
বাতাসের দূষণের কারণে দুই বছরে রাজধানীতে শ্বাসতন্ত্রের রোগী বেড়েছে দেড়গুণ। বিষাক্ত বাতাস আর জনসাধারণের অসচেতনতায় প্রতিদিন অসুস্থ হচ্ছেন হাজারও মানুষ। শুধু বক্ষব্যাধি হাসপাতালেই প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ হাজার রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
তথ্যমতে, গত অক্টোবর থেকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। সেপ্টেম্বরে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৮৮৩ জন। এ ছাড়া অক্টোবরে ১২ হাজার ২৬১, নভেম্বরে ১৪ হাজার ৬৭৪ এবং ডিসেম্বরে ১২ হাজার ৯৪৩ জন। আর চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনেই ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৮৬৮ জন। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালটিতে দুই বছরে রোগী বেড়েছে দেড়গুণের বেশি। ২০২০ সালে মোট রোগী ছিল ৯১ হাজার ৪৩৪ জন, ২০২১ সালে ১ লাখ ৪ হজার ১২০ জন এবং ২০২২ সালে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৬৫ জন।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশু-বয়োজ্যেষ্ঠরাও। ২০১৩ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক বলছে, দিনে দুটি সিগারেট খেলে মানবদেহের যে ক্ষতি হয়, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিদিন সেই পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে রাজধানীবাসীর।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ড. খায়রুল আনাম জানান, ঢাকার রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, দোকানপাট ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে ধুলাবালির পরিমাণ অনেক বেশি। যে কারণে সুস্থ মানুষেরও কাশি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’-এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, গত কয়েক দিন ধরে বায়ুদূষণের মাত্রা সাংঘাতিকভাবে বেড়েছে। এই বায়ুদূষণের কারণে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। শহরের প্রতিটি নাগরিক এই বায়ুদূষণ দিয়ে নানান রকমে আক্রান্ত হয়।
তিনি বলেন, বায়ুদূষণের মূল কারণ নিয়ম না মেনে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ। এ ছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের অবহেলা রয়েছে।
এদিকে বায়ুদূষণ শ্বাসকষ্টজনিত রোগের সঙ্গে বাড়ছে দৈনন্দিন ব্যয়ও। সব মিলিয়ে বছরে গড় জিডিপির ক্ষতি প্রায় সাড়ে চার শতাংশ।