আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

বায়ুবিদ্যুৎ থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলক যুক্ত হতে যাচ্ছে।

বুধবার কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে দেশের বৃহত্তম এই বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এ কথা জানান।

তৌফিক ইলাহী বলেন, দেশের বিদ্যুতের চাহিদার জোগান দিতে সরকার বেসরকারি খাতে আরও নতুন করে বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের সুযোগ দিচ্ছে। কক্সবাজারের খুরুশকুলের এ প্রকল্প চলতি বছরের শেষের দিকে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হবে। তবে এর আগেই পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে।

বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শনকালে প্রকল্পের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা।

গত বছরের ৩০ মার্চ কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে ৬০ মেগাওয়াটের বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউএস-ডিকে গ্রিন এনার্জি (বিডি) লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, বাতাস থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট ২২টি টারবাইন স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতিটি টারবাইন ৩ মেগাওয়াট বিদ্যু উৎপাদন করবে। ইতোমধ্যে ১০টি টারবাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাকআপের জন্য স্ট্যান্ডবাই হিসেবে দুটি টারবাইন বসানো হবে।

এ ছাড়া প্রকল্পটিতে ১২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য আরও ২০টি টারবাইনের প্রয়োজন হবে।


আরও খবর



সাফ জয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলকে সংবর্ধনা দিলো ওয়ালটন

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Image

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে যৌথভাবে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৪ এর শিরোপা জিতে বাংলাদেশ।

সাফ জয়ী সেই নারী ফুটবল দলকে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিশেষ সংবর্ধনা দিয়েছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাসহ মোট ৩৩ সদস্যের দলের প্রত্যেককে একটি করে ওয়ালটনের ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি উপহার দেওয়া হয়।

দুপুরে বাফুফে ভবনে খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এফ.এম. ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিলটন ও বাফুফের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। এ সময় বাফুফের অন্যান্য কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।

ঈদের আগে ওয়ালটনের প্রতিশ্রুত ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি উপহার পেয়ে সাফ জয়ী বাংলাদেশ ফুটবল দলের সবাই বেশ খুশি হন। বিশেষ করে কিশোরী ফুটবলাররা। তাদের চোখে-মুখে সেই খুশির ঝিলিক দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গেল ৮ ফেব্রুয়ারি ঘরের মাঠে ভারতের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচের শুরুতেই (৮ মি.) গোল হজম করে পিছিয়ে পড়েছিল সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। এরপর যোগ করা সময়ে (৯০+৩) মোসাম্মত সাগরিকা আক্তারের গোলে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। তাতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

সেখানেও চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রথম পাঁচ শটে দুই দলই বল জালে জড়ায়। এরপর সাডেন ডেথেও চলে সমানে সমান। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ১১ জন খেলোয়াড়ই গোল করেন। অন্যদিকে ভারতেরও ১১ জন টাইব্রেকার ও সাডেন ডেথে গোল করেন। এরপর টস ভাগ্যে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। পরে সেটা বাতিল করে বাইলজ অনুযায়ী ভারত-বাংলাদেশকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

অবশ্য ফাইনালের আগেই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় সাগরিকার বাবা-মাকে টেলিভিশন উপহার দেয় ওয়ালটন। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে ওয়ালটনের কর্মকর্তাগণ জানতে পারেন- সাগরিকার বাবা চায়ের দোকানদার মোহাম্মদ লিটন আলীর ঘরে মেয়ের খেলা দেখার মতো টেলিভিশন নেই। প্রতিবেশীর কাছ থেকে টেলিভিশন ধার করে এনে দেখেন মেয়ের খেলা। যে ম্যাচে সাগরিকা জোড়া গোল করে গর্বিত করেন তার বাবা-মাকে। এরপর সাগরিকার বাবা-মাকে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল থেকে মিরপুরের মাজার রোডস্থ ওয়ালটন কমপ্লেক্সে এনে টেলিভিশন তুলে দেয় ওয়ালটন।


আরও খবর



ক্যাডবেরির মোড়ক খুলতেই বেরিয়ে এলো পোকা, ক্ষুব্ধ সোহম

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

ক্যাডবেরি চকোলেটের বারের গায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পোকা! প্যাকেট খুলতেই চমকে গেলেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করে নিজের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন সোহম।

অভিনেতা লেখেন, চকোলেটে পোকা দেখতে পাব, এমনটা কখনওই আশা করিনি। এমন ঘটনায় আমিই খুবই হতাশ ও বিরক্ত হয়েছি। আপনি যদি প্রিয়জন কিংবা বাড়ির বাচ্চাদের চকোলেট দেওয়ার পরিকল্পনা করেন, তা হলে কিন্তু সাবধান! আমরা চকোলেটে কৃমি দেখতে পেয়েছি।

সোহম পোস্টে ক্যাডবেরির ছবিও ভাগ করেছেন। ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বারের গায়ে লেগে রয়েছে কৃমির মতো ছোট পোকা। তবে এই প্রথম নয়, কয়েক দিনে আগেই এ রকম আরও একটি খবর নজর কেড়েছিল সমাজমাধ্যমে। ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল চকোলেট ডে। ওই দিন হায়দরাবাদের অমিরপেত মেট্রো স্টেশন এলাকার একটি দোকান থেকে প্রেমিকার জন্য একটি রোস্টেড আমন্ড চকোলেট কিনেছিলেন এক যুবক।

চকোলেট হাতে পাওয়া মাত্রই উচ্ছ্বসিত হয়ে সেই প্যাকেট খুলতে গিয়েই শিউরে ওঠেন প্রেমিকা। ভিডিওতে দেখা যায়, চকোলেটের গায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পোকা। মুহূর্তের মধ্যে প্রেমের আনন্দ বদলে যায় ঘিনঘিনে অভিজ্ঞতায়। যদিও পোস্টে সেই যুবক কোনও সংস্থার নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি।


আরও খবর



তৃতীয় ওয়ানডে থেকে ছিটকে গেলেন তানজিম

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দুঃসংবাদ পেল বাংলাদেশ। ইনজুরির কারণে টাইগার পেসার তানজিম হাসান সাকিব ছিটকে গেছেন।

রোববার চট্টগ্রামে অনুশীলনের সময় হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়েছেন সাকিব। প্রথম দুই ম্যাচে ৪ উইকেট পেয়েছেন ডানহাতি ফাস্ট বোলার।

সাকিবের চোটের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির নির্বাচক হান্নান সরকার জানিয়েছেন, জাতীয় দলের অনুশীলনে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়েছেন তানজিম সাকিব। সে কারণে তৃতীয় ওয়ানডেতে আর তার খেলা হচ্ছে না। ফলে ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে ২১ বছর বয়সী এ পেসারকে। সেখানে তার পায়ের চিকিৎসা করানো হবে।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




আইপিএল খেলতে দেশ ছেড়েছেন মোস্তাফিজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের ব্যস্ততা শেষ। পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে মাঠ মাতাবেন তিনি। এরইমধ্যে দলের সঙ্গে যোগ দিতে দেশ ছেড়েছেন বাঁহাতি এই পেসার।

আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোস্তাফিজ। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, আমার নতুন অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। আইপিএলের ২০২৪ আসরকে সামনে রেখে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছি। আমাকে আপনাদের দোয়ায় রাখবেন, যাতে আমি নিজের সেরাটা দিতে পারি।

এদিকে, মোস্তাফিজকে নিয়ে সুখবর দিল চেন্নাই। দলটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবারের আসরের শুরু থেকে মোস্তাফিজের একাদশে থাকার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। মূলত, শ্রীলঙ্কার পেসার মাথিশা পাতিরানার চোটের কারণে কপাল খুলতে পারে মোস্তাফিজের।

মোস্তাফিজের বিষয়ে ওই কর্মকতা বলেন, মোস্তাফিজের বৈচিত্র্যময় বোলিং (স্লোয়ার ও কাটার) চেন্নাইয়ের পিচে বেশ কার্যকর হতে পারে। ২০ মার্চ সে ক্যাম্পে যোগ দেবে। র‍য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচের আগেই আমরা ওকে পাচ্ছি। সে জানে, তাকে কী করতে হবে। আমরাও দেখব সে কেমন করে।

আগামী ২২ মার্চ উদ্বোধনী ম্যাচেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে মাঠে নামবে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। সিএসকে হতে যাচ্ছে মোস্তাফিজের পঞ্চম আইপিএল দল। এর আগে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, রাজস্থান রয়্যালস ও দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলছেন ২৮ বছর বয়সী এই পেসার। সব মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচে ৭.৯৩ ইকোনমি রেটে ৪৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




জিআই পণ্যের তালিকায় উঠছে রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম

প্রকাশিত:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বসন্তময় ঋতু বৈচিত্র্যের এই ফাগুনে আমগাছের থোকায় থোকায় ভরা মুকুলে স্বপ্ন বুনছেন রংপুরের চাষিরা। বছরের নির্দিষ্ট এই সময় জুড়ে তাই চাষি তো বটেই, কম-বেশি সব শ্রেণির মানুষের দৃষ্টি থাকে সবুজ পাতায় ঢাকা আমগাছের শাখা-প্রশাখায়। প্রকৃতি বৈরি না হলে এবারও সাধারণ আমের পাশাপাশি হাঁড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিক ও চাষিরা। হাঁড়িভাঙা আমের মুকুলে এবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন উত্তরের চাষিরা। এদিকে শতরঞ্জির পর এবার জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে বিখ্যাত আম হাঁড়িভাঙা।

সম্প্রতি রংপুর সদরের পালিচড়া, বদরগঞ্জের শ্যামপুর, মিঠাপুকুরের খোড়াগাছসহ বিভিন্ন এলাকা যেতে দেখা মিলে সারি সারি গাছ। রাস্তার দুপাশে যেন হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের সবুজ বিপ্লব। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমির আইলে আইলে লাগানো হয়েছে আমের গাছ। বাদ পড়েনি বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা, পুকুরপাড়, বাড়ির উঠান। এখন বসন্ত বাতাসে আম গাছে দোল খাচ্ছে হাঁড়িভাঙা আমের মুকুল। সদ্য মুকুল ফোটার এমন দৃশ্য এখন শুধু বিস্তৃত গ্রামীণ জনপদেই নয়, শহরের গাছে গাছেও সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। একই চিত্র মিঠাপুকুরের আখিরাহাট, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গোপালপুর, নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়িসহ আশপাশের এলাকাতেও।

ইতোমধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে হাঁড়িভাঙা আম এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ার খবরে আনন্দিত এই অঞ্চলের মানুষ। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কারণে গত বছর বাংলাদেশ সরকার ভারত, ব্রিটেন, তুরস্ক ও আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের এই আম উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাঁড়িভাঙ্গার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হাঁড়িভাঙা আমের দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছে না চাষি এবং ব্যবসায়ীদের। প্রতি বছর কম বেশি শত কোটি টাকার ওপরে বিক্রি হয় হাঁড়িভাঙা আম। কিন্তু পদাগঞ্জ হাটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। তারা মনে করছেন, সঠিক সময়ে আম বাজারজাত ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো না গেলে অনেকেই লোকসানে পড়বেন।

হাঁড়িভাঙা আমের গোড়াপত্তন করেছিলেন খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের নফল উদ্দিন পাইকার নামে এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। স্বাধীনতার আগের বছর ১৯৭০ সালে নফল উদ্দিন ১২০ বছর বয়সে মারা যান। এখন তার লাগানো হাঁড়িভাঙা গাছটির বয়স ৬৮ বছর।

মাতৃগাছটির সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ হোসেন পাইকার বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমের মুকুল এলে কৃষকরা আম বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঝড় কিংবা বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ফলন ভালো হবে। হাঁড়িভাঙা আম এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

একই ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমচাষি শাহ্জাহান মিয়া। বছর দশেক আগেও তিনি শুধু ধান, ভুট্টা আর পাটচাষ করতেন। কিন্তু গ্রামে হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের বাগানের পর বাগান দেখে তিনিও আমের বাগান গড়ে তোলেন।

অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এই আমচাষি বলেন, এবার আমের মুকুল ভালো হইচে। খালি হামার গ্রামোতে নোয়ায় এ্যলা হাঁড়িভাঙ্গা আম বালুয়া, শ্যামপুর, হেলেঞ্চ, পাইকারেরহাট, জারুল্লাপুর, খোঁড়াগাছ, গোপালপুর, সরদারপাড়া, লালপুর, পদাগঞ্জ, দুর্গাপুরসহ কয়েকটা গ্রামোত চাষ হওচে। গ্রামোত একটা বাড়িও খুঁজি পাওয়া যাবার নায় যে বাড়ির খুলিত হাঁড়িভাঙার গাছ নাই।

হাঁড়িভাঙা আমকে ঘিরে বেকারের সংখ্যাও কমেছে রংপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়। বিশেষত মিঠাপুকুরের লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানিসহ আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা এখন আম ব্যবসায় জড়িয়ে বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে আবার উদ্যোক্তা হিসেবে হাঁড়িভাঙার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

আখিরাহাটের বাসিন্দা আব্দুস সালাম ১৯৯২ সাল থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ করে আসছেন। শুধু চাষবাদ নয়, এই অঞ্চলের হাঁড়িভাঙা সম্প্রসারণে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার হাত ধরেই এ অঞ্চলের মানুষ এখন অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভের আশায় জেলার উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে প্রতি বছর হাঁড়িভাঙা আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

আব্দুস সালাম সরকার বলেন, আমি প্রায় ৩৪ বছর ধরে হাঁড়িভাঙা আমের চাষ করছি। আমাকে দেখে এখন রংপুরে কয়েক লাখ  হাঁড়িভাঙা আমের গাছ রোপণ করেছে আমচাষিরা। আমার ২৫টির বেশি বাগান রয়েছে। এ রকম অনেকের আম বাগান রয়েছে। পুরো জেলায় এখান প্রতি বছর প্রচুর আম উৎপাদন হয়। টেকসই অর্থনীতির জন্য আমি শুরু থেকেই  হাঁড়িভাঙা আমের সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন, আধুনিক আমচাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ  হাঁড়িভাঙাকে জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি করে আসছিলাম। সরকার একটু দৃষ্টি দিলেই হাঁড়িভাঙাকে ঘিরেই এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সচল হবে।

কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ক হাঁড়িভাঙা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ক হবে। হাঁড়িভাঙার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে। বর্তমানে বাগানগুলোতে পরিচর্যা চলছে। নির্ধারিত সময়ে আম বাগান মালিক ও চাষিরা গাছ থেকে হাঁড়িভাঙা আম পারতে পারবেন। এরপর থেকে শুরু হবে বাজারজাত।

গত বছরের চেয়ে এবার হাঁড়িভাঙা আমের লক্ষ্যমাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল।

তিনি বলেন, ঠিক গত অর্থবছরে রংপুর অঞ্চলে ২ হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমিতে হাঁড়িভাঙা আমের আবাদ হয়েছিল। গতবছরের চেয়ে এই বছর হাঁড়িভাঙা আমের ফলন বেশি আসবে। কারণ গতবছর যেই বাগানগুলো ছোট ছিল সেগুলোর ফল ধরবে এবং আমের উৎপাদন শুরু হবে। যার কারণে গত বছরের চেয়ে এই বছরে হাঁড়িভাঙা আমের উৎপাদন বেড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, রংপুরে হাঁড়িভাঙা আমের গাছ রয়েছে ২ হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমিতে। যেখানে গত বছর উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন আম। হাঁড়িভাঙার সবচেয়ে বড় যেটা খবর সেটা হচ্ছে বিগত কয়েকবছর যাবৎ আমরা এই পণ্যটাকে কৃষি বান্ধব সরকারের যে বিভিন্ন কৃষি পণ্য জেলায় জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণা হতে যাচ্ছে তার প্রক্রিয়ার মধ্যে রেখেছি।

অন্যদিকে উত্তরের অর্থনীতিতে হাঁড়িভাঙা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বলে জানান রংপুরের জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, প্রতি বছর হাঁড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলন হয়। এবার হাঁড়িভাঙা আম নিয়ে সুখবর রয়েছে। কারণ জিআই পণ্য ঘোষণা হওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। খুব দ্রুত ভালো খবর পাব আশা রাখি।

তিনি আরও বলেন, এটার কার্যক্রম প্রায় সমাপ্তের পথে। আগামী দুই মাসের মধ্যে হাঁড়িভাঙার আম জিআই পণ্যে রূপান্তরিত হওয়ার অফিশিয়াল ঘোষণা আসবে।


আরও খবর