গণমাধ্যম থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, সবখানেই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে টিপ। কপালে টিপ পরার কারণে শনিবার (২ এপ্রিল) হেনস্তার শিকার হয়েছেন তেজগাঁও কলেজের এক নারী প্রভাষক। হেনস্তাকারীর ভূমিকায় ছিলেন এক পুলিশ সদস্য। ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। সংসদে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে বিষয়টি। এই ঘটনার প্রতিবাদ আসছে দেশের প্রায় সর্বস্তরের শিল্পী-কুশলীর পক্ষ থেকে। শুধু জবাবই নয়, সোশাল হ্যান্ডেলে নিজ নিজ দেয়ালে শিল্পীরা প্রকাশ করছেন নিজেদের টিপ পরা ছবি এবং ক্যাপশনে দিচ্ছেন প্রশ্নের উত্তর।
এবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। এ নিয়ে চার লাইনের একটি প্রতিবাদী কবিতা লিখে পোস্ট করেছেন মিথিলা-‘আমার টিপ নিয়ে কোন কথা নয়/আমার স্বাধীনতা নিয়ে কোন কথা নয়/যদি থাকে আমার আগুনে নিশ্চিহ্ন হবার ভয়/পৃথিবীটা তোমার একার নয়!’
পোস্টের সঙ্গে নিজের টিপ পরা একটি ছবিও দিয়েছেন অভিনেত্রী। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এসব হেনস্তাকারীর দিকে অস্ত্র তাক করে আছেন মিথিলা। তার এই কবিতা এবং ছবি নেটিজেনদের কাছে বেশ প্রশংসাও কুড়াচ্ছে।
অভিনেত্রীর কথায়, ‘শাড়ি আর টিপ বাঙালি নারীর প্রিয় সাজ। সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে তার আত্মমর্যাদায় আঘাত করা। যা আমি মেনে নিতে পারছি না।’
জানা গেছে, এই ছবিটি মূলত মিথিলা অভিনীত রাজর্ষি দে নির্মিত কলকাতার সিনেমা ‘মায়া’র একটি স্থির চিত্র। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিথিলা। সে সিনেমায় তিনি নিজের কপালে সিকি সাইজের লাল টকটকে সিঁদুরে টিপ এঁকেছেন। তার দাবি, ছবিটি সাদা-কালো ছিল। কপালের টিপের প্রতি সবার নজর কাড়তে সেটিকে রঙিন করেছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক।’’
ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যায় সেই ব্যক্তি। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন লতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার দাবি করছেন অগুনতি মানুষ।