করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন
প্রতারণায় জড়িত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিমকে আরও ৩ বছরের
কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা
মামলায় তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক
প্রদীপ কুমার রায়ের আদালত তাকে এ সাজা দেন।
গত ১০ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর
বিচারক প্রদীপ কুমার রায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য
আজকের দিন ধার্য করেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর করোনা
রোগীদের চিকিৎসায় ২০২০ সালের ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
চুক্তি হয়েছিল।
চুক্তির তিন মাস না যেতেই ভুয়া রিপোর্ট
দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ
ওঠে সাহেদের মালিকানাধীন হাসপাতালটির বিরুদ্ধে।
১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত
থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, অনিয়মের নানা অভিযোগ সামনে
আসতে থাকে।
মামলার অভিযোগে, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর
নির্ধারিত ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দিতে সাহেদকে নোটিশ দেয় দুদক। এ
সময়ে তিনি সম্পদের হিসাব জমা না দেওয়ায় আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে
বর্ধিত সময়ের মধ্যেও সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ায় অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে
তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ অভিযোগে ২০২১ সালের ১ মার্চ সাহেদের
বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করা হয়। পরে ২০২২ সালের ১৭
এপ্রিল মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাহেদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন
আদালত। এ মামলার মোট দশজন সাক্ষী সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।
এর আগে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রিজেন্ট
গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের বিরুদ্ধে
অস্ত্র আইনে মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল
কায়েশ। ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় করা মামলায় সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত
হয়। এছাড়া অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারায় তার সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। উভয়
সাজা একসঙ্গে চলবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন।