আর্থিক সংকটে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা। খাদ্য
থেকে জ্বালানি সবই ফুরিয়েছে। প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে সাধারণ মানুষ। জারি হয়েছে জরুরি
ব্যবস্থা। এরমধ্যেই শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন। রবিবার (৩ এপ্রিল)
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা
রাজাপাকসে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্য তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
যদিও এখনও পর্যন্ত ইস্তফা দেননি ওই দেশের
প্রধানমন্ত্রী। এদিন বিকেলে তাঁর পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। তবে রাতেই শ্রীলঙ্কার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় -র তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে ওই বিষয়টি সত্য নয়।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফ থেকে একটি বিবৃতি
দিয়ে বলা হয়, "প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষর পদত্যাগের খবর ভুয়ো। এরকম
কোনও ঘটনা ঘটেনি। ইস্তফা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনাও করেননি প্রধানমন্ত্রী।"
মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের
অভাব এবং মুহুর্মুহু পাওয়ার কাটের দরুন রাজপথে নেমে আসে গোটা শ্রীলঙ্কা। গণ আন্দোলনের
জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে প্রশাসন। ঘিরে ফেলা হয় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষর
বাসভবন। এরপরেই প্রেসিডেন্ট এমার্জেন্সির ঘোষণা করেন। যদিও এরপরেও থামেনি আন্দোলন।
ওই দেশের চরম আর্থিক সংকটের জন্য রাজাপক্ষর
প্রশাসনকে দায়ী করছে জনসাধারণ। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব তাঁরা। পড়ুয়া
থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও
সামিল হয়েছে ওই আন্দোলনে।
রবিবারও সেই প্রতিবাদ জারি ছিল। এমনকী
আন্দোলনরত পড়ুয়াদের উপর এদিন জলকামান ছোড়া হয়। ফলত উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। ক্ষোভে
ফুঁসতে থাকা মানুষের সরকারের প্রতি রাগ আরও বেড়ে যায় এদিন। আর এরই মাঝে মন্ত্রিসভার
প্রতিটি সদস্য পদ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
এই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার।
ওই দিন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের বাড়িতে বিক্ষোভকারীরা ঢোকার চেষ্টা
করেছেন। রাজাপাকসে ও ক্ষমতায় থাকা তার পরিবারের সদস্যদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সামরিক
যানে অগ্নিসংযোগ করেছেন। বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আর কঠোর
নিয়মকানুন জারি করে এই বিক্ষোভ দমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন রাজাপাকসে।