আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

শেখ হাসিনা: বিশ্ব নেতৃত্বে এক অনবদ্য অনুপ্রেরণা

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
শ ম রেজাউল করিম

Image

বর্তমান বিশ্বে সৎ, সাহসী, দৃঢ়চেতা, আত্মবিশ্বাসী, পরিশ্রমী ও অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা কে? এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা বোধ করি আজ আর কোনো জটিল বিষয় নয়। সম্ভবত এর বিকল্প কোনো উত্তরও নেই। এ প্রশ্নের একমাত্র উত্তর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত ও আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরি, একটানা তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই অকাট্য স্বীকারোক্তি আজ শুধু বাংলাদেশিদেরই নয় বরং বিশ্ব নেতৃত্বই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিনিয়ত অভিহিত করছেন প্রশংসাসূচক নানা অভিধায়। একনিষ্ঠ দেশপ্রেমের আভিজাত্যে, রাজনৈতিক সৌকর্যে, রাষ্ট্র পরিচালনার মুন্সিয়ানায়, বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার দূরদর্শিতায়, মানবিক ঔদার্যে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন বারবার। তিনি একজন সফল রাষ্ট্র নায়ক, একজন সফল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক বিশ্ব নেতা।

গত ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর তাঁর অর্জনে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যগাথার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন বিশ্বের প্রভাবশালী দেশের সরকার প্রধান এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা প্রধানরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিকাল নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে বিশ্বে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় অবস্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে সে কথাগুলোও বিশ্ব নেতারা স্মরণ করেছেন অকপটে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সফরটি অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলেও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা অভিমত দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, আপনি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি এও বলেছেন, আমি আপনাকে অনেক বছর ধরে অনুসরণ করছি। আপনি একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী তাঁর (শেখ হাসিনা) বড় ভক্ত। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাঁর মেয়েরা শেখ হাসিনার মতো মহান নেতা হবেন এই কামনা করেছেন এবং এও বলেছেন, আপনি আমার দুই মেয়ের জন্য মহান অনুপ্রেরণা।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, ভূমিহীন ও গৃহহীন বাংলাদেশের জনগণকে সরকারি খরচে বাড়ি দেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তাঁর গৌরবময় ভূমিকার প্রশংসা করেন। করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে ৬ শতাংশের অধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে ঋষি সুনাক আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুন >> শেখ হাসিনা ও ঋষি সুনাকের প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বর্ণনা করেন। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে যেমন অনুপ্রেরণা বলছেন, ২০২১ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ সফরে এসে নেপালের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছিলেন, আপনি বিশ্বের দারুণ এক অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা। আমি আপনার অনুরাগী।

অপরদিকে বিশ্বের অন্যতম ক্যারিশমাটিক নেতা শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফর দুই দেশের সম্পর্ক আরো উচ্চপর্যায়ে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করেছে। জেগেছে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও। বাংলাদেশে জাপানের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের বিনিয়োগসহ এই সফরে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক দুই দেশের অংশীদারিত্বে নবযুগের সূচনা করতে যাচ্ছে। অতীতের যে কোনো সফরের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফর বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

৩০ বিলিয়ন ইয়েনের বাজেট সহায়তা ছাড়াও কৃষি, তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তাসহ আটটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর হয়েছে জাপান সরকারের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত পনেরো বছরের ধারাবাহিক শাসনামলে জাপানি বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল দেশ এবং একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

জাপান সফর শেষে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাসের বিশেষ আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। ২০১২ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঋণ নিয়ে ভিত্তিহীন ও কথিত অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের বড় ধরনের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। আত্মমর্যাদার প্রশ্নে দৃঢ়চেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঋণ প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়। সৎ, সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করেন পদ্মা সেতু।

এ যেন বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক। একইসাথে বাংলাদেশের সাথে করা অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ। তাই বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতুর ছবি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টেকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার ছবিটি ভিন্ন মাত্রা পায়। রাতারাতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায় বাংলাদেশের মাথা না নোয়ানোর প্রতীক বনে যাওয়া এ ছবিটি। তবে বাংলাদেশকে দেওয়া বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তার অঙ্গীকার এ বছর ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি। এখন বিশ্বব্যাংক মনে করে পৃথিবীর অনেক দেশই দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করতে পারে।

অতিসম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এবং বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও করপোরেট সেক্রেটারি মার্সি টেমবন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নকেও অনুকরণীয় বলে অভিবাদন জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের এই দুই শীর্ষ কর্তা। তারা উভয়েই নিজ টুইট বার্তায় বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যের গল্প তুলে ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিজের হাস্যোজ্জ্বল একটি ছবি টুইট করেছেন। নিজের টুইট বার্তায় টেমবন লিখেছেন, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই বিশ্বের অন্যতম সেরা উন্নয়নমূলক দেশ হিসেবে সাফল্যের গল্প তৈরি করেছে। দেশটির অনেক ভালো উদাহরণ রয়েছে, যা ব্যাপকভাবে অনুকরণ করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন>> নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে কমনওয়েলথের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস তার টুইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে প্রদর্শনী উদ্বোধনের ছবি টুইট করে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও বাংলাদেশের সাথে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের অংশীদারিত্বের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করতে পেরে আনন্দিত। দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী পদ্ধতি থেকে অনেক দেশ শিক্ষা নিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরকালে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, সকল বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন। বাংলাদেশ বিশ্বে একটি রোল মডেল। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জন করেছে। হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব কোভিড-১৯-এর পরও বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল রেখেছে। ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সুসংযোগ স্থাপন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বিশ্ব নেতৃত্ব যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়নের প্রশংসা করছেন সে বিষয়ে আরেকটি উদাহরণ না দিলেই নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছরের মাইলফলক পালন উপলক্ষ্যে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লিখেছিলেন, বর্তমানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে বাংলাদেশিদের কর্মশক্তি, উর্বর মস্তিষ্ক ও উদ্ভাবন অবশিষ্ট বিশ্বের কাছে একটি মডেল হিসেবে কাজ করে।

ওই চিঠিতে তিনি আরো লেখেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমাদের অংশীদারিত্ব আগামী ৫০ বছর এবং তার পরও বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে একই চিঠিতে বাইডেন লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে সহমর্মিতা ও মহানুভবতা প্রকাশের উদাহরণ তৈরি করেছেন।

একজন দূরদর্শী রাজনীতিক শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে কোথায় পৌঁছে দিয়েছেন তা পাকিস্তানের সাথে তুলনা করলে সহজেই অনুমান করা যায়। পকিস্তানের বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনীতির নানা সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের কাছে অনুকরণীয়।

মাথাপিছু আয়, রপ্তানি আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে। পাঁচ বছর আগেই মাথাপিছু আয়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। রপ্তানি আয় পাকিস্তানের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি। রিজার্ভ পৌনে ছয় গুণ বেশি। পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতিও বাংলাদেশের কয়েকগুণ। পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ হতে চায়। এটিই ক্যারিশম্যাটিক লিডার শেখ হাসিনার অনবদ্য সাফল্য।

স্বাধীনতার পর ৫২ বছরের পথচলায় গত একযুগে বাংলাদেশ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে। এ সময়ে দেশ পরিচালনা করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যার দূরদর্শী রাষ্ট্রপরিচালনায় বাংলাদেশ আজ বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে রোল মডেল। বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি, যার মাথাপিছু জিডিপি তার আঞ্চলিক প্রতিবেশীর চেয়ে অনেক বেশি।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৯ বিলিয়ন থেকে ৪৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, গড় আয়ু ৪৭ বছর থেকে বেড়েছে ৭৩ বছরে এবং সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন, দারিদ্র্য হ্রাস, উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা-নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ প্রশমনসহ আর্থ-সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে ধরনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে এবং বিভিন্নভাবে এই অঞ্চলে বাংলাদেশ একটা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও বিশ্ব নেতৃত্বের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর অত্যন্ত গুরুত্ববহ। এ সফর থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুপ্রেরণাদায়ী, অনুসরণীয় বিশ্ব নেতা হিসেবে নতুন করে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছেন, আলোচিত হয়েছেন। একইসাথে বাংলাদেশে এবং বিশ্বপরিমন্ডলে তাঁর অনিবার্যতা প্রমাণিত হয়েছে আরেকবার।

লেখক: মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সূত্র: জাগো নিউজ


আরও খবর



টিপু-প্রীতি হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ, আদেশ ২৯ এপ্রিল

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য ধার্য ছিল। এদিন ২৬ আসামির পক্ষে অব্যাহতি ও ১৯ আসামির জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য ২৯ এপ্রিল ধার্য করেন।

এর আগে গত বছরের ৫ জুন শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এ চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। প্রতিবেদনে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরে ২০ জুন এ মামলায় বিদেশে পলাতক দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত।

চার্জশিটভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার,ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ঘাতক সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, কিলার নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক আদালতে সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন।


আরও খবর



টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে আগের দুই ম্যাচে স্বাগতিক বোলারদের দাপটে দাঁড়াতেই পারেনি সিকান্দার রাজারা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুটিতে জিতে ২০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে টিম টাইগার্স। আজ তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল।

টস জিতে বাংলাদেশকে শুরুতে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই টস জিতেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আজ ভাগ্য সহায় হয়নি। তবে আগে ব্যাটিং পাওয়ায় ব্যাটাররা নিজেদের সামর্থ্য যাচাইয়ের সুযোগও পাচ্ছেন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়েছে বিকেল ৩টায়। আগের দুই ম্যাচে বৃষ্টির বাগড়া থাকলেও আজ এখন পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কারই আছে।

দুই ম্যাচ হাতে রেখে আজই সিরিজ নিশ্চিত করার লক্ষ্য বাংলাদেশের। অন্যদিকে, সিরিজ বাঁচাতে জয়ের বিকল্প নেই ব্যাকফুটে থাকা জিম্বাবুয়ের। দুই দলের একাদশেই আছে দুটি করে পরিবর্তন।

শরিফুল ইসলাম ও শেখ মেহেদীর জায়গায় স্বাগতিক দলে ফিরেছেন তানজিম হাসান সাকিব ও তানভীর ইসলাম। জিম্বাবুয়ে দলেও আছে দুটি পরিবর্তন। দলে ঢুকেছেন বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা এবং ফারাজ করিম। বাদ পড়েছেন রিচার্ড এনগারাভা ও এইনস্লে এনদোলভু।

বাংলাদেশ একাদশ

নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী (উইকেটকিপার), তানভির ইসলাম, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

জিম্বাবুয়ে একাদশ

জয়লর্ড গাম্বি (উইকেটকিপার), ক্রেগ আরভিন, ব্রায়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ক্লাইভ মাদান্দে, জোনাথন ক্যাম্পবেল, রায়ান বার্ল, লুক জঙ্গুয়ে, ফারাজ আকরাম, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।


আরও খবর



ডিমের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

এক যুগের বেশি সময় ধরে মুরগির ডিম উৎপাদন করছেন ঢাকার ধামরাই এলাকার বাসিন্দা সুলতান উদ্দিন। তার খামারে মুরগির সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে একেকটি মুরগির পেছনে দৈনিক ৭ থেকে সাড়ে ৮ টাকা ব্যয় হয় তার। তবে ডিমপ্রতি ১ টাকা লাভ ধরে খামারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯ টাকা দরে। যা বাজারে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকায়।

সংশ্লিষ্ট তথ্য বলছে, দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় চার কোটি। যার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাড়ে চার কোটি ডিম। তবে খামারিরা ১ টাকা লাভে সাড়ে ৯ টাকা দরে ডিম বিক্রি করলেও রাজধানীর বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকা দরে। বাড়তি এই ৩ টাকা যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।

সুলতান উদ্দিন বলেন, আমরা যারা উৎপাদন করি, তারা আসলে ন্যায্যমূল্য পাই না। আবার যারা ক্রেতা, সাধারণ মানুষ তারাও কিন্তু চড়া মূল্যেই ডিম কিনে। মাঝখানে যারা ব্যবসায়ী তারাই এতে লাভবান হচ্ছে।

গেলো বছর লাগামহীন পণ্যমূল্যের আলোচনায় বাড়তি অস্বস্তি যোগ হয় মুরগির ডিমের দামের ঊর্ধ্বগতিতে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডিম আমদানির ঘোষণা দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বাজারে আসে প্রায় ৬২ হাজার ভারতীয় ডিম। তবুও গেলো কয়েক মাসে ডিমের দামের সূচক উঠানামা করে ঠিকই। এরমধ্যেই সপ্তাহখানেক আগে থেকে নতুন করে ভোক্তাদের মধ্যে দাম নিয়ে অস্বস্তি শুরু হয়েছে। কারণ, খোলাবাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

এক ক্রেতা বলেন, আমাদের দেশে তো অনেক ফার্ম আছে। তারা যদি ডিম সরবরাহ করে তাহলে তো এমনিতেই ডিমের দাম কম থাকা উচিত। অপরজন বলেন, বর্তমান সময়ে কৃষক দাম পাচ্ছে না, মধ্যস্বত্বভোগীরা দাম পাচ্ছে- এমন ঘটনাই ঘটছে। ক্ষুব্ধ আরেক ক্রেতা বলেন, সরকার তো কোনো পদক্ষেপই নেয় না। ফলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মরছে।

এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিমের চাহিদার তুলনায় যোগান কম। আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের কৃত্রিম কারসাজিও রয়েছে। তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আমানত উল্লাহ বলেন, খামারি কত পাবে, আমরা আড়তদাররা কততে নিয়ে আসবো, যারা ক্রেতা তারা কততে ডিম নিতে পারবে- এসবের জন্য একটা সিস্টেম করা উচিত। প্রকৃতপক্ষে কিন্তু এরকম কোনো প্রক্রিয়া নেই। দেশের বাজারে চাহিদা নেই, বাজার কমছে, খামারি লোকসান গুনছে।


আরও খবর



জয়পুরহাটে হত্যার ২১ বছর পর ১৯ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হরেন্দা গ্রামের আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ২১ বছর পর রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে মামলার ১৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।

একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জজকোর্টের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) উদয় সিংহ রায়।

তিনি বলেন, পাঁচবিবি উপজেলার আব্দুর রহমান হত্যা মামলার রায়ে ১৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।


আরও খবর



চোখ রাঙাচ্ছে ফ্লু ভাইরাস, রূপ নিতে পারে মহামারীতে

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
স্বাস্থ্য ডেস্ক

Image

অদূর ভবিষ্যতে মহামারীতে রূপ নিতে পারে ফ্লু ভাইরাস, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হতে যাওয়া একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী, অভিজ্ঞ রোগ বিশেষজ্ঞদের প্রায় ৫৭ শতাংশই মনে করছেন ফ্লু ভাইরাসের একটি স্ট্রেইন আগামীতে বিশ্বজুড়ে মহামারীর কারণ হতে পারে।

কলোগনি ইউনিভার্সিটির সালম্যানটন গার্সিয়া দীর্ঘ সময় ধরে তার করা সমীক্ষায় দেখান যে ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিনিয়ত বিবর্তিত হচ্ছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ভাইরাসের ধরনে নানা পরিবর্তন আসছে।

তিনি বলেন, প্রতি শীতেই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ দেখা দেয়। এটাকে ছোটখাটো মহামারীই বলা চলে। ইনফ্লুয়েঞ্জা কম-বেশি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়, কারণ বেশিরভাগ ধরন তুলনামূলক কম ক্ষতিকারক। তবে আগামীতেও যে এটি এমনই থাকবে তা তো নিশ্চিত নয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ফ্লুর পরে বড় মহামারীটি ডিজিজ এক্স নামক ভাইরাস থেকে আসতে পারে। তবে ভাইরাসটি বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও অজানা। গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২১ শতাংশ বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন পরবর্তী মহামারী একটি নতুন অণুজীবের কারণে ঘটবে, যা এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। এটা সেভাবেই পৃথিবীকে আক্রমণ করবে, যেভাবে হুট করেই ঠিক সার্স-কোভ-২ ভাইরাস ২০১৯ সালে আক্রমণ করেছিল।

অন্যদিকে, প্রায় ১৫ শতাংশ বিজ্ঞানী মনে করেন কোভিড-১৯ ভাইরাসই এখন পর্যন্ত আগামী মহামারীর হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে।

গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইনফ্লুয়েঞ্জার এইচফাইভএনওয়ান (H5N1) স্ট্রেইনের উদ্বেগজনক বিস্তার সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ এভিয়ান ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছে। ২০২০ সালে শুরু হওয়া এ প্রাদুর্ভাবে এরই মধ্যে লাখ লাখ হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে এবং লাখ লাখ বন্যপাখি নিশ্চিহ্ন হয়েছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি রাজ্যে ভাইরাসটি স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে, যার মধ্যে গৃহপালিত গবাদিপশুও রয়েছে। এটি মানুষকেও আক্রান্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

হ্যাটফিল্ডের রয়্যাল ভেটেরিনারি কলেজের ড্যানিয়েল গোল্ডহিল গত সপ্তাহে নেচার জার্নালে বলেন, ভাইরাসটি যত বেশি স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতিকে সংক্রমিত করে, ততই এটি মানুষের জন্য বিপজ্জনক স্ট্রেইনে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়।’

গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট এড হাচিনসন বলেন, এইচফাইভএনওয়ান ভাইরাসের উপস্থিতি বিস্ময়কর ছিল। এর আগে প্রাণীদের মধ্যে শূকর এতে আক্রান্ত হলেও গবাদিপশুর ওপর এভিয়ান ফ্লুর আক্রমণ একেবারেই নতুন ছিল। তারা এ রোগের নিজস্ব স্ট্রেইনে আক্রান্ত হয়েছিল। তাই গরুতে এইচফাইভএনওয়ানের উপস্থিতি একটি বিরাট ধাক্কা হিসেবে এসেছে।’

এর মানে হলো- ভাইরাসটি আরও বেশিসংখ্যক খামারের প্রাণীতে এবং তারপর খামারের প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে প্রবেশের ঝুঁকি বেড়েছে। ভাইরাসটি যত বেশি ছড়াবে, ততই এটির পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ফলে এটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তবে এইচফাইভএনওয়ান মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কিন্তু যদি ছড়িয়ে পড়ে তাহলে এর প্রভাব মারাত্মক হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ দুই দশকে শত শত ক্ষেত্রে মানুষ প্রাণীদের সংস্পর্শে এসে এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী জেরেমি ফারার বলেছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক বেশি, কারণ মানুষের এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার প্রাকৃতিক ক্ষমতা নেই।


আরও খবর