‘আমাগো নৌকা মেরামতসহ সব কাজ প্রায় শ্যাষ। এহন গাংগে নামার অপেক্ষায়
আছি। আশা করছি, এবার মাছ পামু। অভিযানের সময় দেখছি, যারা গাংগে নামছে তারা অনেক ইলিশ
পাইছে। তাই আল্লাহর রহমতে আমরাও অনেক মাছ পামু। তইলে ধারদেনা শোধ করতাম পারমু’- এভাবেই কথাগুলো বললেন চাঁদপুর
শহরের পুরানবাজার রনাগোয়াল এলাকার জেলে খালেক সর্দার।
মৎস্য কর্মকর্তা
ও জেলেরা জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে ‘ইলিশ প্রজনন মৌসুম’। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রাত
১২টার পর থেকেই চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটারসহ উপকূলীয় ছয়টি অভয়াশ্রম এলাকায়
শুরু হচ্ছে মাছ শিকার। এ বছর অভিযান সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর
রহমান।
তিনি বলেন, এবার পানির গুণাগুণও ভালো ছিল। তাই মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার একটা
জলজ পরিবেশ পেয়েছে। আশা করছি, এবার ইলিশ উৎপাদন বাড়বে।
গতকাল সকালে শহরের যমুনা রোড টিলবাড়ি, মোলহেড, রনাগোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া, লক্ষ্মীপুর ও ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের মেঘনাপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জেলেদের মাছ ধরার প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। তারা এখন নদীতে নামার প্রহর গুনছেন। আর দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে চাঁদপুরের ৪৪ সহস্রাধিক জেলে পরিবারে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। দেখে মনে হয়, মাছ শিকারে মুখিয়ে আছেন জেলেরা।
আরও পড়ুন>> দৌলতপুরে আগুনে পুড়ল বসতভিটা, গৃহবধূর মৃত্যু
নৌপুলিশ চাঁদপুর
অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ইলিশ রক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা
ছিল। অভিযানে গিয়ে এ পর্যন্ত আমাদের বেশকিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ইলিশ মাছ নিরাপদে
ডিম ছাড়লে জেলেরাই আহরণ করবেন, তারাই লাভবান হবেন।
এদিকে পটুয়াখালীর
কুয়াকাটায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নৌকা তৈরি, নৌকা-জাল মেরামতসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক কাজ
গুছিয়ে নেন উপকূলের হাজারো জেলে।
কুয়াকাটা ও
আলিপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি ও লতাচাপলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন
মোল্লা বলেন, জেলেরা সরকারের সব নিয়মকানুন মেনেই সাগরে মাছ শিকার করছেন। নিষেধাজ্ঞা
শেষে আজ থেকে জেলেরা সাগরে নামছেন।
কলাপাড়া উপজেলা
সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলেরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। মা ইলিশ
রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে পালন করা হয়েছে। আশা করি, এবার জেলেরা সাগর
থেকে হাসিমুখে ঘাটে ফিরে আসবেন।