১৬ বছর আগে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মা-মেয়ে
খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এছাড়া অপর
এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন।
দুই আসামির আপিল মঞ্জুর এবং এক আসামির
আপিল খারিজ করে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন
তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
২০০৬ সালের ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইফতারের
পর রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ধুয়াপাড়া যৌবন গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. বজলুর রহমানের স্ত্রী
মিলিয়ারা খাতুন ওরফে রোকসানা ওরফে মিলু (৩০) এবং তার মেয়ে পারভীন ওরফে সাবনুরকে (৯)
গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন মিলির বাবা রফিকুল ইসলাম থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এজাহারে বলা হয়, মিলির মাথা গোয়াল ঘরে
এবং সাবনুরের মাথা ল্যাট্রিনে পাওয়া যায়। দুই বছর পর এ মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের
২৩ জুলাই রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেসবাউদ্দৌলা রায় দেন।
রায়ে ধুয়াপাড়া যৌবন লাইন পাড়ার মো. রফিকুল
ইসলামের ছেলে সোনাদ্দি ওরফে সোনারুদ্দি, সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন বাবু,
মো. এসলাম ডাকাতের ছেলে তরিকুল ইসলাম ভুতা এবং অপর আসামি মো. মোক্তারকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড
দেন। সেই থেকে তিন আসামি কনডেম সেলে রয়েছেন।
এরপর নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের
জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি তিন আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন।
শুনানি শেষে বিচারপতি শহিদুল ইসলাম ও বিচারপতি
আবদুর রব ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ রায় দেন। রায়ে আপিল খারিজ করে চার আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশে
অনুমোদন দেন।
রায়ে পলাতক মোক্তারের বিষয়ে বলা হয়, সারেন্ডার
বা গ্রেফতারের পর থেকে তার দণ্ড কার্যকর হবে। এরপর কারাবন্দী তিন আসামি আপিল বিভাগে
আপিল করেন। তবে পলাতক থাকায় মোক্তার আপিল করেননি। ওই আপিলগুলোর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার
রায় দেন আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি
জেনারেল বশির আহমেদ। আসামি ইসমাইলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সোনারুদ্দির
পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা এবং তরিকুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম বকস
কল্লোল।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ
বলেন, শুধুমাত্র তরিকুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ছিল। তাই তার আপিল খারিজ এবং
দীর্ঘদিন কনডেম সেলে থাকার বিবেচনায় তার দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন।