এই দিনে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার। ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে সহ বিভিন্ন অনুষদ অধিকর্তা, হল প্রাধ্যক্ষ ও বিভাগীয় সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার শোক র্যালিসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানে তাঁরা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।