আজঃ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24
শিরোনাম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

বিএনপি নেতা সুলতানার ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ নভেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ০৬ নভেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এ মামলায় বিএনপির এই নেতাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ।

আজ রোববার পল্টন মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মু. আশরাফুল আলম ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সুলতানাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন ।

সুলতানা আহাম্মেদ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তার নামে পল্টন মডেল থানায় আজ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫, ২৯, ৩১ ও ৩৫ ধারায় মামলা হয়েছে। রাজধানীর গুলাশানের বাসা থেকে সুলতানাকে আটক করেছে র‌্যাব-৩। আজ তাকে আদালতে তোলা হয়।

সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিদ্বেষ ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন এবং বিচার বিভাগকে হেয় করে বক্তব্য দিয়েছেন। গত ১ নভেম্বর বিএনপির কর্মসূচিতে তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার এজাহারে।

এতে আরও বলা হয়েছে, সুলতানা তার নিজ দলীয় কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করার মাধ্যমে তাদের মানহানী করেছেন এবং দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার মত বক্তব্য দিয়েছেন।

মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল মদদদাতা ও চক্রান্তকারীদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে সুলতানা আহাম্মেদকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।


আরও খবর
পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




অস্থির আলুর বাজার, কেজিতে বেড়েছে ১২ টাকা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

ঈদের পর অস্থির হয়ে উঠেছে আলুর বাজার। কেজিতে ১২-১৫ টাকা বেড়ে আলুর দাম হাফ সেঞ্চুরিতে ঠেকেছে। এর নেপথ্যে সিন্ডিকেটের কারসাজি বলে অভিযোগ করেছেন দোকানদার ও ক্রেতারা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

ক্রেতারা বলছেন, আলুর বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই সময় সাধারণত আলু ২০ টাকা কেজি থাকার কথা। কিন্তু সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। অথচ সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ২৯ টাকা। 

কচুক্ষেত্র বাজারের আলু বিক্রেতা আমিনুল বলেন, রমজানের আগে থেকে বাড়তি দামে আলু বিক্রি করছি। এখন আলুর মৌসুম। তারপরও আলু বিক্রি করছি ৪৫-৪৮ টাকা। কোথাও ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি করছে। তিনি বলেন, শুধু ঈদের ছুটিতে প্রতিকেজি আলুর দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। বাজারের এই অস্থিরতার পেছনে সিন্ডিকেটের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ তার।

আলু ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, মৌসুমের শুরুতেই দাম ৫০ টাকা হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। মজুতদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অস্থিতিশীল করছেন বাজার। দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবিও করেন তারা।

জয়নাল নামের এক ক্রেতার অভিযোগ, ঈদের আগে ৩৮ টাকার আলু এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ টাকা ছাড়িয়ে। হঠাৎ করে আলুর দাম ১২ টাকা কেজিতে বেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ দেখছি না।

আলুর দরে অস্থির হলেও অন্যান্য সবজির দাম বাড়েনি। বরং ঈদের পর কিছু সবজির দাম কমেছে। বাজারের ঘুরে দেখা গেছে, চিচিংগা ৫০ টাকা, করলা ৫৫-৬০ টাকা, কাঁচা পেপে ৫৫ টাকা, কাঁচা কলা ৪০ টাকা হালি, মিষ্টি কুমড়া ৩২ টাকা কেজি, সব ধরনের বেগুন ৫৫-৬০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক আগে দরে ১০ টাকা প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে। লেবু ৪০-৪৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে স্বস্তি টমোটতে। শেষ সিজনে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে। গাজর ৮০-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে শসা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা বান্ডিল, কচুর মুখি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।

ঈদের পর মাছের দাম একটু চড়া। ঈদের ছুটি ও সরবরাহ কম থাকার সব ধরনের মাছের দাম কেজি ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। দেশি রুই ঈদের পর ১০-১৫ টাকা বেড়ে ৩৫০-৩৬০ (মিডিয়াম) টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দুই কেজির বেশি ওজনের রুই বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি। একইভাবে কাতলা মিডিয়াম ৩৮০-৩৯০, পাংগাস ২২০ টাকা, সরপুঁটি ২৪০, তেলাপিয়া ২৪০, টেংরা দেশি ৫৫০-৫৭০ টাকা, দেশি মিক্স মাছ ৩৮০-৩৯০ টাকা, কই মাছ ৩৯০, পাবদা ৪৩০ টাকা, গলদা চিংড়ি বড় ১০০০ টাকা, ছোট ও মাঝারি বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬২০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। আর মলা মাছ ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের পাবদা মাছ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আরও খবর
হজ প্যাকেজের খরচ কমল

শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24




ময়মনসিংহে স্থানীয় ৫ পত্রিকার ডিক্লারেশন স্থগিত

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

ময়মনসিংহে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় স্থানীয় পাঁচটি দৈনিক পত্রিকার ডিক্লারেশন স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন।

সোমবার (২৫ মার্চ) ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পত্রিকাগুলো হলো দৈনিক মাটি ও মানুষ, দৈনিক ভূ-মণ্ডল, দৈনিক ভোরের অপেক্ষা, দৈনিক উন্নয়ন সংবাদদৈনিক কালের আলো

এর মধ্যে গত ১৪ মার্চ দৈনিক মাটি ও মানুষ, দৈনিক ভূ-মণ্ডল, দৈনিক ভোরের অপেক্ষা, দৈনিক উন্নয়ন সংবাদ এবং ১৮ মার্চ দৈনিক কালের আলো পত্রিকার ডিক্লারেশন স্থগিত করা হয়।

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, নিয়মিত না ছাপা, সম্পাদক-প্রকাশকের নাম থাকা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় স্থানীয় পাঁচটি দৈনিক পত্রিকার ডিক্লারেশন স্থগিত করা হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: ময়মনসিংহ

আরও খবর



দীর্ঘ ছুটিতে ঈদযাত্রা, বাস ট্রেন লঞ্চে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অফিস ছুটি হয়নি এখনো। পরিবার নিয়ে যেতে হবে গ্রামে। ঈদের ছুটি শুরু হলে একসঙ্গে সবাই বাড়ির পথ ধরবে। এতে বাড়বে চাপ। এজন্য পরিবার-পরিজনকে আগেভাগেই বাড়িতে পাঠাতে শুরু করেছেন অনেকে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছেন।

শনিবারও রাজধানী ছাড়বেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ। ঈদের লম্বা ছুটি ঘিরে মানুষ শহর ছাড়তে শুরু করায় সড়ক, নৌ ও ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। যাত্রী বেড়েছে আকাশপথেও।  তবে এখনো ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয়নি। যারা ঢাকা ছাড়ছেন তাদের ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শুক্রবার মসজিদে মসজিদে এসব নির্দেশনা জানানো হয়েছে।

ডিএমপির উপকমিশনার (ক্রাইম) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এর পাশাপাশি ছুটির সময়ে রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছি। এজন্য ১৩ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো মসজিদে খতিবরা এবং কোথাও পুলিশ সদস্যরা এই নির্দেশনা প্রচার করেছে। আমরা চাই মানুষ যেন নিরাপদে গ্রামে গিয়ে নিশ্চিন্ত মনে আবার শহরে ফিরতে পারে।

ঈদে বাসযাত্রা : ফজরের নামাজের পর থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে যাত্রীর প্রচুর ভিড় দেখা যায়। ঈদযাত্রায় পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়েই বাসগুলো একের পর এক স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রীরা যাত্রাবাড়ী মোড়, শনির আখড়া, রায়েরবাগ ও সাইনবোর্ড বাস কাউন্টারগুলোতে ভিড় করছেন। বাস সংকটে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এতে প্রচণ্ড গরমে নারী ও শিশুরা ভোগান্তিতে পড়ে।

ঢাকা-চাঁদপুর রুটের পদ্মা পরিবহণের সুপারভাইজার মকবুল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। শনিবার সাহরির পর তা আরও বেড়েছে।

ঢাকা-সিলেট রুটের মিতালী পরিবহণের যাত্রী আবুল কালাম বলেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিনশ টাকা বাড়তি দিয়ে টিকিট কাটতে হয়েছে। খুলনাগামী যাত্রী মৌসুমী বলেন, আমার স্বামী চাকরি করেন। তাকে ঢাকায় রেখেই ছেলেমেয়ে নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছি। পরে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। সে কারণে আমরা আগেভাগে চলে যাচ্ছি।

ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে সড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি।

গাবতলী বাস টার্মিনাল : গাবতলী বাস টার্মিনালের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। সেখানে শুক্রবার যাত্রীর তেমন একটা চাপ ছিল না। বেশিরভাগ কাউন্টার ছিল ফাঁকা। ঢাকা-বরিশাল রুটের দর্শনা পরিবহণের কাউন্টার ম্যানেজার আল আমিন বলেন, গাবতলীতে রানিং (এসেই টিকিট কাটবেন এমন) কোনো যাত্রী নেই। যারা অগ্রিম টিকিট কেটে রেখেছেন তারাই শুধু আসছেন।

সদরঘাট নৌটার্মিনাল : সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চযাত্রী ছিল অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। তবে খুব বেশি চাপ ছিল না। ফলে নৌপথের যাত্রায় এখনো অনেকটা স্বস্তি রয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বিআইডব্লিউটিএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। সদরঘাট নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী ও টার্মিনালে নৌপুলিশের একাধিক টিম টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার যাত্রী আমিনুল ইসলাম। তিনি ঢাকায় অর্থঋণ আদালতের পেশকার। পরিবার নিয়ে থাকেন পুরান ঢাকায়। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি বেশি থাকায় আগেভাগেই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গ্রামের বাড়িতে রেখে আসতে যাচ্ছি।

ট্রেনযাত্রা : এদিকে ঘরমুখো মানুষের ট্রেনযাত্রা ছিল স্বস্তির। ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে। বিনা টিকিটে ভ্রমণ রোধেও কাজ করছি। আমরা অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ সিটবিহীন টিকিট বিক্রি করছি।


আরও খবর



রেলের টিকিট কালোবাজারি: সহজ ডটকমের দুই কর্মীসহ গ্রেফতার ৯

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম হোতা সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালী ও সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাসসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)।

এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে কালোবাজারির আলামত এবং অবৈধভাবে সংগ্রহ ও মজুত করা বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট।

র‍্যাব জানায়, ২০০৩ সালে কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেন মিজান। পরে CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি সহজকে দেওয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে। মিজান দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

অন্যদিকে নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট কর্মী হিসেবে সিএনএস বিডিতে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান। ২০২০ সালে সহজের সঙ্গে চুক্তি হলে তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান।

র‍্যাব আরও জানায়, সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতেন। মিজান ও নিউটন দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।

গ্রেফতাররা হলেন মো. মিজান ঢালী (৪৮), মো. সোহেল ঢালী (৩০), মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৬), মো. সবুর হাওলাদার (৪০) ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)।

এসময় জব্দ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল পরিমাণ টিকিট, ৮টি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রয়ের নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেন।

শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সহজ ডটকমের পিয়ন কে এই মিজান ঢালী

তিনি বলেন, দেশব্যপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজানের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় সকল ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল। মিজান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

২০০৩ সালে সে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ডেফোডিলের কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বুকিং এ CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি Sohoz.com-কে দেয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, দীর্ঘদিন টিকিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকায় সারাদেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের অফিসে এবং বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে মিজানের পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।

এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই সে বিভিন্ন স্টেশনে থাকা সহজ ডটকমের সদস্য, টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য কালোবাজির চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টিকিট বিক্রি করতো।

তিনি বলেন, সহজ ডটকমের কমলাপুর রেলস্টেশন সার্ভার রুমের সার্ভার অপারেটর গ্রেফতার নিউটন বিশ্বাস, স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ গ্রেফতার সবুর হাওলাদারসহ এবং পলাতক আব্দুল মোত্তালিব, আশিকুর রহমানসহ আরও কয়েকজন টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিশেষ করে ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতার মিজান ও সোহেল বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ সময়ের তুলনায় অধিক সংখ্যক টিকিট সংগ্রহ করতো। গ্রেফতার মিজান ও সোহেল প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের কর্মচারী ও টিকিট কাউন্টারম্যানদের মাধ্যমে প্রায় ২-৩ হাজার রেলওয়ের টিকিট কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রি করতো। তারা আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের চাইতেও বেশি সংখ্যক টিকিট সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা করছিল।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে ৫০ ভাগ Sohoz.com ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারম্যানরা পেতো এবং বাকি ৫০ ভাগ সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী সহযোগীদের মাঝে ভাগাভাগি হতো।

এই অর্থ কখনো তারা নগদ হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিতো আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতো। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০/২৫ হাজার টাকা উপার্জন করতো। এভাবেই পরষ্পরের যোগসাজশে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।

গ্রেফতার সোহেলকে গ্রেফতার মিজান তার আত্মীয় হিসেবে সুপারিশ করে প্রথমে CNS.bd তে চাকরি পাইয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে Sohoz.com এ চুক্তিবদ্ধ হলে কমলাপুর শাখায় অফিস সহকারী হিসেবে তারও চাকরি বহাল থাকে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, পরবর্তীতে গ্রেফতার সোহেল ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করে। গ্রেফতার সোহেল অফিস সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় প্ল্যাটফর্মের টিকিট বুকিং কাউন্টারে বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত আনাগোনা থাকতো। একপর্যায়ে সোহেল কাউন্টারে টিকিট বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা কাউন্টারম্যানদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং কাউন্টারম্যানদের যোগসাজশে বিভিন্ন কারসাজি করে বিপুল পরিমাণ টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজির মাধ্যমে অধিক মূল্যে বিক্রি করতো।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যসহ গ্রেফতার সুমন, শাহজালাল, জাহাঙ্গীর, জয়নাল, ও রাসেল সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা দিতো। পরবর্তীতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেফতার মিজান ঢালী অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রির জন্য তাদের কাছে সরবরাহ করতো।

তিনি বলেন, গ্রেফতার সুমন রেলওয়ের সঙ্গে এক সময়ের চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান CNS.bd তে চাকরি করতো। পরবর্তীতে Sohoz.com এর সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর সে চাকরি বাদ দিয়ে গ্রেফতার মিজান ও সোহেলের মাধ্যমে ঢালী সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়ে অবৈধভাবে সংগ্রহকৃত ট্রেনের টিকিটগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি শুরু করে।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, গ্রেফতার শাহজালাল একজন পাঠাও চালক, গ্রেফতার জাহাঙ্গীর কমলাপুরে অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলের ক্লিনার, গ্রেফতার রাসেল একই আবাসিক হোটেলের বয় এবং গ্রেফতার জয়নাল অপর একটি আবাসিক হোটেলের বয়। তারা তাদের এসকল কর্মস্থলে কাজের পাশাপাশি সবসময় অবৈধ উপায়ে টিকিটপ্রত্যাশী যাত্রী জোগাড় করে কালোবাজারির মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টিকিটগুলো নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি করতো।

হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনের টিকিটপ্রত্যাশীদের কাছে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে টিকিটগুলো প্রেরণ করতো।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট হিসেবে CNS.bd-তে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে ২০২০ সালে Sohoz.com এ চুক্তিবদ্ধ হলেও তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়। সে সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতো বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতো। গ্রেফতার সবুর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের Sohoz.com এর স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ হিসেবে চাকরি করতো। গ্রেফতার সবুর সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজানের সঙ্গে ট্রেনের টিকিট কালোবাজির সঙ্গে জড়িত।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সহজ ডটকম টিকিট কালোবাজারির দায় এড়াতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল।

আসন্ন ঈদুল ফিতরে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে কি কি পদক্ষেপ নেবে র‍্যাব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আর কিছুদিন পরেই টিকিট অনলাইনে ছাড়বে। টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে এনএসআই ও র‍্যাবের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।


আরও খবর



ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ রোববার (২৪ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে রেলওয়ের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করা শুরু হয়েছে। আজ বিক্রি করা হবে আগামী ৩ এপ্রিলের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ রেলওয়ের ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে নেয়া কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

এবার ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা হবে ৩৩ হাজার ৫০০টি। আগের ঈদগুলোতে ৫ দিনের টিকিট বিক্রি করলেও এবারই প্রথম ৭ দিনের টিকিট বিক্রি করবে রেলওয়ে। ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরমুখো মানুষের এই ট্রেন যাত্রার টিকিট ভোগান্তিবিহীন কিনতে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। দুইটি শিফটে এই টিকিট বিক্রি করা হবে। সকাল ৮টায় বিক্রি হবে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিট এবং দুপুর ২টায় বিক্রি শুরু হবে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিট।

ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে (২৪ মার্চ) থেকে; ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৬ মার্চ; ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৭ মার্চ; ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৮ মার্চ; ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ৩০ মার্চ। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশনের কাউন্টারে পাওয়া যাবে।


আরও খবর