রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ প্রায় ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হলেই আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেলপথ।’
আজ শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিগ্রস্তদের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলপথমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রেল মন্ত্রণালয়কে একটি অকেজো ও পরিত্যক্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল- এমন অভিযোগ করে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে অনুধাবন করেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে দেশ অনেক পিছিয়ে থাকবে। তাই, তিনি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় এই খাতকে সচল করেছেন। রেল মন্ত্রণায়লকে আলাদা করেছেন। এরই মধ্যে দেশের সব জেলায় রেল পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছেন। তার মধ্যে তিনি কক্সবাজারকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ২৮ জন ক্ষতিগ্রস্তের হাতে তিন কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে চকরিয়া পালাকাটা-মেধাকচ্ছপিয়া মৌজার ২৭ জন ও সদরের ঝিলংজা মৌজার একজন চেক গ্রহণ করেন।
নূরুল ইসলাম সুজন আরও বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থে কক্সবাজারে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেকে সরকারকে জমি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থে এই জমি নিচ্ছেন। তার বদৌলতে দিচ্ছেন তিনগুণ ক্ষতিপূরণ। এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল রেল নিয়ে। অনেকে কথা দিয়ে কথা রাখেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠনে মানুষের জন্য রেলপথ নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। মনে রাখতে হবে, এটি শুধু কক্সবাজারের না পুরো দেশের সম্পদ। আর রেল এলে আন্তর্জাতিকভাবে আরও সমাদৃত হবে কক্সবাজার। এতে পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক চিত্র। রেলকে কেন্দ্র করে স্বাবলম্বী হবে মানুষ।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। উন্নয়নের জন্য রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ রাজনীতিবিদদের ডিঙিয়ে কোনো উন্নয়ন সম্ভব না। তাই সবার ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর জনকল্যাণমূলক এই প্রকল্প অচিরেই আলোর মুখ দেখবে ইনশাল্লাহ।’
জেলা প্রশাসক ড. মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য জাফর আলম, সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আমিন আল পারভেজ।
এর আগে মন্ত্রী চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের রামু অংশের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।