আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

‘২ বছরে ডিজিটাল আইনে অভিযুক্ত ২০৮ জন সাংবাদিক’

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ এপ্রিল ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

গত দুই বছরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০৮টি মামলায় ২০৮ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখক আলী রীয়াজ। শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত অন্তহীন দুঃস্বপ্ন-বাংলাদেশের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে মুখ্য আলোচকের আলোচনায় তিনি এই তথ্য জানান।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখক আলী রীয়াজ জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮৯০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২ হাজার ২৪৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৮৪২ জনকে আটক করা হয়। ওয়েবিনারে আলোচকেরা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ও পরিধি হরণকারী এবং বিতর্কিত এসব আইন প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন।

আলী রীয়াজ বলেন, প্রতি মাসে গড়ে ৩৪টি মামলায় ৮৬ জনের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ জামিন পেলেও অনেকেই এখনো জামিন পাননি। তথ্য না পাওয়ায় কতজন আটক আছে, তা-ও জানা সম্ভব হচ্ছে না।  এই আইনে রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকেরা সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত হচ্ছেন। ৮২০ জনের পেশার তথ্য পেয়েছি। এর মধ্যে প্রায় ৩১ শতাংশ রাজনীতিবিদ ও ২৫ শতাংশ সাংবাদিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে এই আইনের শিকার হচ্ছেন ছাত্র ও ব্যবসায়ীরা। এই আইনে এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত ১৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এই আইনে ১০৮টি মামলায় ২০৮ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই ১০৮টি মামলা করেছেন ৯৬ জন অর্থাৎ একই ব্যক্তি একাধিক মামলা করেছেন। অভিযুক্ত এবং আটক ব্যক্তিদের মধ্যে স্থানীয় সাংবাদিকদের সংখ্যা বেশি। রাজধানীর বাইরে যাঁরা সাংবাদিকতা করছেন, এই আইন তাঁদের জন্য একটি বড় রকমের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এসব মামলা প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, যাঁরা এই মামলাগুলো করছেন, তাঁদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারদলীয় রাজনীতিবিদের সংখ্যাই বেশি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তারা মোট ১৫৪টি মামলা করেছেন। এগুলো কোনো না কোনোভাবে সরকারের অনুমোদন বা ইঙ্গিত পেয়েই করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। এ ছাড়া সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এমন ব্যক্তিগত মামলা হয়েছে ২০৬টি।

ওয়েবিনারে আন্তর্জাতিক সংস্থা আর্টিকেল ১৯-এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, একটি বিশেষ মতাদর্শের মানুষকে রক্ষা করার জন্য কোনো আইন হতে পারে না। ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো নিয়ে যে আইনটি হচ্ছে, তা নিয়েও আমরা খুবই চিন্তিত। এটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) থেকেও ভয়ংকর। আমাদের সাইবার ট্রাইব্যুনালে যেসব বিচারককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সাইবার সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। ডিএসএ মামলায় জেলে মানুষ মারা গেছে, অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। নির্বাচন আসছে, ভবিষ্যতে ডিএসএর ব্যবহার কত ব্যাপক হবে, তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।

আইসিটি আইনে যে সমস্যাগুলো ছিল ডিএসএতেও সেই সমস্যাগুলো রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তিনি বলেন, এখন আবার আরেকটি আইন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বলতে কী বোঝায়? রাষ্ট্র এবং সরকার কিন্তু এক বিষয় না। আগে রাজা-বাদশা যারা ছিল তারাই ছিল রাষ্ট্র-সরকার। কিন্তু স্বাধীন দেশ হওয়ার পর মানুষের চিন্তায় রাষ্ট্র-সরকারের ধারণা আলাদা হলেও আমাদের দেশে তা আসলে কতটুকু হয়েছে, তা ভেবে দেখা দরকার। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলতে কী? কারও অনুভূতি যদি ঠুনকো হয়ে থাকে? কার অনুভূতি? এ রকম ব্লাসফেমি অফেন্স আমরা রাখতে চাই কি না? আধুনিক রাষ্ট্রে এমন ব্লাসফেমি আইন আছে কি? এসব প্রশ্নের সমাধান জরুরি। সবচেয়ে জরুরি হলো, ডেটা প্রটেকশন। আমার তথ্যের মালিক যদি আমি হই তাহলে সরকার কেন আমার তথ্য নিয়ে যাবে? চুনকাম করে, মেকআপ করে ভাবমূর্তি রক্ষা করে লাভ নেই। নিজের ভেতরে ঠিক করতে হবে। জনগণ হচ্ছে মালিক। তাঁর তথ্য তাঁর সম্পত্তি। তাঁর তথ্য, সম্পত্তি রক্ষা করাই রাষ্ট্রের কাজ।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের হাতে কড়া পরিয়ে শৃঙ্খলিত করার একটা প্রচেষ্টা চলছে। কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র কতগুলো আইন করে জনগণের অধিকার রক্ষা করার বদলে আরও ক্ষুণ্ণ করছে। এই আইনগুলো এখন অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। এসব অস্ত্র যখন যার বিরুদ্ধে প্রয়োজন সেখানে প্রয়োগ করা হয়। ক্ষমতাসীন ও তাদের অনুগতরা শুধু আইন দিয়ে না, তারা নিজেরাও নানান অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু এই অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। যে আইনগুলো হচ্ছে, এসবের কোনোটাই জনগণের স্বার্থে নয়, এগুলো ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে। এগুলো প্রতিরোধ করা না গেলে আমাদের জীবযাপন আরও দুঃসহ হবে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) বলেন, আমাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা নানাভাবে খর্ব হচ্ছে। রাজনৈতিক স্বাধীনতা কী মানুষের আছে? রাজনৈতিক দলের নেতারাই যদি কথা বলতে না পারেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কথা বলবে কীভাবে? ডিএসএর ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। মুক্তভাবে তথ্য, কথা আদান-প্রদানের যে জায়গা ছিল, তা সংকুচিত হয়ে গেছে। আমি নতুন বই লিখতে এখন ভয় পাই। এখন আরও একটি আইন হচ্ছে। সামনে নির্বাচন, নির্বাচনের আগে এসব আইন করে গণতান্ত্রিক সরকারের খুব বেশি সুবিধা হবে না।


আরও খবর



লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রকেট হামলা

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুলহামিদ আল-দাবিবাহের বাসভবনে রকেট হামলা হয়েছে। তবে এ হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লিবিয়ার একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ওই মন্ত্রী বলেন, গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রকেটচালিত গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে ভবনটির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

রাজধানী ত্রিপোলির দুই নাগরিক রয়টার্সকে জানান, ত্রিপোলির বিলাসবহুল হে আন্দালুস পাড়ার সমুদ্র তীরবর্তী জায়গায় তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। ওই এলাকায় প্রধানমন্ত্রী দবেইবার বাসভবন রয়েছে। এ ঘটনার পর হে আন্দালুস পাড়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় ২০১১ সালে ন্যাটো অভিযান শুরু করে। এরপর ২০১৪ সালের দিকে পূর্ব লিবিয়া ও পশ্চিম লিবিয়াদুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় দেশটি। দুই অংশের আলাদা আলাদা প্রশাসনের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত বৈরি।

প্রধানমন্ত্রী দিবেইবার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যের সরকার বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করছে। ২০২১ সালে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল দেশটিতে। কিন্তু সেই নির্বাচন এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, খুব শিগগির লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

চলতি মাসের শুরুর দিকে লিবিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা বলেছিলেন, তারা একটি নতুন ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। কারণ দিবেইবা জানিয়েছেন, তিনি জাতীয় নির্বাচন ছাড়া নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা করবেন না।


আরও খবর



পাপুয়া নিউগিনিতে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পাপুয়া নিউগিনির উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭। স্থানীয় সময় রোববার (২৪ মার্চ) প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটির উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত অংশে শক্তিশালী এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে ভূমিকম্পের জেরে সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি। রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার পাপুয়া নিউগিনির উত্তরাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে ভূতাত্ত্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ভূপৃষ্ঠের ৬৫ কিলোমিটার (৪০ মাইল) গভীরতায় আঘাত হনে ভূমিকম্পটি। যদিও ভূমিকম্পটি ভূপৃষ্ঠের ১০ ​​কিলোমিটার গভীরে ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল সংস্থাটি।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল আম্বুন্টি থেকে ৩২ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, এই ভূমিকম্প থেকে অস্ট্রেলিয়ায় সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই।

প্রসঙ্গত, পাপুয়া নিউগিনিতে ভূমিকম্পের ঘটনা বেশ সাধারণ। এই দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ার এ অবস্থিত। এছাড়া টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে ভূমিকম্পের ক্রিয়াকলাপের জন্য এই অঞ্চলটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

নিউজ ট্যাগ: পাপুয়া নিউগিনি

আরও খবর



লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও আমল

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর। ফারসি ভাষায় যা শবে কদর নামে খ্যাত। লাইলাতুল কদর এমন এক মহিমান্বিত রজনী যে রজনীতে আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পবিত্র কুরআন নাজিল করেছেন। মূলত এজন্যই এই রজনী এত ফজিলতপূর্ণ আর এই রজনীর কারণেই মাহে রমজান এত সম্মানিত।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে এই রজনীর গুরুত্ব বুঝাতে কদর নামে একটি সুরা অবতীর্ণ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন: নিশ্চয়ই আমি এই কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কদরে। আর আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর অর্থাৎ কদরের রজনী হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এই রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত। সুরা কদর: ১-৫

পবিত্র কুরআনে লাইলাতুল কদরকে আল্লাহ তাআলা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহর কোন বান্দা যদি এই রাতে ইবাদত-বন্দেগী করে তবে সে হাজার মাস ইবাদত-বন্দেগী করার সাওয়াব লাভ করবে। এক হাজার মাসে ৩০ হাজার রাত্রি হয়। অর্থাৎ এই রাতের মর্যাদা ৩০ হাজারগুণ অপেক্ষাও বেশী!

সুতরাং বলা যায় এ রাতের একটি তাসবিহ অন্যান্য রাতের ৩০ হাজার তাসবিহ অপেক্ষা উত্তম। অনুরূপভাবে, এই রাতের এক রাকাত নামাজ অন্যান্য রাতের ৩০ হাজার রাকাতের চেয়েও উত্তম। বলা বাহুল্য, এই রাতের আমল লাইলাতুল কদর বিহীন অন্যান্য ৩০ হাজার রাতের আমল অপেক্ষা অধিক শ্রেষ্ঠ। তাই যে ব্যক্তি এই রাতে ইবাদত করল, মূলত সে যেন ৮৩ বছর ৪ মাস অপেক্ষা বেশি সময় ধরে ইবাদত করল।

এছাড়াও লাইলাতুল কদরের রাতের অনেক ফজিলত হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। কদর রজনীর ইবাদত, সালাত আদায়ের ফলে পূর্ববর্তী জীবনের গুণাহসমূহ মাফ হয়ে যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি রমজানে ইমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় সিয়াম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ইমানের সাথে, সাওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪।

এই ফজিলতপূর্ণ রাতটি কখন? কোন সময় আসে? এ সম্পর্কে রসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা রমজানের শেষ-দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। বুখারী: ২০২০

তাহলে শেষ-দশক মানে কি রমজানের শেষ দশকে প্রতিদিন লাইলাতুল কদর তালাশ করতে হবে? এই প্রসঙ্গে নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: তোমরা রমজানের শেষ-দশকের বেজোড় রাতসমূহে লাইলাতুল কদর তালাশ করো। বুখারী : ২০১৭

অর্থাৎ মাহে রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ এ পাঁচটি রাতের মধ্যে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর তালাশ করতে হবে। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে আমরা যে ২৭ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে লাইলাতুল কদর পালন করি এর ভিত্তি কী? প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের জন্য এ রাতের ব্যাপারে আরও নির্দিষ্ট করে বলছেন: তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অক্ষম হয় বা দুর্বল থাকে তাহলে সে যেন ২৭ রমজানের রজনীকে লাইলাতুল কদর বলে বিবেচনা করে ইবাদত করে। মুসলিম: ১১৬৫

হযরত উবাই ইবনে কাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ২৭ রমজানকে লাইলাতুল কদর বিবেচনা করে ইবাদত করতে বলেছেন।

এছাড়াও মুহাক্কিক ইমামগণ বলেন, আরবিতে লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয়ে নয়টি হরফ বা আরবি বর্ণ রয়েছে; আর সুরা কদরে লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয় তিনবার রয়েছে; নয়কে তিন দিয়ে গুণ করলে সাতাশ হয়, তাই সাতাশে রমজানের রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাফসিরে মাযহারি

যে রাতে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর হবে তার কিছু আলামত হাদিস শরিফে এসেছে:

১. আকাশ মেঘমুক্ত ও উজ্জ্বল থাকবে। তিরমিজি

২. ঠাণ্ডা ও গরমের মাঝামাঝি তথা নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকবে। তিরমিজি

৩. রাতগত দিনে সূর্য উদিত হবে আলোক-রশ্মীহীন অবস্থায়, অর্থাৎ সূর্যের চিরচেনা তেজবিহীন অবস্থায়। মুসলিম, সহিহ ইবনে খুযায়মা

মহিমান্বিত এ রাত পেলে মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে কী প্রার্থনা করবে? কী চাইবে? এ সম্পর্কে হাদিস শরিফে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি বলেন: একবার আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, যদি আমি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী দোয়া পড়বো? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নী। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। সুনানুত তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩

সুতরাং, লাইলাতুল কদরে আমাদেরকে আমল ও দোয়ার মাধ্যমে রাত অতিবাহিত করা জরুরি। আর কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে এই রাতের কতিপয় আমল হলো-

১. নফল নামাজ পড়া।

২. মসজিদে প্রবেশ করে ২ রাকাত (দুখুলিল মাসজিদ) নামাজ পড়া।

৩. দুই রাকাত করে (মাগরিবের পর ৬ রাকাত) আউওয়াবিনের নামাজ পড়া।

৪. রাতে তারাবির নামাজ পড়া।

৫. শেষ রাতে সাহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।

৬. সম্ভব হলে সালাতুত তাসবিহ পড়া।

৬. তাওবার নামাজ পড়া।

৭. সালাতুল হাজাত পড়া।

৮. সালাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল নামাজ বেশি বেশি পড়া।

৯. কুরআন তেলাওয়াত করা। সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুজ্জাম্মিল, সুরা মুদ্দাসির, সুরা ইয়াসিন, সুরা ত্বহা, সুরা আর-রাহমান, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, সুরা কুরাইশ, সুরা ইখলাস ইত্যাদি সুরা তিলাওয়াত করা।

১০. অধিক পরিমাণে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাম ও দরূদ শরিফ পাঠ করা।

১১. তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া। সাইয়্যেদুল ইসতেগফার পড়া।

১১. জিকির-আজকার করা।

১২. কুরআন-সুন্নাহ বর্ণিত দোয়া পাঠ করা।

১৩. পরিবার পরিজন, বাবা-মা ও মৃতদের জন্য দোয়া করা,

১৪. কবর জেয়ারত করা।

১৫. বেশি বেশি দান-সদকাহ করা।

এছাড়াও এই রাতে নিজেকে নানাবিধ ইবাদতে ব্যস্ত রাখা। কারণ এই রাতের ইবাদতের দ্বারা আমাদের জীবনের গুণাহসমূহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন। তাই আমাদের উচিত এই রাতকে অবহেলায় না কাটিয়ে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল রাখা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে লাইলাতুল কদর পালন করে কল্যাণ লাভ করার তাওফিক দান করুক। আমিন বিজাহিন নাবিয়্যিল কারিম রাউফুর রাহিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪




পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় চিত্র নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল। শুনানি শেষে আদালত আদেশ পরে দেবেন বলে জানান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল এ তথ্য জানান।

সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন নাসির উদ্দিন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।

পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন। বাদী এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন।

এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন।


আরও খবর
পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




শাকিবের জন্মদিনের বিশেষ চমক থাকছে না বুর্জ খলিফায়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

সংবাদ সম্মেলন করে বেশ জাঁকালো ঘোষণা দেওয়া হয়- শাকিব খানের জন্মদিনে বুর্জ খলিফায় রাজকুমার সিনেমার ট্রেলার প্রকাশিত হবে। আর এটি হবে সুপারস্টারের জন্মদিনের বিশেষ চমক!

তখন শাকিব খানও বলেছিলেন, এমন আয়োজন দেখলে যে কোনো বাংলাদেশিরই বুক গর্বে ভরে উঠবে!

গেল ২০ মার্চ গুলশান ক্লাবে এমন ঘোষণা দেন রাজকুমারর প্রযোজক আরশাদ আদনান। তার কথায়, বুর্জ আল খলিফায় ট্রেলার প্রচারের চেষ্টা করা হয়েছে। ৯৯.৯৯ শতাংশ নিশ্চিত সেখানে আমরা ঢালিউড কিং শাকিব খানের জন্মদিন উদযাপন করব। প্রচার হবে রাজকুমারের ট্রেলার।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ঢালিউডের শীর্ষ নায়কের জন্মদিন। কিন্তু জানা গেল, বুর্জ খলিফাতে হবে না আয়োজন। কারণটা নিয়ে মুখ খুলছে না সিনেমা সংশ্লিষ্টরা।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভার্সেটাইল মিডিয়া চেষ্টা করছে, ১ এপ্রিলের ট্রেলারটি দেখানোর। থাকবে না শাকিবের জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কিছু। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই রমজানে সিনেমার ট্রেলার দেখাতে পারবে না। সিডিউল মিলবে ঈদের পর।

বিষয়টি নিয়ে সিনেমার পরিচালক হিমেল আশরাফ ও প্রযোজক আদনানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও, তারা ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, নব্বই দশক থেকে বেশ জোরেসরে সুউচ্চভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে দুবাই। ভারতীয় উপহমহাদেশ থেকে বহু কর্মী তারা টেনে নেয়। টাকার টানে গিয়েছেন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিরাও।

ভারতীয় প্রবাসীদের কাছে কিং খান শাহরুখ যেন এক ঈশ্বর। দুবাই আমিরাত বিষয়টি টের পায়, শাহরুখকে তারা বানিয়ে নেন তাদের শুভেচ্ছাদূত। কিং খানের সিনেমার ট্রেলার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে বুর্জের গায়ে। এসেছে রণবীরসহ অনেকেরই ট্রেলারও।

গত কয়েক বছরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এ টাওয়ারে পালিত হয়ে আসছে জন্মদিনও। আর একই পথে হাঁটতে চেয়েছেন শাকিব খান। আজ তার জন্মদিনে সেই আয়োজনটি করার পরিকল্পনাও ছিল। তবে সেটা আর হলো না।


আরও খবর