আজঃ মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪
শিরোনাম

যুদ্ধ বন্ধে সমঝোতায় প্রস্তুত পুতিন

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে সব পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ইউক্রেন ও দেশটিকে সমর্থনদানকারী পশ্চিমা ব্লক প্রস্তাবে রাজি নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। পুতিন বলেন, আমরা গ্রহণযোগ্য সমাধান নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। কিন্তু এটি (সমঝোতা) এখন তাদের ওপর নির্ভর করছে। কেননা সমঝোতা প্রত্যাখ্যানকারী তারাই, আমরা নই।

গত শনিবার মস্কোর জাতীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন এসব কথা বলেছেন। পুতিনের অভিযোগ, পশ্চিমারা রুশ নাগরিকদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে রুশ হামলার মধ্যেই গত শনিবার নাগরিকদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যুদ্ধকালীন ক্রিসমাস উদ্‌যাপনে ইউক্রেনের জনগণকে ধৈর্য ধরে থাকার আহ্বান জানান তিনি। বিবিসি জানায়, গত শনিবার খেরসন শহরে রুশ বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন।


আরও খবর



কক্সবাজারে খাল থেকে দুই জেলের লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুল ইউনিয়নের মনুপাড়া এলাকার একটি চিংড়ি ঘের থেকে দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মারধর ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে তাদের দুজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে খুরুস্কুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে একটি চিংড়ির ঘের এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।

নিহতেরা হলেন খুরুস্কুল ইউনিয়নের মনুপাড়া গ্রামের মো: জামালের ছেলে আব্দুল খালেক এবং আবু তাহেরের ছেলে মো: ইয়াসিন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে খুরুস্কুল আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশে একটি চিংড়ির ঘের এলাকায় লাশ দুটি দেখতে পেলে লোকজন পুলিশে খবর দেয়। কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ ও সিআইডি পুলিশের টিম লাশ দুটি উদ্ধার করে। এ সময় খুরুস্কুল ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন এসে লাশ শনাক্ত করে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী জানান, তাদের দুজনের শরীরে মারধর ও বৈদ্যুতিক শর্টের দাগ রয়েছে।

নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে তারা দুজন চিংড়ির ঘেরে মাছ শিকার করতে গিয়ে আর বাড়িতে ফিরেনি। চিংড়ি ঘেরের মালিকের লোকজন মারধর ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে তাদের দুজনকে হত্যা করে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রাকিবুজ্জামান জানান, তাদের দুজনকে হত্যা করা হয়েছে কি-না তা তদন্ত করা হচ্ছে।

নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।


আরও খবর



সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, তীরে ফিরেছেন জেলেরা

প্রকাশিত:সোমবার ২০ মে ২০24 | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সমুদ্রে মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছ শিকারের ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই গভীর সমুদ্রে সকল ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে নোয়াখালীর হাতিয়ায় তীরে ফিরেছেন জেলেরা।

হাতিয়ার সূর্যমূখী ঘাটের মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, হাতিয়ার ৪০টি ঘাটের প্রায় ৫ শতাধিক বড় বড় ফিশিং ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে। নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব ট্রলার রাতেই ঘাটে ফিরে এসেছে। ইতোমধ্যে ট্রলার শনিবার ও রোববার ঘাটে ফিরে এসেছে। এ বছর ইলিশ মৌসুমের প্রথমে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। ৬৫ দিন সবাইকে তীরে থাকতে হবে। অনেকে বেকার সময় পার করবেন।’

সূর্যমূখী ঘাটের কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, রাত ১২টার পর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। তাই আর সাগরে যাবেন না। আগামী কয়েক দিন জাল বোনার শ্রমিক হিসাবে ঘাটে থেকে উপার্জন করতে হবে। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর তারা আবার সাগরে যাবেন।

জেলেরা আক্ষেপ করে জানান, ইলিশ মৌসুমে ৬৫ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্য আর্থিক বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে।

এ বিষয়ে হাতিয়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন বলেন, হাতিয়াতে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করার মতো ট্রলার রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক। এসব ট্রলারে ২০ জন করে হলেও ১০ হাজার জেলে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন। এতে ১০ হাজার জেলে সবাই বেকার হয়ে পড়েছেন। তাদের পরিবার নিয়ে চলা অনেকটা কঠিন হবে। আবার এসব জেলের অনেকের নিবন্ধন না থাকায় সরকারি সুবিধাও পাবেন না।’

যদিও জেলেদের আগেই সতর্ক করা হয়েছে দাবি করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, হাতিয়ার অনেক ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে। এই ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ থাকবে যা আগেই জেলেদের অবহিত করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ঘাটে গিয়ে জেলে ও ট্রলার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, হাতিয়ায় প্রায় ১ লাখ ব্যক্তি জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার।


আরও খবর



রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অস্ত্রসহ আরসার ৪ সন্ত্রাসী আটক

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ৪ সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

রবিবার (১৯ মে) রাতে উখিয়ার ক্যাম্প-২০ এলাকার পাহাড়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে নিশ্চিত করেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. ইকবাল।

আটকরা হলেন- উখিয়ার ক্যাম্প-১৭ এইস ব্লকের দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে আমির হোসেন (২৯), একই ক্যাম্পের মৃত ফজল করিমের ছেলে জিয়াউর রহমান (৩২), মৃত আব্দুস সালামের ছেলে সৈয়দুল আমিন (৩০) ও বাদশা মিয়ার ছেলে মো. হারুন (২২)।

মো. ইকবাল বলেন, গোপন সংবাদে খবর ছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতার করার লক্ষ্যে আরসার শীর্ষ চার সন্ত্রাসী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ- হ্যান্ডগ্রেনেডসহ অবস্থান করছে। এমন খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশের একটি টিম রবিবার রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২০ এর এস১/বি৭ ব্লকের কাঁটাতারের বাইরের গোয়াম বাগান পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় আরসার চার শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি দেশীয় তৈরি বড় ওয়ান শুটার গান (এলজি), চারটা মাঝারি সাইজের ওয়ান শুটার গান (এলজি), একটি দেশীয় তৈরি এমএমজি সাদৃশ্য ওয়ান শুটার গান, দুইটি লম্বা কিরিচ, চারটি হ্যান্ডগ্রেনেড, ছয় রাউন্ড রাইফেলের গুলি ও দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি, এক রাউন্ড কার্তুজ, ১১টি গুলির খোশা ও দুইটি কার্তুজের খোশা, হ্যান্ডগ্রেনেডে ব্যবহৃত দুই প্যাকেট লোহার বল ও দুইটি ওয়াকিটকি চার্জার উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


আরও খবর



ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: গ্রেপ্তার ৯০০

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলন দমাতে শত শত বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ।

গত ১৮ এপ্রিল নিউইয়র্ক পুলিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী একটি শিবির সরিয়ে নেয় এবং শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলো থেকে অন্তত ৯০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরপর থেকে কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে শিবির স্থাপন করেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রিকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।

আল জাজিরার খবর অনুসারে, শনিবার বোস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ব্লুমিংটনের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি এবং সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভ থেকে ২৯০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া এবং টেক্সাসের বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্যরা তাদের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা ভোট গ্রহণ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গণহত্যা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। যেসব প্রতিষ্ঠান অস্ত্র উৎপাদনসহ নানা উপায়ে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় সহযোগিতা করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বৃত্তি না দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তারা।


আরও খবর



বাংলাদেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ২৭তম বছরে পদার্পণ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রথমেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বিশ্বের মহান নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামক দেশের জন্ম হতো না। কৃতজ্ঞতা জানাই রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে- যিনি জনগণের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত এবং দেশের চিকিৎসা, শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে তৎকালীন আইপিজিএমএন্ডআরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত করার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

ঢাকার প্রথম তিন তারকা হোটেল ছিল হোটেল শাহবাগ। নবাব সলিমুল্লাহ ১৯০৬ সালের ১৪ ও ১৫ এপ্রিল ভবনটি নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনের স্থান হিসেবে নির্বাচন করেন। ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বরে এ ভবনেই অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে এটিকে সংস্করণ করে হোটেলে রূপান্তর করা হয়, যা ঢাকার প্রথম আন্তর্জাতিক হোটেল। পঞ্চাশের দশকে বিদেশি অতিথিদের আবাস ও আহারের ব্যবস্থা, বড় আকারের অভ্যর্থনা সবই এখানে হতো। এটিই বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। আগে এর নাম ছিল ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ। সাধারণ মানুষের কাছে পিজি হাসপাতাল নামে পরিচিত। ইতিহাসবিদ শরীফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত ঢাকা কোষ” এবং ইফতিখার-উল-আউয়াল সম্পাদিত ঐতিহাসিক ঢাকা মহানগরী: বিবর্তন ও সম্ভাবনা বইটিতে এই হাসপাতাল তৈরির ইতিহাস লেখা রয়েছে।

এতে বলা হয়, ১৯৬৫ সালে ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চের জন্য শাহবাগের এই জায়গা অধিগ্রহণ করে সরকার। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ব্যাপক বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯৬৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনজন সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ ব্রিটিশ কাউন্সিলের উপদেষ্টা স্যার জেমস ডি এস কেমেরন, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক এ কে এস আহম্মদকে নিয়ে এই ইনস্টিটিউট গড়ে ওঠে। পরে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠিত স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিনের সঙ্গে এটি যুক্ত হয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালে অধ্যাপক নুরুল ইসলামের অনুরোধে তৎকালীন মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী মুসলিম লীগের পরিত্যক্ত ভবনটি (ব্লক-এ) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে এখানেই পিজি হাসপাতালের কার্যক্রম চলে। তবে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল মহান জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। উচ্চতর মেডিকেল শিক্ষা এবং গবেষণার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল পিজি হাসপাতালে। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে তৎকালীন সময়ে দেশের ১৩টি সরকারি ও পাঁচটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং নিপসমসহ পাঁচটি পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেশের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা পালনে সক্ষম হচ্ছিল না। বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন দেশে একটি স্বতন্ত্র ও গবেষণা সমৃদ্ধ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও সব মেডিকেল কলেজের স্বায়ত্বশাসন দাবি করে আসছিল।

এখানে উল্লেখ্য যে, ৬৯-এর ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দেওয়া ১১দফার মধ্যেও চিকিৎসকদের দাবির কথা উল্লেখ ছিল। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মেডিকেল শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও আইপিজিএমআর শিক্ষক সমিতি একটি স্বতন্ত্র ও গবেষণা সমৃদ্ধ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে।

জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসক সমাজ আন্তর্জাতিক মান অর্জন করে দেশের আপামর জনসাধারণের সুচিকিৎসায় নিয়োজিত হবেন এ আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর কেবলমাত্র হীন রাজনৈতিক সংকীর্ণতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে আবারও আইপিজিএমআর করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি-জামাত জোট সরকার। এমনকি তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা থেকে গাজীপুর, টুঙ্গিপাড়া বা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার হীন উদ্যোগ গ্রহণ করে।

জনসাধারণের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আবারও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করার উদ্যোগ নেন।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০৫টি পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অন্যান্য ৫১টি অধিভুক্ত মেডিকেল/নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টি রেসিডেন্সি কোর্স রয়েছে। চালু হয়েছে এমএসসি নার্সিং কোর্স। বাংলাদেশের ছাত্রদের বাইরেও ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সোমালিয়া, কানাডা, ইয়েমেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, বতসোয়ানা এবং অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১১টি দেশের প্রায় ১০০ বিদেশি ছাত্র বিভিন্ন কোর্সে লেখাপড়া করছেন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ১০ হাজার নতুন ও পুরাতন রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে সন্তুষ্টি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে এখন আটটি অনুষদসহ ৫৭টি পূর্ণাঙ্গ বিভাগ। আরও সুশৃঙ্খল এবং ডিজিটাল করা হয়েছে আর্থিক ব্যবস্থাপনা। আমাদের হাসপাতালে এখন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখানে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের সকল মানুষের কাছে পরিগণিত হয়েছে চিকিৎসার নির্ভরযোগ্য ভরসাস্থল হিসেবে।

রোগীদের আরও উন্নত চিকিৎসা দিতে ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে ভিট্রিও রেটিনা, গ্লুকোমা, কর্নিয়া, অকুলোপ্লাস্টি, ক্যাটারেক্ট ও রিফ্রেকটিভ সার্জারি, অর্থোস্কোপিক সার্জারী ও অর্থোপ্লাস্টি, হ্যান্ড এন্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি, শিশু এন্ডোক্রাইনোলজি, জেনারেল রিউম্যাটোলজি ও ইউমিনো রিউম্যাটোলজি।

মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় গবেষণাকে জোরদার করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা কেন্দ্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি সার্ভিস চালু আছে। এছাড়া কয়েকটি বিভাগে রোগীর ল্যাবরেটরি রিপোর্ট অনলাইনে মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ও কোরিয়া সরকারের যৌথ অর্থায়নে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। ফলে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে কম খরচে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পাবে। এছাড়া দেশে প্রথমবারের মতো পরপর দুটি ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট, বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, লিভারসহ অন্যান্য অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমও সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করি। তারপরও সকল শিক্ষক, ছাত্র, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, সেবা ও গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে সাফল্য নিয়ে। প্রতিনিয়ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ- দেশি-বিদেশি চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিতে। আমাদের ছাত্র এবং তরুণ চিকিৎসকরা এ সুযোগ নিয়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করছে নতুন নতুন জ্ঞান/অভিজ্ঞতা নিয়ে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন সোসাইটির সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চার প্রাণকেন্দ্র।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের চিকিৎসক সমাজের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি যেমন বাস্তবায়ন করছেন, তেমনি এদেশের উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অগ্রযাত্রার সূচনা করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদান চিকিৎসক সমাজ কৃতজ্ঞতার সাথে চিরদিন স্মরণ করবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের বুকে একটা রোল মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং উন্নত চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সংযুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই প্রত্যাশা আমাদের সবার।

রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সহযোগিতা এবং সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাব, ইনশাল্লাহ।


আরও খবর