ইউক্রেনে রাশিয়ার
অভিযানের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে একপর্যায়ে ব্যারেলপ্রতি ১৩৯
ডলার হয়ে যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই
কমছে। কারণ মন্দার আশঙ্কায় চাহিদায় প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে গত মাসে চীনের ক্রুড আমদানি
ধীর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে নির্দেশ করে।
ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস
ইন্টারমিডিয়েটের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৬৭ সেন্ট কমে ৮৮ দশমিক ৩৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। সোমবার
(৮ আগস্ট) সকালে দেখা যায়, প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৭৪ সেন্ট কমে ৯৪ দশমিক
১৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের পর সর্বনিম্ন।
গত এপ্রিলের প্রথম
সপ্তাহের পর এবারই সবচেয়ে দ্রুত তেলের দাম কমছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে আবারও
করোনার বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তেলের চাহিদা হ্রাস পেতে শুরু করেছে।
ফলে গত ছয় মাসের
মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসছে জ্বালানি তেলের দাম। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের
দাম এক সপ্তাহেই কমেছে ১০ শতাংশ।
লিবিয়া থেকে তেলের
সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া চীনে অর্থনৈতিক কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে। ফলে বিশ্বের
সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক দেশটির আমদানিও হ্রাস পেয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে
তেলের দাম বেশি থাকায় বিপাকে পড়েছিল আমদানিকারক দেশগুলো। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অর্থনীতিতেও
ব্যাপক চাপ পড়ে।
উন্নয়নশীল এবং
দরিদ্র দেশগুলোর ফরেন কারেন্সির রিজার্ভ ফাঁকা হয়ে আসে তেল আমদানি করতে গিয়ে। এর প্রভাব
পড়ে অন্য পণ্যের মূল্যেও।
বিশ্বের সবচেয়ে
বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির পারদ ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ চূড়ায়
উঠে যায়। জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে, যা ১৯৮১ সালের
পর সর্বোচ্চ।
বেশ কিছু দিন
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল।
মাস দুয়েক আগে দুই ধরনের তেলের দামই বেড়ে প্রতি ব্যারেল প্রায় ১২৫ ডলারে উঠেছিল।
তবে গত কয়েক সপ্তাহ
ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অল্প অল্প করে কমছিল।
এবার সেটি প্রায় যুদ্ধপূর্ববর্তী সময়ের কাছাকাছি নেমে এসেছে।