আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

সাইবার জগতে তিন ব্যক্তির দেশবিরোধী প্রচারণা

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া ব্যক্তিদের পক্ষ নেওয়া তিন ব্যক্তি এখন দেশের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। এরা হচ্ছেন আবু রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী সুয়েব, পিনাকী ভট্টাচার্য ও তাজ হাশমী।

তাদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে গোয়েন্দা সংস্থার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কুরুচিপূর্ণ গুজব ছড়ানো, মিথ্যাচার করা এদের পেশা ও নেশা। এরা বিদেশের মাটিতে বসে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার করছে। তারা শুধু প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু পরিবার, বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা রাজনৈতিক দলের সমালোচনাই নয়, সনাতন হিন্দু ধর্ম থেকে শুরু করে ইসলাম ধর্ম, কোরআন, আল্লাহ কোনো কিছুরই সমালোচনা বাদ দিচ্ছেন না।

এদের বিষয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করা, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা, যুদ্ধাপরাধী অপশক্তি এবং জঙ্গিবাদের পক্ষে জনসর্থন আদায় করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এদের কেউ কেউ আইএস এবং হিযবুত তাহরীরের সঙ্গেও সম্পৃক্ত বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। জামায়াতে ইসলামী ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বলেও এদের কাউকে কাউকে সন্দেহ করা হয়।

রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী সুয়েব

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাঠলী ইউনিয়নের পাটলী গ্রামের বাসিন্দা রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী ওরফে সুয়েব। তিনি একসময় চ্যানেল আইয়ের লন্ডনে অবস্থিত ইউরোপ অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে চ্যানেল আই থেকে বাদ পড়েন বলে অভিযোগ আছে।

এ বিষয়ে চ্যানেল আইয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মূলত আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেওয়া, অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় চ্যালেন আইয়ের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দেশে থাকার সময় বিয়ানীবাজারের ডা. আনোয়ারা আলী নামে একজন নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেন সুয়েব। পরে লন্ডনে গিয়ে নিজ অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে বিয়ে করেন। ব্যক্তিগতভাবে বিশৃঙ্খল স্বভাব ও স্ত্রীকে নির্যাতন করায় দ্বিতীয় স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব নিয়েছেন সুয়েব। তিনি বর্তমানে চ্যানেল ইউরোপ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালান। তার কাজ মূলত বাংলাদেশ সরকার, বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া।

স্ট্রেইট ডায়ালগ নামে একটি অনলাইন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুয়েব। তিনি কানাডার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ নাগরিক টিভিতে বিশ্লেষক হিসেবেও উপস্থিত হন। সরকার, প্রধানমন্ত্রী, শিল্পপতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিষোদগার ও গুজব ছড়ানোই তার কাজ। তিনি যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, এস আলম গ্রুপ, এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রমুখ।

সুয়েব কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। এর আগে তার প্রথম স্ত্রী ডা. আনোয়ারা আলী মেয়র পদে নির্বাচন করেন। সুয়েবের স্ট্রেইট ডায়ালগ নামক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নেন বিতর্কিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন, এম রহমান মাসুম, টিটো রহমান, নাজমুস সাকিবসহ চিহ্নিত সাইবার অপরাধীরা।

সুয়েব সম্পর্কে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের একজন সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, সুয়েবের কাছে কেউ ভালো নন। তার কাছে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান কেউ ভালো নন। সুয়েব কখন কী বলেন আর কী করেন তা নিজেও জানেন না। ফেসবুক-ইউটিউবে সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে প্রতিনিয়ত কথা বলে যান। চ্যানেল আইয়ের ইউরোপ অফিসে সুয়েব কাজ করতেন ছোট্ট একটি কক্ষে। সেখানে টক শোর নামে বিভিন্নজনকে ডেকে নিয়ে অর্থ আদায় ও নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতেন সুয়েব।

পিনাকী ভট্টাচার্য

বগুড়া জিলা স্কুলের প্রয়াত শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামল ভট্টাচার্যের বড় ছেলে ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য। মায়ের নাম সুপ্রীতি ভট্টাচার্য। তার ভাই অপূর্ব ভট্টাচার্য ঢাকায় থাকেন এবং বোন বুলবুল ভট্টাচার্য থাকেন বগুড়ায়। পিনাকী সনাতন ধর্ম, দেশের প্রচলিত রাজনীতি, ধর্মীয় সম্প্রীতির বিপক্ষে কথা বলায় বাবা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া এই ব্যক্তি ২০২০ সালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার আগে তিনি নিজেই গুম হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়ান।

পিনাকী ভট্টাচার্য ধর্মীয় উসকানি ছড়াতে ইউটিউবে তার নিজ চ্যানেলে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিধান নিয়ে কট্টর সমালোচনা করেন। গো-হত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদ্রুপ করেছেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি আইনের সমালোচনার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় নিয়ে বিদ্রুপ করে আদালত অবমাননা করে চলেছেন। পিনাকী ভট্টাচার্য মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উদযাপন বর্জনের ডাক দিয়েছেন।

পিনাকী ২০১৮ সালে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের কঠোর সমালোচনা করেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে গুজব ছড়িয়ে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের উসকানি দিয়ে তাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে দেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে তলব করে। এর পরই তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে চলে যান। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি অবস্থায় তিনি গোপনে সীমান্ত পার হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকক যান এবং সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে ফ্রান্সে পালিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। বর্তমানে ফ্রান্সে বসে তিনি ধর্ম, দেশের কৃষ্টি-কালচার, সরকার, সেনাবাহিনী, বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতের মতো বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিজের লেখা ভগবানের সহিত কথোপকথন সিরিজে সৃষ্টিকর্তাকে নিয়েও রসিকতা করেন পিনাকী। এ ছাড়া ব্লগার আসিফকে কোপানো ও অভিজিৎ রায়কে হত্যার পক্ষে কথিত যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

মুক্তমনা ব্লগে পিনাকী ভট্টাচার্যকে নিয়ে একজন ব্লগার লেখেন, পিনাকী ভট্টাচার্য, আপনি যে কোনো বৈধ রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী হতেই পারেন। সেটি আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেটি নিয়ে আমার কোনো ধরনের বক্তব্য নেই। আপনি দ্বিমুখী চরিত্র এ কারণে, আপনি জন্মসূত্রে হিন্দু, নিজেই বলেন আপনি একজন অজ্ঞেয়বাদী (অজ্ঞেয়বাদ হচ্ছে একটি মতবাদ অথবা কতিপয় যুক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি ধারণা, এটি কোনো ধর্ম নয়, যদিও এটি ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না আবার স্বীকারও করে না)। আপনি ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেননি, কিন্তু দাড়ি রাখেন, টুপি ও পাঞ্জাবি পরেন, মাদরাসা শিক্ষা যে খুবই উঁচু মানের শিক্ষা তা প্রমাণ করতে রাজা রামমোহন রায়ের উদাহরণ টানেন। কিন্তু নিজের ছেলে-মেয়ে, আত্মীয় কাউকে মাদরাসায় পড়ান না, ইসলামিক শিক্ষা এত ভালো হওয়া সত্ত্বেও আপনি নিজে ও আপনার পরিবারের কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি। এই দিকে বিবাহ নামক ধর্মীয় আচার না মেনে ওপেন রিলেশনশিপে আছেন, যেটা অবশ্য একজন অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে আপনি করতেই পারেন, কিন্তু সেই আপনি ইসলামিক রীতির প্রশংসা করেন অথচ নিজের জীবনে তার কোনো প্রয়োগ নেই!

উইমেন চ্যাপ্টার নামে একটি ওয়েবসাইটে লেখক শেখ তাসলিমা মুন লিখেছেন, পিনাকী বুঝতে পেরেছেন এ অঞ্চলে মৌলবাদই একটি উদীয়মান শক্তি। পিনাকী অ্যানালাইসিস করে দেখেছেন, এদের ক্ষমতা ও শক্তি বাংলাদেশের যে কোনো সরকারের চেয়ে শক্তিশালী। সরকার যাবে, সরকার বদলাবে, কিন্তু এদের ক্ষমতা কেবল বাড়তেই থাকবে এবং এটাই তার সব সাহসের মূল উৎস। পিনাকী আমাদের কাছে অসৎ, অসাধু এবং একটি ভয়ংকর সন্ত্রাসের নাম। তিনি এমন একটি গ্রুপকে উপজীব্য করে বলয় গড়ে তুলেছেন, যা দেশের মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। আর পিনাকী, আপনাকে বলব, সব খেলার শেষ আছে। গেম ওভার আছে। আমরাও আপনাদের দেখছি আগ্রহ নিয়ে। মনে রাখবেন, কেউই দিন শেষে বিবেক ও বিচারের ঊর্ধ্বে নয়।

বিশ্লেষকদের মতে, পিনাকী ভট্টাচার্য হিন্দু নাম ব্যবহার করে হিযবুত তাহরীর, আল-কায়েদা ও আইএসআইএসের মতো উগ্রবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের অপচেষ্টা করছেন। এটি উগ্রবাদীদের একটি অপকৌশল মাত্র। তিনি যেসব বক্তব্য প্রচার করেন, বাস্তব জীবনে এর কোনো প্রতিফলন নেই।

তাজ হাশমী

তাজ হাশমী থাকেন কানাডার মন্ট্রিল শহরে। নিজেই দাবি করেন তার জন্ম হয়েছে ভারতের আসামে। তিনি সিরাজগঞ্জ বিএল কলেজ থেকে ম্যাট্রিক পাস করে পরে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি নেওয়ার দাবিদার তাজ হাশমী এখন ফেসবুক-ইউটিউবভিত্তিক বিভিন্ন চ্যানেলের  বিশ্লেষক। ধর্মীয় উসকানি ছড়ানো, দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে সদা তৎপর এই ব্যক্তি। অনেকে তাকে পাকিস্তানের এজেন্ট বা পাকি দালাল হিসেবেও অভিহিত করেন। স্বাধীনতার আগেই তিনি চলে যান পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে। দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী তাজ হাশমী কানাডায় বসে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সালাফি মতাদর্শের সমর্থক তাজ হাশমী দেশে জঙ্গিবাদ ও আইএসআইএসের মতাদর্শ প্রসারের জন্য এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি আফগান উগ্রবাদী জামাল আল-দীন আফগানির বিভিন্ন বক্তব্য উদ্ধৃত করে ফেসবুকে লিখে জঙ্গিবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। তাজ হাশমীর বিকৃত মানসিকতা ও ধর্মীয় উসকানির প্রমাণ মেলে তার নিজ ফেসবুকে দেওয়া কয়েকটি উদ্ধৃতি দেখলেই। তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া মুফতি কাজী ইবরাহিমকে নিজের ফেসবুক পেজে কৌতুক অভিনেতা বলে বিদ্রুপ করেন।

তাজ হাশমী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতাকে বেহুদা বক্তব্য বলে মন্তব্য করে বিষোদগার ছড়ান। ৪ জুলাই নিজ ফেসবুক পেজে তিনি তথাকথিত যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনাল নিয়ে কিছু পুরনো কথা শিরোনামে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিষোদগার ছড়ান। ১ জুলাই গণজাগরণ মঞ্চের সমালোচনা করে তিনি লেখেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও কাদের মোল্লার মতো নিরীহ মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ৭ মে তার ফেসবুক পেজে লেখেন, দেশের নামাজি ও রোজাদারদের ৯০% পাকা চোর। ৪ মে লেখেন, ২০১৩-এর ৫/৬ মে রাতের আঁধারে হেফাজতের ৩০০ কর্মীকে (সরকার) গায়েব করেছিল। তেঁতুল হুজুর (আল্লামা আহমদ শফীকে কটাক্ষ করে) টাকা খেয়ে, আর জাতি কিছু না খেয়েই ভুলে গেল! ১৭ এপ্রিল তিনি সাধারণ মানুষকে উসকানি দিতে লেখেন, নারীবিদ্বেষ, সৌদি রাজবংশ, হাসিনা সরকার ও ভারতবন্ধু ভালো মানুষ হতে পারে না।

এগুলো তাজ হাশমীর ধর্মীয় উসকানি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর নমুনা মাত্র। তিনি খোলা চিঠি লেখার নামে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিতর্কিত ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করেছেন। তাজ হাশমী কানাডায় অবস্থানকারী টিটো রহমান ও নাজমুস সাকিবের সঙ্গে ইউটিউব চ্যানেল নাগরিক টিভিতে বিশ্লেষণে অংশ নেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু পরিবার, দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, শিল্পগ্রুপসহ বিভিন্নজনের নামে অশালীন, মিথ্যা ও আজগুবি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছায় পালিয়ে যাওয়া কয়েকজন ব্যক্তি ও ইউটিউবার ফেসবুকে তার সঙ্গে নিয়মিত টকশোতে অংশ নেন।

তাজ হাশমীর বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মূলত ধর্মীয় উসকানি ছড়ানো এবং উগ্রবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন তাজ হাশমী।


আরও খবর



শিল্পী সমিতির নির্বাচন বাতিল চেয়ে নিপুণের রিট

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (২০২৪-২৬) মেয়াদি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে নতুন নির্বাচন দাবি করে রিট করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তার। বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে নিপুণের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় এ রিট আবেদন করেন।

রিটে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল ঘোষণা হয় শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে। ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। এতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন জনপ্রিয় অভিনেতা এবং বিগত দুই মেয়াদের সফল সভাপতি মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন চলচ্চিত্রের মুভি লর্ড ও দানবীর খ্যাত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

নির্বাচনে সভাপতি মিশা সওদাগর মোট ভোট পান ২৬৫টি। অন্যদিকে মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ডিপজল পান ২২৫ ভোট। ১৭ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হন নিপুণ আক্তার (২০৯)। সহ-সভাপতি পদে ২৩১ ও ২৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয় মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব। এছাড়াও সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান ২৩৭, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ২৫৫, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো ২৯৬, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর ২৪৫, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ২৩৫ এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল ২৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়।

কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয় ৯ জন। তারা হলেন সুচরিতা (২২৮), রোজিনা (২৪৩), আলীরাজ (২৩৯), সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন (২১৮), শাহনূর (২৪৫), নানা শাহ (২১০), রত্না কবির (২৬৩) ও চুন্নু (২৪৮)। কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি (২২০) ও সনি রহমান (২৩০)।


আরও খবর



ভারতে পাচার হচ্ছে রাজধানীর নিম্নবিত্ত মানুষের কিডনি (ভিডিও)

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

কিডনি কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত আন্তঃদেশীয় দালালচক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। শনিবার (১১ মে) রাজধানী ধানমন্ডি ২/এ রোডের ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রবিবার (১২ মে) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ক্রাইম এবং অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তাররা হলেন- রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও আতাউর হোসেন বাপ্পী (২৮)।

রবিন খান নামে এক ভুক্তভোগীর দেওয়া এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে মিরপুর-১০ নম্বরের শাহ আলী মার্কেটের পেছনে বসে এক বন্ধুর সঙ্গে চা খেতে খেতে সাংসারিক অভাব-অনটন নিয়ে কথা বলছিলেন তিনি। তাদের পাশে বসে থাকা মাছুম এসব কথা শুনে জানান, তিনি সাহায্য করতে পারবেন। ভারতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৫ দিন রবিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রেখে তাকে ভারত যেতে রাজি করান সে।

পরবর্তীতে রবিনকে ধানমণ্ডির ল্যাবএইডে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান মাছুম। সেখানে মামলার গ্রেপ্তার হওয়া অন্য আসামি রাজু, শাহেদ ও আতাউরের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। পাসপোর্ট-ভিসা কার্যক্রম শেষে গত বছর ২২ ডিসেম্বর রবিন ইন্ডিগো এয়ারলাইনের একটি বিমানে ভারতের দিল্লি পৌঁছান। সেখনে একই চক্রের দুই সদস্য শাহীন ও মোস্তফা রবিনকে দিল্লির ফরিদাবাদে নিয়ে যান। সেখানে একটি বাসায় ২০-২৫ দিন আটকে রেখে কিডনি বিক্রির জন্য রবিনের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেন তারা।

রবিনকে তারা বোঝান, মানুষ একটি লিভার, একটি হার্ট দিয়ে বাঁচতে পারলে একইভাবে একটি কিডনি দিয়েও বাঁচতে পারে। একদিকে মানসিক চাপ, অন্যদিকে টাকা-পয়সার প্রলোভন দেখিয়ে অবশেষে এক রকমের বাধ্য করে ভারতের গুজরাটের মুক্তিনগরের একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে স্থানীয় ডাক্তারের সাহায্যে রবিনের কিডনি বিক্রি করে দেয় চক্রটি।

এর চারদিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে রবিন জানতে পারে তার কিডনি ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে চক্রটি। প্রায় অর্ধকোটি টাকায় কিডনি বিক্রি করলেও রবিনকে দেয়া হয় মাত্র ৩ লাখ টাকা। পরে দেশে ফিরে রবিন জানতে পারে, একই চক্রটি তার পরিচিত একজনকে এভাবে ফুসলিয়ে ভারত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। নিজের যে ক্ষতি হয়েছে, তা যেন অন্য কারও না হয় সেজন্য রবিন ধানমন্ডি থানায় চক্রটির বিরুদ্ধে মামলা করে।

বর্তমানে কিডনি হারিয়ে কর্মক্ষমতাহীন অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন রবিন। কিডনি অপারেশনের ফলে তার পেটে ৫ ইঞ্চি পরিমাণ একটি কাটা দাগ আছে। একটি কিডনি হারিয়ে বর্তমানে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় দিন কাটছে তার।

কালোবাজারে কিডনির দাম প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে- যখন যেমন দাম পায় তার ওপরেই ভিত্তি করে বেচাকেনা হয়। তবে বর্তমানে এক একটি কিডনির সর্বনিম্ন মূল্য ২৫ লাখ টাকা। অনেক ক্ষেত্রে প্রাপ্যতার ওপর ভিত্তি করে এ দাম ৫০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত উঠানামা করে।

কারা কিডনি পাচারের শিকার হোন এমন প্রশ্নে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষ এ চক্রটির প্রধান টার্গেট। এদের লাখখানেক টাকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ চক্রটি। এটি একটি আন্তঃদেশীয় দালালচক্র। ভারতের কলকাতা ও গুজরাটে এদের সংঘবদ্ধ সদস্যরা আছে।

কিডনি বিক্রির এ চক্রটির সঙ্গে হাসপাতালের কর্মকর্তা ও ডাক্তার জড়িত কি-না এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ চক্রের বিস্তার বহুদূর বলে জানায় পুলিশ।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানা যায়, পাচার হওয়া কিডনি ভারতীয় আইন অনুযায়ী ভারতের কোনো নাগরিককে দেওয়া হয় না। এসব কিডনি বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে চিকিৎসা নিতে যান, তাদের শরীরেই প্রতিস্থাপিত হয়।


আরও খবর



‘মানুষের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেত মিল্টন’

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জালিয়াতি ও প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে গ্রেপ্তার চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার মানুষের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেতেন বলে জানিয়েছে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। আজ রবিবার (০৫ মে) ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দার সাইকোতে (মানসিক রোগী) আক্রান্ত। তিনি কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা’ হলেন, তা বোধগম্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, মিল্টন কিন্তু স্বীকার করেছেন, তার অপারেশন থিয়েটারে ব্লেড-ছুরি আছে। এগুলো দিয়েই তিনি অপারেশন করতেন।’

ডিবির হারুন বলেন, তার স্ত্রী মিতু হালদার ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বানাতে কারা সাহায্য করতেন, তার ব্যাংক হিসাবে কারা টাকা পাঠাতেন, কীভাবে তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা’ হলেন, সবকিছুর তদন্ত করা হচ্ছে।’

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী মিঠু হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবিতে ডাকা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে যান তিনি।

এদিকে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা মামলায় রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে সেসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার আশ্রমের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে মিল্টনের স্ত্রীকে ডিবিতে ডাকা হয়েছে। তাকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।’


আরও খবর



টিপু-প্রীতি হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ, আদেশ ২৯ এপ্রিল

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য ধার্য ছিল। এদিন ২৬ আসামির পক্ষে অব্যাহতি ও ১৯ আসামির জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য ২৯ এপ্রিল ধার্য করেন।

এর আগে গত বছরের ৫ জুন শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এ চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। প্রতিবেদনে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরে ২০ জুন এ মামলায় বিদেশে পলাতক দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিকসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত।

চার্জশিটভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার,ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ঘাতক সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, কিলার নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক আদালতে সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। তারা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন।


আরও খবর



পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালংগী বিওপি (৬১ বিজিবি) থেকে আনুমানিক ১০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

বিএসএফের গুলিতে নিহত আবুল কালাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত অপির উদ্দিনের ছেলে।

বিজিবি, পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে কয়েকজন গরু পারাপারকারী রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পকেট সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান। এ সময় বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে গুরুতর আহত হলে সঙ্গীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েব সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে।’

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’

নিহতের মা মমতা বেগম বলেন, কালাম এখনও বিয়া করে নাই। এবার বিয়া করার কথা ছিল। কিন্তু কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল? আমি এ হত্যার বিচার চাই।’

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সাইদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা করা হবে।’


আরও খবর