বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সাব-স্টেশন নির্মাণ কাজ না করেই বিল উত্তোলনের মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে এর প্রাথমিক সত্যতাও মিলেছে।
কোয়ালিটি পাওয়ার টেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বড় অংকের ঘুষ দিয়ে সাব-স্টেশন নির্মাণ কাজ দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা মিললে কমিশন থেকে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নথিপত্র তলব করে চিঠি দিয়েছে।
বিটিভি'র মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠিতে আটটি নথিপত্রের তলব করা হয়েছে এবং আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নথিপত্রগুলো পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
চিঠিতে তলবকৃত নথিপত্রগুলো হচ্ছে;
১. বাংলাদেশ টেলিভিশনের দেশব্যাপী ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার প্রবর্তন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিটিভির বিভিন্ন কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রের মেরামত ও সংস্কার কাজের (WD-13 প্যাকেজ) রেকর্ডপত্র।
২. পত্রিকায় প্রকাশিত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি এবং কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদার কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্র সিডিউল এবং প্রাক্কলিত ব্যয়ের HOPE কর্তৃক অনুমোদিত কপি।
৩. তুলনামূলক বিবরণী ও মূল্যায়ণ কমিটির প্রতিবেদন।
৪. ঠিকাদারের সাথে সম্পাদিত চুক্তিপত্র।
৫. বিভিন্ন কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে সম্পাদিত কাজের চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্তৃক কাজ সম্পাদনের/বিল পরিশোধের প্রত্যয়ন।
৬. বিভিন্ন কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রের কাজের বিপরীতে ঠিকাদারকে প্রদত্ত প্রথম থেকে চূড়ান্ত বিলের কপি এবং বিল ও চেক বই রেজিস্টার।
৭. বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রধান কার্যালয়ের এবং বিভিন্ন কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রের কাজের তদারকি এবং বিল প্রদানের সুপারিশকারী প্রকৌশলীর নাম ও ঠিকানা।
৮. লট-৩ (জেনারেটর ক্রয়) এর চুক্তি সংক্রান্ত এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যাবতীয় সকল নথি, দরপত্র সিডিউল, মূল্যায়ন প্রতিবেদনের কপি।
এর আগে গত ২০২২ সালের ১৫ মে বিটিভি'র প্রধান প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক মনির আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপকেন্দ্রের কাজ না করিয়ে চুক্তি সম্পাদিত প্রতিষ্ঠানকে বিল দেওয়ার মাধ্যমে ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৮৬৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অভিযান পরিচালিত করে দুদক। অভিযানে এর প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টেলিভিশনের ১৪টি উপকেন্দ্রে নতুন ২৫০ কেভিএ সাব-স্টেশন স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদার সঠিকভাবে কাজটি সম্পন্ন না করায় প্রথমে সম্পূর্ণ বিল প্রদান না করে আংশিক বিল প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক হিসাবে মুনীর আহমেদ দায়িত্ব পাওয়ার পর ঘুষের বিনিময়ে ঠিকাদারকে ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৮৬৫ টাকার বিল দিয়ে দেন।