আজঃ মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

আমানত বাড়তে শুরু করেছে ব্যাংক খাতে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

ব্যাংক খাতে আমানত বাড়তে শুরু করেছে। ব্যাংক থেকে আগে তুলে নেওয়া টাকা আবার ব্যাংকে জমা হচ্ছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অধিকাংশ ব্যাংকেরই আমানত ফিরতে শুরু করেছে। তারা বলছেন নভেম্বরের চেয়ে ডিসেম্বরে বেশি আমানত পেয়েছে ব্যাংকগুলো। ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারি মাসে আরও বেড়েছে। একইভাবে জানুয়ারি মাসের চেয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে আরও বেড়েছে আমানত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বরে ব্যাংক ব্যবস্থায় আমানত বেড়েছে ২ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। এর আগের মাসে নভেম্বরে ব্যাংক আমানত ছিল ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। অবশ্য অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে আমানত কমেছিল ৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। গত অক্টোবরে ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।

গত ১৫ জানুয়ারি ৬ শতাংশ বেঁধে দেওয়া আমানতের সুদ হারের সীমা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকগুলোকে ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এর সুফলও মিলছে। ইতোমধ্যে আমানতের সুদহার বাড়িয়ে দিয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যাংক। আর সুদের হার বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোতে আমানতও বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণের সুদ বাড়লে আমানতের সুদ হার বেড়ে যায়। আর আমানতের সুদ হার বাড়লে স্বস্তি পান সুদ আয় নির্ভর আমানতকারীরা।

২০২২২৩ অর্থবছরের শেষ ছয় মাসের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ব্যাংকের আমানতের ওপর বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলো। এছাড়া নতুন মুদ্রানীতিতে ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়ানোরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। অর্থাৎ ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়িয়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে ব্যাংকগুলো। নতুন মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমানতের সুদহার উন্মুক্ত করে দেওয়া ও ঋণ সুদহারে কিছুটা শিথিল করায় তা আমানতের সুদহার বাড়াতে সহায়তা করবে।

যদিও দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই মানুষের সঞ্চয়ের ক্ষমতা কমেছে। অনেকে জমানো টাকা তুলে সংসার চালাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন অনিয়মের খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে টাকা তুলে রাখার প্রবণতা তৈরি হয়। এ অবস্থায় আমানতের সুদহার বাড়াচ্ছে অনেক ব্যাংক। ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদহারের সীমা বহালের মধ্যে আমানতে ৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে কোনও কোনও ব্যাংক। বর্তমানে গড় মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কাছাকাছি। এর কম সুদ দেওয়া মানে প্রকৃতপক্ষে আমানতকারীর লোকসান। এসব কারণে সুদহারের ৯ শতাংশ সীমা বহাল থাকলেও আমানতের সুদ বাড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো।

প্রসঙ্গত, কোন ব্যাংক কত সুদে আমানত নিচ্ছে প্রতি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তা ঘোষণা দিতে হয়। সুদহার বাড়ালে বা কমালে নিজ ব্যাংকের ওয়েবসাইটেও নোটিশ দিতে হয়। ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণের সুদহার ৯ ও আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে ৮ শতাংশ সুদে আমানত নেওয়া শুরু করেছে পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বেসরকারি খাতের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক মেয়াদি আমানতে ৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। আগের মাসে যা ছিল সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ।

বেসরকারি এক্সিম ব্যাংক জানুয়ারিতে মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ করেছে। আগের মাসে যা ছিল সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ। এবি ব্যাংক জানুয়ারিতে মেয়াদি আমানতে সুদহার ঘোষণা করেছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের মাসেও যা সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ ছিল। আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ করেছে। গত ডিসেম্বরে সাড়ে ৬ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানত নেওয়া রূপালী ব্যাংক এখন সুদ দিচ্ছে ৭ শতাংশ। জনতা ব্যাংকও ৭ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানত নিচ্ছে। নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির আমানতে সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আমানতে সুদ হার ৭ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।

অবশ্য ডিসেম্বর প্রান্তিকের তথ্য বলছে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর মাসে আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। এক বছর আগে যা ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তথ্য বলছে সুদহার বাড়লেও আমানত প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে আমানত ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা হয়েছে। অথচ এক বছরে ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ ঋণ বেড়ে ডিসেম্বর শেষে স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৩ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি একাধিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  বলেন, ব্যাংকগুলোতে এখন টাকার সংকট চলছে। আমানত পেতে হলে সুদ বাড়াতে হবে। সুদ না বাড়িয়ে উপায় নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বার্ষিক আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশে ওঠে আমানতের প্রবৃদ্ধি। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে আমানতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে  ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। এর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ব্যাংকগুলোর আমানতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে।

প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরই সবচেয়ে কম বেড়েছে আমানত। করোনা মহামারির বছর ২০২০ সালে ব্যাংক খাতে আমানত বাড়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ১৩ শতাংশ। তার পরের বছর ২০২১ সালে আমানত বেড়েছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ২১ শতাংশ। আর গত বছর বেড়েছে ৭৯ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, যারা ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নিয়ে বাসায় রেখেছিলেন, তারা আবার টাকা ব্যাংকে রাখা শুরু করেছে। বিভিন্ন অপপ্রচারের কারণে ভয়ে অনেকেই টাকা উঠিয়ে নেওয়ার পর যখন দেখলো ব্যাংকগুলোকে চেক দিলে সঙ্গে সঙ্গে টাকা দিয়ে দিচ্ছে। কর্মকর্তাদের নিয়মিত বেতন হচ্ছে। সবগুলো ব্যাংকে ঠিকমত লেনদেন হচ্ছে। ব্যাংকের প্রতি আস্থা বেড়ে যাওয়ায় সবাই আবার ব্যাংকে আসা শুরু করেছে। এছাড়া বাসায় টাকা রাখা রিস্কি এ কারণে ব্যাংক থেকে উঠিয়ে নেওয়া টাকা আবার  ব্যাংকে রাখা শুরু করেছেন। এ কারণে ব্যাংক খাতে আমানত বাড়ছে।

নিউজ ট্যাগ: ব্যাংক আমানত

আরও খবর
হাইব্রিডে বিপ্লব এনেছে হীরা ধান

সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪




বাপ-দাদার শেখানো পেশায় যাদের জীবন জীবিকা

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

এক সময় মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন, ঘটি, মটকা, সরা, চারি, কাসা, কলস, ব্যাংক, প্রদীপ, পুতুল, কলকি, দেবদেবীর মূর্তি ও ঝাঝরের বিকল্প ছিল না তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তনে মাটির তৈরি সামগ্রীর স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল আর অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী। তাই বর্তমানে বাজারে চাহিদা কম থাকায় এবং কাঁচামালের চড়ামূল্য ও পুঁজির অভাবে টিকতে না পাড়ায় সংকটে পড়েছে পাবনার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পীরা।

মৃৎশিল্পীরা জানান, বর্তমান মানুষের ব্যবহারিক জীবনে মৃৎশিল্পের তেমন কোন আর ভূমিকা নেই। প্রযুক্তি বিকাশের এ যুগে এই শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধিত না হওয়ায় বর্তমানে এই পেশায় টিকে থাকা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে কালের আবর্তে বাপ-দাদার পেশা হারিয়ে যেতে চললেও এখনোও টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পাবনা চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের গৌড়িপুর পালপাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পীরা।

সরেজমিনে গৌড়িপুর পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফুটতেই মাটির হাঁড়ি পাতিল তৈরি করে রোদে শুকাতে দিচ্ছে কুমাররা, কেউ বা ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন সামগ্রী তৈরীতে, কেউ বা করছেন রং এভাবেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মব্যস্ততা।

পালপাড়ায় গিয়ে কথা হয় মায়া রাণীর সাথে তিনি জানান, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে মাটির তৈজসপত্র তৈরী করে আসছেন তিনি। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন কোন চাহিদা নেই, তাই শীত মৌসুমে পিঠাপুলির সামগ্রী তৈরী করেই কোনোমতে চলছে তার সংসার।

এমনিতেই ব্যবসা চলে কম তার উপরে নেই রাস্তাঘাট তাই গৌড়িপুর পালপাড়া থেকে নিমাইচড়া বাজার পর্যন্ত পাকা সড়কের দাবি জানান তিনি।

মৃৎপাত্র পোড়ানোর সময় কথা হয় দুলাল পালের সাথে কথা হইলে তিনি জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে বাপ-দাদার শেখানো পেশায় কাজ করছেন। আগের দিনে বাজারে মৃৎপাত্রের প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন অনেকটাই কম। অন্য কোন কাজ না জানায় এই পেশাই আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।

দুলাল পাল আরও বলেন, পেশাগত প্রয়োজনে ব্যাংক ঋণ পাননা তারা। সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি। স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা মনে করেন, ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্পকে বাঁচাতে সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন।

কথা হয় বিকাশ পাল, সম্বল পাল, দরদী পাল ও সুবর্ণা পালের সঙ্গে, তারা এই প্রতিবেদককে জানান, এক সময়ে এই গ্রামে মৃৎশিল্পের রমরমা ব্যবসা ছিল। আগে গৌড়িপুর গ্রামে প্রায় ১১০টি ঘর মৃৎশিল্পের কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে বেশির ভাগ পালরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় এখন ১০-১৫ টি ঘরে প্রায় ৩০-৩৫ জন পাল এই কাজের সাথে জড়িত বলে জানান তারা।

তারা আরও জানান, মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সরকারি কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা বা প্রণোদনা কোন দিন পেয়েছেন কি না তা তাদের জানা নেই। তারা বলেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও মৃৎশিল্পীদের শিল্প জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যদি আধুনিক করে গড়ে তোলা যায় তা হলেই কেবল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

কথা হয় গোপাল চন্দ্রপালের সঙ্গে তিনি বলেন, আগের দিনে মৃৎশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন এঁটেল মাটি, রঙ, যন্ত্রপাতি ও জ্বালানি ছিল সহজলভ্য। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন হিমশিম খাচ্ছেন। তারা জানান, পূর্বে যেখানে বিনামূল্যে মাটি সংগ্রহ করা যেত বর্তমানে সেই মাটি ১০-১২ হাজার টাকায় কিনতে হয়। আগে খড় কিনতে তাদের কোন টাকা পয়সা লাগতো না, এখন সেই এক বুঝা খড় ৩০০ টাকায় কিনতে হয় তাদের।

গোপালচন্দ্র পাল বলেন, বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে তেমন কোন কাজ না থাকায় সে সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করে থাকেন তারা। তবে অনেক সময় মাটি কিনতে আইনি জটিলতায় পড়তে হয় তাদের।

বাড়ির উঠোনে পাত্রগুলোতে রং করতে দেখা যায় উজ্জ্বল কুমার পালকে, তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সাধারণত মৃৎপাত্রগুলো কুমার পরিবারের নারী-পুরুষ উভয়ে মিলেমিশে তৈরি করে থাকেন। এই তৈরিকৃত সামগ্রী বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনেন। অনেকে আবার বাড়ি বাড়ি ফেরি করেও বিক্রি করেন। বর্ষা মৌসুমে কাজ বন্ধ থাকায় কুমারদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ যায়। সে সময় কুমাররা সারা বছর কাজ করার জন্য এঁটেল মাটিসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহে নেমে পড়েন। শুধু পাবনা নয়, গোটা দেশে এ পেশায় নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে কারও যেন কোন মাথাব্যথাই নেই।

বাড়ির উঠোনে মাটির পাত্র তৈরি করছেন অনিতা পাল ও প্রার্থনা পাল তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আগের দিনে তাদের ব্যবসা অনেক ভালো চলতো বর্তমানে মানুষ প্লাস্টিক, এ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করায় এখন কম চলে। তারা বলেন, আগে কলসিসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরী করলেও বর্তমানে তা ব্যবহার কম হওয়ায় এখন শুধু ঝাঁঝর, কাসা, হাঁড়ি পাতিল তৈরী করে থাকেন তারা। 

এবিষয়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভিন সুলতানা মুক্তি বলেন, তারা কখনও আমার কাছে কোন দাবি নিয়ে আসেনি। আমি আমার এলাকার অনেক সড়কের কাজ করেছি, তাদের সড়কের বিষয়েও কাজ করার চেষ্টা করবো এবং আমি সবসময় তাদের পাশে থাকবো।


আরও খবর



৭ ঘণ্টা পর ঢাকা-খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

Image

৭ ঘণ্টা পর পাবনার ঈশ্বরদীতে তেলবাহী ও মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুত দুটি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। তারপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। পাকশী পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল পৌনে সাতটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, প্রায় সাত ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত হওয়া দুটি টেনের দুই বগি উদ্ধার করা হয়। এরপর ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা ও খুলনার সঙ্গে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে তেলবাহী ট্রেনে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, একটি তেলবাহী ট্রেন পার্বতীপুরে তেল নামিয়ে দিয়ে খুলনার দিকে যাবার পথে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসে দাঁড়ায়। ঘটনার সময় পাথর বোঝাই একটি মালবাহী ট্রেন ভারত থেকে ঢাকা যাবার পথে একই স্টেশনে দাঁড়ায়। এ সময় পাথর বোঝাই ট্রেনটি শানটিং করার সময় (বগি এক লাইন থেকে আরেক লাইনে নেয়ার সময়) তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন ও মালবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। তারপর ঈশ্বরদী লোকোমোটিভ থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন গিয়ে বগি উদ্ধারে কাজ করে।

পাকশী পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানান, ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় সিনিয়র সহকারী সংকেত প্রকৌশলী, সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা, সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী।

কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং অন-ডিউটি সহকারী স্টেশন মাস্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: ঈশ্বরদী

আরও খবর



ঢাকার বায়ু আজও অস্বাস্থ্যকর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বায়ুদূষণের শীর্ষে উঠে এসেছে ভারতের দিল্লি। আর দূষণমাত্রার দিক থেকে তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান তৃতীয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এ তথ্য।

বুধবার ১৯৫ স্কোর নিয়ে তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয় এবং বায়ুর মান ছিল অস্বাস্থ্যকর।

বৃহস্পতিবার তালিকার শীর্ষে অবস্থান করা দিল্লির বায়ুর মানের স্কোর হচ্ছে ১৭৯ অর্থাৎ সেখানকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই। শহরটির স্কোর হচ্ছে ১৭০ অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মানও অস্বাস্থ্যকর। সূচকের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা এবং ঢাকার স্কোর হচ্ছে ১৬৯। এর অর্থ দাঁড়ায় এখানকার বায়ুর মানও আজ অস্বাস্থ্যকর।

স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর।

১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।


আরও খবর



ভিপি নুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

চট্টগ্রামে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৫ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবীর এই আদেশ দেন।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তেব্যর অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক আইন সম্পাদক এডভোকেট শাহরিয়ার ইয়াছির আরাফাত তানিম এ মামলা দায়ের করেন।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ট্রাইব্যুনালে গত ৬ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সোমবার মামলার ধার্য তারিখে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

সাইবার ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১ জুন বাংলাদেশ ছাত্র যুব অধিকার পরিষদের সমাবেশ ডেকে সরকারসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগর বিরুদ্ধে আসামি ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে গুণ্ডালীগ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।

শিক্ষামন্ত্রী, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলা করা হয়েছিল। আদালত মামলাটি শুনানি শেষে গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) চট্টগ্রাম মেট্রো ও জেলাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম মেট্রো ও জেলার উপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল করিম ২০২৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।


আরও খবর



ঈদে ঢাকার বাইরে যেতে পারবে না সিটি বাস

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঈদে যাত্রী চাহিদা মেটাতে নগরীর ছোট ছোট বাসগুলো অন্যান্য বিভিন্ন জেলায় চলাচল করে। এতে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি বাড়ে সড়ক দুর্ঘটনা। তাই এবারের ঈদে এসব বাস ঢাকার বাইরে যেতে পারবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থপথ মোড়ে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, মহাসড়কগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। অর্ধেকের বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মোটরসাইকেল। তাই এবারের ঈদে পুলিশ সদস্যদের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পুলিশ সদস্যদের এ নিষেধজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ঈদে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কগুলোতে ঈদে সবাইকে মোটরসাইকেলে যাতায়াত না করার অনুরোধ জানান তিনি।

হাবিবুর রহমান বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। বাস মালিকদের নিষেধ করা হয়েছে যেন ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের না করে। যারা এসব নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈদের কেনাকাটায় কারণে ঢাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় যে পরিমাণ মার্কেট ও যানবাহন রয়েছে সেই তুলনায় পর্যাপ্ত বৈধ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। ফলে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা গাড়িগুলো রাস্তায় পার্কিং করা হচ্ছে। এতে করে আরো যানজট বাড়ছে। সড়কে পার্কিং করলে ট্রাফিক আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর