আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

আসছে নতুন অর্থবছরের বাজেট

প্রকাশিত:বুধবার ১১ মে ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ মে ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আগামী ৯ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। এটা স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম এবং বর্তমান সরকারের টানা ১৪তম ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি হবে চতুর্থ বাজেট। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য সরকার ৬ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৭৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা বেশি। নতুন এই বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। করোনাভাইরাস সঙ্কট পরবর্তী অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে প্রধান্য দিয়ে আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা করা হচ্ছে।

আগামী বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে আগামী অর্থবছরে ঘাটতি বাড়তে পারে ২৮ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে মোট আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে মোট আয় ধরা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। ফলে আগামী বাজেটে মোট আয় বাড়ছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের মোট আয়ের মধ্যে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি জিডিপির প্রায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া আছে। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হবে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। এছাড়া আগামী বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। কর বহির্ভূত রাজস্ব ধরা হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার এডিপির প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা। বাজেটের মোট আকার শেষ মুহূর্তে কিছু বাড়তে-কমতে পারে। এ ছাড়া আসন্ন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি অর্থবছরে যা ধরা হয়েছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে যেসব খাতে বেশি করে ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়া হতে পারে, সেগুলো হচ্ছে বিদ্যুত খাত ১৮ হাজার কোটি টাকা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানি মূল্য পরিশোধ ও প্রণোদনা প্যাকেজের সুদ ভর্তুকি ১৭ হাজার ৩০০ কোটি, খাদ্য ভর্তুকি ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি এবং কৃষি প্রণোদনা বাবদ ১৫ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুত, সার ও গ্যাসের মূল্য সমন্বয় করা না হলেই অবশ্য এমনটা হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে খাদ্য ও জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা এবং দেশের প্রধান রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে মন্দার পূর্বাভাস সত্ত্বেও আগামী অর্থবছরে ৭.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার এখনকার তুলনায় নতুন অর্থবছর বেশ কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ হলে এবং নতুন করে দেশে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি না হলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্প্রসারণমূলক আর্থিক নীতি অনুসরণ করার পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে বাড়তি ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা সংশোধিত বাজেটেও অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত, আমদানি-রফতানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবাখাতে চাঙ্গাভাব ফিরে আসা, কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকার পাশাপাশি বাড়তি রাজস্ব আয়ের কারণে এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, নতুন অর্থবছরে রফতানির প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি দেশের শিল্প ও কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। চলতি অর্থবছর জনশক্তি রফতানিতে ৩৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ায় খুব শীঘ্রই রেমিটেন্স প্রবাহেও উচ্চ প্রবৃদ্ধি আশা করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ দশমিক ৮৬ শতাংশের বেশি, এই সময়ে আমদানি বেড়েছে ৪৬ দশমিক ২১ শতাংশ। তবে আমদানি ব্যয়ের মধ্যে পেট্রোলিয়াম ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামীতে বাড়তি প্রবৃদ্ধির। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়েছে ৪২ দশমিক ৮১ শতাংশ ও জুলাই-জানুয়ারি সময়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ৫১ শতাংশেরও বেশি।

গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪৮ শতাংশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রায় ২৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাকি সময়েও প্রধান দুই বাজারে রফতানি প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারের কিছুটা ডিপ্রেসিয়েশন হয়েছে। গত মার্চ শেষে এই হার ছিল ডলার প্রতি ৮৬ দশমিক ২০ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৪.৮০ টাকা; তবে এটি উদ্বেগজনক নয়। বর্তমান অর্থবছরে ইউরোর বিপরীতে টাকা কিছুটা শক্তিশালী হচ্ছে। চলতি মার্চ শেষে ইউরোর বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল ৯৪ দশমিক ৬৫ টাকা, গতবছর একই সময়ে এটি ছিল ১০১ দশমিক ০৬ টাকা।

তবে যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের মতো বড় প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হওয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে তেল ও খাদ্যপণ্যসহ পণ্যবাজার সার্বিকভাবে উর্ধমুখী থাকায় সামনের দিনগুলোতে উন্নয়ন ব্যয়সহ সরকারের সার্বিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। আন্তর্জাতিক মূল্য পরিস্থিতিতে জ্বালানি, বিদ্যুত, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি, কাঁচামাল ও খাদ্যপণ্যের দাম সহসাই কমবে- এমন ধারণা করার ভিত্তি নেই। পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট, গ্যাস, বিদ্যুতসহ বাংলাদেশে কিছু গৃহস্থালি নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী রয়েছে, যা মূল্যস্ফীতি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। আবার ফেব্রুয়ারিতে ঋণপ্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বিদ্যমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে আগামী বছর বিনিয়োগ থেকে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি আসবে বলে মনে হয় না। ভোক্তা ব্যয় বাড়ছে মূলত মূল্যস্ফীতির কারণে। তাই ভোক্তার প্রকৃত ব্যয় বাড়েনি। সরকারী ব্যয়ও খুব একটা বাড়েনি।

রেমিটেন্স প্রবাহও আগের অর্থবছরের তুলনায় এবার কমে গেছে, যা ভোক্তার ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করছে। এ পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছর ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। বিশ্ব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং কোভিড পরিস্থিতির অবনতি না হলে আগামী অর্থবছর প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হওয়া স্বাভাবিক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান হলেও ইউরোপের মন্দার ঝূঁকি রয়েছে, যা আমাদের রফতানি প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে। এ বছর জনশক্তি রফতানি অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন বছর রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়বে। সার্বিক পরিস্থিতিতে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন, বিদ্যমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হবে কি-না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

আগামীতে টাকার আরও অবমূল্যায়ন প্রয়োজন হতে পারে, যা মূল্যস্ফীতি উস্কে দেবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান হলে জ্বালানি তেলের দাম কমবে। কিন্তু অতীতে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কমে গেলেও সরকার দেশে দাম সমন্বয় করেনি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমবে, তার প্রভাব দেশের বাজারে পড়বে। এখনও অনেক সময় আছে। সামনে কি হয়, তা তো বুঝা যায় না। পরিস্থিতি যদি এরকম থাকে, তাহলে এসব লক্ষ্যমাত্রা কোনমতেই অর্জন করা সম্ভব হবে না। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা মোটেও অসম্ভব হবে না।

চলমান যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়া ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রসহ বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির আশঙ্কা ছাড়া অর্থনীতির বাকি সব সূচকই ইতিবাচক। দেশে কোভিড সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের (এপ্রিল-মে ২০২০) সময়ে শিল্প উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। কিন্তু ওই বছরের জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায়। ২০২১ এর মে-জুলাই সময়ে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় শিল্প উৎপাদন কিছুটা স্তিমিত হলেও মহামারী পূর্ব সময়ের অবস্থার উপরে ছিল। এখন ম্যানুফ্যাকচারিংখাত কোভিডের ক্ষতি সামলে নিয়ে স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে এসেছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে শিল্পের উৎপাদন সূচকে উল্লেখযোগ্য উল্লম্ফন ঘটেছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় বর্তমান অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি উর্ধমুখী রয়েছে এবং আগামীতেও এভাবে থাকবে বলে আশা করা যায়।

নিউজ ট্যাগ: বাজেট

আরও খবর



ঢাকার বাতাসের মান আজও ‘অস্বাস্থ্যকর’

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজও ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে ১৫৬ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শহরটির অবস্থান নবম।

পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি ও নেপালের কাঠমান্ডু যথাক্রমে ২০৬, ১৯১ ও ১৭৮ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে।

১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।


আরও খবর



ঈদের দিনেও ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশব্যাপী উদযাপন হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে ছুটি। তবে ছুটির দিনেও আজ ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর। বেলা ১১টার দিকে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল অষ্টম। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে এ সময় ঢাকার স্কোর ছিল ১৫৭। বায়ুর এই মান অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়।

বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।

এ সময়ে বিশ্বে বায়ুদূষণে প্রথম অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি। আইকিউএয়ারের সূচকে শহরটির স্কোর ২৪৮। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে যথাক্রমে নেপালের কাঠমান্ডু ও ভারতের কলকাতা। শহর দুটির স্কোর যথাক্রমে ১৯৩ ও ১৯২।

স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।


আরও খবর



সুন্দরবনে হরিণ ও শূকরের ৪০ কেজি মাংসসহ শিকারী আটক

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

Image

পূর্ব সুন্দরবন থেকে ইয়াসিন হাওলাদার নামে এক হরিণ শিকারীকে আটক করেছে বনরক্ষীরা। তাঁর কাছ থেকে ২০ কেজি হরিণ ও ২০ কেজি শূকরের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিপুল পরিমাণ নাইলনের দড়ির ফাঁদ ও হরিণ শিকারের অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আটক এই চোরা শিকারীরর বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটার চরদোয়ানি এলাকার আলম হাওলাদারের ছেলে। আটক শিকারীদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়েরর পর বুধবার সকালে বাগেরহাট আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাকে করাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান জানান, পাথরঘাটার চরদুয়ানি এলাকার একটি চোরা শিকারী দল চরখালীর গহীন বনে হরিণ শিকারে লিপ্ত হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চরখালী টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে চরদুয়ানি এলাকার আলম হাওলাদারের ছেলে ইয়াসিনকে আটক করেন।

এসিএফ আরও জানান, বনরক্ষীদের টের পেয়ে শিকারী দলের আরো চার সদস্য পালিয়ে যায়। তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া গেছে। আটক শিকারীর নৌকা তল্লাশি করে ২০ কেজি হরিণ ও ২০ কেজি শূকরের মাংস এবং এক বস্তা ফাঁদ পাওয়া। শিকারীদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক শিকারীদের আটকের চেষ্টা চলছে। চোরা শিকারীরা শূকরের মাংস হরিণের মাংসের সাথে মিশিয়ে বিক্রি করে বলে জানা গেছে।


আরও খবর



ঈদে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় ১৪ কোটি টাকা

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

এবার ঈদের ছুটিতে (৯ থেকে ১৩ এপ্রিল) পদ্মা সেতু হয়ে ৪৬ হাজার ৫৫৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে টোল আদায় হয়েছে ১৪ কোটি ৬০ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ টাকা।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদে পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার গত বছরের তুলনায় কমেছে। কমেছে টোল আদায়ও। গত ঈদুল ফিতরের সময় ২০ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৮টি যানবাহন পারাপার হয়। টোল আদায় হয়েছিল ১৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৫০ টাকা।

এ বছরের হিসাবে যানবাহন কমেছে ১৭ হাজার ২২৫টি। টোলের পরিমাণও কমেছে গত বছরের তুলনায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৮৫০ টাকা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মাওয়া প্রান্ত দিয়ে ৯ এপ্রিল ৩০ হাজার ৩৩০টি, ১০ এপ্রিল ১৭ হাজার ৫০৫টি, ১১ এপ্রিল ১১ হাজার ১৯৪টি, ১২ এপ্রিল ১৫ হাজার ৮৮৩টি এবং ১৩ এপ্রিল ১২ হাজার ৮৯৬টি যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে। এতে এ প্রান্ত দিয়ে এ পাঁচ দিনে টোল আদায় হয়েছে ৭ কোটি ৮৭ লাখ ১৮ হাজার ৫৫০ টাকা। জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পাঁচ দিনে যথাক্রমে ১৪ হাজার ৮৭৪টি, ৮ হাজার ৫১০টি, ৭ হাজার ৪৬৫টি, ১২ হাজার ১০০টি এবং ১৫ হাজার ৫৯৬টি যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে। এতে এ প্রান্তে টোল আদায় হয়েছে মোট ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৫০ টাকা।

গত বছরের তুলনায় যানবাহন ও টোল আদায়ের পরিমাণ কম হলেও এবার ঈদের আগে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায়ের রেকর্ড হয়।

নিউজ ট্যাগ: পদ্মা সেতু

আরও খবর



মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৬৫, আহত ১২২৮

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

গত মার্চে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬৫ জন নিহত ও ১২২৮ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে ১৮১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৩ জন নিহত ও ১৬৬ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৭৮ শতাংশ, নিহতের ৩৫.৯২ শতাংশ ও আহতের ১৩.৫১ শতাংশ।

একই সময়ে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে সাতটি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৯৭টি দুর্ঘটনায় ৬১২ জন নিহত ও ১৩৩১ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।

মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ১৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বরিশাল বিভাগে। সেখানে ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ৯২ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রকাশিত এই তথ্য দেশে সংগঠিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র নয়। এটি কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য। দেশে সংগঠিত সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় অংশ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত গণমাধ্যমে স্থান পায় না। তাই এসব তথ্য আমাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরা সম্ভব হয় না। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রাথমিক উৎসস্থল দেশের হাসপাতালগুলোতে দেখলে এমন ভয়াবহ তথ্য মেলে।

ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতালে) মার্চ মাসে ১৩৬৯ জন সড়ক দুঘর্টনায় গুরুতর আহত পঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বিজ্ঞান বলে একটি দুঘর্টনায় ১০ জন আহত হলে তার মধ্যে কেবল একজন গুরুতর আহত বা পঙ্গু হন। বাংলাদেশে ১০ হাজার সরকারি ও ছয় হাজার বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে প্রতিবছর সড়ক দুঘর্টনায় আহত প্রায় তিন লাখের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। অথচ গণমাধ্যমে তার ১০ ভাগের এক শতাংশ তথ্যও প্রকাশিত হয় না বলে আমরা ঘটনার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরতে পারি না।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে মার্চ মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে— ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল, সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা, রাতের বেলায় ফগ লাইটের অবাধ ব্যবহার, সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ ক্রটি, ফিটনেস যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার ব্যাপক বৃদ্ধি, ফুটপাত বেদখল, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে— রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালু করা, স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান, রাতের বেলায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা, সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা, রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা, ব্লাক স্পট নিরসন করা, সড়ক নিরাপত্তা অডিট করা, স্টার মানের সড়ক করিডোর গড়ে তোলা এবং দেশে সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’র চলমান গতানুগতিক কার্যক্রম অডিট করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করা, প্রাতিষ্ঠানিক অকার্যকারিতা জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা।


আরও খবর