ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। আফগানিস্তানকে উড়িয়ে শুরু করা টাইগারদের অবশ্য পরের গল্প হতাশার। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে শুরু এরপর নিউজিল্যান্ডের পর আজকের ম্যাচে ভারতের কাছেও পরাস্ত হয়েছে সাকিববিহীন বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ দল।
আজ পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করে।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খুব সাবধানী করে। ফলে দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম প্রথম ৫ ওভারে মাত্র ১০ রান তুলতে পারেন। তবে পাওয়ার প্লের শেষ ৫ ওভারে বিস্ফোরক ব্যাটিং করেন এই দুই ওপেনার। ভারতীয় বোলারদের তুলোধুনো করে তুলে ৩০ বলে তুলে নেন ৫৪ রান। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন জুনিয়র তামিম।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং রানের জুটি এখন তানজিদ-লিটনের (৮৮ বলে ৯৩)। আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের ৬৯ রান।
ফিফটির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তানজিদ। কুলদীপ যাদবের বলে এলবি হওয়া এই ব্যাটার ৪৩ বলে ৫১ রান করেন। তবে এরপর এ ম্যাচে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে টাইগারদের নেতৃত্ব দেওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত দ্রুত ফিরে যান। ১৭ বলে ৮ রান করে তিনি রবীন্দ্র জাদেজার বলে আউট হন।
টপঅর্ডারে খেলতে আসা মেহেদী হাসান মিরাজ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। মোহাম্মদ সিরাজের বলে খোঁচা দিলে উইকেটের পেছনে দারুণ এক ক্যাচ নেন উইকেট রক্ষক লোকেশ রাহুল। মিরাজ ১৩ বলে ৩ রানে ফেরেন। ভালো খেলতে থাকা লিটন দাস ফিফটির পরও দেখেশুনে ব্যাট চালান। তবে জাদেজার বলে মাথা গরম করে ফেলেন এই ব্যাটার। তুলে মারতে গিয়ে শুভমান গিলের ক্যাচে মাঠ ছাড়েন। ৮২ বলে ৭টি চারে ৬৬ রান আসে লিটনের ব্যাট থেকে।
অফফর্মে থাকা তাওহীদ হৃদয়ও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। শার্দুল ঠাকুরের বলে আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ১৬ রান করেন। এরপর মুশফিকুর রহিম ভালো শুরু পেলেও জসপ্রিত বুমরাহর কাছে পরাস্থ হন। ৪৬ বলে একটি চার ও সমান ছক্কায় ৩৮ করেন তিনি। ১৪ রান করা নাসুম আহমেদকে ফেরান সিরাজ। ঝড়ো ব্যাট করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শেষ ওভারে বুমরাহ বলে আউট হলেও নিজেকে আরও একবার প্রমাণ করেন। তিনি ৩৬ বলে ৩টি চার ও সমান ছক্কায় ৪৬ রান করেন।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট পান বুমরাহ, সিরাজ ও জাদেজা।
২৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৮৮ রান সংগ্রহ করেন এই দুই ব্যাটার।
এরপর ৫৫ বলে ৫৩ রান করে আউট হন রোহিত। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসা বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন গিল।
তবে দলীয় ১৩২ রানে ৪০ বলে ৪৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান গিল। এরপর ক্রিজে আসা শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ৪৬ রানের জুটি গড়ে ভারতের জয়ের ভীত গড়ে দেন কোহলি।
দলীয় ১৭৮ রানে ২৫ বলে ১৯ রান করে আউট হন আইয়ার। এরপর ক্রিজে আসা লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ৫১ বলে বাকী থাকতে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন কোহলি। রাহুল ৩৪ বলে ৩৪ ও কোহলি ৯৭ বলে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদি হাসান মিরাজ ২টি ও হাসান মাহমুদ নেন ১টি উইকেট।