আজঃ সোমবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
শিরোনাম

বিজয়নগরে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর

প্রকাশিত:শনিবার ২২ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২২ জুলাই ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ রাসেল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে গরীবের রাজ প্রসাদ খ্যাত ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর।

মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা, পারিবারিক নিরাপত্তা ও রুচিবোধের পরিবর্তনের কারণে মানুষ এখন আর মাটির ঘরে থাকতে চায় না। স্বচ্ছল মানুষের এখন পাকা দালানের মধ্যেই থাকতে স্বস্তিবোধ করেন। এতে করে দ্রুতই বিলুপ্ত হচ্ছে মাটির ঘর। মাটির ঘরের স্থানে শোভা পাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ইমরাত।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় ভারতীয় সীমান্তঘেষা বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নেই বেশীর ভাগ বাড়িতে ছিলো মাটির ঘর। কিন্তু মানুষের রুচিবোধের পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার কারণে ওইসব বাড়িতে মাটির ঘরের জায়গায় শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাকা দালান।

উপজেলার প্রবীন মানুষেরা জানান, এক সময় উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর, কালাছড়া, বক্তারমোড়া, ছতরপুর, দুলালপুর, পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর, শ্রীপুর, হরষপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া, পাঁচগাও, বাগদিয়া, হরষপুর, সোনামোড়া, বড়চাল, মেঘশিমুল, পাহাড়পুর ইউনিয়নের খাটিঙ্গা, মকুন্দুপুর, দাড়িয়াপুর, কামালমোড়া, সেজামোড়া, ভিটি দাউদপুর, দুরানাল, কচুয়ামোড়া, সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মেরাশানী, রানুর বাজার, আলীনগর, কাঞ্চনপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষের বাড়িতেই ছিলো মাটির ঘর। বর্তমানে ওইসব গ্রামের হাতেগোনা কিছু বাড়িতে মাটির ঘর থাকলেও অধিকাংশ বাড়িতে শোভা পায় দালান ঘর ও সেমি-পাকা টিনের ঘর।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার যে সব গ্রামে লাল মাটি ও এটেল মাটি পাওয়া যেতো সেইসব গ্রামের লোকজনই বাড়িতে মাটির ঘর তৈরী করতো। প্রথমে লাল মাটি ও এঁটেল মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে প্যাক করা হতো। পরে সেই মাটি দিয়ে তৈরী করা হতো ২০/৩০ ইঞ্চি চওড়া দেয়াল। প্রতিবার ১/২ ফুট উচু করে দেয়াল তৈরি করে সেই দেয়ালকে ৫/৬ দিন রোদে শুকানো হতো। তারপর এই দেয়াল আবারো ১/২ ফুট উঁচু করে শুকানো হতো। এভাবে পর্যায়ক্রমে ১০/১২ ফুট উচু দেয়াল নির্মাণ করা হতো। পরে এই দেয়ালের ওপর টিনের চালা বা ছন দিয়ে চালা (ছাউনি) দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হতো। প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে সময় লাগতো প্রায় ২/৩ মাস। পরে বিশেষ প্রক্রিয়ায়  ঘরের ভেতরের দিকে ধানের তুষ (কুড়া) দিয়ে দেয়ালের উপর প্রলেপ দেয়া হতো। বাইরের দিকে দেয়া হতো চুনের প্রলেপ বা আলকাতরা। চুনের প্রলেপ দিলে ঘরের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি পেত, তেমনি ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকেও মাটির দেয়াল রক্ষা পেত। বন্যা বা ভূমিকম্প না হলে এসব ঘর ২০/২৫ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতো। যারা মাটির ঘর নির্মাণের কারিগর ছিলেন তাদেরকে বলা হতো দেয়ালী।

উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের নিদারাবাদ গ্রামের দেয়ালী নোয়াজ আলী জানান, মাটির ঘর তৈরির উপযুক্ত সময় হচ্ছে কার্তিক মাস। কারণ এ সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। তিনি বলেন, আমরা প্রতি হাত ঘর নির্মাণে ১০ টাকা করে নিতাম। আবার অনেক সময় ৫/৬ হাজার টাকা চুক্তিতেও ঘর নির্মাণ করে দিতাম। তিনি বলেন, মানুষ এখন আর মাটির ঘর তৈরী করেনা যার জন্য আমরা এই পেশা ছেড়ে দিয়েছি।

উপজেলার নিদারাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সংবাদ কর্মী এস.এম টিপু চৌধুরী বলেন, আমি ছোট বেলায় মাটির ঘরেই বসবাস করেছি। মাটির ঘরে বসবাস খুবই আরামদায়ক। গরমের দিনে ঠান্ডা আর শীতের দিনে শীত লাগতো না। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে ৭টি বড় বড় মাটির ঘর ছিলো। বর্তমানে একটি ঘর ছাড়া বাকি ঘরগুলো ভেঙ্গে সেখানে পাকা দালান নির্মাণ করা হয়। বাড়ির ঐতিহ্য হিসেবে এখনো প্রায় শতবর্ষ পুরনো একটি মাটির ঘর রাখা রয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে এই মাটির ঘরটিকে আমরা রেখে দেব।

উপজেলার  পাহাড় ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাসেল খান বলেন, আমি এখনো মাটির ঘরেই বসবাস করি। তিনি বলেন, মাটির ঘরে বসবাস করা খুবই আরামদায়ক। গরমের দিনে ঠান্ডা আর শীতের দিনে ঘরে গরম অনুভুত হয়। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে ৫টি মাটির ঘর ছিলো। এখন আমার বাড়িতে দুটি মাটির ঘর আছে। বাকিগুলো ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মাণ করা হয়েছে।

রাসেল খান বলেন, আগে আমাদের এলাকার বেশীর ভাগ মানুষের বাড়িতেই মাটির ঘর ছিলো। এলাকার অনেকে মানুষই বিদেশ গিয়ে এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন। প্রবাসীরা দেশে এসে পারিবারিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ও বাড়ির সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য মাটির ঘর ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মাণ করছেন। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার কারণে মানুষ এখন আর মাটির ঘরে বসবাস করতে চায়না।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খাটিঙ্গা গ্রামের রফিক মিয়া বলেন, আগে আমাদের গ্রামের প্রতি বাড়িতেই মাটির ঘর ছিলো। বর্তমানে মাটির ঘরের সংখ্যা খুবই কম। তিনি বলেন, লাল মাটি ও এঁটেল মাটির অভাব, মাটির ঘর তৈরী করার কারিগর সংকটের কারণেও মানুষ এখন মাটির ঘর নির্মাণ করতে চায়না। এছাড়া গ্রামের  লোকজন বিদেশে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন।  প্রবাসে থেকে তাদের রুচিবোধেরও পরিবর্তন হচ্ছে। প্রবাসীরা দেশে এসে তাদের পরিবারের নিরাপত্তা ও বাড়ির সৌন্দর্যের কথা ভেবে মাটির ঘর ভেঙ্গে বিভিন্ন ডিজাইনের পাকা দালান, বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করছেন। তিনি বলেন, বাড়িতে একটি পাকা দালান থাকাটা অনেকেই স্ট্যাটাসের অংশ হিসেবে মনে করেন।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে মানুষের আয়-রোজগার বেড়েছে। এছাড়াও বিদেশে গিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হচ্ছেন। মানুষের রুচিবোধ সামাজিক মর্যাদাবোধও বড়েছে। তাই মানুষ এখন আর মাটির ঘরে বসবাস করতে চায়না। ফলে মাটির ঘর ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে। আয়-রোজগার বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মধ্যে সামাজিক মর্যাদাবোধ বেড়েছে। মানুষ এখন নিজের পরিবারিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশী সচেতন। তাই মানুষ এখন আর মাটির ঘরে বসবাস করতে চায়না।


আরও খবর



আজকের রাশিফল: রবিবার ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

প্রকাশিত:রবিবার ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

আজ নতুন কী ঘটতে চলেছে? আজ কি আপনার জন্য ভাল কিছু অপেক্ষা করে আছে? কেমন থাকবে আপনার আর্থিক অবস্থা? নাকি খারাপ কিছুর অপেক্ষা করে আছে আপনার ভাগ্যে। বিখ্যাত জ্যোতিষীর দ্বারা বিশ্লেষণের পর আজকের দিন নিয়ে ভবিষ্যত গণনা জানুন আপনার আজকের রাশিফলে।

মেষ : কাজের চাপ বেশি থাকায় পরিবারকে সময় দিতে পারবেন না। আজ শরীর কিছুটা দুর্বল থাকবে। তাই যতটা সম্ভব বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন। আয় বেশি হবে না, তাই ব্যয় কমানোর চেষ্টা করুন।

বৃষ : সমস্ত কাজ গুরুত্বের সাথে করার চেষ্টা করুন। ভালোবাসার মানুষের সমর্থন পাবেন। স্ত্রীয়ের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না। এ'থেকে মনোমালিন্য হতে পারে। পেশাদারি যোগাযোগ বাড়তে পারে।

মিথুন : আমোদপ্রমোদ করে কাটবে আজকের দিন। অতিরিক্ত খরচের কারণে কোনও বড় প্রকল্প আটকে যেতে পারে। সৃজনশীল কাজের সাথে যুক্ত মানুষেরা আজ তাদের শ্রেষ্ঠ কাজ করতে পারেন।

কর্কট : আর্থিক বিষয়ে স্ত্রীয়ের পরামর্শ কাজে দিতে পারে। বন্ধুদের সহায়তায় কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হবে আজ। তিনি আপনার চিন্তাধারা বদলে দিতে পারেন। অপরিচিত ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলুন।

সিংহ : বিনোদনের জন্য বেশি খরচ করা উচিত হবেনা। আয় বুঝে ব্যয় করার চেষ্টা করুন। স্ত্রীয়ের সাথে কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত কাটাবেন। এর ফলে আপনার একাকীত্ব কেটে যাবে।

কন্যা : সমস্ত নেতিবাচক অনুভূতিগুলি ঝেড়ে ফেলুন মন থেকে। নতুন উদ্যোগ থেকে প্রচুর লাভ হতে পারে। ফলে অনেকগুলি আর্থিক প্রয়োজন আজ মিটে যাবে। বিনোদনের পক্ষে আজ উপযুক্ত দিন।

তুলা : নিজের শখ ও সৃজনশীলতা নিয়ে আজ সময় কাটবে। কাজের প্রশংসা পাবেন। একসময় ঝুঁকি নিয়ে করা বিনিয়োগগুলি থেকে লাভ পেতে পারেন আজ। পরিবারের সমর্থনে কাজে মন বসাতে পারবেন।

বৃশ্চিক : আপনার কষ্টের রোজগার কোথায় খরচ হয়ে যাচ্ছে সেদিকে নজর রাখুন। না হলে অকারণ ব্যয় ভবিষ্যতে সমস্যায় ফেলবে। নিজের স্বার্থের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না।

ধনু : আজ আয় বাড়লেও অতিরিক্ত খরচের ফলে সঞ্চয় করতে পারবেন না। শৈশবের কথা ভেবে মন ভালো হয়ে যাবে। কাজের চাপ বেশি থাকায় পরিবার অথবা বন্ধুদের সাথে কথা বলার সময় পাবেন না।

মকর : আজ আপনার মধ্যে ধৈর্যের অভাব দেখা যাবে। সমস্ত কাজে বিরক্ত বোধ করবেন। আজ অনেকগুলি ক্ষেত্রে খরচ হবে। ফলে সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী খরচ না করলে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

কুম্ভ : আজ আপনার দানশীল মনোভাবের সুবিধা পাবেন অনেক ক্ষেত্রে। আর্থিক সমস্যা আসতে পারে। তবে আপনার বিচক্ষণতার ফলে সবকিছু সামলে নিতে পারবেন। স্ত্রীয়ের থেকে সমর্থন পাবেন না।

মীন : শরীর ভালো থাকবে। বন্ধুদের সাথে আজ কোথাও খেলতে যেতে পারেন। ধার নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার সময় সমস্যায় পড়তে পারেন। কাজের ধরনে আধুনিকতা আনার চেষ্টা করুন।


আরও খবর



পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

নির্বাচনে সবসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল, এবং থাকে, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিতও হয়। তবে আমাদের দলের যারা পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাদেরকে অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

তিনি বলেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, দেশে নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরী হয়েছে। সারাদেশে এখন নির্বাচনী আমেজ বইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে, এবং তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে। ৪৪ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এর বাইরেও অনিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ৭ই জানুয়ারি যথাসময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা যেটি তৈরী হয়েছে, এতে বিএনপি হতাশ হয়ে গেছে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ আসনে (রাঙ্গুনিয়া-বোয়ালখালি আংশিক) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের কাছে কয়েকজন দলীয় নেতাকে সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

এরপর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নিচে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে, সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন, এতে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ও অঘটন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এব্যাপারে দলের নির্দেশনা কি ? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতা ঘোষণা, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা, মনোনয়নপত্র জমা দেয়া এগুলোর মাধ্যমে আসলে পুরো দেশ আজকে নির্বাচনী আমেজের মধ্যে আছে। এই ডামাঢোলের মধ্যে বিএনপি-জামাতের নির্বাচন বর্জনের যে ডাক সেটি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। মানুষ এখন নির্বাচনমূখী হয়ে গেছে।

বিএনপি গতকাল বলেছেন, কয়েকদিনের মধ্যে সরকারের পতন হবে, এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, বিএনপি এখন দৈব-দূর্বিপাকের উপর নির্ভর করছে। দেশে তারা এধরণের ঘোষণা দিয়ে নিজেদেরকে হাস্যস্কর করে তুলেছে। সরকারের পতন নিয়ে তো বহুদিন ধরে বিএনপি দিনক্ষণ ঘোষণা করে।

তিনি বলেন, বিএনপি বলে, অমুক দিন সরকারের পতন হবে। গতবছর ৩০ ডিসেম্বর দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। এবছর ২৮ অক্টোবরও দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। এভাবে ঘোষণাটাই একটি সন্ত্রাসী ঘোষণা। এমন যে তারা কোন দৈব-দূর্বিপাকের উপর নির্ভর করে বলে, অমুকদিন কিছু একটা হবে। যেমনটা, অমুকদিন বৃষ্টি হবে, অমুকদিন বজ্রপাত হবে, অমুক সময়ে সাইক্লোন হবে। বিএনপির ঘোষণাও ঠিক সেইরকম।

বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশী থাবার যে কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়েও বিদেশী থাবা ছিল, আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সময়েও বিদেশী থাবা আছে। এখন যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখনও বিভিন্ন দেশি-বিদেশী চক্র নানা ষড়যন্ত্র করছে। তবে, আমাদের সাথে সবার সম্পর্ক চমৎকার।

তিনি বলেন, আমাদের সরকারের নীতি হচ্ছে, কারো সাথেই বৈরিতা নয়, সবার সাথে মিত্রতা। সেই নীতি নিয়েই আমরা কাজ করি। আমাদের সাথে সমস্ত দেশের ভালো সম্পর্ক। আমরা আমাদের সমস্ত উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগীতা নিয়ে দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে চাই।

এসময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চিশতি, বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. মোহাম্মদ সেলিম, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আবদুল মোনাফ সিকদার, এমরুল করিম রাশেদ, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন, মুজিবুল ইসলাম সরফি, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আগামী রোববার (১৯ নভেম্বর) থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। একতরফাভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে এ হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করছি। এ সময় তিনি দেশব্যাপী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানান।

এর আগে তফসিল বাতিলের দাবিতে একই সময়ে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। গণতন্ত্র মঞ্চও দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, হত্যা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিকরা।

তারপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায়, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায়, ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফায় অবরোধ পালন করা হয়। ১৫ নভেম্বর (বুধবার) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় পঞ্চম দফায় অবরোধ। শুক্রবার সকাল ৬টায় শেষ হবে এ কর্মসূচি।


আরও খবর



নারী সম্মেলনে যোগ দিতে আজ সৌদি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেদ্দায় অনুষ্ঠেয় ইসলামে নারী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে আজ রোববার (৫ নভেম্বর) সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হবেন।

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদর দপ্তরের সমন্বয়ে সৌদি আরব ৬-৮ নভেম্বর এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট রোববার সকাল ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে তিনি মদিনার প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। প্রধানমন্ত্রী ওইদিন সন্ধ্যায় মহানবী (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত এবং ফাতেহা পাঠ করবেন।

শেখ হাসিনা ৬ নভেম্বর সকালে ট্রেনে করে জেদ্দার উদ্দেশে মদিনা ত্যাগ করবেন। সন্ধ্যায় তিনি সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং বক্তব্য রাখবেন।

তিনি ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা, ইরানের নারী ও পরিবার বিষয়ক বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এনসিহ খাজালি, ওআইসি নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. আফনান আলশুয়াইবি এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি তিনি উইমেন ইন ইসলাম শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন এবং তার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী পরে জেদ্দা থেকে মক্কায় যাবেন এবং সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করবেন।

শেখ হাসিনা ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশে মক্কা ত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। আগামী ৮ নভেম্বর সকাল ৮টায় বিমানটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

মৌরিতানিয়ায় ২০২৩ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৯তম অধিবেশনে ইসলামে নারীদের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয় এবং ওআইসির সদর দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে সৌদি আরব কর্তৃক এটি আয়োজনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হয়।


আরও খবর



শিশুদের জন্য গাজা এখন কবরস্থান : জাতিসংঘ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইসরায়েলের হামলা জোরদার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের জন্য কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে গাজা বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, প্রতি ঘণ্টা পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক অস্ত্রবিরতির প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি বাড়ছে।

এর আগে এক যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানায়, গাজা এবং ইসরায়েলে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড ভয়াবহ। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা জোরদার হয়েছে। তারা দাবি করছে যে, হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু কমানোর চেষ্টা করছে তারা।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রে এবিসি নিউজকে বলেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ইসরায়েলের হাতে। তিনি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার শর্ত ছাড়া অস্ত্রবিরতির আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর দুই শতাধিক মানুষকে হামাস জিম্মি করেছিল।

তবে মানবিক বিরতি সম্ভব হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, কৌশলগত বিরতির কথা যদি হয় যে, এক ঘণ্টা এখানে, এক ঘণ্টা সেখানে এর আগেও আমরা এটা করেছি। আমার মনে হয় আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখবো যেন পণ্য-সামগ্রী, মানবিক পণ্য প্রবেশ করতে দেওয়া হয় এবং আমাদের জিম্মি বা কোনো এক জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা গত ২৪ ঘণ্টায় হামাসের ৪৫০টি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার স্থানও।

গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে চার হাজার ১০৪ জনই শিশু।

এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত গাজায় একটি মানবিক বিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত নিকোলা ডি রিভিয়েরে বলেন, এ ধরণের বিরতি স্থায়ী হওয়া উচিত এবং এটি অস্ত্রবিরতির দিকে এগিয়ে নেওয়া উচিত।

তবে তার এই অবস্থানের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো পশ্চিমা দেশগুলো। তারা বলছে, অস্ত্র বিরতি শুধু হামাসের জন্যই লাভজনক হবে। এর আগে সোমবার সকালে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না যে, সাধারণ একটি অস্ত্র বিরতি এই সময়ের জন্য উপযুক্ত।


আরও খবর