বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ১৭টি গুমের ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের গুম কমিটির ওয়ার্কিং গ্রুপের ১২৬ তম অধিবেশনে বৈঠক পরবর্তী প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিন গুম নিয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিশ্বে ১৭টি গুমের ঘটনা পরীক্ষা করে দেখে কমিটি। ১৭টি গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত দেশগুলো হলো—বাংলাদেশ, আজারবাইজান, মিসর, কেনিয়া, লেবানন, লিবিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া এবং সৌদি আরব।
এ ছাড়া ওই বৈঠকে কমিটি আরও ৭২৭টি অভিযোগ নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। এ ঘটনাগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশসহ আরও ২৩টি দেশ জড়িত। ওয়ার্কিং গ্রুপ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে জরুরি পদক্ষেপমূলক প্রক্রিয়ার আওতায় এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দেশকে জানিয়েছিল। কমিটির পরবর্তী ১২৭ অধিবেশন চলতি বছরের ৯ থেকে ১৩ মে অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ এক দশকের ওপর বাংলাদেশে মানুষ জোরপূর্বক বা অনিচ্ছাকৃত গুম হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে জাতিসংঘের। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশের কাছে জবাব চেয়ে আসছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্স ডিসাপিয়ারেন্স (ডাবলুজিইআইডি)। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও এর বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে গুম নিয়ে ডাবলুজিইআইডকে সন্তুষ্ট করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা।
গত এক দশকের ওপর বাংলাদেশের কাছে ৮৩ জনের গুম হওয়া নিয়ে জানতে চেয়েছে ডাবলুজিইআইডি। এ নিয়ে আগে বৈঠক করে জাতিসংঘকে উত্তর দিয়েছে। তবে কোন বারই জাতিসংঘ বাংলাদেশের উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাই বিষয়টি এবার গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে বাংলাদেশ। কারণ সামনে ডাবলুজিইআইডি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া তারপর ইউনিভার্সেল পিরিয়ডিক রিভিউ রয়েছে। ফলে তাঁর আগে জাতিসংঘকে বিষয়গুলোতে সন্তুষ্ট করতে চায় ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘তালিকা দেওয়া ৮৩ জনের মধ্যে ৭ জনের বিষয়ে তথ্য দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। বাকিদের বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। তাই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের কাছ থেকে যথাযথ উত্তর চাওয়া হয়েছে। যাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা জাতিসংঘকে জানানো যায়।’