পিরোজপুরে কয়েকদিন
ধরে টানা বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বৃষ্টির প্রভাবে অনেকেই সারাদিন
ঘর থেকে বের হতে পরছেন না। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে।
টানা বৃষ্টি
থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা
করেই বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় এবং বাইরে তেমন কেউ বের
না হওয়ায় কাজ মিলছে না তাদের।
শুক্রবার (২৩
আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, পিরোজপুরে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে ভোররাত থেকেই টানা বৃষ্টি
শুরু হয়। এরমধ্যেও নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের কাজে বের হন। দোকানপাটসহ হোটেল, রেস্টুরেন্টগুলোতে
মানুষের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। অনেকেই দোকান খুলে অলস সময় কাটাচ্ছেন।
টানা বৃষ্টিতে
ভেজা কাপড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী খুঁজছিলেন রিকশাচালক মো. জাকারিয়া। তিনি বলেন, সংসার চালাতে
হিমশিম খাচ্ছি। সকাল থেকে ৫০ টাকা রোজগার হয়েছে, বাকি দিনে কি যে হবে জানি না। ভাড়ায়
রিকশা চালাই। যে টাকা এসেছে তার মধ্যে মালিককে কী দেব আর নিজে কী নেব? বাইরে লোক নেই,
দাঁড়িয়ে থেকে কোনো যাত্রী পাচ্ছি না।
মো. জামাল মিয়া
শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার পাশে লেবু ও বিভিন্ন ফল বিক্রি করেন। তিনি
বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে মানুষজন কম। আমরা দিনে যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চালাই। বৃষ্টির
কারণে বেচাকেনা নাই বললেই চলে।
কৃষ্ণচূড়া মোড়ে
ভ্যানে সবজি বিক্রেতা আলমগীর শেখ বলেন, টানা বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় কোনো লোকই নেই।
সকাল থেকে কিছুই বিক্রি করতে পারিনি। আগে প্রতিদিন ৫০০-৭০০ টাকা আয় হতো। গতকাল মাত্র
২০০ টাকা হয়েছে। বেশি বৃষ্টি হলে তো দাঁড়াতেই পারি না। বৃষ্টি কিছুটা কম থাকলে ভিজে
ভিজে বিক্রি করতে হয়।
শহীদ মিনার
এলাকার চা-সিগারেট বিক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে পলিথিন দিয়ে
ঢেকে দোকান খুলে বসেছি। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় বাইরে মানুষের চলাচল কম। এ কারণে
বিক্রিও তেমন নেই বললেই চলে।
চুন্নু শেখ
নামে এক দোকানি বলেন, আমাদের ছোট দোকান। চা-পান-সিগারেট বিক্রি করি। মানুষ বেশি হলে
বেচাকেনা বেশি হয়। কম হলে বেচাকেনা থাকে না। বৃষ্টিতে তো মানুষ ঘর থেকেই বের হচ্ছে
না, বেচাকেনা কীভাবে করবো।
দিনমজুর হেমায়েত
আলী বলেন, দুই দিন ধরে ভোর থেকে শহরের ঠাকুরের মোড়ে কাজের সন্ধানে আসলেও কেউ কোনো কাজ
করাতে নেননি। এখানেই সবাই কাজের লোক খুঁজতে আসে। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার কারণে অনেকেই
কাজকর্ম বন্ধ রাখছেন। সকাল পেরিয়ে দুপুর হতে যাচ্ছে, এখনও কোনো কাজ পাইনি। তাই বাড়ি
ফিরে যাচ্ছি।