আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ স্মরণে

প্রকাশিত:শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
Image

অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন

১.

যারা গণহত্যা করেছে শহরে গ্রামে টিলায় নদীতে ক্ষেত ও খামারে নেকড়ের চেয়েও অধিক পশু সেই সব পশুদের অভিশাপ দিয়েছেন বাঙালির এক কবি। অভিশপ্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র জনগণের উপর অত্যাধুনিক অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। বাঙালি জাতির জীবনে এক ভয়াল এবং বিভীষিকাময় রাত্রি নেমে এসেছিল সেদিন। পূর্ব পরিকল্পিত নীল নকশা অনুযায়ী বাঙালি নিধনের এই সেনা অভিযানের সাংকেতিক নাম ছিল অপারেশন সার্চ লাইট। বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক এবং বর্বরোচিত নিকৃষ্টতম গণহত্যা ছিল এটি।


২.

১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তর না করার কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত অপারেশন সার্চ লাইট নাম দিয়ে অতর্কিতে গণহত্যা শুরু করে নিরীহ বেসামরিক লোকজনের উপর।তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। ঐ দিন সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টারযোগে তারা সেদিন দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা ফিরে আসে। দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে।


গভীর রাতে পাকিস্তানি সেনারা পিলখানা,রাজারবাগ,নীলক্ষেত,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা মেশিনগান, ট্যাংক, মর্টারের মাধ্যমে দখল করে নেয়। মেশিনগানের গুলি, ট্যাংক-মর্টারের গোলা আর আগুনের লেলিহান শিখায় রাতের ঢাকা হয়ে উঠে বিভীষিকাময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের অসহায় ছাত্রীরাও পাকিস্তানি হায়েনাদের কবল থেকে রক্ষা পায়নি। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব,ড.মনিরুজ্জামান,জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা,অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সবচেয়ে নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞটি চলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। সেনা অভিযানের শুরুতেই বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার আগে ২৫ মার্চ গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সকল বাঙালির প্রতি আহবান জানান। তাঁর এই আহবানে সাড়া দিয়ে জনগণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ৯ মাসের সশস্ত্র লড়াই শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন,সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।


৩.

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অপারেশন সার্চ লাইট নামের যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে,সে অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করেছিল পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। এই নির্দেশনামার কোন লিখিত নথি রাখা হয়নি বলে জানা যায়। গণহত্যার পুরো নির্দেশটি মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। ২০১২ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত খাদিম হোসেন রাজার লেখা A Stranger in my own Country নামক আত্মজীবনী গ্রন্থে প্রথমবারের মত অপারেশন সার্চ লাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়। তিনি আরো লিখেছেন,১৭ মার্চ,সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউজে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি।গিয়ে দেখি সেখানে জেনারেল আব্দুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি। এ ছাড়া কোন মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয় পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঐ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।


খাদিম হোসেন রাজার বইটিতে আরো উল্লেখ আছে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান মার্চের উত্তাল আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসেই সামরিক হামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। জেনারেল নিয়াজির লেখা The betrayal of East Pakistan বইটি পড়ে জানা যায় যে জেনারেল টিক্কা খান তাঁকে বলেছিলেন,"আমি পূর্ব পাকিস্তানের মাটি চাই,মানুষ চাই না।" বইটি পড়ে আরো জানা যায় যে টিক্কা খান পোড়া মাটি নীতি গ্রহণ করেছিলেন এবং সে অনুযায়ী জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং ঢাকার ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জানজেব আরবাব হুকুম পালন করেন। একাধিক সূত্র থেকে জানা যায় জেনারেল রাও ফরমান আলী তাঁর টেবিল ডায়রিতে লিখে রেখেছিলেন,পূর্ব পাকিস্তানের সবুজ মাটি বাঙালির রক্তে লাল করা হবে।


নিয়াজি তাঁর বইটিতে আরো লিখেছেন,"২৫ মার্চ রাতে জুলফিকার আলি ভুট্টো ঢাকায় ছিলেন এবং তিনি দেখেছেন সেদিন রাতে টিক্কা খান কী করেছেন। সারা রাত ট্যাংক,কামান,মেশিনগানের শব্দ ভেদ করে ভেসে এসেছে ঢাকার অসহায় মানুষের আর্তনাদ।" ব্রিগেডিয়ার সিদ্দিক সালিক নামের অন্য একজন সেনা কর্মকর্তার লেখা Witness to Surrender বইটির ৭৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সকালে শেরেবাংলানগরে অবস্থিত নিজের কমান্ড পোস্ট থেকে বাইরে এসে শহরের দিকে তাকিয়ে টিক্কা খান বিদ্রূপের হাসি হেসে বলেছিলেন,ঢাকা শহরে কয়েকটা নেড়ি কুত্তা ছাড়া মানুষজন আছে বলে তো মনে হয় না।


৪.

যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয় বরণ করার পর পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অনেক চেষ্টা করেও গণহত্যার বিষয়টি সম্পূর্ণ ধামাচাপা দিতে পারেনি। ঠাণ্ডা মাথায় গণহত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী তদন্ত কমিটির কাছে বলেছিলেন, লে.কর্নেল ইয়াকুবের নির্দেশে ১৯৭১ সালের ২৭ ও ২৮ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসে বাঙালি অফিসারসহ ১৯৫ জন নিরীহ মানুষকে জবাই করে হত্যা করা হয়। সালদা নদী তীরবর্তী এলাকায় ৫০০ জনকে হত্যা করা হয় এবং গ্রামাঞ্চল ও ছোট শহরগুলো শত্রুমুক্ত করার নামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্যাপক ধ্বংস,অগ্নিসংযোগ আর হত্যাযজ্ঞ চালায়। একজন ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার ইকবালুর রহমান তার জবানবন্দিতে বলেছেন,পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল গুল হাসান পূর্ব পাকিস্তানের সেনা ইউনিট পরিদর্শনের সময় সৈনিকদের জিজ্ঞাসা করতেন তুমি কয়জন বাঙালিকে হত্যা করেছ? আর একজন অফিসার লে.কর্নেল আজিজ আহমদ খানের সাক্ষ্য থেকে জানা যায় ঠাকুরগাঁওয়ে তার ইউনিটে গিয়ে জেনারেল নিয়াজি জিজ্ঞেস করতেন তোমরা কতজন হিন্দুকে হত্যা করেছ?


৫.

১৯৭১ সালে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলাকালে ভয়াবহ গণহত্যার চিত্র ফুটে উঠেছে বিদেশি সাংবাদিক এবং কূটনৈতিকদের রিপোর্টেও। ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ সাংবাদিক সায়মন ড্রিংয়ের বহুল আলোচিত সেই রিপোর্টটি ছাপা হয়েছিল লন্ডনের দৈনিক পত্রিকা টেলিগ্রাফে।রিপোর্টির কিছু অংশের বাংলা অনুবাদটি ছিল এরকম পাকিস্তান ও ধর্ম রক্ষার নামে ঢাকা নগরীকে ধ্বংস করে একটা ভয়ঙ্কর ভূতুরে নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। ঠান্ডা মাথার হত্যাকাণ্ডে ২৪ ঘণ্টায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিতে কম করে হলেও শুধু ঢাকায়ই ৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ঢাকার অনেক এলাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন লিখেছেন, সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়,গ্রেফতার করা হয় আরো ৩০০০ লোককে।


ঢাকায় ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল মাত্র। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘরবাড়ি,দোকানপাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হলো। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হলো। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশানভূমি। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় নিযুক্ত আমেরিকান কনসাল জেনারেল আর্চার কে ব্লাডের লেখা ক্রুয়েল বার্থ অফ বাংলাদেশ বইটির ২১৩ পৃষ্ঠায় পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যার বিবরণ পাওয়া যায়। এই গণহত্যার রিপোর্ট তিনি ২৮ মার্চ ওয়াশিংটনেও পাঠিয়েছিলেন। একই রকম গণহত্যার বর্ণনা পাওয়া যায় দিল্লিতে নিযুক্ত তৎকালীন আমেরিকার রাষ্ট্রদূত কেন কিটিংয়ের রিপোর্টেও।


৬.

মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ব মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন তো ছিলই,পরবর্তীকালেও আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মিডিয়াও বাংলাদেশের গণহত্যার গবেষণালব্ধ তথ্যপ্রমাণসমূহ প্রকাশ করেছে। ১৯৮১ সালে জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রে বলা হয়-'মানব ইতিহাসে যত গণহত্যা তার মধ্যে স্বল্পতম সময়ে সংখ্যার দিক থেকে সর্ববৃহৎ গণহত্যা হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে। প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ১২ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।' ঘটনার ১০ বছর পর এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল, তার মানে যথেষ্ট গবেষণা আর তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করেছিল। যে আমেরিকা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল,সেই আমেরিকার এনসাক্লোপিডিয়া আমেরিকায় উল্লেখ আছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়। বইটির প্রচ্ছদেই উল্লেখ আছে- ১৯১৫ সালে আর্মেনিয়ায় গণহত্যার শিকার হয় ৮ লাখ মানুষ,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৬০ লাখ ইহুদি এবং ৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার শিকার হয় ৩০ লাখ মানুষ।


১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পত্রিকা 'প্রাভদা'য় প্রকাশিত হয় 'গত ৯ মাসে বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।' লন্ডনের 'মর্নিং নিউজ' প্রকাশ করে-গত ৯ মাসে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে।' ৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী যে এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল এ কথা  আজ সর্বজন স্বীকৃত। মাত্র ৮ মাস ২২ দিনে ৩০ লাখ বেসামরিক মানুষকে তারা হত্যা করেছিল। রেকর্ডকৃত তথ্যমতে মানবসভ্যতার ইতিহাসে এত অল্প সময়ে এত বড় ভয়াবহ গণহত্যা বিশ্বের আর কোথাও ঘটেনি। প্রাচীন যুগ থেকে অত্যাধুনিক কাল পর্যন্ত বিশ্বের নানা দেশেই বিভিন্ন রকমের গণহত্যা হয়েছে,বেশিরভাগই হয়েছে গোপনীয় বা বিশেষ বাহিনী দ্বারা। ব্যতিক্রম ঘটেছে শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই।


পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র,নিরীহ মানুষের উপর সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরু করে। পাকিস্তানিদের আক্রমণের পরেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ থেকে স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় যে পাকিস্তানই আগ্রাসী পক্ষ এবং প্রথম আক্রমণকারী দেশ। জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী পাকিস্তান কোনভাবেই গণহত্যার দায় এড়াতে পারে না। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার দিবসটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দিবসটিকে খুব শীঘ্র গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করবে বলে আমরা গভীরভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

লেখক: অধ্যক্ষ ভাসানটেক সরকারী কলেজ, ঢাকা


আরও খবর



জেলেনস্কির গাড়ি বহরের কাছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির গাড়ি বহরের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউক্রেনের বন্দর নগরী ওডেশাকে লক্ষ্য করে বুধবার (০৬ মার্চ) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি গিয়ে পড়েছে জেলেনস্কি থেকে মাত্র ১৬০০ ফুট দূরে। সে সময় তার সঙ্গে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ক্রায়াকোস মিসোতাকিস ছিলেন। হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই নেতার গাড়ি বহর হামলার তীব্রতা টের পেয়েছে এবং তারা ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখেছেন। ইউক্রেনের নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো প্লেটেনচুক জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাঁচজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে আহত হয়েছে।

হামলায় জেলেনস্কি ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কেউই আহত হননি। তবে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এতটাই কাছে ছিলেন যে এটির শব্দ শুনতে পেয়েছেন।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে বলেছেন, আমরা আজ হামলা হতে দেখেছি। আপনারা দেখেছেন কারা এগুলো মোকাবিলা করছে। আমি বিস্তারিত এখনও জানি না। কিন্তু আমি এটা জানি অনেকে আহত ও নিহত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, আমাদের দ্রুত নিজেদের রক্ষা করতে হবে। আর নিজেদের রক্ষায় সবচেয়ে ভালো উপায় হল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।”


আরও খবর



ঠাকুরগাঁও ডিসি অফিসের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ!

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাত করণে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে গেল বুধবার (৬ মার্চ) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সোলেমান আলীর বরাবরে অভিযোগ করেন ডিলাররা। অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।

ডিলারদের এমন অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬১জন ডিলারের মাধ্যমে ৯২ হাজার ছয়শত আটাশি জন স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে কম দামে টিসিবি পণ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, ডাল ও তেল বিক্রি শুরু করছে। তবে টিসিবি পণ্য প্যাকেটজাতকরণে এক টাকা ও শ্রমিক মজুরি এক টাকা করে ডিলারদের কাছে আদায় করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম ও মিন্টু। ফলে প্রতি বার ডিলারদের কাছ থেকে শুধু প্যাকেজিং বাবদ ৯২,৬৮৮ টাকা করে। এভাবে গেল সাত মাসে আদায় করা হয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮১৬ টাকা। আর শ্রমিকদের খরচেও নেয়া হয়েছে এক টাকা করে। সবমিলে ডিলারদের কাছ থেকে আদায় করা হয় প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা।

অথচ প্যাকেজিং ও আনলোডিং বাবদ ৩,৯৭,৩৩২ টাকা খরচ হয়েছে বলে টিসিবির ক্যাম্প অফিস দিনাজপুরে পত্র পাঠান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সোলেমান আলী। পরবর্তীতে ভ্যাট ও আয়কর কর্তন করে প্যাকেট প্রতি ২ টাকা ৬১ পয়সা হারে ২,৪১,৯১৬ টাকার একটি চেক প্রদান করেন টিসিবি ক্যাম্প অফিসের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান।

তাহলে প্রশ্ন ওঠে ডিলারদের কাছ থেকে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে সেগুলো গেলো কোথায়?

অনুসন্ধানের সময় ডিলাররা অভিযোগ করে বলেন, অফিস সহকারী শহিদুল প্যাকেটজাত ও শ্রমিক খরচের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সাত মাসে শহিদুল ও মিন্টু প্রায় ১০ লাখ টাকা আদায় ডিলারের কাছ থেকে। বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কে টাকা নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছি। তিনি টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বস্ত করেছেন বলে জানান তারা।

মেসার্স স্বর্গ সমুদ্র টের্ডাসের সুব্রত সরকার, মেসার্স শিফা ট্রেডার্স'র সাইফুল ইসলাম, মেসার্স বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ'র আনোয়ার হোসেন ও মেসার্স সাহেদী মুদি স্টোর'র রোকনুজ্জামান সাহেদী জানান, শহিদুলের নির্দেশে মিন্টু শ্রমিক খরচ এক টাকা ও প্যাকেতজাতকরণে এক টাকা করে নিয়েছে। টাকা দিতে না চাইলে তারা চাপ দিতো। আটকে দেয়া হত গাড়ি। পরবর্তিতে টাকা ফেরত চেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে অভিযোগ করেন ডিলাররা।

তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি শুরুতে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে বলেন, টাকা উত্তোলনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক অবগত রয়েছেন। তবে সাত মাস নয় কয়েক মাস দায়িত্বে ছিলেন। আর একা এই কাজটি করেননি বলে দাবি তার।

আর এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সোলেমান আলী জানান, টিসিবি পণ্য প্যাকেটজাতে টাকা নেওয়ার কথা জানা ছিল না। অফিসের কর্মচারির বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার বিষয়টি জানিয়েছে ডিলাররা। লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আয়ের অভিযোগ উঠেছিলো। যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। তিনি গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে জমি ক্রয় করেন। এরপর সেই জমি সরকারি প্রকল্পে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন। এভাবে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। হঠাৎ করেই এত সম্পদের মালিক হওয়ায় শহরজুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।

ডিসি অফিসে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী এখন ঠাকুরগাঁও শহরের বড় মাঠের পাশে নির্মাণ করছেন ছয় তলাবিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। বাড়িটিতে রয়েছে লিফটের ব্যবস্থাও। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে একটি মামলা চলমান রয়েছে।


আরও খবর



আইপিএল খেলতে দেশ ছেড়েছেন মোস্তাফিজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের ব্যস্ততা শেষ। পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে মাঠ মাতাবেন তিনি। এরইমধ্যে দলের সঙ্গে যোগ দিতে দেশ ছেড়েছেন বাঁহাতি এই পেসার।

আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোস্তাফিজ। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, আমার নতুন অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। আইপিএলের ২০২৪ আসরকে সামনে রেখে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছি। আমাকে আপনাদের দোয়ায় রাখবেন, যাতে আমি নিজের সেরাটা দিতে পারি।

এদিকে, মোস্তাফিজকে নিয়ে সুখবর দিল চেন্নাই। দলটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবারের আসরের শুরু থেকে মোস্তাফিজের একাদশে থাকার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। মূলত, শ্রীলঙ্কার পেসার মাথিশা পাতিরানার চোটের কারণে কপাল খুলতে পারে মোস্তাফিজের।

মোস্তাফিজের বিষয়ে ওই কর্মকতা বলেন, মোস্তাফিজের বৈচিত্র্যময় বোলিং (স্লোয়ার ও কাটার) চেন্নাইয়ের পিচে বেশ কার্যকর হতে পারে। ২০ মার্চ সে ক্যাম্পে যোগ দেবে। র‍য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচের আগেই আমরা ওকে পাচ্ছি। সে জানে, তাকে কী করতে হবে। আমরাও দেখব সে কেমন করে।

আগামী ২২ মার্চ উদ্বোধনী ম্যাচেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে মাঠে নামবে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। সিএসকে হতে যাচ্ছে মোস্তাফিজের পঞ্চম আইপিএল দল। এর আগে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, রাজস্থান রয়্যালস ও দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলছেন ২৮ বছর বয়সী এই পেসার। সব মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচে ৭.৯৩ ইকোনমি রেটে ৪৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইরুজ অবন্তিকা নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আত্মহত্যা চেষ্টার আগে ফেসবুকে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেছেন।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা জেলা সদরের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। পরে তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ফাইরুজ অবন্তিকা কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে।

কুমিল্লা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এএনএম জোবায়ের তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গলায় ফাঁস দেওয়া এক রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে অবন্তিকা দাবি করে বলেন, আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন ও অনলাইনে থ্রেটের (হুমকি) উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায়, আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার।

আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস (বিচার) পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতামও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেওয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতীয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে।

আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্টদের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায় সেটা কুমিল্লার কারো সৎ সাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে ".... (প্রকাশ অযোগ্য শব্দ) তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেনো? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে?

আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিলো। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিক্যাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তো থাকে না এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া, আর সো কিনা আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না। আমি উপাচার্য সাদোকা হালিম ম্যামের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে বিচার চাইলাম। 

আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন, আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আর আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজারটা আমাকে এটাই বলছিল যে আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক দ্বীন ইসলাম বলেন, গত দেড় বছর আগে অবন্তিকা ফেসবুকের ফেইক আইডি খুলে কয়েকজনকে বাজে কমেন্ট করার অভিযোগে তারা কোতোয়ালি থানায় জিডি করে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অবন্তিকা প্রক্টর অফিসে এলে তাদের মাঝে মিউচুয়াল করে দেন তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ড মোস্তফা কামাল। পরবর্তীতে আমি একই জেলার হওয়া আমার কাছে অবন্তিকা ও তার মা জিডি তোলার বিষয়ে এলে আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করি। জিডি ওঠাতে পারে একমাত্র প্রক্টর। আমি তাদের প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। পরবর্তীতে তারা এ বিষয়ে আর কখনো আসেনি।

তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি কখনো ওই মেয়ের সঙ্গে একা কথা বলিনি। তাকে যতবার ডাকা হয়েছে সর্বদা প্রক্টর অফিসেই সকলের সামনে ডাকা হয়েছে। আর ওখানে বসে এসব ভাষায় গালি দেব এটা কেমন কথা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। যেহেতু অভিযুক্তের একজন আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য। উপাচার্য সাময়িকভাবে তাকে অব্যাহতি প্রদানের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আইনগত প্রক্রিয়ায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


আরও খবর



শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় বরখাস্ত সেই শিক্ষক

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

বুধবার (০৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময় বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন তিনি। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।


আরও খবর