কয়েক বছর ধরে বেহাল সড়কে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পৌরবাসী। সংস্কারের জন্য মেয়রকে বারবার
তাগাদা দিয়েও কোনো সুরহা পায়নি তারা। এবার টিফিনের টাকা জমিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ
করছে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি ইতোমধ্যে আলোরণ সৃষ্টি করেছে। শুরুতে একতা বন্ধন নামে একটি
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলে ঠাকুরগাঁও আমানাতুল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
সংগঠনের সদস্যরা টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে মানবিক কাজে ব্যয় করে থাকে। তাদের ইচ্ছে
ছিলো ভবিষ্যতে প্রয়োজন মতো খরচ করার। সেই টাকা টাকা রাস্তা সংস্কারের কাজে তুলে দিয়েছে
তারা।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী
এটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নিত হয়। পৌরসভা এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে মোট জনসংখ্যা ১লাখ ২০হাজার।
পৌর এলাকায় ১৯৫ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে ১৩৫ কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হলেও
প্রায় ৮০ শতাংশই বেহাল।
পৌর শহরের হাজিপাড়া এলাকায় স্কুলের সামনের গিয়ে দেখা যায়, স্কুল থেকে শুরু করে
শহরে বিভিন্ন রাস্তার কয়েক কিলোমিটার অংশ ভাঙাচোড়া। সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে
পানি জমে যায়। এ কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে একতাবন্ধন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। নিজেরাই নেমে পড়েছে রাস্তা
সংস্কারের কাজে। স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার করেছে আমানাতুল্লাহ ইসলামী একাডেমির
ছাত্ররা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তাটির বিভিন্ন
জায়গায় গর্ত হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় কাদা-পানি জমে যায়, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার উপায়
থাকে না। জনপ্রতিনিধিরা সংস্কার করে না, তাই নিজ উদ্যোগে আমরা সংস্কারে নেমেছি।
ওই এলাকার বাসিন্দারা বলেন, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধিদের
কাছে গেলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। আজ ছাত্ররা নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্বেচ্ছাশ্রমের
ভিত্তিতেই রাস্তাটির সংস্কার করেছে। এটি একটি মহৎ কাজ।
একাডেমিক সহকারী শিক্ষক আবদুল সালাম বলেন, রাস্তাটি বেশ পুরোনো। দীর্ঘদিন সংস্কার
না হওয়ায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে সংস্কার করছি। এতে স্কুলগামী
শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
গোয়ালপাড়া এলাকার জুয়েল, সেনুয়া পাড়া এলাকার রাকিব বলেন, প্রথম শ্রেণির ঠাকুরগাঁও
পৌরসভা হলেও ১০-১৫ বছর সড়কের সংস্কার হয়নি, ড্রেনেজ ব্যাবস্থা নেই; নেই বর্জ ব্যবস্থাও।
জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম সাংবাদিকদের বলেন রাজস্বের টাকা
দিয়ে যতটুকু সম্ভব উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে সড়কগুলোর উন্নয়ন
করা সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে
যোগাযোগ করা হয়েছে, একনেকের সভায় পাশ হলেই বরাদ্দ পাওয়া যাবে। তখন পৌরসভা এলাকাকে ঢেলে
সাজানো হবে বলে জানান তিনি।