আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

ভাসমান সেতু পেয়ে খুশি সাতক্ষীরার প্রতাপনগরের মানুষ

প্রকাশিত:সোমবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

দুই লাখ টাকা খরচে ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের ভাসমান সেতু আটকা পড়া ২৫০টি পরিবারের মানুষদের চলাচলের পথ করে দিয়েছে। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাবনগর গ্রামের সংযোগ এই ভাসমান সেতটিু নির্মাণ করায় কষ্টভোগি মানুষেরা খুবই খুশি। তাদের চরাচলের দুর্ভোগ কমে গেছে। ভাসমান সেতুটি নির্মাণে অর্থায়ন করেছে ডু সামথিং ফাউন্ডেশন। সেতটিু নির্মাণ করতে ৫৬টি দুই লিটারের ড্রাম, ৫০ সিএফটি মেহগনি কাঠ, ৫০ সিএফটি চাম্বল কাঠ, ২৫০ সিএফটি শিরিশ কাঠ এবং ৬০ কেজি পেরেক ব্যবহার করা হয়েছে।

২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও ২০২১ সালের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ভেঙে যায় খোলপেটুয়া নদীর উপকূল রক্ষা ভেঁড়িবাধ। বাঁধ ভেঙে তীব্রগতিতে পানি লোকালয়ে প্রবেশ শুরু করে। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাবনগর গ্রামের মধ্যদিয়ে শুরু হয় নদীর জোয়ার-ভাটা। এতে বিস্তীর্ণ এলাকা পরিণত হয়েছে নদীর সংযোগ খালে।

আইলা থেকে আম্ফানে ভেসেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল। সবশেষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইয়াসও ভাসিয়েছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরকে। বসতভিটা, কবরস্থান, মসজিদ, জমি হারিয়েছেন মানুষ। জনবসতির স্থান পরিণত হয়েছে নদীর সংযোগ খালে। ভিটেমাটি হারিয়ে কেউ পাড়ি জমিয়েছেন অন্যত্র কেউবা আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের ওপর। নিজ জমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ২৫০টি পরিবার আটকা পড়েছে পানিতে।

বেসরকারি সংগঠন ডু সামথিং ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে আটকা পড়া মানুষদের চলাচলের জন্য ২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ভাসমান ব্রিজ। ব্রিজ হওয়ায় কমে গেছে তাদের দুর্ভোগ। অথচ নৌকায় পারাপার হতে জনপ্রি তাদের ১০ টাকা করে ব্যয় করতে হতো।

ভাসমান সেতু নির্মাণ কাজের তত্ত্ববধানের দায়িত্বে থাকা প্রতাপনগর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সাইদুর রহমান জানান, সেতটিু নির্মাণ করতে ৫৬টি দুই লিটারের ড্রাম, ৫০ সিএফটি মেহগনি কাঠ, ৫০ সিএফটি চাম্বল কাঠ, ২৫০ সিএফটি শিরিশ কাঠ এবং ৬০ কেজি পেরেক ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রতাপনগর গ্রামের মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, আম্ফান ও ইয়াসে খোলপেটুয়া নদীর হরিশখালি ও বন্যতলা এলাকার ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা খাল হয়ে গেছে। আম্ফানে হরিশখালি এলাকার একটি, বন্যতলার একটি ও কুড়িকাওনিয়া এলাকার দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে যায়। ইয়াসে ভেঙে ছিল হরিশখলির একটি ও বন্যতলার একটি পয়েন্ট। এসব বাঁধ ভেঙে লোকালয়ের প্রতাপনগর হওলাদার বাড়ি, সরদার বাড়ি, কাজি বাড়ি, কল্যাণপুর, সনাতনকাটি, নাকনার কিছু অংশ খাল হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, প্রতাপনগর গ্রামের হাওলাদার বাড়ি এলাকায় পানির মধ্যে আটকা পড়েছে ২৫০-৩০০ পরিবার। এদের চারপাশে পানি। বের হতে গেলে নৌকায় পারাপার হতে হয়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ যেকোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেই নৌকা একমাত্র বাহন। এতে জনপ্রতি খরচ হতো ১০ টাকা। জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনেও দ্রুত মানুষ চলাচল করতে পারছিল না। অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে পড়েছিল প্রায় এক হাজার মানুষ।

অবশেষে ডু সামথিং ফাউন্ডেশন পানিতে আটকা পড়া মানুষদের জন্য ভাসমান সেতু করে দিয়েছে। যেখানে ভাসমান সেতুটি নির্মাণের স্থানে পানির গভীরতা প্রায় ১৮/২০ হাত।  ভেঁড়িবাঁধ সংস্কার করা হলেও জোয়ার-ভাটা চলার সময়ের সৃষ্টি হওয়া গভীরতার মধ্যে পানি এখনো রয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হোসেন ঢালী জানান, প্রতিদিন ৪০০-৫০০ জন মানুষ নৌকায় চলাচল করে। এই ভাসমান সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় দুর্ভোগে থাকা মানুষদের অনেক উপকার হয়েছে। তবে সরকারের কাছে এই জনপদটিকে রক্ষার দাবি জানাচ্ছি। আগের মতো রাস্তাঘাট নির্মাণসহ, জনবসতি গড়ে তোলার পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবু দাউদ বলেন, প্রতাপনগরের বন্যতলা এলাকার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ের মধ্যে খাল হয়ে গেছে। ভেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কার করে দিলেও লোকালয় থেকে ৬০০-৭০০ মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। তারা নৌকা ছাড়া বের হতে পারছিল না। ভাসমান সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় তারা এখন যাতায়াত করতে পারবে।

ডু সামথিং ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি ডাঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং ইয়াসের কারণে প্রতাপনগরে বিশাল খাল তেরি হয়েছে। সে কারণে দুই বছর ধরে প্রায় এক হাজার মানুষ মূল ভূখণ্ড থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছিল, গুনতে হতো বাড়তি নৌকা ভাড়া। ভাসমান সেতু নির্মাণের ফলে উপকূলীয় বাসিন্দাদের আর কষ্ট থাকবে না।


আরও খবর



যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সাম্রাজের অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের প্রায় ২০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় ২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা) মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি কিনে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য’ গড়ে তোলার ঘটনার অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালাউদ্দিন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’- শিরোনামে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনের প্রথমাংশে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের ব্যক্তিগত আবাসিক রাস্তায় একটি সম্পত্তি ২০২২ সালে ১ কোটি ৩৮ লাখ ডলারে (১৫২ কোটি টাকায়) বিক্রি হয়। রিজেন্টস পার্ক এবং লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড থেকে পাথর ছোড়া দূরত্বে যুক্তরাজ্যের রাজধানীর সবচেয়ে সমৃদ্ধ এলাকাগুলোর একটিতে সাদা টাউনহাউসের সারি। একটি সম্পত্তি বিপণন কোম্পানির আলোকচিত্রে দেখা যায়, এর মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত জানালা, বেশ কয়েকটি ফ্লোরজুড়ে সর্পিল সিঁড়ি, রয়েছে থিয়েটার এবং ব্যায়ামাগার।

সম্পত্তি প্ল্যাটফর্মের হিসাবে বর্তমানে বাড়িটির দাম ১৮০ কোটি টাকারও (১ দশমিক ৩ কোটি পাউন্ড) বেশি। বাড়িটি বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন। অথচ বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দেশটির কোনো নাগরিক, বাসিন্দা এবং সরকারি কর্মচারী বছরে ১২ হাজার ডলারের (১৩ লাখ ১৭ হাজার টাকার) বেশি অর্থ দেশের বাইরে নিতে পারেন না। বাংলাদেশের আইনে করেপোরেশনের বিদেশে তহবিল স্থানান্তরেও নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। শুধু কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হয়।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী গত জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে তার মালিকানাধীন কোম্পানি প্রায় ২০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড (২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা) মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি কিনে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউস করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকি চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে এ পরিসংখ্যান পেয়েছে বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গ।

গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্য লন্ডনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম আবাস টাওয়ার হ্যামলেটস এবং লিভারপুলে ছাত্রদের আবাসন পর্যন্ত বিস্তৃত তার সাম্রাজ্য। জাভেদের প্রায় ২৫০টি সম্পত্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রায় ৯০ শতাংশ নতুন অবস্থায় কেনা হয়।


আরও খবর



বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে মোংলা থানার ওসি তদন্তকে প্রত্যাহার

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

Image

বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এক মুসলিম নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোংলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিরন্ময় সরকারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বাগেরহাট পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা পুলিশ (এসপি) মো. আবুল হাসনত খাঁন।

এরআগে ভুক্তভোগী ওই নারী মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সহকারী পুলিশ সুপার ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ অভিযোগ করেন।

ওই অভিযোগে যশোর জেলার বাসিন্দা ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেন, পাঁচ বছর আগে পুলিশ কর্মকর্তা হিরন্ময় সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই সময় হিরন্ময় সরকার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) চাকরিরত ছিলেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী হয়েও নিজেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী পরিচয় দিয়ে ওই নারীর সাথে ঘনিষ্ট হন হিরন্ময় সরকার। গোপন রাখেন তার আগের সংসারের কথাও। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম, পরে বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

ওই নারী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, তাদের এমন সম্পর্কের কিছুদিন পর তিনি গর্ভধারণ করেন। এ সময় নানা অজুহাত দেখিয়ে হিরন্ময় সরকার ভ্রূণ নষ্ট করেন। এরপর ওসি হিরন্ময় ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

গেল বৃহস্পতিবার (৯ মে) যশোর থেকে এসে মোংলার একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন ওই নারী। পরে মোংলা থানায় গিয়ে বিষয়টি অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ সুপার মোংলা সার্কেল মুশফিকুর রহমান তুষারকে অবহিত করেন।

শনিবার (১১ মে) বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ওই নারী। পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাসে ওই নারী রোববার (১২ মে) মোংলা থেকে নিজ জেলা যশোর ফিরে যান।

সোমবার (১৩ মে) দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, হিরন্ময় সরকারকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ওই নারীর অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ পরিদর্শক হিরন্ময় সরকার বলেন, কয়েক মাস আগে তার সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। ওই নারী শুধু বন্ধু ছিল। তার সাথে শারীরিক বা প্রেমের সম্পর্ক হয়নি।


আরও খবর



দুবাইয়ে ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ, তালিকায় ৩৯৪ বাংলাদেশি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বিলাসবহুল জীবনযাপনের শহর দুবাই। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষের বিপুল পরিমাণ গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে পলাতক ব্যক্তি, অর্থপাচারকারী এবং অপরাধীরা সেখানে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এসব সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রকল্প দুবাই আনলকড-এ। এই তালিকায় রয়েছেন ৩৯৪ বাংলাদেশি।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোরের নেতৃত্বে এই অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এতে ৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা দীর্ঘ ৬ মাস ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুবাই আনলকড শিরোনামে প্রতিবেদনটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ওসিসিআরপি। সেখানে উঠে এসেছে, কীভাবে দুবাই সারা বিশ্বের ধনীদের জন্য শীর্ষ পছন্দের শহর হয়ে উঠেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে ১২.৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদ গড়েছেন কিছু পাকিস্তানি নাগরিক। দেশটির রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারির তিন সন্তান, প্রয়াত জেনারেল পারভেজ মোশাররফ, এমনকি পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ছেলের মতো লোকেরা এই তালিকায় রয়েছেন। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। আর্থিক সাহায্যের দাবিতে দৌড়াদৌড়ি চলছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাদের রাজনীতিবিদ এবং সামরিক নেতাদের নগদ অর্থের সংকট নেই।

তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথিতে ১৭ হাজার পাকিস্তানি নাগরিক দুইবাইয়ে তালিকাভুক্ত সম্পদের মালিক। শহরটিতে আবাসিক সম্পত্তির পাকিস্তানি মালিকের প্রকৃত সংখ্যা ২২ হাজার। এটি পাকিস্তানের এমন পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে- যখন দরিদ্ররা আকাশচুম্বী মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ধনীরা অভিনব অ্যাপার্টমেন্টগুলো নিয়ে উচ্চ জীবন উপভোগ করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দুবাই বর্তমানে ধনীদের পছন্দের শীর্ষে পরিণত হয়েছে। অপরাধী, পলাতক ব্যক্তি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বৈধ ব্যক্তিরাও সেখানে অর্থ লুকিয়ে রাখতে চাইছে। প্রকৃতপক্ষে দুবাইয়ের এসব মালিকদের অনেকেই অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং মাদক সম্রাট।

উদাহরণস্বরূপ, প্রাক্তন আফগান সরকারি কর্মকর্তা এবং অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী আসাদুল্লাহ খালিদ দুবাইকে বাড়ি বানিয়েছেন। তাছাড়া বাশার আল-আসাদের চাচাতো ভাই রামি মাখলুফ ও তার ভাই ইহাবও সেখানে সম্পত্তির মালিক। উরুগুয়ের গ্যাং স্টার সেবাস্তিয়ান মার্সেত, যাকে দক্ষিণ আমেরিকাজুড়ে মাদক পাচারের জন্য খোঁজা হচ্ছে- তিনিও দুবাইয়ে বাড়ির মালিক।

এছাড়া মাদক পাচারের অভিযোগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা ৩২ বছর বয়সী জোসেফ জোহানেস লিজডেকার্স, যিনি 'নিটোল জোস' নামেও পরিচিত- তারও দুবাইয়ে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জের গ্র্যান্ডিউর রেসিডেন্সে একটি বাড়ি রয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে আবাসিক সম্পত্তির হওয়ার দিক দিয়ে ভারতীয়রা তালিকার শীর্ষে রয়েছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। এই তালিকায় রাজনীতিবিদ, সামরিক নেতা থেকে শুরু করে আমলারাও রয়েছেন।

দুবাইয়ে গোপন সম্পদের বিষয়ে ফাঁস হওয়া তথ্যে ৩৯৪ বাংলাদেশির তালিকা থাকলেও তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। রিপোর্ট বলছে, শহরে গোপনে সম্পদ গড়েছেন অন্তত ৩৯৪ জন বাংলাদেশি। বাংলাদেশিদের মালিকানায় রয়েছে ৬৪১টি সম্পত্তি। বাংলাদেশিদের মালিকানায় থাকা এসব সম্পত্তির মূল্য ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারেরও বেশি।

দুবাইয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনকুবের ও তাদের সম্পদের তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়- ভারতের মুকেশ আম্বানির রয়েছে ১১ হাজার ২০ কোটি ডলারের সম্পদ, ভারতের এম এ ইউসুফ আলী ও তার পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ৭৮০ কোটি ডলার, ভারতের শামশীর ভায়ালিলের রয়েছে ৩৫০ কোটি ডলারের সম্পদ, ওমানের সুহাইল বাহওয়ানের আছে ১৯০ কোটি ডলারের সম্পদ, রাশিয়ার আন্দ্রেই মলচানভ ও তার পরিবারের ১৩০ কোটি ডলারের সম্পদ, সাইপ্রাসের বিনোদ আদানির ২ হাজার ২২০ কোটি ডলারের সম্পদ, কানাডার চ্যাংপেং ঝাওয়ের ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের সম্পদ, যুক্তরাজ্যের সকেট বর্মনের ১৫০ কোটি ডলারের সম্পদ, সাইপ্রাসের নাগরিক ইগোর মাকারোভের ২১০ কোটি ডলারের সম্পদ এবং মিসরের নাগরিক নগিব সাবিরিস ও তার পরিবারের ৩৮০ কোটি ডলার পরিমাণ সম্পদ রয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: ধনকুব দুবাই

আরও খবর



চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

২৫ বছর আগে নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অবশেষে সেই মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বাকি ৬ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তীর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া অপর আসামিরা হলেন, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, ও আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

এর আগে গত ২৯ এপ্রিল ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের এদিন ধার্য করেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, আদনান সিদ্দিকী, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান।

মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর ২০০৩ সালে মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

ওই বছরই আসামি আদনান সিদ্দিকী হাইকোর্টে রিট করেন। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন।

পরে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয় এবং হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়।


আরও খবর



জয়পুরহাটে হত্যার ২১ বছর পর ১৯ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হরেন্দা গ্রামের আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ২১ বছর পর রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে মামলার ১৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।

একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জজকোর্টের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) উদয় সিংহ রায়।

তিনি বলেন, পাঁচবিবি উপজেলার আব্দুর রহমান হত্যা মামলার রায়ে ১৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।


আরও খবর