আজঃ সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

ঊর্ধ্বমুখী পুঁজিবাজার: ডিএসইএক্স সূচকে রেকর্ড

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৮ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৮ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুঁজিবাজার। চলতি সপ্তাহে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই-সিএসই) সূচকের ব্যাপক উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩০৬.০২ পয়েন্ট বা ৫.৪৪ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড গড়েছে। এর আগে কখোনো সূচকটি এক দিনে এত বেশি পয়েন্ট বাড়েনি।

বৃহস্পতিবার ডিএসই ও সিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে সূচক বাড়ার পাশাপাশি টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। পাশাপাশি উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০৬.০২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর আগে ২০১৩ সালের ৩ জুন সূচকটি ২৭৩ পয়েন্ট বেড়েছিল। ডিএসই শরিয়া সূচক ৫৫.৭৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১১০.৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯৮ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩৬৪টি কোম্পানির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭টির।

ডিএসইতে এদিন মোট ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক ৫৪৭.৫৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১০ হাজার ১৫৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯০৩.০৫ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ৮৪১ পয়েন্টে, শরিয়া সূচক ৪৭.৮১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৬৯ পয়েন্টে এবং সিএসই৩০ সূচক ৭৫৮.০২ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ৪০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে ২৮৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ২৪০টি কোম্পানির, কমেছে ৩২টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টির।

দিন শেষে সিএসইতে ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২২ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।


আরও খবর
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৪ হাজার কোটি

রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪




সোনার দামে নতুন রেকর্ড

প্রকাশিত:শনিবার ১৭ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৭ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বিশ্ববাজারে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। এক আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫০০ ডলার ছুঁয়েছে। বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও যে কোনো সময় দামি এই ধাতুটি বাড়ানো হতে পারে। নতুন করে দাম বাড়ানো হলে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আরো উচ্চতায় উঠবে সোনার দাম।

দেশের বাজারে সোনার দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সংগঠনটির পক্ষ থেকে সোনার দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি। এই কমিটির এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার এবং স্থানীয় বাজারে পাকা সোনার দাম পর্যালোচনা করে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি সোনার দাম কতটা বাড়ানো হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবে। দেশের বাজারে সোনার দাম নির্ধারণ করার পর এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১০০ ডলার বেড়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এখন দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়বে।

গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৪২৮ দশমিক শূন্য ৭ ডলার। সেখান থেকে বেড়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫০৭ দশমিক ৮২ ডলারে থিতু হয় সপ্তাহ শেষে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৭৯ দশমিক ৭৫ ডলার বা ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। এর মধ্যে সপ্তাহে শেষ কার্য দিবসেই প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৫০ দশমিক ৪৮ ডলার বা ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

এদিকে দেশের বাজারে সোনার দাম সর্বশেষ নির্ধারণ করা হয় গত ১৪ জুলাই। যা কার্যকর হয় ১৫ জুলাই থেকে। বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে সেদিন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ১৯০ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করে ১ লাখ ২০ হাজার ৮১ টাক হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে উঠেছে সোনা।


আরও খবর
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৪ হাজার কোটি

রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪




আনিসুল, সালমান, জিয়াউলকে জিজ্ঞাসাবাদে ভয় পান কর্মকর্তারা

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছে পুলিশ।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে ১০ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন তারা। তাদের ইন্ধনে দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যা করা হয়েছে-এমন অভিযোগে গ্রেফতার করা হলেও সার্বিক বিষয় নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রিমান্ডে থাকা আসামি সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা তিনজনই এখন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হেফাজতে রিমান্ডে আছেন।

সূত্র আরও জানায়, প্রভাবশালী আসামি হওয়ায় কেউ কেউ তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ভয় পাচ্ছেন। মূলত সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক ও জিয়াউল আহসানকে দুটি টিমের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একটি টিমে আছেন নিউমার্কেট থানার ওসির নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ জুনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা। তারা থানা পুলিশের সদস্য। অপর একটি টিমে আছেন ডিএমপি সদর দপ্তর এবং ডিবির কর্মকর্তারা। এই টিমটি করা হয়েছে উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে। জুনিয়র টিম কেবল মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তারা মামলার এজাহারে বর্ণিত অভিযোগের বাইরে কোনো বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন না। আর সিনিয়র টিমটি জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে কেবল মামলার বিষয়বস্তুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

তবে ডিবির বেশিরভাগ পদস্থ কর্মকর্তা অন্যত্র বদলি হওয়া এবং নতুন আদেশপ্রাপ্ত সব কর্মকর্তা এখনো যোগদান না করায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ সম্ভব হয়নি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কেউ তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ভয়ও পাচ্ছেন।


আরও খবর



বন্যায় প্রায় ৭ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ভারি বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলা। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি উঠায় ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ফলে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে প্রায় সাত লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে নোয়াখালী ও ফেনী।

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখেরও বেশি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। ভারি বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক ছিল।

ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন, আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভবনগুলোর নিচ তলায় পানি ঢুকে মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকবে। বন্যার পানি কমার আগে সংযোগ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে, বুধবার (২১ আগস্ট) ভোর থেকে নোয়াখালীতে ভারি বর্ষণ হয়েছে। সঙ্গে ছিল ঝড়ো হাওয়া। এতে জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সদর,কবিরহাট, কোম্পানিগঞ্জ, সুবর্ণ চর ও চাটখিল উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়াতে প্রায় চার লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জিএম মো. জাকির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এই সমিতিতে ৭ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। আমাদের কয়েকটি সাবস্টেশনসহ বিদ্যুৎ বিতরণকারী বেশির ভাগ এলাকায় এরই মধ্যে বন্যার পানি উঠেছে। ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়াতে ৫০ শতাংশের বেশি (প্রায় চার লাখ) গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।


আরও খবর



বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের প্রধান তিনটি কারণ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে লোডশেডিং বেড়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই বিদ্যুৎ সংকট দেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলেছে। বেশি লোডশেডিং দেখা দিয়েছে গ্রামাঞ্চলে। ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন কমেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে। একইসঙ্গে জ্বালানির আমদানি নির্ভর এ খাতে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে সরকারের বকেয়াও বাড়ছে। ফলে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না।

দেশে বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হলেও চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম।

শেখ হাসিনা সরকার গত পনের বছরে দেশে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করে অপরিকল্পিতভাবে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রে চাহিদাও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকার অর্থনৈতিক যে বিপর্যয় রেখে গেছে তারই ফলশ্রুতিতে এই পুরো খাত মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই খাতে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। সম্পূর্ণ টাকা দেওয়া সম্ভব না হলেও যতটুকু টাকা দিয়ে সরবরাহ বজায় রাখা যায় ততটুকু দিতে হবে।

এদিকে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, সাময়িক সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডলার পেমেন্ট করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের মূল সমস্যা ডলার সংকট। একে কেন্দ্র করেই অন্য সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে এই মুহূর্তে। একইসঙ্গে বিগত সরকারের অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়নের খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে।

ডলার সংকট

দেশে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ আসে গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে প্রায় বারো হাজার মেগাওয়াট। আগে সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। অথচ এখন পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ খাত দিনে ১২০ থেকে ১৩০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে। এখন ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ হচ্ছে বলে জানিয়েছে পিডিবি।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দিনে গ্যাস আসে একশ দশ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭শে মে থেকে বন্ধ। ফলে এখন সরবরাহ হচ্ছে ৬০ কোটি ঘনফুট। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব ইউনিট। ফলে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) তিন হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি লোডশেডিং ছিল।

ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল। কিন্তু বকেয়া পরিশোধ না করায় এখন এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তারা। শেখ হাসিনার সরকার ব্যাংক থেকে বন্ড ছেড়ে বেসরকারি খাতের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল কিছুটা কমাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের এখনও অনেক বকেয়া রয়েছে।

গ্যাস বিল, সরকারিবেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল, ভারতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল সব কিছু মিলিয়ে পিডিবির বকেয়া টাকার পরিমাণ ৩৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বকেয়া অর্থ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, এখন অন্যতম প্রধান সমস্যাই অর্থ সংকট। তাই অন্য খাতে কমিয়ে এখানে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে হবে। তেল-চালিত কেন্দ্রগুলো বেশি চালাতে হবে। ডলার জোগাড় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। ১৫ শতাংশ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গ্যাস রেশনিং করতে হবে। তবেই লোডশেডিং এর সংকট সমাধান হতে পারে।

জ্বালানিতে আমদানি নির্ভরতা 

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ খাতে পলিসিগত যে ভুল সবচেয়ে ভয়াবহ হয়েছে সেটা হলো পুরো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা শক্তিশালী অর্থনীতির বিবেচনায় আমদানি নির্ভর করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার সরকার অর্থনীতির একটি ভ্রান্ত ধারণার উপর ভিত্তি করে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। এসব কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গ্যাসের পাশাপাশি তেল ও কয়লার ব্যবহার বেড়েছে।

এই জ্বালানির বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর আগে সরকার কখনো নিজেরা প্রাথমিক জ্বালানির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। অথবা বিকল্প জ্বালানি হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের দিকে গুরুত্ব দেয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানির এই আমদানি নির্ভরতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। যা সরাসরি ডলারের ওপর চাপ তৈরি করেছে। আমদানি নির্ভরতার সংকটের দৃষ্টান্ত হিসেবে ২০২২-২৩ সালকে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা। জ্বালানি আমদানির জন্য অতিরিক্ত ১৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয় ওই বছর।

এ খাতের সংকট নিরসনে সরকারকে অগ্রাধিকার-ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। যতটুকু অর্থ দিয়ে সরবরাহ বজায় রাখা যায় তা দিতে হবে। 

অপরিকল্পিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও সরবরাহ লাইন না থাকা

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এ খাতকে চরম অব্যবস্থাপনার খাত হিসেবে অভিহিত করেন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের হিড়িক পড়ে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন পাস করে এগুলোকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এ আইনের অধীনে দরপত্র ছাড়াই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ব্যবসায়ীরা ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতারাও বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা নেন।

অনেক পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করা হলেও সেগুলো থেকে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অর্থের অভাবে গ্যাস ও তেল কেনা যাচ্ছে না। এরকম বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তি স্থগিত বা রিনিউ করা হয়নি।

দেশের দক্ষিণে চারটি বড় বড় কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো হলো পায়রা, রামপাল, এস আলম এবং মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এগুলোর মোট উৎপাদন সক্ষমতা পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ লাইন না থাকার কারণে এগুলো থেকে বিদ্যুৎ ঢাকার দিকে আনা যাচ্ছে না। অথচ তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়।

তারা বলছেন, এখন ক্যাপাসিটির অসুবিধা নেই। কিন্তু সরবরাহ লাইনের সীমাবদ্ধতা আছে। ফলে উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ৬০ শতাংশ জ্বালানি আমদানি করার কারণে এই সেক্টর বেশি প্রভাবিত বলে জানান জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।


আরও খবর



ডেঙ্গুতে ৮ মাসে মারা গেছেন ৯২ জন

প্রকাশিত:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত অর্থাৎ ৮ মাসে মারা গেছেন ৯২ জন। গত বছর একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬৯১ জন। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গুতে এবার ৫৯৯ জন কম মারা গেছেন।

মশাবাহিত অন্যান্য রোগ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এ সভা হয়।‌ সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৬৩ জন। এ সময়ে ঢাকা মহানগরের বাইরে সারাদেশে মারা গেছেন ২৯ জন।

গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ঢাকা মহানগরে ৪৯৭ জন মারা যান। দেশের অন্যান্য স্থানে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৯৪ জন। গত বছর এ সময়ে ডেঙ্গুতে মোট মারা যান ৬৯১ জন।

চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৮০৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৬ হাজার ২০৯ জন ও ঢাকা মহানগরের বাইরে ৮ হাজার ৫৯৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

গত বছরের (২০২৩ সালে) ১ জানুয়ারি থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল এক লাখ ৪০ হাজার ৭১১ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৬৪ হাজার ১৭২ জন ও ঢাকা মহানগরের বাইরে ছিল ৭৬ হাজার ৫৩৯ জন।

বৈঠক শেষে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম দিকে ডেঙ্গু নিয়ে দেশে একটা দিশেহারা ভাব ছিল। তবে আমরা ক্রমান্বয়ে একটা সহনীয় পর্যায়ে এসেছি। আমাদের অর্জন তখনই হবে, যখন একটি মৃত্যুও হবে না। এখনো আমরা সে পর্যায়ে পৌঁছাতে পারিনি।

তিনি বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন। কিন্তু গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন ২০ জন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ

এটা নিয়ে আমাদের আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হবে একজনেরও যাতে মৃত্যু না ঘটে। এ রোগের প্রতিরোধই কাজ করে ৯০ শতাংশ। আর ১০ শতাংশ হচ্ছে চিকিৎসা। চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা একটা ভালো পর্যায়ে আছি। তবে সচেতনতার জায়গায় আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। গ্রামে সচেতনতা অনেক কম।

সচেতনতা বাড়াতে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে হাসান আরিফ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সারা বছর একটা কর্মসূচি নেওয়ার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। মশার প্রজননটা যাতে না হয়, গবেষণা করে এমন কোনো ওষুধ বা কিছু বের করা যায় কি না, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে পরিবেশ সচিব বলেছেন, প্রাকৃতিকভাবে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে আজ মশার উপদ্রব হচ্ছে। আগে যেসব মাছ বা ব্যাঙের খাদ্য ছিল লার্ভা, সেগুলোর সংখ্যা খুব কমে গেছে। জীববৈচিত্র্য আগের জায়গায় কীভাবে ফিরিয়ে এনে এদের সংখ্যা বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে।


আরও খবর
একদিনে আরও ৪৮৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত

রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ পর্যায়ে যেতে পারে ডেঙ্গু

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪