সহজ ম্যাচটা যখন কঠিন হয়ে গেল আফগান বোলার করিম জানাতের হ্যাট্রিকে। তখন ২২ গজের ক্রিজে দাঁড়িয়ে তাওহীদ হৃদয়। আর ম্যাচ জেতাতে ২ বলে প্রয়োজন হয় ২ রানের। এ যেন এক নাটকীয় মোড় ঘোরানো খেলা। যারা টিভি স্ক্রিনে খেলা দেখেছেন, নিশ্চই দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা ছিল। তেমনি মাঠের গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের মধ্যেও নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।
ব্যাট হাতে তখন ক্রিজে আসেন পেসার শরিফুল ইসলাম। আর নন-স্ট্রাইকে থাকা তাওহীদ হৃদয় সাহস দিচ্ছিলেন শরিফুলকে। শরিফুলকে একটা কথাই বলেছিলেন হৃদয়, ‘বল ব্যাটে না লাগলেও তুই দৌড়াবি। তুই ম্যাচটা জেতাবি। শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাতে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো জানান তাওহীদ হৃদয়।
সবকিছু মিলে ম্যাচে হতাশার মোমেন্ট ছিল
কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হৃদয় বলেন, আমি মনে করি আজকের ম্যাচটাতে আমরা
সবাই ভালো পারফর্ম করেছি। তবে শরিফুলকে বলেছিলাম ‘তুই ম্যাচটা জেতাবি’, হয়েছেও তাই।
পঞ্চম বলে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছালেন শরিফুল। রাখলেন বন্ধুর কথা। ২ উইকেটের
জয় পায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন<< রুদ্ধশ্বাস জয় নিয়ে যা বললেন টাইগার অধিনায়ক
দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা
ডানহাতি এই ব্যাটার বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল সবার ওপরে। কারণ, তাসকিন
ভাই, নাসুম ভাই, এমনকি শরিফুল, সবাই খুব ভালো ব্যাটিং করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি
ম্যাচে তাসকিন ভাই পরপর দুটি চার মারার পর আমরা ম্যাচ জিতে গেছি।
তিনি বলেন, শরিফুলের ওপরও আগে থেকেই সেই
বিশ্বাস ছিল আমার। কেননা, আমরা একসঙ্গে অনূর্ধ্ব উনিশে খেলছি। সে বড় বড় ছয় মারতে পারে।
শরিফুল আসা পর্যন্ত আমার তাই বিশ্বাস ছিল। শরিফুলকে একটা কথাই বলেছিলাম, বল ব্যাটে
না লাগলেও তুই দৌড়াবি। পরে শেষদিকে বলেছি, ম্যাচটি তুই-ই জেতাবি। যেমন কথা তেমনি কাজ।
কারণ ওর সম্ভাবনা আমি জানতাম।
সিলেটে সিরিজের রুদ্ধশ্বাস প্রথম টি-টোয়েন্টিতে
এক বল হাতে রেখে ২ উইকেটে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজে নিয়েছে
১-০ লিড।
আরও পড়ুন<< চীনকে বিধ্বস্ত করে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারলো ব্রাজিল
ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫৫ রানের চ্যালেঞ্জিং
লক্ষ্য পায় টাইগাররা। ১০ ওভার যেতেই ৬৪ রানে নেই ৪ উইকেট। আফগানিস্তানের বোলিং শক্তির
কথা সবারই জানা। এই ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে বুঝি ছুটেই গেল, মনে হচ্ছিল তখন।
তবে তাওহিদ হৃদয় আর শামীম হোসেন পাটোয়ারী
দেখালেন তারুণ্যের শক্তি। চাপের মুখে ভড়কে না গিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি গড়লেন তারা। যে
জুটিতেই ম্যাচটা চলে আসে বাংলাদেশের দিকে। ম্যাচ জিতিয়ে শরিফুল জিতে নেন ম্যান অব দ্যা
ম্যাচ পুরস্কার।