বাংলাদেশ বিনিয়োগের
জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার
সকালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) আওতাধীন বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক
(জাপানিজ অর্থনৈতিক) অঞ্চলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য
করেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন,
‘পৃথিবীর
মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা। কারণ, আমরা সবচেয়ে বেশি
সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এখানে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের জন্য ইউটিলিটিজ সার্ভিসসহ
সব ব্যবস্থা আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে করে দিচ্ছি। আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিদেশি
বিনিয়োগ আসছে। জাপানের পাশাপাশি ভারত, চীন, সৌদি আরবসহ আরও অনেক দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
যারা আসবে, তারা যেভাবে চায় সেভাবেই অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগ দেব।’
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য চমৎকার পরিবেশ আছে এখানে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগবান্ধব
আইন করে দিয়েছি। বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সেবা ও পরিষেবা অনুমোদনে ওয়ান স্টপ সার্ভিস
চালু করা হয়েছে। কিছু জটিলতা থাকলেও আমরা সেটা নিরসন করছি। সবচেয়ে বড় বিষয় বাংলাদেশের
অবস্থান; বাংলাদেশ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন। এখান থেকে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা
রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে সমুদ্রপথ, আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সুযোগ
আছে।’
শেখ হাসিনা
বলেন, ‘নিজস্ব মার্কেটের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বড় বাজার রয়েছে।
পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ উন্নত করে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে
আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে, সেখানেও আমাদের বাজার আছে।’
তিনি বলেন,
‘ভৌগোলিক
অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ৩০০ কোটির বেশি মানুষের বাজার হতে পারে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষ
আমাদের নিজেদেরই। আর পূর্ব দিকে ৫০ কোটি, উত্তর দিকে ১৫০ কোটি, পশ্চিমে ১০০ কোটি মানুষের
বাজার বিদ্যমান। যোগাযোগ অবকাঠামো বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহনের বিরাট সুযোগ
সৃষ্টি হয়েছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যারা বিনিয়োগ করবেন, নিজেরা সমৃদ্ধ হবেন, আমাদের
দেশেরও উন্নতি হবে।’
তিনি আরও বলেন,
‘আমি
আশা করি, জাপানের এই উদ্যোগ অন্যদেরও আগ্রহী করবে। জাপানকে ধন্যবাদ জানাই, তারা আমাদের
অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প করে দিচ্ছে। আমাদের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের নিদর্শন। তাদের
সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বে অনেক প্রকল্প আছে। ব্যবসাবান্ধব আরও অনেক প্রকল্প হবে আশা
করি।’
সরকারপ্রধান
বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিজমি যাতে নষ্ট না হয়, যত্রতত্র যেন শিল্প
কলকারখানা না হয়, সে জন্য (কলকারখানার কারণে) যেখানে ফসল হয় না, সে জমিতে আমরা ১০০টি
অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিই। পরিবেশবান্ধব যাতে হয়, সে বিষয়টি বিশেষভাবে
দৃষ্টি দিচ্ছি। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেদের উদ্যোক্তা
হিসেবে গড়ে তুলবে।’
তিনি বলেন,
‘নারী
উদ্যোক্তাদেরও বিশেষভাবে আলাদা প্লট দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ১০টি অর্থনৈতিক উৎপাদন শুরু
করেছে। তাতে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করতে পারছি। ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান
হয়েছে। এগুলোর সবই করছি; একদিকে পরিবেশ, অন্যদিকে ভূমি রক্ষা করে।’
অনুষ্ঠানে গণভবন
প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের
সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
নারায়ণগঞ্জ
প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন আড়াইহাজারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল
কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নওকি, জাপানের
সুমিতুমো করপোরেশনের সভাপতি ও সিইও মাসা উকি হিউদো প্রমুখ।