বাজারে অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের
ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রকদের এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়েছে, যা তারা প্রকৃত অর্থেই করতে
চায়নি। যেমন একটি বৃহৎ ব্যাংককে
আরও বড় হওয়ার সুযোগ দেওয়া। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক
ব্যাংকগুলো আরও অবনতির দিকে এগোচ্ছে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আবার এ ধরনের পদক্ষেপ
নিতে হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রকদের
অন্যতম ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মার্টিন
গ্রুয়েনবার্গ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক
মন্দায় বিপদগ্রস্ত কিছু ব্যাংক বিক্রি করে দিতে হয়েছিল। এটি যুক্তিযুক্তভাবে দীর্ঘমেয়াদি
আর্থিক স্থিতিশীলতার ঝুঁকি বাড়িয়েছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একীভূতকরণের বিষয়ে
আরও সতর্ক ছিল নিয়ন্ত্রকরা।
আরও পড়ুন<< স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন
মার্চের শেষ নাগাদ মার্কিন ব্যাংক সিলিকন
ভ্যালি ধসে যেতে পারে—এমন আতঙ্ক থেকে আমানত তুলে নেয় আমানতকারীরা।
এতে আমানত সংকটে পড়লে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এফডিআইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে রয়টার্স
জানিয়েছে, সেই সময় সিলিকন ভ্যালি কিনতে আগ্রহী হয়নি কোনো বড় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর ধারণা
ছিল, নিলামে তাদের স্বাগত জানানো হবে না। পরে সিলিকন ভ্যালি কিনে নেয় ফার্স্ট সিটিজেন্স
ব্যাংক।
এর মাস দেড়েক পর আমানত সংকটে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের
আরেক ব্যাংক ফার্স্ট রিপাবলিক। এটির আমানত বীমা তহবিলের জন্য কম হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের
শীর্ষ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান চেজ অ্যান্ড কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতে
হয়েছিল ব্যাংকটিকে।
আরও পড়ুন<< তুরস্কের মসনদে আবারও এরদোগান
একটি অকার্যকর আঞ্চলিক ব্যাংক খাতের সমস্যা
অতি গভীর। এসব ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির একটি বড় অংশকে ঋণ দেয়। সিলিকন ভ্যালি,
সিগনেচার ও ফার্স্ট রিপাবলিক—এই তিন ব্যাংকের ধস ও এর প্রভাবে অন্যদের
শেয়ারের নিম্নমুখী প্রবণতায় গত ৮ মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত কেবিডব্লিউ রিজিওনাল ব্যাংকিং
ইনডেস্কের পতন হয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
বাণিজ্যক রিয়েল এস্টেটের মূল্য ও যুক্তরাষ্ট্রের
ঋণখেলাপি হওয়াসহ অন্যান্য ঝুঁকি এবং কঠোর মুদ্রানীতি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
চাপও বাড়ছে। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর ওপর ক্রমাগত চাপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে মন্দার
দিকে ঠেলে দিতে পারে। তাই নিয়ন্ত্রক, ব্যাংকার ও অন্য বিশ্লেষকরা সংকট কাটিয়ে উঠতে
ওয়াশিংটন কি পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই নজর রাখছেন।