ইসলামি বর্ষপঞ্জির
প্রথম মাস মহরম। মহরম শব্দের অর্থ সম্মানিত। এ মাসের রয়েছে গুরুত্ব ও ফজিলত। মহরমের
দশম তারিখকে আশুরা বলে। ‘আশুরা’ আরবি শব্দ, এর অর্থ দশম তারিখ। সৃষ্টির শুরু থেকে মহরমের ১০ তারিখে
তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এর ফলে আশুরার মর্যাদা ও মাহাত্ম্য
উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
পবিত্র কোরআনুল করিমে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আসমান-জমিন সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে গণনায় মাসসমূহের সংখ্যা ১২টি, যা আল্লাহর কিতাবে (লাওহে মাহফুজে) লিপিবদ্ধ রয়েছে। তার মধ্যে চারটি মাস (রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহরম) সম্মানের। এটা হলো সুপ্রতিষ্ঠিত দিন।’ (সুরা তাওবাহ, আয়াত ৩৬)।
আরও পড়ুন: কাউকেই ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি: ডিএমপি
৬২ হিজরি সনে
কুফার ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত
হুসাইন (রা.)-এর শাহাদতবরণ এ দিনকে বিশ্ববাসীর কাছে চিরস্মরণীয় ও অমর করে রেখেছে।
সব নবীর আমলেই
আশুরার রোজা ছিল। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন।
হিজরতের পর মদিনায় এসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দেখতে পেলেন, ইহুদিরাও এই দিনে রোজা রাখে।
নবীজি (সা.) তাদের রোজার কারণ জানতে পারলেন এ দিন হজরত মুসা (আ.) সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর
পক্ষ থেকে তাওরাত লাভ করেন। এ দিনেই তিনি বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার করেন
এবং এ দিনেই তিনি বনি ইসরাইলদের নিয়ে লোহিত সাগর অতিক্রম করেন। আর সেই সাগরে ফেরাউন
পানিতে ডুবে মারা যায়। তাই ইহুদিরা এ দিন রোজা রাখে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, মুসা (আ.)-এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তোমাদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ ও অগ্রাধিকারমূলক। অতঃপর তিনি ১০ মহরমের সঙ্গে ৯ মহরম মিলিয়ে দুটি রোজা রাখতে বললেন। হিজরি দ্বিতীয় সনে রমজান মাসের রোজা ফরজ হলে আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়। তবে রমজানের রোজার পর আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। এ মাসের নফল রোজা ও অন্যান্য ইবাদত রমজান মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম। (মুসলিম ও আবু দাউদ)।
আরও পড়ুন: কেউ রাস্তা আটকালেই কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
রাসুলে পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী আল্লাহতাআলা
এর অছিলায় অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (তিরমিজি ও মুসানাদে আহমাদ)।
রাসুলে করিম
(সা.) বলেন, রমজানের রোজার পর মহরমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ, যেমন ফরজ নামাজের পর শেষ
রাতের তাহাজ্জত নামাজ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন।