জামালপুরের অডিটরিয়ামে ‘গলুই’ ছবির প্রদর্শনী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্মাতা এস এ হক অলিক। পরিচালক জানান, জামালপুরের মূল প্রদর্শনী ক্ষেত্রটিও যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অডিটরিয়ামগুলো বন্ধ করার ব্যাপারে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে অর্থাৎ ১৯১৮ সালে প্রণীত একটি আইনকে সামনে টেনে এনেছেন জেলা প্রশাসক। যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা এমন কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র ও নাট্যসংশ্লিষ্ট অনেকেই মুখ খুলছেন। অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক দেশের ৬৪ জেলার শিল্পকলার মিলনায়তনে সিনেমা চালানোর দাবি তুলেছেন। রওনক বলছেন, ‘আসুন আমরা এইভাবে শুরু করি। যেহেতু এখন বাংলাদেশে সিনেমা হল নেই বললেই চলে, সেহেতু আমরা সকলে মিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যাই। গিয়ে বলি যে মাননীয়, অন্তত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো ৬৪ জেলার ৬৪ শিল্পকলা একাডেমির হলে অন্তত এক সপ্তাহ প্রদর্শনের অনুমতি প্রদান করুন। সাধারণত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমা ব্যাবসায়িকভাবে সফল হয় না (ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে) বলে হল মালিকরা সেসব ছবি চালাতে চান না। তাই সিনেমাগুলো বৃহত্তর দর্শক হতে বঞ্চিত হয়। ’
তিনি বলছেন, ‘সারা দেশের মানুষ যাতে সাহিত্যনির্ভর সরকার দ্বারা অনুপ্রাণিত সিনেমাগুলো দেখার সুযোগ পায় সে জন্য এই ব্যবস্থা খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এবং কোনো সিনেমা যদি ব্যাবসায়িকভাবে সাফল্য অর্জন করে তবে সেই সিনেমার সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যেটুকু কর দেওয়ার বিধান আছে সেটুকু তার দিতে বাধ্য থাকবে। প্রদর্শনীর দিনগুলোতে যদি কোনো সরকারি পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান হলে থাকে তবে সেই দিনটি প্রদর্শনী বন্ধ থাকবে। এভাবে আমরা ভাবতে পারি। এভাবে অন্য সকল সিনেমারও প্রদর্শনী হতে পারে। এ বিষয়ে আমি চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আসুন আমরা তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কাছে আমাদের আবেদন নিয়ে যাই। এ বিষয়ে আমরা অভিনয়শিল্পীরা যতটুকু প্রয়োজন সাথে থাকব, পাশে থাকব। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তার কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে ফিরে আসুক। ’
ঈদুল ফিতরের দিন থেকে জামালপুর সদরের শিল্পকলা নতুন অডিটরিয়াম ভবন (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত), ইসলামপুরে ফরিদুল হক খান দুলাল অডিটরিয়াম (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত), মাদারগঞ্জে নুরুন্নাহার মাল্টিপারপাস অডিটরিয়ামে (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত) বিশেষ ব্যবস্থায় প্রদর্শনী হয়ে আসছিল। পরে জামালপুর সদরের প্রদর্শনী স্থানান্তর করে মির্জা আজম অডিটরিয়ামে নিয়ে আসা হয়।
এই তিন অডিটরিয়ামেই চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী থাকছে না। নির্মাতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মোকলেসুর রহমান বলেন, ‘চলচ্চিত্র বন্ধ করার কোনো নির্দেশনা আমরা দিইনি। কারণ সেখানে আমাদের বলার কিছু নেই। সিনেমা চললে চলবে, আমাদের অনুমতি দেওয়া বা বন্ধ করতে বলার কোনো কারণই ঘটেনি। ’