আজ শুভ মাঘী পূর্ণিমা।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। একই সঙ্গে দিনটি বৌদ্ধদের কাছে একটি ঐতিহাসিক
দিনও। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে শুভ মাঘী পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে
রাজধানীসহ দেশজুড়ে আজ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার আয়োজন রয়েছে।
এই পূর্ণিমা বৌদ্ধরা
আনন্দের চেয়ে শোকের মাধ্যমে পালন করেন। কারণ এই পূর্ণিমায় ভারতের উত্তর প্রদেশের বৈশালীর
চাপাল চৈত্যে বুদ্ধ নিজেই তার মৃত্যুর কথা বলেন এবং শিষ্যদের সামনে ঘোষণা করেন, আজি
হতে তিনমাস পরে শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করবেন।
উল্লেখ্য, এ রকম
নিজের আগাম মৃত্যু দিবস ঘোষণা করা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। যেহেতু তিনি সিদ্ধপুরুষ
এবং অরহৎ হয়েছিলেন, সেহেতু তারপক্ষে এটা সম্ভব হয়েছিল। মাঘী পূর্ণিমাকে বৌদ্ধরা বুদ্ধের
আয়ু সংস্কারের দিনও বলে থাকেন। তার জীবনের একটি বিয়োগ ব্যথাজনিত ঘটনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল
এই মাঘী পূর্ণিমায়। এ কারণে এ পূর্ণিমাকে ভিক্ষুরা শোকদিবস হিসেবেও পালন করেন। এ পূর্ণিমায়
তিনি ভিক্ষুসংঘকে ৩৭ প্রকার বোধিপক্ষীয় ধর্মদেশনা করেছিলেন এবং ভিক্ষুদের জন্য অবশ্যই
পালনীয় পাতিমোক্খ সূত্রের ১০টি নিয়ম বুদ্ধ এখানেই বসেই করেছিলেন। এ পূর্ণিমা তিথিতে
বৌদ্ধ নরনারী দানীয় ও পূজার সামগ্রী নিয়ে বৌদ্ধ বিহারে সমবেত হয়, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল
গ্রহণ করে, ভিক্ষুদের খাদ্যভোজ্য প্রদান করে এবং দান-দক্ষিণা দেয়। সন্ধ্যায় শীল গ্রহণ
এবং প্রদীপ পূজা হয়।
গত বছরের মতো
এবারও করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঘী পূর্ণিমার আয়োজন হবে। এ উপলক্ষে বড় আয়োজন রয়েছে
রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে। সেখানে বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে ভিক্ষু সংঘের প্রাতঃরাশ গ্রহণ, বুদ্ধপূজা ও সীবলী পূজা,
বুদ্ধমূর্তি ও সীবলী মূর্তির জীবন্যাস, অষ্ঠপরিষ্কারসহ সংঘদান, ভিক্ষু সংঘের প্লিদান,
অতিথি ভোজন, পবিত্র ত্রিপিটক পাঠ এবং আলোচনাসভা। এ ছাড়া সব বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় কার্যাদি
ও বুদ্ধপূজা উৎসর্গের পর বিকেলে ধর্মীয় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।