১১ দফা দাবি মেনে
নেওয়ার আশ্বাস পেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেছেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার পর তারা আন্দোলন স্থগিত করে হলে ফেরেন।
এর আগে, রাত সাড়ে
১০টার দিকে প্রথমে অপরাজিতা হলের ছাত্রীরা ভেতরের তালা ভেঙে বাইরে এসে গেট খুলে প্রতিবাদ
শুরু করেন। পরে অন্য হলের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়ে হাদী চত্বরে অবস্থান নিয়ে নিজেদের
১১ দফা দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের
১১ দাবি -
* রাইস কুকার
ও রান্নার সরঞ্জাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
* যৌন হয়রানির
প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তগত আক্রমণ ও পারিবারিক শিক্ষা তুলে
কথা বলার ঘটনায় ক্ষমা চাইতে হবে।
* হলে প্রয়োজনে
অভিভাবক ও নারী আত্মীয়দের থাকার অনুমতি দিতে হবে।
* পানির পোকা
ও খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
* প্রাধ্যক্ষ
তার নিজ ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও অ্যাকাডেমিক বিষয়ে হয়রানি করেন।
এটা বন্ধ করতে হবে ও ক্ষমা চাইতে হবে।
* হলের কর্মকর্তা
ও কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
* যে কোনো পরিস্থিতিতে
সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
* ছাত্রীদের মতামতকে
প্রাধান্য দিতে হবে
* আজকের আন্দোলনের
ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো ছাত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেওয়া যাবে না।
* হলের মিল খাওয়া
বাধ্যতামূলক থাকবে না।
* দাবিগুলো দ্রুত
না মানলে প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগ করতে হবে।
আন্দোলন স্থগিতের
বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কিছু যৌক্তিক দাবি জানানো হয়েছে। যেহেতু সব দাবিই কাগজে-কলমে
মেনে নেওয়া হয়েছে, তাই আপাতত আন্দোলনের সমাপ্তি টানা হলো। দ্রুত যেন দাবিগুলোর বাস্তবায়ন
দেখা যায়।
খুবির অপরাজিতা
হলের প্রভোস্ট রহিমা নুসরাত রিম্মি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। তাদের সব দাবি
আমরা মেনে নিয়েছি। কারণ আমরা চাই না আমাদের সন্তানেরা একটুও কষ্ট পাক আমাদের দ্বারা।
তাদের হল তারা যেভাবে চাইবে, আমরা সেভাবে চালাব। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কখনো প্রতিদ্বন্দ্বী
হতে পারে না এবং আমরা বিশ্বাসও করি না। তাদের সমস্যা আমরা সবসময় সমাধানের চেষ্টা করেছি।
এর আগে আন্দোলনরত
শিক্ষার্থীরা জানান, হলের প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট ছাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যু
নিয়ে ধমক দেওয়া থেকে শুরু করে সিট বাতিলের হুমকি দেন। মঙ্গলবার এক ছাত্রী ওই হলে বটি
দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করলেও হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেঁচে যান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে
ছাত্রীদের রান্না করার সরঞ্জাম জব্দ করার নির্দেশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। নির্দেশনায় বলা
হয়, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, রাইস কুকার, হিটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম না সরালে, যার রুমে এগুলো
পাওয়া যাবে তার সিট বাতিল হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা
আরও জানান, কিছুদিন আগে ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৪৫ মিনিট ধরে
ধমক দেয় এবং শাসায় হল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ছাত্রীরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জানালে সমস্যা
সমাধান না করে উল্টো শাসানো হয়।
ছাত্রীরা অভিযোগ
করেন, সহকারী প্রভোস্ট ছাত্রীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘হল তোমাদের সুযোগ,
অধিকার নয়। যার সমস্যা সে হল থেকে নেমে যাও।’ এ কারণে আজ
(মঙ্গলবার) আন্দোলন শুরু করেন তারা।