গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ বুধবার। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের মোট ১৫৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। দুই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে চার দিন আগ পর্যন্ত এলাকার পরিবেশ বেশ শান্তই ছিল। প্রচার-প্রচারণা বন্ধের ঠিক দুদিন আগে থেকে অশান্ত হতে শুরু করে নির্বাচনের পরিবেশ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অশান্ত ও উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারি দলের লোকজনকেই দায়ী করছেন জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। ভোটে জনগণ তাদের পছন্দের প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করবেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এদিকে এই প্রথম এ এলাকায় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে।
ভোটের মাঠে পাঁচজন প্রার্থী থাকলেও লড়াই হওয়ার কথা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিশাদের মধ্যে। ‘মানুষ এখন উন্নয়ন চায়। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছি। পাশে দাঁড়িয়েছি। তাই নৌকাকে বিজয়ী করতে ভোটাররা ঐক্যবদ্ধ’ বললেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। অপরদিকে ভোটের মাঠে নতুন হলেও ভোটারদের মাঝে শক্ত অবস্থান করে নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ। আপেল প্রতীক পেয়ে তিনি চষে বেড়িয়েছেন চরসহ সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার গ্রামের আনাচে-কানাচে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট এইচএম গোলাম শহীদ রনজু বলেন, লাঙ্গলের গণজোয়ার দেখে তাদের (আওয়ামী লীগ) ঘুম হারাম হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ।
এদিকে গত শনিবার গভীর রাতে সাঘাটার কচুয়াহাট, চর এলাকা হলদিয়া ও ফুলছড়ির টেংরাকান্দি এলাকায় নৌকার নির্বাচনী অফিস (ক্যাম্প) ভাঙচুর করা হয়েছে। নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনায় ৪০ জনকে আসামি করে থানায় পৃথক মামলা হয়। পুলিশ ফুলছড়ির উদাখালী থেকে আবু সাইদ, রনি মিয়া ও সাঘাটার ভরতখালী থেকে মেহেদী হাসান নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, নৌকার অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় সাঘাটায় একজন ও ফুলছড়িতে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু মোত্তালিব জানান, নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণের কাজ শেষ। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, ইভিএমে ভোটগ্রহণে সচেতনতা তৈরিতে কয়েকদিন ধরেই ভোটারদের মাঝে ড্যামি ভোটের ব্যবস্থাসহ সব কার্যক্রম চালানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য সব কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হবে। ইভিএমে ভোটগ্রহণে পোস্টার, লিফলেট ও মাইকিং করে ভোটারদের সচেতন করা হয়েছে।