আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

পদ্মায় ধরা পড়ল ৪৫ কেজি ওজনের এক বিশাল বাঘাইড়

প্রকাশিত:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
শাকিল মোল্লা, রাজবাড়ী

Image

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার পদ্মায় জেলে মমিন হালদারে জালে ধরা পড়েছে ৩৫ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ। মাছটি ৬১ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছে মোহাম্মদ আলী বেপারী নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ী।

বুধবার (৪ অক্টোবর) দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের অদূরে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জেলেদের জালে বিশাল এ মাছটি ধরা পড়ে।

মাছের আড়ৎদার দুলাল মন্ডল জানান, মঙ্গলবার ভোরে পাবনা জেলার জেলে শ্যামল হালদার পদ্মা নদীতে জাল ফেলে ফেরিঘাট থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার ভাটিতে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় সকাল ৬টার দিকে জালে ঝাকি দিলে বুঝতে পারেন বড় কিছু আটকা পড়েছে। জাল গুটিয়ে নৌকায় তোলার আগে দেখেন বিশাল এক বাঘাইড়। বাঘাইড়টি তুলতে জেলেদের অনেক বেগ পোহাতে হয়। মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে আমার আড়তে নিয়ে আসেন। মাছটি নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বেপারী বাঘাইড় মাছটি ক্রয় করেন।  

দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরি ঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আলী বলেন, ভোরে নদীতে বিশাল বাঘাইড় মাছ ধরা পড়ার খবর পেয়ে বাজারে আসি। সকাল ৭টার দিকে দুলাল মন্ডলের আড়তে বাগাড়টি তোলা হলে উম্মক্ত নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১৩৫০ কেজি দরে ৪৫ কেজি মাছ প্রায় ৬১ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নেই। মাছটি ৬ নম্বর ফেরি ঘাটের পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে বেধে রাখলে ঢাকামুখী বহু মানুষ বাঘাইড়টি দেখতে ভিড় করেন। মাছ ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করে দিবো। মাছটি ছবি তুলে দেশের বিভিন্ন সৌখিন মাছ ক্রেতার নিকট পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করি ভালো দামে মাছটি বিক্রি করতে পারবো।

গোয়ালন্দ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল-রাজিব বলেন, বাগাড় মাছ সংরক্ষিত বন্যপ্রাণি আইনে চলে গেছে। এই আইনে বাগাড় মাছ শিকার, ক্রয় বিক্রয়, পরিবহন করা শাস্তি যোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের জন্য সর্ব্বোচ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড হতে পারে। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে না থাকায় আমরা কোন পদক্ষেপ নিতে পারছি না।


আরও খবর



ফের দুই দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

ফের দুই দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ আরও বিস্তৃত হওয়ার আভাস থাকায় দুই দিনের তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট জারি করেছে অধিদপ্তর।

বুধবার (১৫ মে) বিকেলে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

আরেক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও সিলেট বিভাগসহ টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার, ভোলা এবং পটুয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে এবং বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে।


আরও খবর



খেলাপি ঋণ না কমায় আইএমএফের অসন্তোষ

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী খেলাপি ঋণের উন্নতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংস্থাটির সফররত প্রতিনিধি দল। একই সঙ্গে তারা সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যেসব লিকেজ রয়েছে তা দূর করতে পদক্ষেপ নিতে বলেছে। গতকাল (২৫ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রলণালয়ে আইএমএফের সঙ্গে পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওইসব সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। অপর সভায় নেতৃত্ব দেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী। আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কার্যক্রমের কর্মসূচি চলমান। এরই মধ্যে বাংলাদেশ দুটি কিস্তি পেয়েছে, এখন তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। বিভিন্ন বাস্তবতা সামনে রেখে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের ৩৮টি শর্ত পূরণের কাজ পর্যালোচনা বা রিভিউ করতে আইএমএফের একটি দল অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ আলোচনায় দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-সহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। প্রতিবছর বাজেটের আগে আইএমএফের একটি দল এ সময় ঢাকায় আসে। সভা সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক মার্জার করায় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশকে স্বাগতম জানালেও খেলাপি ঋণের উন্নতি করতে পারেনি সরকার। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্তের একটি ছিল খেলাপি ঋণ কমানো। ২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলেছে সংস্থাটি।

এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে এবং বেসরকারি ব্যাংকে ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার শর্ত ছিল। সরকার তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থার প্রতিনিধি দল। সূত্র আরও বলছে, ব্যাংক খাতের সংস্কারের অংশ হিসেবে বেশ কিছু আইন তৈরি ও সংশোধনের প্রস্তাব ছিল আইএমএফের। এর মধ্যে সরকার ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন এবং আর্থিক কোম্পানি আইন এবং অফশোর ব্যাংক আইন পাস করেছে। তবে এখনো বৈদেশিক মুদ্রা ও বিনিয়োগ আইন এবং দেউলিয়া-বিষয়ক আইনসহ অন্যান্য আইন সংস্কার ও তৈরি এখনো হয়নি। এসব আইন দ্রুত পাস করার জন্য বলা হয়েছে। আইএমএফের শর্ত পূরণের অংশ হিসেবে ঋণ ও আমানতের সুদহারে ৯ ও ৬ শতাংশ সুদহার বজায় রাখা থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বদলে সুদহারের নতুন নিয়ম চালু করা হয় সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল’ (স্মার্ট) পদ্ধতি। গত বছরের জুলাই থেকেই তা কার্যকর করা হয়। সে অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ছয় মাসের গড় সুদহার বিবেচনা করে প্রতি মাসে একটি দর নির্ধারণ করে। এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ যুক্ত করতে পারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। আইএমএফ প্রতিনিধি দল এই সুদ হার বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে আরও স্বাধীনতা দিয়ে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছে।


আরও খবর



চাকরির বয়স ৩৫ নিয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার জন্য সুপারিশ জানিয়ে গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঠান।

রোববার (৫ মে) এর জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরির বয়সসীমা ৩৫ নিয়ে যে সুপারিশ পাঠিয়েছে তা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী তার পাঠানো চিঠিতে বলেন, বর্তমানে সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা ৩০ বছর মানদণ্ড হিসেবে অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পাতা নম্বর ৩৩-এর শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেছিল।

দীর্ঘদিন ধরে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তারা বলে আসছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ বয়স নয়, যোগ্যতাই একজন প্রার্থীর একমাত্র মাপকাঠি। ওই দেশের আলোকে বাংলাদেশেও চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করা দাবি করে আসছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ওই সব শিক্ষার্থী দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করে এলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন শিক্ষামন্ত্রীও একই ধরনের সুপারিশ করলেন।


আরও খবর



বনের জমিতে দেড় শতাধিক কারখানা, উচ্ছেদে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা কী

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম লিমিটেড (বিবিএস) কেবলের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ এক হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। ২০১৭ সালে কারখানা নির্মাণের জন্য গাছপালা কেটে সাতখামাইর ফরেস্ট বিটের তেলিহাটি মৌজার আরএস ২৯২৩, ২৯২৪ ও ২৯২৫ দাগের ১.৬১ একর সংরক্ষিত বনের জমি দখল করে নামি এই কেবল প্রতিষ্ঠানটি। দখল করা ওই জমির বর্তমান বাজারমূল্য অন্তত আড়াই কোটি টাকা। বন বিভাগ দখল করা ওই জমি এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। এরই মধ্যে নতুন করে কারখানার মূল ফটকের সামনে প্রতিষ্ঠানটির  প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হাসনাইন ওরফে হাসান বনের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন মার্কেট। ওই মার্কেট থেকে মাসে ভাড়া তুলছেন ৩০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, গাজীপুর সদরের নলজানী এলাকার অভিজাত ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার মাসিক আয় কোটি টাকার বেশি। শীত, গ্রীষ্ম এমনকি হরতাল-অবরোধেও এই রিসোর্টের ভিলা খালি থাকে না। ৯-১০ বছর আগে নির্মাণের সময় ভাওয়াল রিসোর্টের পাশে থাকা সংরক্ষিত বনের বাড়ইপাড়া মৌজার এসএ সিএস ৩, ২৭৯ ও ২৭১ দাগের ৩.৬৮ একর জমি দখল করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় বন বিভাগ গ্রিনটেক রিসোর্টের দখল থেকে জমি উদ্ধারের জন্য গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলা করে। কিন্তু সেই জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। এভাবে গাজীপুরে সংরক্ষিত বনের জমিতে কারখানা, খামার, আলিশান রিসোর্ট, পিকনিক ও শুটিং স্পট নির্মাণ করে বছরে শতকোটি টাকার বাণিজ্য করছে পৌনে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান।

ব্যক্তিগত প্রভাব এবং অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যক্তিগত জমির সঙ্গে থাকা বনের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। সংরক্ষিত বনে বা বন ঘেঁষে তৈরি করা এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। বন বিভাগের তালিকা অনুযায়ী, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালিয়াকৈর ও সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৩২১ একর বনের জমি অবৈধ দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ৫০০ একর জমি। গত এপ্রিল মাসে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন শ্রীপুর ও গাজীপুর সদর উপজেলায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে মাত্র ৮.৭৯ একর বনভূমি। অবশিষ্ট ভূমি রিসোর্ট, বাড়িঘর-দোকানপাট, হাটবাজার ও কৃষিজমি হিসেবে দখল করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িঘর তৈরি করে ২৩ হাজার ব্যক্তি দখল করেছে ১০ হাজার একরের বেশি বনভূমি। এতে বনভুমি উজাড় হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। অথচ এই আগ্রাসন ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বন বিভাগের। বরং নানা ফন্দিতে নতুন করে দখল হচ্ছে বনভূমি।

বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, শ্রীপুরে ধনুয়া মৌজায় আরএকে সিরামিকস চার একর, রশোওয়া স্পিনিং মিল চার একর, ডিবিএল সিরামিকস আট একর, অটো স্পিনিং মিলস ২.২০ একর, সাতখামাইর মৌজায় আকন্দ গার্ডেন ১৬ একর, রিফাত ব্যাগ ২৫ শতক, পটকা মৌজায় ট্রেড ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন ৭.৬৪ একর, কেওয়া মৌজার মিতা টেক্সটাইল ২.২০ একর, মেঘনা কম্পোজিট ৪০ শতাংশ, জোবায়ের স্পিনিং এক একর, ওমেগা সুয়েটার এক একর, সোলার সিরামিকস ৯০ শতাংশ, ইকো কটন ৪.৮৬ একর, ভাওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ দুই একর, অনটেক লিমিটেড ৪.৯৪ একর, হাউআর ইউ টেক্সটাইল এক একর, অরণ্যকুটির ২.২২ একর, উইষ্টেরিয়া টেক্সটাইল ৫.৩৩ একর, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল দুই একর, এপেক্স নিট কম্পোজিট ১১.৬২ একর, গ্রেটওয়াল সিরামিকস ৭.৩৮ একর, টেপিরবাড়ি মৌজায় ডিবিএল গ্রুপ ছয় একর, তেলিহাটি মৌজায় কুঞ্জু বিথি এক একর, আলিফ অটো ব্রিকস ৭০ শতাংশ, টেপিরবাড়ী মৌজায় চায়না বাংলা প্যাকেজিং এক একর, প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস ৭৬ শতাংশ, এইচ এস অ্যাগ্রো দেড় একর, রেক্স অটো ব্রিকস এক একর ৭০ শতাংশ, টেংরা মৌজায় শিশুপল্লী প্লাস সাড়ে ১২ একর, মম পোলট্রি ৭০ শতাংশ ও ওয়ারবিট স্টিল বিল্ডিং দুই একর বনের জমি দখল করেছে। পেলাইদ মৌজায় সিসিডিভি পাঁচ একর, সাইটালিয়া জামান পোলট্রি দুই একর, মাওনা মৌজার মনো ফিড ২.২৫ একর, এইচ পাওয়ার লিমিটেড ৩৩ শতাংশ, হোম ডিজাইন ১.২২ একর ছাড়াও বিবিএস কেবল, দি সোয়েটার, ইকো কটন মিলস, সিটিসেল লিমিটেডও বনের জমি দখল করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলায় বনভূমি দখলে সবচেয়ে এগিয়ে পারটেক্স গ্রুপ। পারটেক্স কটন লিমিটেড সদর উপজেলার ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাহাদুরপুর মৌজায় সিএস ২৫৪, ২৮৯, ২৯৪ ও ৩০০ নম্বর দাগে ১১.৬৭ একর, পারটেক্স হোল্ডিংস লিমিটেড একই মৌজার সিএস ২০৮, ৫৮৫, ২০৮ ও ৫৮৬ নম্বর দাগে ৫.০৯ একর, আম্বার ডেনিম লিমিটেড আড়াইশ প্রসাদ মৌজায় আরএস ৮ থেকে ১৮ এবং ২৮ থেকে ৩২ নম্বর দাগে ২৬.২৪ একর মিলিয়ে ৪৩ একর বনভূমি দখলে রেখেছে। তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি পারটেক্স গ্রুপের কোনো কর্মকর্তা। মণিপুর এলাকায় বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৪২৮ ও ৫৯৮  নম্বর দাগে ৬.৫৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি দখল করেছে সান পাওয়ার সিরামিকস লিমিটেড। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে উচ্ছেদ মামলা করা হয়।

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে সান পাওয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম ভূঞা বলেন, কারখানার জমির এসএ ও আরএস রেকর্ড আমাদের নামে। কিন্তু শুধু গেজেটে নাম থাকায় বন বিভাগ ওই জমি তাদের দাবি করছে। কারখানাটি বিদেশি বিনিয়োগে স্থাপিত। বনের দাবি করা জমির সমপরিমাণ জমি অন্যত্র কিনে বনায়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’

বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৫৯৮ নম্বর দাগে ফু-ওয়াং সিরামিক ও ফু-ওয়াং ফুডের দখলে রয়েছে ৪.৪০ একর সংরক্ষিত বনভূমি। ২০০৭ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উচ্ছেদ মামলা করে বন বিভাগ। কিন্তু ওই সময় দায়সারা মামলা করায় আজও জমি উদ্ধার হয়নি। এ প্রসঙ্গে ফু-ওয়াং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে বনের কোনো জমি নেই।’

এ ছাড়া প্যানাস অটোক্রিয়েশ গার্মেন্টস, ম্যাগডোনালস বাংলাদেশ, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এনএজেড গার্মেন্টস বাংলাদেশ, ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস, বেন্টলী সুয়েটার, ওয়ান ডেনিম, ওয়ান স্পিনিং মিলস, এমআই ইয়ার্ন ডাইং, শরীফ বাড়ি খামার ও রেস্ট হাউস, ইপিলিয়ন স্টাইল, এটলাস ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এবি সিদ্দিক পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ, বেন ফিক্সস্টীল বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট, এসএম নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি কালেকশন, বাংলাদেশ মেইজপ্রডাক্ট, ইভিল টেক্স, তিতাস স্পিনিং, বেঙ্গল গার্মেন্টস, মালা পোলট্রি ফার্ম, মাসকাত পোলট্রি ফার্ম, টিএস ট্রান্সফরমার, ন্যাশানাল ফিড, মডার্ন ফিড, লিথি গ্রুপ, প্যারাগন পোলট্রি, স্কিন গ্রাফ, গর্ডন স্টিল মিলস, মোশারফ কম্পোজিট, প্যাকলাইন, আর্টিসান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বিটি লিমিটেড, মিলেনিয়াম স্টিল মিলস লিমিটেড, কুইন্স পোলট্রি ফার্ম লিমিটেড, অমনী অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, ঢাকা ফিশারিজ, রেডিয়াম এক্সেসরিজ, নির্জনা অ্যাপারেলস, গোলাম কিবরিয়া মৎস্য খামার, ইনডেক্স কনস্ট্রাকশন, সাহাবা ইয়ার্ন, এটিআই সিরামিক, গিভেন্সি ডেনিমস, খোরশেদ আলম অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, বেঙ্গল হরিকেন ডাইং প্রিন্টিং লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ এবং আদি অ্যাগ্রো ফার্মের দখলে রয়েছে কোটি কোটি টাকার বনভূমি।

কালিয়াকৈর সোহাগ পল্লী রিসোর্ট, চন্দ্রা বিটের কালামপুর এলাকার রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট ও চন্দ্রার শিল্পী কুঞ্জ, কোকোলা ফুড প্রডাক্টস, কৌচাকুড়ি মৌজায় সিএস ৯৪২ নম্বর দাগে ১৫.০৫ একর বনভূমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে দখল করে রাখা হয়েছে। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে হাজার হাজার একর বনভূমি জবরদখল হয়েছে। বন বিভাগ উচ্ছেদ মামলা করলেও নানা কারণে অভিযান এগোয়নি। বন বিভাগের পক্ষ থেকেও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত ১৭ এপ্রিল থেকে উচ্ছদ অভিযান শুরু হয়েছে। শ্রীপুর ও সদর উপজেলায় ৮.৭৯ একর বনভূমি উদ্ধার হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

বন বিভাগের বক্তব্য

বিবিএস কেবলের বনভূমি দখল প্রসঙ্গে শ্রীপুর ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, বনভূমি দখলে বন বিভাগের নতুন যে তালিকা করা হয়েছে সেটিতে বিবিএস কেবলসও রয়েছে। সেখানে উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ করে জমি পুনরুদ্ধার করা হবে।’

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুল হোসেন বলেন, এসব জমি অনেক আগে দখল হয়েছে। গত কয়েক বছরে নতুন করে কোনো দখল হয়নি। এরই মধ্যে বন বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে শতাধিক বিঘা জমি উদ্ধার করে বনায়ন করেছে। তা ছাড়া দখল করা জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। যৌথভাবে উচ্ছেদ অভিযানও শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জমি উদ্ধার করে বনায়ন করা হবে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তালিকা ধরে উচ্ছদ কার্যক্রম চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’


আরও খবর



নাফ নদীতে বিজিপির গুলিতে দুই বাংলাদেশি জেলে আহত

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) গুলিতে বাংলাদেশি দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপের মাঝেরপাড়ার মোহাম্মদ ইসমাইল ও মোহাম্মদ ফারুক। এর মধ্যে ফারুকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার দুপুর ১টার দিকে আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

টেকনাফের সাবারাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা প্রণয় রুদ্র জানান, আহতদের মধ্যে ফারুকের শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: বিজিপি নাফ নদী

আরও খবর