আজঃ সোমবার ০৩ জুন ২০২৪
শিরোনাম

রোগমুক্তির মহাপ্রসাদ খাইয়ে অজ্ঞান করে চুরি

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

শুভ্র শুশ্রুষা মণ্ডিত চেহারা, ধবধবে সাদা রঙের পাঞ্জাবি এমন আধ্যাত্মিক চেহারার এই ব্যক্তিকে সন্দেহের চোখে দেখবে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শুধু উনার বাহ্যিক লেবাস অথবা চেহারা দেখেই নয় তার নানান ভেল্কিবাজিতে যে কোনো সাধারণ মানুষের মধ্যে সাধু বাবার 'অলৌকিক ক্ষমতা' সম্পর্কে বিশ্বাস তৈরি হতেই পারে।

চোখের পলকে মাটি তুলে হাতের জাদুতে স্যাকারিন মিশিয়ে মিষ্টি মাটি তৈরি করে মানুষকে খাওয়ানো কিংবা কাগজে ফু দিয়ে আগুন ধরানো কি না পারেন তিনি!

এর পর আপনার সমস্যা সমাধানে বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন পূজা-অর্চনা করে আপনাকে আস্থায় আনবেন এই সাধু। তার পর সময় সুযোগমতো খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সব রোগমুক্তির 'মহাপ্রসাদ' খাওয়াবে বাড়ির প্রত্যেক সদস্যকে!

এভাবেই মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে এক পরিবারের সব সদস্যকে অচেতন করে শরীরের স্বর্ণালংকার, টাকা ও মোবাইল সেটসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে চম্পট দেন প্রতারক ওই 'সাধু বাবা' বাচ্চু প্রধান (৭৩)।

 মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আন্ধারমানিক এলাকায় এমনই এক নাটকীয় ঘটনা ঘটে। একই পরিবারের ছয় সদস্যকে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত 'প্রসাদ' খাইয়ে রাতের আঁধারে এই প্রতারক লুটে নেয়- নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন। 

ঘটনার দিন অনেক বেলা হয়ে গেলেও অচেতন ৬ ব্যক্তির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা খবর দেন স্থানীয় কাউন্সিলর আবু মোহাম্মদ নাহিদকে। তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে একই বাড়ির তিনটি ঘরে ওই ছয় সদস্যকে অচেতন ও মুমূর্ষু অবস্থায় পান।

একই পরিবারের ছয় সদস্যের এই রহস্যজনকভাবে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন শুনে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা পিপিএম ও সদর থানার ওসি আকবর আলী খান মানিকগঞ্জ থানা পুলিশের টহলদলসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের সহয়াতায় অজ্ঞান ওই  ছয় সদস্যকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন।

পরবর্তীতে প্রায় ২৪-৩৬ ঘন্টা পর তাদের জ্ঞান ফিরলে তাদের অজ্ঞান হওয়ার কারণ সম্পর্কে পুলিশ জানতে পারে।

এই বিষয়ে প্রাথমিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি জিডি করে রাখা হয়। পরিবারের অভিভাবক পঙ্কজ কুমার মণ্ডল সুস্থ হয়ে থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা গোয়েন্দা তথ্য ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক ওই সাধুবাবাকে শনাক্ত করে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন।

গত ১৮/সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ থানার এসআই টুটুল উদ্দিন ও এসআই মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি চৌকশ পুলিশ দল প্রতারক ও চোরকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানায় অভিযান চালান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত সাধুবাবার বেশধরা প্রতারক বাচ্চু প্রধান (৭৩)।

তার বাড়ী মতলবের দক্ষিণের  নারায়নপুর গ্রামে।  ৬ সন্তানের জনক বাচ্চু প্রধান পুলিশের কাছে জানিয়েছেন, তিনি ৭/৮ বছর ধরে এধরনের প্রতারণার কাজ চালিয়ে আসছেন।

এসআই মনিরুজ্জামান পুকুরে ঝাঁপিয়ে পরে তাকে পানি থেকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করেন। এইসময় বাচ্চু প্রধানের স্বীকারোক্তি মতে তার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় লুন্ঠিত মোবাইল, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত প্রতারক একই কায়দায় ইতোপূর্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষকে অচেতন করে সর্বস্ব লুটে নিয়েছে। তাকে মানিকগঞ্জ থানায় রুজুকৃত মামলায় গ্রেফতার করেছে। পরে রবিবার আসামি আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারক বাচ্চু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বিকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেওয়ার  প্রতিশ্রুতি দেওয়ার তার ব্যাপারে কোনো রিমাণ্ড আবেদন চাওয়া হয়নি।  

 

নিউজ ট্যাগ: অজ্ঞান করে চুরি

আরও খবর



গরু বিতর্কের জবাব দিলেন আশনা হাবিব ভাবনা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

মাঝেমেধ্যেই বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত জানান অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। এই তো গত শুক্রবার ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে নিজের আবেগ উপচে দিয়েছেন তিনি। ছবিতে দেখা যায়, একটি ট্রাকে কিছু গরু রয়েছে। একটি গরুর চোখ ছলছল। সেই ছবির ক্যাপশনে ভাবনা লিখেছেন, আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে। ওমনি ভাইরাল হয়ে যায় পোস্টটি।

মাসখানেক পরই ঈদুল আজহা। এ কারণেই ওই ছবির ক্যাপশন পড়ে ভাবনার ওপর চটেছেন নেটিজেনরা। তাদের একাংশ ভেবে নিয়েছেন, গরুর প্রতি মায়া দেখিয়ে ভাবনা হয়তো ঈদে পশু কেরাবানির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। যদিও ভাবনার পোস্টে কোরবানি দেওয়া কিংবা না দেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে কোনো বক্তব্যই ছিল না।

হয়তো পোস্ট করার পর কমেন্ট অপশন বন্ধ করে দিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। তাই তো দেড় হাজার শেয়ার হওয়া পোস্টে কমেন্ট মোটে তিনটি। ওই পোস্টে বয়ে গেছে হা-হা রিয়েক্টের বন্যা। মন্তব্যের ঘর খোলা না পেয়ে পোস্ট শেয়ার করেই ভাবনাকে এক হাত নিয়েছেন নেটিজেনরা। অভিনেত্রীর এই পোস্টটি গত কয়েকদিন ধরেই আছে তুমুল আলোচনায়। শেষমেশ মঙ্গলবার রাতে নাতিদীর্ঘ আরেকটি পোস্ট করে গরুর ছবিতে ওই ক্যাপশন দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন অভিনেত্রী।

ভাবনা তার পোস্টে জানিয়েছেন, ছবি তুলতে পছন্দ করেন তিনি। যেই ছবি তাকে ভাবায়, সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন অভিনেত্রী। গরুর ছবিটি যেদিন তুলেছিলেন, সেদিন ছিল তীব্র তাপদাহ। দীর্ঘসময় গরমে থাকায় ভীষণ কাঁদছিল গরুটি। অবলা প্রাণীর কান্না ভাবনার সমস্ত চৈতন্যকে স্পর্শ করেছিল। সেই অনুভূতিই প্রকাশ করেছেন ছবির ক্যাপশনে।

গরুর বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করে অনেকেই বেশ বাজে কথা শুনিয়েছেন অভিনেত্রীকে। কেউ কেউ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করেছেন ভাবনাকে। তাকে কেউ-কেউ গাভীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। এমনকি অভিনেত্রীকে দেশছাড়া করার আহ্বানও জানিয়েছেন নেটিজেনদের কেউ কেউ। এ ছাড়া কবে কোথায় ভাবনা গরুর মাংস খেয়েছেন ও রেঁধেছেন, সেসব পুরোনো পোস্টও খুঁজে-খুঁজে বের করে পোস্ট করেছেন অনেকে।

সেসবের উত্তরে ভাবনা তার পোস্টে জানিয়েছেন, তিনি কোথাও লেখেননি যে তিনি গরুর মাংস খান না। এমনকি কাউকে গরুর মাংস না খেতেও উৎসাহিত করেননি এই অভেনেত্রী। ভাবনার ভাষ্য, একটি প্রাণীর কান্না দেখে যে কেউ কেঁদে উঠতে পারেন, এটাই স্বাভাবিক।

ভাবনা আরও জানান, তিনি প্রকৃতিপ্রেমী নাকি প্রাণীপ্রেমী, সেটার প্রমাণ কোথাও দিতে রাজি নন। এ ছাড়া ফেসবুকের একটি পোস্টেই তো আর কোনো বিষয়ে তার অবস্থানের প্রমাণ হয় না। তবে গরুর ছবিটি নিয়ে তিনি আরও লিখবেন। নিজের কবিতা, গল্পে কিংবা চিত্রে পরবর্তী গরুর বিষয়টি তুলে আনবেন তিনি। কেননা, ভাবনা মনে করেন, শিল্পীর বেদনা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাই তার দিকে ছুঁড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করে নিজের পোস্টের ইতি টেনেছেন অভিনেত্রী।


আরও খবর



সীমান্তে আবারও বিএসএফের গুলি

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
এম এ রহিম, বেনাপোল (যশোর)

Image

সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও থামছে না ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা। প্রতি মাসেই বিএসএফের গুলিতে ঘটছে হত্যাকাণ্ড। সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা হয়। কিন্তু তবুও থামছে না সীমান্তে হত্যা। সবশেষ রোববার (১২ মে) দিবাগত রাতে বেনাপোল সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিএসএফ। এতে আমজেদ আলী নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পরিবার জানিয়েছে, রোববার রাতে পুটখালী সীমান্ত দিয়ে ভারতে গরু পাচার করার সময় ভারতীয় বিএসএফ গুলি ছুড়লে আমজেদ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। পরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

এর আগে, বুধবার (৮ মে) দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। হত্যার দুই দিন পর শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যার দিকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ি জিরো লাইন সীমান্ত দিয়ে ওই দুই বাংলাদেশির মরদেহ তেতুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভারতের ফাঁসিদেওয়া থানা পুলিশ।

সীমান্তে বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলি ও নির্যাতনে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ বাংলাদেশিরা। বিগত ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার হয় কিশোরী ফেলানী খাতুন। তার মরদেহ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। ওই সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানীর মরদেহের ছবি আলোড়ন তুলেছিল দেশে-বিদেশে। ওই ঘটনার পর দফায় দফায় আলোচনায় সীমান্তে হত্যা বন্ধে প্রতিশ্রুতি দেয় বিএসএফ। তবে গত বছরগুলোতে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় একেবারেই উল্টোচিত্র।

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে মারা গেছেন ২০০ এর বেশি বাংলাদেশি। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শতাধিক মানুষ। যার মধ্যে গতবছর ২৮ জনের প্রাণহানি ও ৩১ জন মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। ওই বছর ৪৮ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারান, যার মধ্যে ৪২ জন বিএসএফের গুলিতে ও ছয়জন শারীরিক নির্যাতনে মারা যান। এর আগের বছর যে ৪৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩৭ জন বিএসএফের গুলিতে এবং ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে নির্যাতনে। গত সাত বছরের মধ্যে বিএসএফের গুলিতে সবচে কম বাংলাদেশির মৃত্যু হয় ২০১৮ সালে ১৪ জনের।

সরকারের হিসেবে বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৯ বছরে বিএসএফের হাতে ২৯১ জন বাংলাদেশি নিহত হন। এ ৯ বছরের মধ্যে সবচে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন ২০০৯ সালে। আর সবচে কম ১৭ জন হত্যার শিকার হয়েছেন ২০১৭ সালে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতে, বিএসএফ আত্মরক্ষার জন্য হত্যা করে। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ট্রিগার হ্যাপি’ নামে এক প্রতিবেদনে সীমান্তে গুলি থেকে বেঁচে যাওয়া এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ ছিল, বিএসএফ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা না করে বা সতর্ক না করেই নির্বিচারে গুলি চালায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী আত্মরক্ষার প্রয়োজনে প্রথমে সতর্ক করতে ফাঁকা গুলি ছুড়তে হবে। যদি এতে হামলাকারী নিবৃত না হয় এবং জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে গুলি ছোড়া যাবে, তবে সেটা হতে হবে অবশ্যই হাঁটুর নিচের অংশে। কিন্তু এসবের কোনো তোয়াক্কাই যেন নেই বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। ফেলানী হত্যার দৃশ্যই কি মনে করিয়ে দেয় না, বিএসএফ গুলি ছোড়ে স্রেফ হত্যার উদ্দেশ্যেই। বিএসএফ কোনো ক্ষেত্রেই প্রমাণ করতে পারেনি যে, হতাহতের শিকার মানুষগুলোর মাধ্যমে তাদের প্রাণ সংশয় বা গুরুতর আহত হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার অন্যতম প্রধান কারণ দেশটির সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ। এ ছাড়াও দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো ঘনবসতিপূর্ণ। এখানকার একশ্রেণির মানুষ কৃষি ও অন্যান্য পেশার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত গবাদি পশু ও পণ্য পাচারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। এই হত্যার শিকার অধিকাংশই বিভিন্ন চোরাচালান কর্মের সঙ্গে জড়িত বলেই অভিযোগ বিএসএফের। কিন্তু দুই দেশের আইন অনুযায়ী, কেউ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করলে, কাঁটাতার কাটলে বা পাচারের চেষ্টা করলে তাদের গ্রেপ্তার করে ওই দেশের আইনানুযায়ী বিচার করতে হবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই গুলি ছোড়া বা নির্যাতন করা যাবে না।


আরও খবর



অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো পরীক্ষা (ভিডিও)

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে এবং ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো থাকত অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস। একইসঙ্গে সংযোগ দিয়ে পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে রাখা হতো ক্ষুদ্রাকৃতির বল।

প্রশ্নপত্রের উত্তর সমাধানের জন্য বাইরে থেকে কাজ করত আরেকটি চক্র। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র সমাধান করে ডিভাইসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হতো পরীক্ষার্থীদের। বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তর সরবরাহ করা সংঘবদ্ধ এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন মো. জুয়েল খান (৪০), মো. রাসেল (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল (৩৯), মো. আব্দুর রহমান (৩৮), মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫), মো. আজহারুল ইসলাম (২৯) এবং মো. মাসুম হাওলাদার (২৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ১০টি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, সাতটি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিম কার্ড এবং একটি পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।

রোববার (১২ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সাপ্লাই করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রথমত তারা পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ২ মিনিট আগে পরীক্ষার কোনো না কোনো কেন্দ্র ম্যানেজ করে প্রশ্নের ফটোকপি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দিত। বাইরে তাদের একটা টিম পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্ন সলভ করে ফেলে। এরপর তারা উত্তরগুলো বলতে থাকে। পরীক্ষার্থীর কাছে যে ক্ষুদ্র ডিভাইস থাকে সেটা পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে থাকে। আর পকেটে একটা রাউটার থাকে। অথবা মেয়েদের অন্তর্বাসে বা ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো ডিভাইসের সঙ্গে কানেক্টেড একটা সিম রাখে। এরপর বাইরে থেকে যখনই টেলিফোন করে সঙ্গে সঙ্গে  পরীক্ষার্থী শুনতে পাবে এবং ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরগুলো সলভ করে ফেলবে। চক্রটি বাইরে থেকে উত্তর বলবে আর যাদের অন্তর্বাস বা গেঞ্জির সঙ্গে ডিভাইস থাকবে তারা ভেতরে থেকে উত্তরগুলো শুনে সঙ্গে সঙ্গে এমসিকিউ দাগিয়ে ফেলবে।

হারুন অর রশিদ বলেন, দিন দিন এভাবে ক্রাইমের প্যাটার্নটা চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। এক সময় আমরা নকল প্রতিরোধের জন্য কাজ করেছি। সে সময় তারা পরীক্ষার হলে বই নিয়ে যেত। এভাবে কিন্তু দিন যাচ্ছে অপরাধীরা তাদের অপরাধের প্যাটার্ন চেঞ্জ করছে। আমরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছি। এখন সর্বশেষ আমরা যেটা পেলাম সেটা হচ্ছে তারা ক্ষুদ্রাকৃতির বল ব্যবহার করছে এবং ডিভাইসটা এমন জায়গায় রাখছে যেখানে ধরার বা চেক করার কোনো স্কোপ নেই।

ডিবি প্রধান বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ), বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট কালেক্টর (গ্রেড ২) ও বুকিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (গ্রেড ২), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, টাঙ্গাইলের অফিস সহায়ক, মৎস্য বিভাগের অফিস সহায়ক, গণপূর্তের হিসাব সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপকসহ আরও বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় এসব পন্থায় অপরাধ কর্ম সংঘটিত করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে। চাকরি ভেদে এমসিকিউ লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভাসহ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে।

হারুন অর রশিদ বলেন, চক্রের মূলহোতা জুয়েল খান বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস সংগ্রহ ও সরবরাহ, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ, সমাধান টিমের সদস্য সংগ্রহ ও চক্রের অন্যদের সঙ্গে সমন্বয় করত। মো. রাসেল ও মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল এবং মো. আব্দুর রহমান বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ডিভাইসটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তার বিস্তারিত ব্যবহারবিধি শিখিয়ে দেয়। মো. আরিফুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের অভ্যন্তর থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সুবিধা মতো সময়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেয়। এরপর তাদের সমাধান টিম অতি দ্রুত সেই প্রশ্নপত্র সমাধান করে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে তাদের নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিত।

তিনি বলেন, বিশেষভাবে প্রস্তুত করা জিএসএম সুবিধা সম্বলিত এই ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইসটি মেয়েদের অন্তর্বাস ও ছেলেদের স্যান্ডো গেঞ্জির ভেতরে এমনভাবে সেলাই করে সংযুক্ত করা থাকে যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না। ডিভাইসে একটি মোবাইল সিম কার্ড সংযুক্ত থাকে। কেন্দ্রের বাইরে থেকে ওই নম্বরে কল করা মাত্রই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিসিভ হয়ে যায়। এই ডিভাইসের সঙ্গে ব্লু-টুথের মাধ্যমে কানেক্ট থাকা ছোট্ট বল আকারের রিসিভার স্পিকারটি পরীক্ষার্থীদের কানের ভেতরে থাকে। ফলে বাইরে থেকে উত্তর বলে দিলে নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীরা অনায়াসে তা লিখতে পারে। পরীক্ষা শেষে শক্তিশালী কলম সদৃশ চুম্বকের (ডিভাইসের বিশেষ অংশ) সহায়তায় সেটি কানের ভেতর থেকে বের করা হয়।


আরও খবর



টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা।

মঙ্গলবার (২১ মে) হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।  

প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এর আগে কোনো সংস্করণেই দেখা হয়নি এই দুই দলের। বিশ্বকাপের আগে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে এই তিন ম্যাচ বেশ গুরুত্বপূর্ণ টাইগারদের জন্য। ইনজুরির কারণে এই সিরিজের নেই পেসার তাসকিন আহমেদ।

দুই পেসার ও দুই স্পিনারকে নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের সঙ্গে একাদশে জায়গা পেয়েছেন দুই স্পিনার মাহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেন।

বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।

যুক্তরাষ্ট্র একাদশ: মোনাক পাটেল, অ্যারন জোন্স, অ্যান্ড্রিস গিউস, কোরি অ্যান্ডারসন, মোহাম্মদ আলী খান, হারমীত সিং, জাসদ্বীপ সিং, নিতিশ কুমার, নসতুশ কেনজিগে, সৌরভ নেটরাভালকার ও স্টিভেন টেইলর।


আরও খবর



রাইসির মৃত্যুতে পশ্চিমাদের রহস্যজনক নীরবতা!

প্রকাশিত:সোমবার ২০ মে ২০24 | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে অনেকটা রহস্যজনক নীরবতা পালন করছেন পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা। অথচ বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে কিছু ঘটলেই অতি উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে আসে তারা।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, বেলজিয়ামে সোমবার (২০ মে) জাতীয় ছুটির দিন। এই কারণে রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপ থেকে প্রতিক্রিয়া আসছে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে গত সপ্তাহে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর ওপর হামলার ঘটনার পর যত দ্রুত প্রতিক্রিয়া আসে, তার সঙ্গে তুলনা করলে ইরানের ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।

এই ঘটনাকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের টানাপোড়েনের বড় প্রমাণ হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।

আল জাজিরা জানিয়েছে, শুধুমাত্র ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমিরাবদুল্লাহিয়ান এবং দুর্ঘটনায় পড়া হেলিকপ্টারে থাকা অন্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এটি মূলত, রোববার (১৯ মে) রাতে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সন্ধানে সহায়তা করার জন্য র‌্যাপিড রেসপন্স ম্যাপিং সিস্টেম সক্রিয় করতে ইরানের এক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় কমিশনের সাড়া।

আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে,  ব্রাসেলসে এখন অদ্ভূত এক নীরবতা বিরাজ করছে। ইউরোপীয় নেতারা ইরানের পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।


আরও খবর