আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

শুরুতেই হোঁচট: সফল হয়নি পাইপলাইনে তেল খালাস

প্রকাশিত:শনিবার ০৮ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৮ জুলাই ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মহেশখালী গভীর সমুদ্রে জাহাজ থেকে সরাসরি পাইপলাইন দিয়ে পরীক্ষামূলক জ্বালানি তেল খালাস কার্যক্রম সফল হয়নি।

গত সোমবার কার্যক্রম শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর পাইপলাইনে ত্রুটির কারণে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। তবে কী ধরনের ত্রুটি হয়েছে সেটি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) কর্মকর্তারা। ঘটনার পর থেকে ত্রুটির বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে আসছে সংস্থাটি। তবে বাকি তেল খালাসের জন্য লাইটারেজ জাহাজ ডাকা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

এ বিষয়ে ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. লোকমান বলেন, পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর পর সাত থেকে আট হাজার টন তেল পাইপলাইনে খালাস করা হয়েছিল। এরপর ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বাকি তেল আগের মতো লাইটারেজের মাধ্যমে খালাস করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চীনা প্রতিষ্ঠান পাইপলাইনে কী ত্রুটি হয়েছে সেটি নির্ণয় এবং সারানোর জন্য কাজ করছে।

গত ২৪ জুন রাতে সৌদি আরব থেকে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল নিয়ে এমটি হোরাই মহেশখালী গভীর সমুদ্রে পৌঁছায়। এর পরদিন জাহাজটি থেকে পরীক্ষামূলক পাইপলাইনে তেল খালাস কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। তবে ওইসময় বৈরি আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় তা শুরু করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ৩ জুলাই সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের (এসপিএম) সঙ্গে সৌদি আরব থেকে আসা জাহাজের সংযোগ ঘটানো হয়। এর মধ্য দিয়ে জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ নতুন দিগন্তে প্রবেশ করে বলেও দাবি করেছিলেন ইআরএল কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানীকৃত ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে এবং নিরাপদে খালাস করার জন্য ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ কোম্পানি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বয়াটি মহেশখালী দ্বীপের পশ্চিম পাশে স্থাপিত হয়। জাহাজ থেকে ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট সরাসরি ভেসেল মুরিং পয়েন্টে আনা হবে। সেখান থেকে পাম্প করে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রথমে তেল আনা হবে মহেশখালীর কালারমারছড়ার স্টোরেজ ট্যাংকে। সেখান থেকে আবার পাম্প করে পাইপলাইনে পাঠানো হবে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। গতানুগতিক পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় গভীর সমুদ্রে মুরিং পয়েন্ট নির্মাণ এবং পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আনার লক্ষ্যে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী আগস্টে প্রধানমন্ত্রী এসপিএম প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

২০১৫ সালে পাইপলাইন বসানোর প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। মোট চার হাজার ৯৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ইতোমধ্যেই প্রকল্পের মেয়াদ তিনবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে সাত হাজার ১২৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে। এর মধ্যে চার হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে চীন সরকার। এছাড়া বিপিসি এক হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ৬০১ কোটি টাকা দিচ্ছে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে।


আরও খবর



জলবায়ু পরিবর্তনের মূল আঘাত যাচ্ছে এশিয়ার ওপর দিয়ে: জাতিসংঘ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এশিয়া মহাদেশভুক্ত দেশগুলো। জাতিসংঘের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।

ডব্লিউএমও’র মতে, অন্যান্য মহাদেশের চেয়ে এশিয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব পড়েছে বেশি। এ কারণে এই মহাদেশের তাপমাত্রাও বাড়ছে। ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর এশিয়ার গড় তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টানা ও দীর্ঘ তাপপ্রবাহে এক দিকে এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চলের হিমবাহগুলো গলে যাচ্ছে, অন্য দিকে জলাশয়গুলো শুকিয়ে যাচ্ছে— যা অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের পানির নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ব্যাপক সংকট সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ডব্লিউএমও’র প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক বিবৃতিতে ডব্লিউএমওর শীর্ষ নির্বাহী কেলেস্টে সাউলো বলেন, এশিয়ার অধিকাংশ দেশের ইতিহাসে ২০২৩ সাল ছিল উষ্ণতম বছর। বিশ্বে খরা, তাপপ্রবাহ, ঝড়, বন্যার মতো যত বিপর্যয় ঘটেছে, সেসবের অধিকাংশই ঘটেছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। জলবায়ু পরিবর্তনের গভীর প্রভাব ইতোমধ্যে জনজীবন ও পরিবেশের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতিতেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধি, হিমবাহ গলে যাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই প্রভাব আরও ব্যাপক হবে।’

ডব্লিউেএমও’র তথ্য অনুয়ায়ী, তাপমাত্রা বাড়ছে সাইবেরিয়া থেকে মধ্য এশিয়া, পূর্ব চীন থেকে জাপান পর্যন্ত। জাপানের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর ছিল ২০২৩ সাল। একই সঙ্গে এ সময় প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ এশীয় অংশের তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ।

গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে এশিয়ার হিমালয় পবর্তমালা এবং এই পর্বতমালার হিন্দুকুশ ও তিব্বত রেঞ্জের ২২ টি হিমবাহের মধ্যে অন্তত ২০টির বরফের মজুত ২০২৩ সালে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি জলসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবিলা করতে হচ্ছে এশিয়াকে। ২০২৩ সালে এশিয়ায় বড় আকারের ঝড়, বন্যা ও তুমুল বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৭৯টি। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৯০ লাখ।

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোর আবহাওয়া কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং গ্রীন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাসে জোর দেওয়া হয়েছে ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনে।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আবহাওয়া কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে খানিকটা হলেও সহায়তা করবে। তবে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমণ কমানোর কোনো বিকল্প নেই। এই মুহূর্তে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমণ হ্রাস কেবল একটি বিকল্প নয়, বরং জরুরি কর্তব্য।’


আরও খবর



শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন জীবন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। ইতিহাসের এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। দিবসটি উপলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বিপথগামী একদল সেনা কর্মকর্তা নির্মম বুলেটের আঘাতে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এসময় বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতক গোষ্ঠী।

বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অন্ধকার। ঠিক তেমনি এক ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয় জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বকে ভয় পায় ঘাতক গোষ্ঠী। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।

সেদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় আকাশে যখন শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি দেখা যায় তখন সব নিয়ন্ত্রণ আর অনুরোধ আবেদন অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ বিমান বন্দরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বিমানটি অবতরণ করে। জনতা একেবারেই বিমানের কাছে চলে যায়। বহু চেষ্টার পর জনতার স্রোতকে কিছুটা সরিয়ে ট্রাকটি ককপিটের দরজার একেবারে সামনে নেওয়া হয়। এসময় শেখ হাসিনা ভেতর থেকে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন।

বেলা ৪টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা বিমান থেকে সিঁড়ি দিয়ে ট্রাকে নেমে আসেন। কুর্মিটোলা থেকে শেখ হাসিনার শেরেবাংলা নগরে এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এসময় ঝড় বৃষ্টিতে নগরজীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তাঘাট, স্বাভাবিক জীবন যখন ব্যাহত তখন সেখানে অপেক্ষায় কয়েক লাখ মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দ অশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।

তিনি আরও বলেছিলেন, আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ১৯৭৫র ১৫ আগস্টের পর যখন ঘাতক গোষ্ঠী প্রিয় মাতৃভূমিকে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলেছিল জাতীয় জীবন, তখন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল শ্রাবণের বারিধারার মতো পাহাড় সমান বাঁধা জয়ের অনন্ত অনুপ্রেরণা। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অশ্রু-বারিসিক্ত জন্মভূমিতে সঙ্কটজয়ের বীজ রোপিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রদীপ্ত অগ্নিশপথের রৌদ্রালোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল বাঙালি জাতি।

ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক শাসক ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনও কিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি একবিন্দু। শত প্রতিকূলতাতেও হতোদ্যম হননি কখনও। বাংলার মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বারবার স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন। আবির্ভূত হয়েছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা রূপে।

আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর দীর্ঘ ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দূরদর্শী নেতৃত্বে একসময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতো সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তালাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

আজ ১৭ মে সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময়, বিকেল সাড়ে ৩টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় জাতীয় নেতা ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য রাখবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

এছাড়া মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।


আরও খবর



নিউইয়র্কে বন্দুকধারীদের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের বাফেলোতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

নিহতদের পরিচয় এখনো জানা যানা যায়নি। এছাড়াও কী কারণে তাদেরকে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হলো সে সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।

প্রশাসনের বরাত দিয়ে মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, হান্ড্রেট জেনার স্ট্রিটে দুই ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে এমন খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পরে তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। এই ঘটনায় গোটা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বাফেলো পুলিশ বলছে, হামলাকারীকে ধরতে অভিযান চলছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।


আরও খবর



জাতিসংঘে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব গৃহীত

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার (২ মে) বাংলাদেশ উত্থাপিত শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।

এ সময় তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে লাভজনক করে তুলতে হবে।

যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত। বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা এবং পরাধীনতা আমাদের একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।

১১২টি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুল্যুশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহন করে।

রেজ্যুলেশনটির বিবেচনার পূর্বে শান্তির সংস্কৃতির ওপর সাধারণ পরিষদে বহু সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে। এ সময় তারা জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদের সরকারের সময় ১৯৯৯ সালে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে।

এছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।


আরও খবর



আগামীকাল থেকে ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন বৃদ্ধি, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য আগামীকাল (২০ মে) থেকে ২৩ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরণের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে।

সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ এর ধারা ৩ এর উপধারা ২ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ২৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখে এ নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ ৬৫ দিন দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সকল প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে যে কোন প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ সময় সমুদ্রযাত্রার প্রবেশপথগুলোতে মনিটরিং জোরদার করা হবে এবং মৎস্য নৌযানের সমুদ্রযাত্রা শতভাগ বন্ধ রাখা হবে।   সামুদ্রিক মৎস্য পরিবহন বন্ধের লক্ষ্যে সমুদ্র তীরবর্তী বরফকলসমূহ সীমিত পর্যায়ে চালু রাখা হবে ও সমুদ্রে মৎস্য আহরণকারী নৌযান নোঙ্গরস্থলে আবদ্ধ রাখা হবে।

মৎস্য আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের আপদকালীন বিকল্প আয় বা খাদ্য সহায়তা হিসেবে দুই কিস্তিতে ৬৫ দিনের জন্য ৮৬ কেজি হারে ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৬২টি জেলে পরিবারকে ভিজিএফ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সমুদ্রে কোন প্রকার নৌযান দিয়ে অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশ নৌ পুলিশ এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতা চেয়ে যথাক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগে ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চিঠি দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত সচেতনাতামূলক বিশেষ বার্তা টিভি স্ক্রলে ও বেতারে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মৎস্য অধিদপ্তর কন্ট্রোল রুম চালু করেছে এবং বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে তিনটি বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করেছে। স্থানীয়ভাবে ব্যানার, লিফলেট, পোস্টার, মাইকিং ও সচেতনতামূলক সভা করে জেলেদের মাঝে প্রচার কার্যক্রম চালানো হয়েছে।  স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী সমিতি ও সংগঠনকে এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।


আরও খবর