রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া
৯ বছরের ভাতিজিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় সাবেক সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়ালন্দ
ঘাট থানা-পুলিশ। আজ শনিবার গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা গতকাল শুক্রবার
গোয়ালন্দ ঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে উপজেলার
দক্ষিণ উজানচর বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত সাবেক সেনা সদস্য আবুল কাশেম
(৫২) উপজেলার দক্ষিণ উজানচর বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত নায়েব আলী ব্যাপারীর ছেলে।
ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বলেন, ‘আবুল কাশেম আমার চাচাতো ভাই। আমার মেয়ে
স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। গতকাল শুক্রবার আরেক
চাচাতো ভাইয়ের যমজ মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে সেখানে দাওয়াত ছিল। এ কারণে পরিবারের সকলকে
নিয়ে দাওয়াত খেয়ে দুপুর ২টার দিকে আমরা ঘরে চলে যাই। এ সময় আমার মেয়ে অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের
সঙ্গে খেলছিল। একপর্যায়ে আবুল কাশেমের তার ঘরে যেতে আমার মেয়েকে ডাক দেয়। তখন আমার
মেয়ে আমাকে জানালে-চাচা ডাকছে, যাও বলে তাকে যেতে বলি। পরে আমার মেয়ে ও আরেক চাচাতো
ভাইয়ের মেয়েসহ দুজন আবুল কাশেমের ঘরে যায়। তখন মেয়েদের মোবাইলে কার্টুন দেখানোর কিছুক্ষণ
পর চাচাতো ভাইয়ের মেয়েকে ঘর থেকে চলে যেতে বলে। সে সময় ওই সে ঘর থেকে চলে গেলে আমার
মেয়ে একাই মোবাইল দেখছিল। এর কিছুক্ষণ পর ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে আমার মেয়েকে ধর্ষণ
করার চেষ্টা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় আমার মেয়ে চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে
ধরে। পরে আমার মেয়ে কৌশলে ছুটে গিয়ে ঘরের অন্য একটি দরজা খোলা পেয়ে সেখান দিয়ে দৌড়ে
পালিয়ে গিয়ে ওর মায়ের কাছে বিষয়টি জানায়। মেয়ের কাছ থেকে ঘটনা শুনে আমার স্ত্রী আমাতে
বিস্তারিত জানায়। তখন তৎক্ষণাৎ আবুল কাশেমের ঘরে গিয়ে না পেয়ে স্থানীয় লোকজনকে আমি
বিষয়টি জানাই। পরে রাত ১১টার সময় আবুল কাশেম ঘরে আছে জানতে পেরে ঘটনার বিষয়ে জানতে
চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং কাউকে বলতে নিষেধ করেন। পরে আমি ৯৯৯ কল করলে
গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত শুনে আবুল কাশেমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’
স্থানীয়রা বলছে, সাবেক সেনা সদস্য আবুল কাশেম এর আগেও একাধিক অনৈতিক
কাজের জন্য অর্থদণ্ড দিয়েছেন।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামি আবুল
কাশেমকে আটক করা হয়। পরে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন
দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আবুল কাশেমকে গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার দুপুরের
দিকে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।